بسم
الله الرحمن الرحيم
জবাব,
https://ifatwa.info/2898/?show=2898#q2898
নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, যদি কেউ কোনো মহিলাকে বিয়ে করার পূর্ণ ইচ্ছা করে নেয়,তাহলে ঐ মহিলাকে দেখতে পারবে। কথাও বলতে পারবে।
হযরত জাবের ইবনে
আব্দুল্লাহ রাযি থেকে বর্ণিত,
(إِذَا خَطَبَ أَحَدُكُمْ الْمَرْأَةَ ، فَإِنْ اسْتَطَاعَ
أَنْ يَنْظُرَ إِلَى مَا يَدْعُوهُ إِلَى نِكَاحِهَا ، فَلْيَفْعَلْ)
যদি কেউ কোনো মহিলাকে
বিয়ের প্রস্তাব দিতে চায়,তাহলে
সে যেন যযথাসম্ভব ঐ মহিলাকে দেখে নেয়।(সুনানু আবি দাউদ-২০৮২)
হযরত আবু হুরায়রা
রাযি থেকে বর্ণিত,
عن أبي
هريرة، قال: كنت عند النبي صلى الله عليه وسلم، فأتاه رجل فأخبره أنه تزوج امرأة
من الأنصار، فقال له رسول الله صلى الله عليه وسلم: «أنظرت إليها؟»، قال: لا، قال:
«فاذهب فانظر إليها، فإن في أعين الأنصارشيئا»
তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর পাশে বসা ছিলাম।একব্যক্তি এসে
বলল, আমি
আনসারি এক মহিলাকে বিয়ে করতে চাই।রাসূলুল্লাহ বললেন,তুমি কি পাত্রী দেখেছো?তিনি বললেন,না।রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,যাও গিয়ে পাত্রী দেখে আসো।কেননা আনসারীদের চোখে নীল বা
এ জাতীয় কিছু থাকে। (সহীহ মুসলিম-১৪২৪)
"
يَجُوزُ تَكْرَارُ النَّظَرِ إِنِ احْتَاجَ إِلَيْهِ
لِيَتَبَيَّنَ هيئتها ، فَلاَ يَنْدَمُ بَعْدَ النِّكَاحِ ، إِذْ لاَ يَحْصُل
الْغَرَضُ غَالِبًا بِأَوَّل نَظْرَةٍ ".
বারংবার দৃষ্টি
দেয়া জায়েয।যাতেকরে পাত্রীর পূর্ণ অবয়ব পরিস্কার ভাবে ফুটে উঠে।এবং যাতেকরে বিয়ে পরবর্তী
লজ্জিত হতে না হয়।কেননা একবারের দৃষ্টি অধিকাংশ সময়ে যথেষ্ট নাও হতে পারে।(আল-মাওসুআতুল
ফেকহিয়্যাহ-২২/১৭)
রাসুলুল্লাহ সাঃ
এক্ষেত্রে পাত্রীর চারটি বিষয় যাচাই করতে বলেছেনঃ
وَعَنْ
أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ
لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ
بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»
আবূ হুরায়রাহ্
(রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত)
চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ,
অথবা বংশ-মর্যাদা,
অথবা রূপ-সৌন্দর্য,
অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে
সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে
প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)! (সহীহ
বুখারী ৫০৯০, মুসলিম
১৪৬৬, নাসায়ী
৩২৩০, আবূ
দাঊদ ২০৪৭, ইবনু
মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ
৯৫২১, ইরওয়া
১৭৮৩, সহীহ
আল জামি‘ ৩০০৩।)
পাত্র-পাত্রীর
পরস্পর দেখা সাক্ষাৎ ও আলাপ চারিতার
কয়েকটি মূলনীতি-
(১) খালওয়াত (নির্জনে বা একাকী) হতে পারবে না।
(২) মুবাহ বিষয়
ব্যতীত অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে না
(৩) ফিতনা থেকে
নিরাপদ থাকতে হবে।যদি কামভাব জাগ্রত হওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে যায়,অথবা কোনো একজন উপভোগ করতে শুরু করে নেয়,তাহলে তখন সেটা হারাম হয়ে যাবে।
(৪) মহিলা নরম
ভাষায় কথা বলতে পারবে না।
(৫) মহিলা পূর্ণ
হেজাব তথা কবজা পর্যন্ত হাত,টাখনু পর্যন্ত পা,এবং মুখ ব্যতীত সমস্ত শরীর ঢেকে রাখবে
(৬) প্রয়োজন অতিরিক্ত
কথাবর্থা বলা যাবে না।
যখন এই সব শর্ত
পাওয়া যাবে, তখনই
মূলত পাত্র-পাত্রী পরস্পর আলোচনা ও দেখা সাক্ষাৎ করতে পারবে।
প্রিয় প্রশ্নকারী
দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) প্রস্তাবের
পূর্বে বায়োডাটা প্রেরণ করা যাবে। তবে ছবি প্রেরণ করা যাব না। বরং পাত্র পক্ষের কোনো
এক মহিলা সরাসরি পাত্রীকে দেখে আসবেন। আর প্রস্তাব দেয়ার পর যথাসম্ভব সরাসরি দেখার
চেষ্টা করা হবে। কেননা যে হেকমতে পাত্রী দেখার কথা বলা হচ্ছে,
সেটা একমাত্র সরাসরি দেখার মাধ্যমেই সম্ভব।
হ্যা কোনো কারণে (যেমন পাত্র-পাত্রী বিদেশে অবস্থানরত) যদি পাত্র-পাত্রীকে সরাসরি দেখা
সম্ভব না হয় তাহলে ভিডিওকলের মাধ্যমে উপরোক্ত শর্তাদির সাথে দেখা যেতে পারে। কেননা
ছবির তুলনায় ভিডিওর হুকুমে কিছুটা শীতিলতা রয়েছে। ছবি ভিডিও সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন-
2253
(২) বিনা প্রয়োজনে
রেষ্টুরেন্ট পা পার্কে পাত্র-পাত্রী দেখা উচিৎ না। কেননা এক্ষেত্রে উপরোক্ত শর্তাদির
কোনোটাই রক্ষা করা সম্ভব হবে না। মহিলা প্রয়োজন ব্যতীত ঘরের বাহিরে বের হবে না।এ সম্পর্কে
জানুন- 572
(৩)উপরোক্ত শর্তাদির
সাথে নিজ বাসা বা আত্মীয়র বাসা পাত্রপাত্রী দেখা যেতে পারে।
(৪)বিয়ের প্রস্তাবের
পর পাত্রীর বাসায় এসে মাহরামের উপস্থিতিতে পাত্র-পাত্রী পরস্পর পরস্পরকে দেখবে।অযথা
বেহুদা কথাবার্তা থেকে উভয় বেঁচে থাকবে।
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
১. প্রশ্নে
উল্লেখিত ছুরতে বিয়ের উদ্দেশ্যে মেইলের মাধ্যমে বায়োডাটা বা অন্যান্য জরুরী
তথ্যাদী পাত্রী নিজেই পাত্রকে দিতে পারবে তবে ছবি দেওয়া জায়েয নেই। যদিও সে ননমাহরাম
কিন্তু জরুরত হিসেবে ইসলাম এক্ষেত্রে রুখছত বা ছাড় দিয়েছে।
২. ফিতনার আশংকা না থাকলে
পাত্রী নিজেই বলতে পারবে ইনশাআল্লাহ। অন্যথায় তার পক্ষ থেকে অন্য কেউ বলবে।
৩. বিয়েতে দ্বীনের বিষয়কেই
প্রাধান্য দেওয়া উচিত। ইস্তেখারার পর আপনার অন্তর যেদিক প্রাধান্য দেয় আল্লাহর উপর ভরসা করে সেটিই ফায়সালা করা। তবে
পরিবারকে বুঝিয়ে তাদেরকে সাথে নিয়ে অগ্রসর হওয়াই কাম্য। এভাবে আমল করলে
ইস্তেখারা হয়ে যাবে। তবে পাত্র নিজেই না করে দিলে তা নিয়ে দু:চিন্তা করার কোন প্রয়োজন নেই। আল্লাহ তায়ালার নিকট কল্যাণের দোয়া করতে থাকবেন, যেন তিনি আপনার জন্য উত্তম ফায়সালা করেন। উল্লেখ্য যে, এই আমল করার জন্য শরীয়তে নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই।
রাত বা দিনের যেকোনো সময় তা করা যায়।