আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
138 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (13 points)
আসসালামু আলাইকুম

এক বোনের প্রশ্ন আমি হুবুহু তুলে ধরছি

" আমার সন্তান নাই তাই স্বামী ২য় বিয়ে করতে চান। আমার এতে অসুবিধা নাই। কষ্ট লাগলেও আল্লাহ যেহেতু অধিকার দিয়েছেন উনাকে আমি এতে সম্মতি দিয়েছি। স্বামী যে পাত্রী ঠিক করে রেখেছে আমি কিছুই জানতাম না। যাই হোক আল্লাহ ভরসা। আমি মৌখিক সম্মতি দিয়ে দিয়েছি।
কিন্তু আমার স্বামী আর অই পাত্রী পক্ষ কিছু আইনী কাগজ লিখে এনে আমাকে তাতে সাইন করার জন্য ফোর্স করছে। আমি সাইন করতে চাচ্ছিনা দেখে অনেক রাগারাগি করছে। কাগজে লিখা যে সে বিয়ে করে আলাদা থাকতে পারবে। এখন আমার কি এতে সাইন করা উচিত? আমি তো সম্মতি দিয়েছি যে সে বিয়ে করতে পারবে ইনসাফ করতে পারলে।

আমার স্বামীর মামারা আমাকে সাপোর্ট করছেন। উনারা মুরব্বি মানুষ। উনাদের ভাগ্নের ব্যবহার সব দেখছেন। উনারা আমাকে কাগজে সাইন দিতে নিষেধ করছেন। যার কারণে আমার স্বামী আমাকে এখন উনার মামাদের সাথে কথা বলতে নিষেধ করেছেন। এখন আমার কি স্বামীর কথামত কথা না বলা উচিত?? স্বামী নিষেধ করছেন কারণ উনারা আমাকে সাপোর্ট করছেন। আবার আমার স্বামী আমাকে আমার বাপের বাড়িতে কাউকে কিছু জানাতেও নিষেধ করছেন।এদিকে তিনি দিন দিন আমার সাথে অত্যধিক রাগারাগি করছেন। আমি কোনো দিক থেকে মানসিক সাপোর্ট না পেয়ে দিশেহারা। কি করতে হবেও বুঝতেছিনা।"""

প্লিজ খুব দরকার উত্তরগুলো জানা

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://www.ifatwa.info/6683 নং ফাতওয়ায় বর্ণিত রয়েছে , শরীয়তের বিধান মতে একাধিক স্ত্রীর মাঝে যদি ইনছাফ করতে পারে,তাহলে প্রয়োজনের স্বার্থে একাধিক বিবাহ করতে পারবে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন

فانكحوا ما طاب لكم من النساء مثنى وثلاث ورباع

তোমরা বিবাহ করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমার ভালো লাগেদুই, তিন অথবা চার। আর যদি আশঙ্কা করো যে সুবিচার করতে পারবে না, তাহলে একজনকে (বিয়ে করো)।(সুরা : নিসা, আয়াত-৩)

দ্বিতীয় বিয়ে করার ইসলামী শর্ত বেশ কঠিন অনেক কড়া। আগের স্ত্রীর সব ধরনের হক আদায়ের পর নতুন বিয়ের পরেও সমান তালে সব অধিকার পালন করার আত্মবিশ্বাস থাকলেই কেবল যৌক্তিক কারণে দ্বিতীয় বিয়ে করা যায়।

قال اللہ تعالی:فإن خفتم ألا تعدلوا فواحدة الآیة (سورہ نسا، آیت:۳)

 আল্লাহতায়ালা বলেন, একাধিক বিয়ের সুবিধা যাদের আছে, তারা যদি সম অধিকার বজায় রাখার ক্ষেত্রে ভীত হও, তাহলে এক বিয়ে পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাক।

وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىِّ ﷺ قَالَ : «إِذَا كَانَتْ عِنْدَ الرَّجُلِ امْرَأَتَانِ فَلَمْ يَعْدِلْ بَيْنَهُمَا جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَشِقُّه سَاقِطٌ». رَوَاهُ التِّرْمِذِىُّ وَأَبُوْ دَاودَ وَالنَّسَائِىُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِىُّ

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কোনো পুরুষের দু’জন সহধর্মিণী থাকে আর সে তাদের মধ্যে যদি ন্যায়বিচার না করে, তবে সে কিয়ামতের দিন একপাশ ভঙ্গ (অঙ্গহীন) অবস্থায় উঠবে। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/6683

একাধিক স্ত্রীর মাঝে দুই বিষয়ে সমতা রক্ষা করা অতীব প্রয়োজন। স্ত্রীদের সঙ্গে রাতযাপন ও ভরণ-পোষণ। এ দুই অধিকার সব স্ত্রীর ক্ষেত্রে সমানভাবে স্বামীকে পালন করে যেতে হবে। কোন স্ত্রী সুন্দর বা অসুন্দর, আর কোনটি কুমারী বা বিধবা তা পার্থক্য করা যাবে না।

কিন্তু কোনো স্ত্রীর প্রতি মনের ভালোবাসা বেশি হওয়া, আবার অন্য স্ত্রীর প্রতি কম হওয়া তা সমতার অন্তর্ভুক্ত নয়। কেননা, এটি মনের বিষয়, আর মনের ওপর কারও কোনো অধিকার নেই। একাধিক স্ত্রীর ক্ষেত্রে শুধু রাতযাপন ও খরচাপাতি এ দুই বিষয়ে সমতা ধর্তব্য। এটাই হলো একাধিক স্ত্রীর মধ্যে সমতা রক্ষার ইসলামি শরিয়তের বিধান।

 হাদিসে আছে, হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) স্ত্রীদের মধ্যে পালাবণ্টন করতেন এবং ন্যায়বিচার করতেন। আর বলতেন, হে আল্লাহ! আমি আমার শক্তি-সামর্থ্যানুযায়ী পালাবণ্টন করলাম। সুতরাং যাতে শুধু তোমার ক্ষমতা রয়েছে, তাতে আমার শক্তি নেই। কাজেই তাতে তুমি আমাকে ভর্ৎসনা করো না। (তিরমিজি : ১১৭০, আবু দাউদ : ২১৩৬)।

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

১ম স্ত্রী থাকার পরেও ২য় বিবাহ করার জন্য ১ম স্ত্রীর অনুমতি নেয়া শরীয়তের বিধান অনুযায়ী আবশ্যক নয়। তবে একাধিক স্ত্রীর মাঝে দুই বিষয়ে সমতা রক্ষা করা, স্ত্রীদের সঙ্গে রাতযাপন ও ভরণ- পোষণ এর ক্ষেত্রে সমতা রক্ষা করা আবশ্যক। সুতরাং আপনার জন্য উচিত হবে উভয় পরিবারের মুরব্বিদের মাধ্যমে দুই স্ত্রীর মাঝে সমতা বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করা। যদি আপনার স্বামী সমতা বজায় রাখতে সক্ষম হোন তাহলে তার জন্য দ্বিতীয় বিয়ে করা জায়েয আছে অন্যথায় নাজায়েয। আপনার মামা শশুর আপনার মাহরাম নয়। বিধায় তাদের সাথে পর্দা রক্ষা করে চলতে হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by
উস্তাদ উত্তর টা যদি একটু জলদি দিতেন প্লিজ
by (58,830 points)
উত্তর দেওয়া হয়েছে

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...