আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
272 views
in ওয়াসওয়াসা by (12 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম হুজুর,

আমি ওয়াসওয়াসা আক্রান্ত কিনা জানিনা।
তবে আমার রোজ প্রচুর ওয়াসওয়াসা হয়। সকাল বিকাল সবসময় মনের ভিতর শয়তান ডিভো*** আর ইমান নিয়ে ওয়াসওয়াসা দিয়ে যাচ্ছে।

প্রশ্ন ১: গতদিন রাতে মনে মনে চিন্তা করতেছিলাম আর মনে মনে কথা বলতে ছিলাম যে,
বিয়া করার সময় যখন কবুল বলতে দুইজন সাক্ষি লাগছিলো তাহলে তোমাকে ডিভো**  দিলাম বলার সময় তাহলেও তো দুজন সাক্ষী থাকা দরকার।

আমি এসব কথা মনে মনে বলছিলাম। আমার ৯৯% মনে হয় এসব মনের কথা কানে শোনা যায় নায়।কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ সন্দেহ তৈরি হইছে যে মনে মনে যে সব কথা বলতে ছিলাম তা কি কানে শোনা যাচ্ছিলো নাকি বা মনে মনে বলা কথা কানে শুনছিলাম নাকি। আসলে আমি এসব ডিভো** টাইপের কোন কথা কানে শুনতে চাই না। কিন্তু মনে মনে সারাক্ষণ উল্টো পাল্টা কথা আসতে থাকে।
ঠোট আর জিহ্বা লাড়তে থাকি মনে মনে কথা বলি যখন। তখন হঠাৎ সন্দেহ তৈরি হয় ঠোট আর জিহ্বা লেড়ে যখন মনের কথা বলছিলাম তা কি কানে আবার কানে শোনা গিয়েছিলো নাকি।
হুজুর এর জন্য কি কোন সমস্যা হবে???
হুজুর আমার কথা গুলা দেখে কি আপনার মনে হয় আমি অনেক ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত???

প্রশ্ন ২ : হুজুর আমার মনের ভিতর রোজ প্রায় সময় ডিভো*** ফতোয়া গুলা মনের ভিতর চলতে থাকে৷ মনে মনে কথা বলতে থাকি। মনে মনে কথা বলার সময় আরো বেশি দুশ্চিন্তায় পড়ে যাই যে মনে মনে কথা বলার সময় কোন বিন্দুমাত্র শব্দ উচ্চারণ হয়ে আমার কানে শোনা গেলো নাকি। কেউ কোন ডিভো*** এর কোন কাহিনি আমার সামনে বলতে শুরু করলে আমি না শোনার ভান করার চেষ্টা করি। কোন মুভি বা সিনেমাতে ওসব শব্দ কেউ বললে গুনগুন শব্দ করে আমি এরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। কারো সাথে কথা বলতে গেলে চলে যাওয়া, বাসায় যাওয়া শব্দ গুলা কম বলতে চেষ্টা করি।।আর ওসব বললেও চিন্তায় পড়ে যাই।
হুজুর লজ্জার ভয়ে আমি ডাক্তার দেখাই না।

হুজুর আমার কথা গুলা পড়ে মনে হয় আমার বিবেক বুদ্ধি লোপ পেয়েছে?
আমি কি ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত???

প্রশ্ন ৩: হুজুর আমি ডিভো*** কোন শব্দ মনে মনেও আনতে চাই না৷৷  আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে শয়তান আমাকে রোজ মনে ভাবায়। মনে মনে হাবিজাবি কথা বলায়। আমি চেষ্টা করেই যাচ্ছি তারপরও শয়তান আমাকে বার বার মনে মনে ওসব শব্দ মনে মনে কথা বলায়। আমি মনে আনতেও চাই না কোনদিন।।। হুজুর আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে শয়তান রোজ মনে মনে এসব শব্দ গুলা কথা বলায়।

হুজুর আমার প্রবল ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে শয়তান যদি কখোনো আমার মুখ দিয়ে উচ্চারণ করিয়ে দেয়, আমার ক্ষেত্রে তখন শরিয়তের বিধান কি হবে হুজুর???
আমার জন্য শরিয়তে কোন ছাড় আছে??

প্রশ্ন ৪: ডিভোর্স এর জন্য কি ১০০% নিশ্চিত হওয়া জরুরি???
 যদি ৯৯% নিশ্চিত এর মধ্যে ১% সন্দেহ থাকে তাহলে কার্যকর হবে???

1 Answer

0 votes
by (573,660 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


উকবাহ ইবনু আ’মির রাযি. বলেন,

لاَ يَجُوزُ طَلاَقُ الْمُوَسْوِسِ

‘ওয়াসওয়াসা সম্পন্ন (সন্দেহের বাতিকগ্রস্ত) ব্যক্তির তালাক কার্যকর হয় না।’ 
(সহিহ বুখারী, অধ্যায় ৬৮)

চার মাযহাব সম্ভলিত সর্ববৃহৎ ফেকহি গ্রন্থ "আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যা"গ্রন্থে লিপিবদ্ধ রয়েছে যে,
نَقَل ابْنُ عَابِدِينَ عَنِ اللَّيْثِ: فِي مَسْأَلَةِ طَلاَقِ الْمُوَسْوَسِ  أَنَّهُ لاَ يَجُوزُ طَلاَقُ  الْمُوَسْوَسِ  ، قَال: يَعْنِي الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ
وَنَقَل ابْنُ الْقَيِّمِ: إِنَّ الْمُطْلِّقَ إِنْ كَانَ زَائِل الْعَقْل بِجُنُونٍ أَوْ إِغْمَاءٍ أَوْ وَسْوَسَةٍ لاَ يَقَعُ طَلاَقُهُ،  قَال: وَهَذَا الْمَخْلَصُ مُجْمَعٌ عَلَيْهِ بَيْنَ عُلَمَ ـ اءِ الأُْمَّةِ

- رِدَّةُ الْمُوَسْوَسِ: 
٢١ - إِنْ تَكَلَّمَ الْمُوَسْوَسُ  بِكَلاَمٍ يَقْتَضِي الرِّدَّةَ لَمْ يَكُنْ فِي حَقِّهِ رِدَّةٌ. صَرَّحَ بِذَلِكَ الْحَنَفِيَّةُ، يَعْنُونَ الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ
ইবনে আবেদিন শামী রাহ বর্ণনা করেন,ওয়াসওয়াসা গ্রস্থ ব্যক্তি -যার বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে বসেছে-তার তালাক গ্রহণযোগ্য নয়।
ইবনুল কাইয়িম রাহ বলেন, যদি তালাক প্রদানকারী ব্যক্তি ওয়াসওয়াসা,বেহুশি বা পাগলাটের দরুণ বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে থাকে, তাহলে তার তালাক গ্রহণযোগ্য হবে না। এর উপর সমস্ত উলামাদের ঐক্যমত রয়েছে।
(আল-মাওসু'আতুল ফেকহিয়্যাতুল কোয়েতিয়্যাহ-৪৩/১৫৬)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/835

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন,

(০১)
তালাকের ওয়াসওয়াসার দরুন যদি কাহারো বিবেকবুদ্ধি লোপ পায়,বিবেকবুদ্ধিতে যদি সমস্যা চলে আসে,সেক্ষেত্রে তার জন্য তালাকের ওয়াসওয়াসা এক ধরনের রোগ।

★প্রশ্নের বিবরন পড়ে যতটুকু বুঝেছি,সেক্ষেত্রে আপনি ওয়াসওয়াসার রুগী নন,বলেই মনে করছি।

তদুপরি ডাক্তারের পরামর্শ নেয়ার চেষ্টা করবেন। 

(০২)
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার বিবেক বুদ্ধি লোপ পায়নি।
জানা মতে আপনি ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত নন।

(০৩)
আপনি স্বশরিরে কোনো দারুল ইফতায় যোগাযোগ করুন,অথবা সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এর কাছে যান

তারা যদি আপনার অবস্থা দেখে বলে দেয় যে আপনি ওয়াসওয়াসার রুগী,সেক্ষেত্রে আপনার জন্য ছাড় রয়েছে।

(০৪)
যদি ৯৯% নিশ্চিত এর মধ্যে ১% সন্দেহ থাকে,সেক্ষেত্রে যেহেতু পূর্ণ ভাবে নিশ্চিত হয়নি, সন্দেহ রয়েই গেছে, তাই এক্ষেত্রে তালাক কার্যকর হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...