ওয়া
আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
সমাধানঃ-
মহাগন্ত্র আল-কোরআন কে বিনা অজুতে স্পর্শ করা নাজায়েয। এ সম্পর্কে কোরআনে কারীমের যে আয়াত দ্বারা সাধারণত দলীল পেশ করা হয়ে থাকে,সেই আয়াত হল নিম্নরূপ-
ﺇِﻧَّﻪُ ﻟَﻘُﺮْﺁﻥٌ ﻛَﺮِﻳﻢٌ
নিশ্চয় এটা সম্মানিত কোরআন,
ﻓِﻲ ﻛِﺘَﺎﺏٍ ﻣَّﻜْﻨُﻮﻥٍ
যা আছে এক গোপন কিতাবে,
ﻟَّﺎ ﻳَﻤَﺴُّﻪُ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟْﻤُﻄَﻬَّﺮُﻭﻥَ
যারা পাক-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ একে স্পর্শ করবে না।
ﺗَﻨﺰِﻳﻞٌ ﻣِّﻦ ﺭَّﺏِّ ﺍﻟْﻌَﺎﻟَﻤِﻴﻦَ
এটা বিশ্ব-পালনকর্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ।
(সূরা ওয়াক্বেয়া-৭৭)
এই আয়াত সমূহের ব্যাখ্যা সম্ভবত শরীয়তে ইসলামীর জটিল-কঠিন মাস'আলা সমূহের একটি।আল্লাহর বাণী- “যারা পাক-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ একে স্পর্শ করবে না।” দ্বারা আমাদের সামনে বিদ্যমান কোরআনে কারীম উদ্দেশ্য কি না? এ সম্পর্কে অনেক অনেক মতপার্থক্য রয়েছে।তবে এই সমূহ মতপার্থক্যর মধ্যে এটাই বিশুদ্ধ যে,অত্র আয়াতে ঐ কোরআন-ই উদ্দেশ্য যা আমাদের সামনে বিদ্যমান।সুতরাং আয়াতের অর্থ হবে, 'তোমরা অপবিত্র অবস্থায় তোমাদের সামনে বিদ্যমান কোরআন-কে স্পর্শ করবে না।'
রাসূলুল্লাহ সাঃ এর যামানা এবং প্রথম দুই খলিফার যামানায় কোরআন বর্তমান সময়ের মত লিপিবদ্ধ ছিলনা।অথচ তখনই কোরআনের এ আয়াত নাযিল হয়েছে।তাই বুঝা গেল, যেখানেই কোরআন লিখা থাকবে,সে জিনিষকে স্পর্শ করা যাবে না।
আমাদের সহসাই যে প্রশ্নটা জাগে, তাহলে গিলাফ বা কিছুর আবরণ দ্বারা স্পর্শ করা যাবে কি? সে প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় যে,
- একদল উলামায়ে কেরাম বলেন, অপবিত্র ব্যক্তি কোরআনকে স্পর্শ করতে পারবে না।চায় গিলাফ বা কিছুর আবরণ দ্বারা হোক না কেন?ইহা মুহাম্মদ ইবনে আলী রাহ,আ'তা রাহ,তাউস রাহ,সালিম রাহ,ক্বাসিম রাহ,আব্দুর রহমান ইবনে আসওয়াদ রাহ,ইবরাহিম রাহ,সুফইয়ান রাহ,ইমাম মালিক রাহ,শাফেয়ী রাহ মহোদয়গণের মত ও মাযহাব।(তাফসীরে বাসিত-২১/২৬১)
- অন্য একদল উলামায়ে কেরামের মতে গিলাফ বা কিছুর আবরণ দ্বারা কুরআনকে স্পর্শ করা যাবে।ইহা ইমাম আবু হানিফা রাহ সহ আরো কিছু ফুকাহায়ে কেরামের মাযহাব।
গিলাফ বা আবরণ মূলত সেটাই যা কুরআনকে ঢেকে ফেলবে।কিন্তু সেন্সর গ্লাস মূলত কুরআনকে ঢাকে না।যেন মনে হয় কাগজে লিখিত কুরআনই আমাদের দিকে থাকিয়ে আছে।তাই কুরআনের সম্মানার্থে সেন্সর গ্লাসের উপর দিয়ে স্পর্শ করাও উচিৎ হবে না।
এই মাসআলা কে নিয়ে মানহাযগত ইখতেলাফ বলতে গেলে ইখেলাফের চুড়ান্ত সীমায়।কেউ কেউ তো এমন ও বলেছেন যে,পূর্বে বর্ণিত সূরা ওয়াক্বেয়ার ৭৭ নং আয়াতের অর্থ হল,এটা এমন এক কুরআন যাকে লৌহে মাহফুজে ফিরিস্তাগণ ব্যতীত আর কেউ স্পর্শ করতে পারে নি।বিধায় এ অর্থ অনুযায়ী আমাদের সামনের কুরআনকে বিনা অজুতে স্পর্শ করা জায়েয রয়েছে।কেননা তখন এ অায়াত নাজায়েয হওয়ার পক্ষে দলীল থাকবে না। আরো জানতে ভিজিট করুন-
788