আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
143 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
আসসালমুআলাইকুম হুজুর,

১. হুজুর মনে মনে সর্ত তালাক এর ভাবনা হচ্ছে আর সেই সময় মুখের ভিতর জিহব্বা টা একটু নেড়েছি। কিন্তু কোনো উচ্চরণ করিনি। এক্ষেত্রে কি কোনো সর্ত তালাক হবে??

২. হুজুর ফেস বুক এ একটা ফটো তে লেখা দেখছিলাম নিজের ভবিষ্যত্ জানতে ক্লিক করুন , আমি ক্লিক করে সঙ্গে সঙ্গে ব্যাক করে দিয়েছি আমার ঈমান চলে যাবে না তো?
৩. ফেস বুক এ একটা ভিডিও দেখেছিলাম একটা কালো মেয়ে একটা ফর্সা লোকের দাড়িতে যত্ন করছে আমি বললাম কি ভালোবাসা, দিয়ে আমার স্ত্রী বলছে লাইক বা ফলোয়ার বাড়ানোর জন্য এমন করে। দিয়ে আমার ভয় হয়ে জাই ঈমান চলে যাবে বলে । দিয়ে স্ত্রী কে দিয়ে তওবা করে নিয়েছি আমার স্ত্রীর বা আমার ঈমান চলে যায়নি তো?
৪. আমার স্ত্রী বলছে আমাকে ঈমান নিয়ে আর কোনো প্রশ্ন করবে না , আমি বাধ্য না তোমার সব প্রশ্নের উত্তর দিতে। হুজুর এই কথার জন্য ঈমান চলে যাবে না তো? বা কোনো তালাক হবে না তো?
৫. হুজুর আমার কে রেগে এক থাপ্পর মেরেছি, দিয়ে স্ত্রী বলছে শাস্তি দিলে আল্লাহ দিবে তুমি মারছো কেনো? এই কথা শুনে আমার খুব রাগ হয় দিয়ে আবার মেরেছি। আমি যখন বুঝতে পারলাম আমার স্ত্রী অনেক বড় কথা বলছে , তখন আমি আমার স্ত্রীর কাছে ক্ষমা চেয়েছি । হুজুর আমি আল্লাহর কাছে মাফ চেয়েছি। স্ত্রীর কাছে ক্ষমা চেয়েছি আমি মাফ পাবো তো হুজুর?
৬. হুজুর স্ত্রীর পা ধরে ক্ষমার চাইলে কি ঈমান চলে যাবে? আমি এমনি নরমালি পা ধরে ক্ষমা চেয়েছি এর জন্য ঈমান চলে যাবে না তো?

৭. হুজুর আর একটা বিষয় জানতে চাই, মায়ের কোনো কাপড় এর গন্ধ শুকে কেউ যদি হস্তমৈথুন করে তাহলে কি হুরমত হবে?

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
https://www.ifatwa.info/75876/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
শরীয়তের বিধান হলো, মুখে উচ্চারণ না করে শুধু মনে মনে তালাক দিলে বা মনে মনে শর্ত যুক্ত তালাক দিলে তাহা পতিত হবেনা।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفٰى عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ اللهَ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي مَا حَدَّثَتْ بِه„ أَنْفُسَهَا مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَتَكَلَّمْ
قَالَ قَتَادَةُ إِذَا طَلَّقَ فِي نَفْسِه„ فَلَيْسَ بِشَيْءٍ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ আমার উম্মতের হৃদয়ে যে খেয়াল জাগ্রত হয় তা ক্ষমা করে দিয়েছেন, যতক্ষণ না সে তা কার্যে পরিণত করে বা মুখে উচ্চারণ করে।

ক্বাতাদাহ (রহ.) বলেনঃ মনে মনে তালাক দিলে তাতে কিছুইতালাক হবে না। [বুখারী শরীফ ৫২৬৯.২৫২৮] আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭৮)

অন্য এক হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ لِي عَنْ أُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ صُدُورُهَا، مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَكَلَّمْ ".

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (আমার বরকতে) আল্লাহ আমার উম্মতের অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) মাফ করে দিয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তা কাজে পরিণত করে অথবা মুখে বলে। (সহীহ বুখারী ২৫২৮)

আরো জানুনঃ- 

তালাকের বা শর্ত যুক্ত তালাকের বাক্য বলার ক্ষেত্রে জিহবা ঠোঁট নাড়িয়ে এমন ভাবে উচ্চারণ করতে হবে,যাতে নিজ কান পর্যন্ত আওয়াজ আসে।

তালাক নিয়ে মনে মনে কথা বলার সময় তালাকের উদ্দেশ্যে কোন অঙ্গ যেমন হাত, মাথা, চোখ নাড়ালে তালাক হয়না।

অতি স্বল্প স্বরে হলেও নিজ কানে শুনতে হবে।

নিজ কানে না শুনলে জিহ্বা বা ঠোঁট নাড়িয়ে বললেও তালাক হবে না।

উল্লেখ্য, নিজ কানে আসার মতো উচ্চারণ সত্ত্বেও এখানে ফ্যানের আওয়াজ বা অন্য কোনো প্রতিবন্ধকতার কারনে নিজ কানে তালাকের আওয়াজ না আসলে সেক্ষেত্রে তালাক হবে।

★ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,

وأما حد القراءة فنقول تصحيح الحروف أمر لا بد منه فإن صحح الحروف بلسانه ولم يسمع نفسه لا يجوز وبه أخذ عامة المشايخ هكذا في المحيط وهو المختار. هكذا في السراجية وهو الصحيح. هكذا في النقاية 

নামাযের তেলাওয়াতের জন্য হরফ গুলি পরিস্কার ভাবে উচ্ছারিত হওয়া শর্ত। যদি হরফগুলি উচ্ছারিত হয়,তবে নিজে না শুনে তাহলে সেই তেলাওয়াত/কেরাত নামায বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য যথেষ্ট হবে না।এটাই সাধারণ মাশায়েখগণের সিদ্ধান্ত।(মুহিত)এবং এটাই পছন্দনীয় মত।এমনটাই সিরাজিয়্যাহ নামক কিতাবে বর্ণিত রয়েছে।এবং এটাই বিশুদ্ধতম মত।(নুকায়া) অর্থাৎ  নিজে শুনতে হবে,নতুবা নামায বিশুদ্ধ হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৬৯)

উচ্ছস্বরের সর্বনিম্ন পরিমাণ হল,এক কাতার পরের লোক কর্তৃক শ্রবণ করা।আর উচ্ছস্বরের সর্বোচ্ছ কোনো পরিমাণ নেই।তবে যাতে অন্যর কষ্ট না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
এবং নিম্নস্বরের সর্বনিম্ন পরিমাণ হল,জবান নাড়িয়ে হরফকে উচ্ছারণ করা।আর সর্বোচ্ছ পরিমাণ হল নিজ কর্ণ দ্বারা শ্রবণ করা বা পাশের জন কর্তৃক শ্রবণ করা।এরচেয়ে কম বেশ করা যাবে না।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- 2570

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
এক্ষেত্রে কোনো তালাক হবেনা। 
শর্তযুক্ত তালাকও হবেনা।

(০২)
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার ঈমান চলে যায়নি। 

(০৩)
এক্ষেত্রে আপনার স্ত্রীর বা আপনার ঈমান চলে যায়নি।

(০৪)
এই কথার জন্য ঈমান চলে যাবেনা।কোনো তালাক হবেনা।

(০৫)
আপনার স্ত্রী আপনাকে মাফ করে দিলে আপনি মাফ পাবেন।

(০৬)
এর জন্য ঈমান চলে যাবেনা।

(০৭)
এক্ষেত্রে হুরমতে মুসাহারাত প্রমানিত হবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...