হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي قِلَابَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ يَزِيدَ الْخَطْمِيِّ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْسِمُ فَيَعْدِلُ، وَيَقُولُ: اللَّهُمَّ هَذَا قَسْمِي، فِيمَا أَمْلِكُ فَلَا تَلُمْنِي، فِيمَا تَمْلِكُ، وَلَا أَمْلِكُ.
’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীগণের মাঝে ন্যায়-নিষ্ঠার সাথে পালা বণ্টন করতেন এবং বলতেন, ’’হে আল্লাহ! আমার সাধ্যমত (এই বিষয়ের) বণ্টন করলাম, আর যে ব্যাপারে তোমার আয়ত্তে ও আমার সাধ্যাতীত (মনের দুর্বলতা ও ভালোবাসার দরুন), সে বিষয়ে তুমি আমাকে অপরাধী করিও না’’।
(আবূ দাঊদ ২১৩৪, নাসায়ী ৩৯৪৩, তিরমিযী ১১৪০, ইবনু মাজাহ ১৯৭১, দারিমী ২২৫৩, মিশকাত ৩২৩৫।)
ব্যাখ্যা: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকল বিষয়েই তার স্ত্রীদের মধ্যে সমবণ্টন করতেন, বিশেষ করে রাত্রি যাপনের পালা নির্ধারণের ক্ষেত্রে তিনি পূর্ণরূপে ইনসাফভিত্তিক ফায়সালা করতেন। কোনো ব্যক্তির একাধিক স্ত্রী থাকলে তাদের কারো বিশেষ কিছু গুণাবলীর কারণে তার প্রতি স্বামীর অধিক ভালোবাসা থাকা স্বাভাবিক। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নয়। এটা মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। আর এটা ইনসাফের পরিপন্থীও নয়। তবু তিনি এ বিষয়ে আল্লাহকে ভয় করতেন এবং নিজের অপারগতা প্রকাশ করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর কাছে এই বলে প্রার্থনা করতেন, ‘‘হে আল্লাহ! স্ত্রীদের মাঝে ইনসাফ করা বা বাহ্যিক সমতা রক্ষা করা যেহেতু আমার আয়ত্তাধীন, আমি তা করছি, কিন্তু কোনো স্ত্রীর প্রতি হৃদয়ের টান বা অধিক ভালোবাসা এটা আমার আয়ত্তের বাহিরে। হে আল্লাহ! তুমিই তো মানুষের কলব বা হৃদয় পরিবর্তনের মালিক, সুতরাং তুমি যে বিষয়ের মালিক সে বিষয় তুমি আমার অপরাধ ধরো না এবং আমাকে তিরস্কার ও ভৎর্সনা করো না।’’
ইবনুল হুমাম (রহঃ) বলেনঃ প্রকাশ্য হাদীসের দ্বারা বুঝা যায় যে, স্ত্রীদের কারো প্রতি অধিক ভালোবাসা বা হৃদয়ের টান ছাড়া অন্যান্য বিষয় ইনসাফ করা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আয়ত্তের এবং ক্ষমতার মধ্যে ছিল। সুতরাং সেগুলোর মধ্যে ইনসাফ ও সমতা বিধান তার জন্যও আবশ্যক ছিল। তবে মেলামেশা ও আলিঙ্গনে সমতা বজায় (সর্বসম্মতভাবে) আবশ্যক নয়। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৩য় খন্ড, হাঃ ১১৪০; ফাতহুল কাদীর ৩য় খন্ড, ৩০০পৃঃ; মিরকাতুল মাফাতীহ)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
হ্যাঁ, উক্ত হাদীসের শরাহ থেকে এগুলোই বুঝানো হয়েছে।
,
একাধিক স্ত্রীর ক্ষেত্রে স্বামীর পক্ষ থেকে স্ত্রীদের যাবতীয় খরচ,ভরনপোষণ, আর রাত যাপনের ক্ষেত্রে সমতা কায়েম করতে হবে।
তবে কোনো এক স্ত্রীর দিকে মনের দুর্বলতা ও ভালোবাসা বেশি হলে সেটি অপরাধের অন্তর্ভুক্ত নয়।