আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
200 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (0 points)
১/কাফিরদের জানমালের কি নিরাপত্তা আছে মুসলিমদের থেকে?

২/"খিলাফত না থাকার দরুণ যেহেতু আমান নেওয়ার সুযোগ নেই তাই বর্তমানে কাফিরদের জান মালের কোনো নিরাপত্তা নেই মুসলিমদের থেকে"-কথাটা কতোটা সত্য?

1 Answer

0 votes
by (589,680 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
যুদ্ধরত কাফির ব্যতীত সকল প্রকার কাফির, মুসলমানদের নিকট থেকে জানমালের নিরাপত্তা পাবে।

(২)
"খিলাফত না থাকার দরুণ যেহেতু আমান নেওয়ার সুযোগ নেই তাই বর্তমানে কাফিরদের জান মালের কোনো নিরাপত্তা নেই মুসলিমদের থেকে"-কথাটা পুরোপুরি সত্য নয়।বরং যদিও দারুল ইসলাম নেই তবে দারুল আমান রয়েছে।বাংলাদেশ দারুল আ'মান।

দারুল আমানের অর্থই হল,
যে দেশে সবাই নিরাপদ। মুসলিম অমুসলিম সবাই যেখানে আমান নিতে পারে।



খেলাফত বা ইসলামী শাসন ব্যবস্থা মানবজাতির শান্তি-শৃংখলার জন্য অপরিহার্য একটি বিষয়।
খেলাফত ব্যতীত দেশ ও পৃথিবীর শান্তি-শৃংখলা এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করা কখনো সম্ভব হবে না।
খেলাফতের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আদ্দুর মুখতার গ্রন্থে বর্ণিত আছে,
ﻭﻧﺼﺒﻪ ﺃﻫﻢ ﺍﻟﻮﺍﺟﺒﺎﺕ ،
فلذا ﻗﺪﻣﻮﻩ ﻋﻠﻰ ﺩﻓﻦ ﺻﺎﺣﺐ ﺍﻟﻤﻌﺠﺰﺍﺕ
উক্ত এ'বারতের ব্যখ্যা প্রদাণ করতে যেয়ে আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী বলেনঃ- 
ﻗﻮﻟﻪ
ﻭﻧﺼﺒﻪ ) ﺃﻱ ﺍﻹﻣﺎﻡ ﺍﻟﻤﻔﻬﻮﻡ ﻣﻦ ﺍﻟﻤﻘﺎﻡ ( ﻗﻮﻟﻪ ﺃﻫﻢ ﺍﻟﻮﺍﺟﺒﺎﺕ ) ﺃﻱ ﻣﻦ ﺃﻫﻤﻬﺎ ﻟﺘﻮﻗﻒ ﻛﺜﻴﺮ ﻣﻦ ﺍﻟﻮﺍﺟﺒﺎﺕ ﺍﻟﺸﺮﻋﻴﺔ ﻋﻠﻴﻪ ، ﻭﻟﺬﺍ ﻗﺎﻝ ﻓﻲ ﺍﻟﻌﻘﺎﺋﺪ ﺍﻟﻨﺴﻔﻴﺔ : ﻭﺍﻟﻤﺴﻠﻤﻮﻥ ﻻ ﺑﺪ ﻟﻬﻢ ﻣﻦ ﺇﻣﺎﻡ ، ﻳﻘﻮﻡ ﺑﺘﻨﻔﻴﺬ ﺃﺣﻜﺎﻣﻬﻢ ; ﻭﺇﻗﺎﻣﺔ ﺣﺪﻭﺩﻫﻢ ، ﻭﺳﺪ ﺛﻐﻮﺭﻫﻢ ، ﻭﺗﺠﻬﻴﺰ ﺟﻴﻮﺷﻬﻢ ; ﻭﺃﺧﺬ ﺻﺪﻗﺎﺗﻬﻢ ، ﻭﻗﻪﺭ ﺍﻟﻤﺘﻐﻠﺒﺔ ﻭﺍﻟﻤﺘﻠﺼﺼﺔ ﻭﻗﻄﺎﻉ ﺍﻟﻄﺮﻳﻖ ، ﻭﺇﻗﺎﻣﺔ ﺍﻟﺠﻤﻊ ﻭﺍﻷﻋﻴﺎﺩ ، ﻭﻗﺒﻮﻝ ﺍﻟﺸﻬﺎﺩﺍﺕ ﺍﻟﻘﺎﺋﻤﺔ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺤﻘﻮﻕ ; ﻭﺗﺰﻭﻳﺞ ﺍﻟﺼﻐﺎﺭ ﻭﺍﻟﺼﻐﺎﺋﺮ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﻻ ﺃﻭﻟﻴﺎﺀ ﻟﻬﻢ ، ﻭﻗﺴﻤﺔ ﺍﻟﻐﻨﺎﺋﻢ ﺍ ﻫـ (
খলিফা(প্রসিডেন্ট)নির্ধারণ করা সমস্ত মুসলমানের জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ওয়াজিব বিধান।
কেননা এই ইমাম নির্ধাণের উপর  শরীয়তের অনেক ওয়াজিব হুকুম বাস্তবায়িত হওয়া নির্ভর করে। যা খলিফা ব্যতীত কখনো বাস্তবায়িত হওয়া সম্ভব নয়।
এই জন্য শরহে আক্বাঈদে নাসাফীতে বর্ণিত আছে,মুসলমানদের জন্য একজন খলিফা নির্ধারণ করা অত্যাবশ্যকীয় বিষয় অর্থ্যাৎ ওয়াজিব। 
এবং অন্যান্য গ্রন্থ যেমনঃ- মুফতী ত্বাকী উসমানী রাহ, লিখিত 
"মেরে ওয়ালিদ মেরে শায়েখ" কিতাবে মুফতী শফী রাহ এর উদ্দূতিতে এটাকে ফরযে কেফায়া বলা হয়েছে। 
ইমাম তিনি, 
যিনি শরয়ী বিধি-বিধান ও ন্যায়নীতি সংক্রান্ত আদেশ/সরকারী ফরমান জারি করবেন।
এবং বিভিন্ন প্রকার দন্ডবিধি বাস্তবায়ন করবেন।
অন্যায়-অবিচারকে দেশ থেকে বিতারিত করবেন অর্থ্যাৎ দুর্নিতি দমন করবেন।
শত্রুর বিরোদ্ধে সেনাবাহিনী (প্রস্তুত রাখবেন ও প্রয়োজনে) মোতায়েন করবেন।
এবং জাকাতের মাল জনগণের কাছ থেকে উসূল করবেন।
এবং তিনি বিদ্রোহী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীএবং চোর-ডাকাতদের সংশোধন করবেন ও তাদের কুকর্ম থেকে দেশকে রক্ষা করবেন।
এবং তিনি জুমুআহ ও ঈদের নামায আদায় করবেন।
এবং বিভিন্ন বিষয়ে বাদী-বিবাদীর  সাক্ষ্য গ্রহণ করে সুষ্ট বিচার সম্পাদন করবেন।
অভিবাবকহীন ছোট বালক-বালিকার (লালন-পালন সহ)প্রয়োজনে তাদের বিবাহের ব্যবস্থা করবেন।
এবং গনিমতের মাল (ও অন্যান্য ভাতা)জনগনের মাঝে ইনসাফের সাথে বন্টন করে দিবেন।

সু-প্রিয় পাঠকবৃন্দ!
মুসলিমদের এত গুরুত্বপূর্ণ কাজ যে জিনিষের উপর নির্ভরশীল সে জিনিষ কি অধ্য মুসলিমদের জন্য অপরিহার্য হবে না?
দুর্রে মুখতারে আরও বর্ণিত রয়েছে..
 ﻗﻮﻟﻪ ﻓﻠﺬﺍ ﻗﺪﻣﻮﻩ ﺇﻟﺦ ) ﻓﺈﻧﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻞﻩ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺗﻮﻓﻲ ﻳﻮﻡ ﺍﻻﺛﻨﻴﻦ ﻭﺩﻓﻦ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﺜﻼﺛﺎﺀ ﺃﻭ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻷﺭﺑﻌﺎﺀ ﺃﻭ ﻳﻮﻡ ﺍﻷﺭﺑﻌﺎﺀ ﺡ ﻋﻦ ﺍﻟﻤﻮﺍﻫﺐ ، ﻭﻫﺬﻩ ﺍﻟﺴﻨﺔ ﺑﺎﻗﻴﺔ ﺇﻟﻰ ﺍﻵﻥ ﻟﻢ ﻳﺪﻓﻦ ﺧﻠﻴﻔﺔ ﺣﺘﻰ ﻳﻮﻟﻰ ﻏﻴﺮﻩ ﻁ (
ইসলামে খলিফা নির্ধারণ এত জরুরী একটা বিষয় যে,নবীজী সাঃ সোমবারে মৃত্যু বরণ করেন,এবং উনাকে মঙ্গলবার রাত বা 
(মঙ্গলবার দিবাগত)বুধবার রাত অথবা বুধবার দিনে দাফন করা হয়।
(অথচ নবীজী সাঃ কে দাফনের মত মহা-গুরুত্বপূর্ণ কাজ সাহাবায়ে কেরামদের সামনে অদ্বিতীয় ছিল।
এতদসত্বে ও তারা পূর্বে হযরত আবু বকরকে খলিফা নির্ধারণ করেন তারপর তারা নবীজী সাঃ এর দাফনের ব্যবস্থা করেন)
এই সুন্নাত এখন পর্যন্ত ও মুসলমানদের মধ্যে জারী রয়েছে,কোন খলিফা মৃত্যুবরন করার পর দাফনের পূর্বে অন্য খলিফাকে নির্ধারণ করা হয়।
রদ্দুল মুহতারের উপরোক্ত 
আলোচনা থেকে আমাদের বুঝা উচিৎ যে, মুসলমানদের জন্য একজন খলিফা নির্ধারণ কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ।
(ফাতওয়ায়ে শামী, সালাত অধ্যায়, ইমামত উপ-পরিচ্ছদ পৃঃ ১/৫৪৮)
শরহে আক্বাঈদে নাসাফী-তাফতাযানী- পৃ-২০৫।
আল্লাহ-ই ভালো জানেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...