আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
117 views
in পবিত্রতা (Purity) by (10 points)
edited by
আসসলামুয়ালাইুকম,
হুজুর আমার কিছু প্রশ্ন,  হুজুর একজন কিভাবে বুঝবে সে মাঝুর? প্রস্রাবের ক্ষেত্রে? আজকে গোসল করলাম। গোসল করে যখন ২-৩ মিনিট পর লিঙ্গ টিস্যু দিয়ে মুছি সামান্য হালকা পানি দেখতে পাই। তারপর সেটা মুছে ফেলি। তারপর ৪-৫ মিনিট আবার অপেক্ষা করে দেখলাম আবারও পানি বের হলো। হাতে ধরে দেখলাম হয়ত প্রস্রাব হবে। তারপর চিন্তা করলাম আবার দেখব তারপর ৩-৪ মিনিট পর আবার পানি বের হলো। তারপর আমি উপরে একটা টিস্যু দিয়ে চলে আসি। এখন এরকম সবসময় হয় কিনা সেটা তো আমি জানি না। আমা মাঝুর হতে হলে কি ২-৩ মিনিট পরপর দেখতে হবে যে বের হচ্ছে কিনা? নাকি আমি একবারেই ৩০ মিনিট পরীক্ষা করে দেখি যদি বের হতে থাকে ৩-৪ মিনিট পরপর তাহলে মাজুর হিসেবে ধরে নিব? নামাজ কিভাবে পড়ব বুঝতেছি না। কারন আমি কাপড় অপবিত্র না হওয়ার জন্য বারবার টিস্যু দিয়ে রাখি। বারবার কাপড় পাল্টানো তো আর সম্ভব না। আর যদি বেরও হয় সেটা টিস্যুর দ্বারা শুকিয়ে যাবে। আপনাদের কিছু পরামর্শ দেন,প্লিজ। আমার অনেক টেনশন হচ্ছে।

এবার আসি মুল প্রশ্নে,
১/ উপরের প্রশ্নে আমি যখন গোসল করি ঝর্নাতে তখনও হয়ত প্রস্রাব বের হতে পারে। এখন কথা হলো আমার গোসল করতে প্রায় ৫-১০ মিনিট লাগে। আর গোসলের শেষে আমি কোমড়ের নিচের টা বেশি করে ধৌত করি যাতে প্রস্রাব বের হলেও চলে যায়। তারপর গা মোছে ৩/৪ মিনিট পর টিস্যু দিয়ে লিঙ্গ মুছার পর মাঝেমাঝে হালকা পানি এসে বের হয়ে থাকে। আমার প্রবল ধারনা হয় টিস্যু দিয়ে মুছার সাথে সাথেই বের হয়। কারন টিস্যু দিয়ে মুছে ফেললে ওখানে পানি থাকার কথা না। এখন এটা নিয়ে বেশি টেনশন হয় হুজুর আমার টাওয়াল, নাভি থেকে নিচে পর্যন্ত নাপাক হয়ে গেল কিনা।

(প্রায় দেড়ঘন্টা  মত অপেক্ষা করার পরও দেখলাম বের হচ্ছে, এখন কি করব?)
(আমার যা মনে হচ্ছে,,পানি দিলেই এই সমস্যাটা হয়। যদিও শুকনা থাকতে চেক করে দেখি ১০-১২ মিনিট কিছুই বের হয় না।)
২/ হুজুর আমি যদি টিস্যু দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করে পানি না দিয়ে, ভালো করে বড় একটা টিস্যু নুনুতে দিয়ে ঘন্টাখানেক অপেক্সা করে নামাজের আগে ওটা ফেলে দিয়ে আরেকটা নতুন টিস্যু ব্যবহার করব? আমার ভয় হয় যে, নাপাকি যদি এক দিরহাম এর বেশি হয়ে যায় নুনুতে। এটা নিয়ে মানষিক সমস্যাই আছি হুজুর।

৩/ আমি জানি, অদি, মজি বা মনি এগুলো আঙ্গুল দিয়ে ঘষে ঘষে ধৌত করা লাগে। এখন কথা হলো তিনবার ধৌত করার সময়, একবার ঘষে ধৌত করার পর কি আবার নতুন করে তিনবার হাত ধৌত করতে হবে এবং দ্বিতীয়বার আবার ধৌত করতে হবে? নাকি তিনবার ঘষে ঘষে ধৌত করে শেষে হাত ধৌত করলে হবে?

৪/ তিনবারই কি ধৌত করা কি শর্ত? নাকি সাবান দিয়ে একবার ধৌত করলেই হয়ে যাবে?

৫/ হুজুর, মযি বা ওদি যদি লজ্জাস্থানের মাথায় আসতেই অন্যদিকে ছড়িয়ে যাওয়ার আগে টিস্যু দিয়ে মুছে ফেলি তাহলে কি শুধু পানি দিয়ে দিলে হবে নাকি ঘষে ঘষে ধৌত করতে হবে।

৬/ ৫নং প্রশ্নের মত যদি লজ্জাস্থানের মাথায় মজি থাকে অন্যদিকে না ছড়াই তাহলে কি শুধু পানি দিলেই পবিত্র হয়ে যাব?

1 Answer

0 votes
by (676,960 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
আমার যা মনে হচ্ছে,,পানি দিলেই এই সমস্যাটা হয়। যদিও শুকনা থাকতে চেক করে দেখি ১০-১২ মিনিট কিছুই বের হয় না।

সুতরাং এই বিবরণ অনুপাতে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার টাওয়াল, নাভি থেকে নিচে পর্যন্ত নাপাক হয়ে যায়নি।

(০২)
শরীয়তের বিধান হলো, লজ্জাস্থান থেকে কোনো তরল বের হলেই অযু ভেঙ্গে যাবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وقیل رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم: وما الحدث؟ قال: ما یخرج من السبیلین۔ (ہدایۃ ۱؍۲۲)
সারমর্মঃ
রাসুলুল্লাহ সাঃ কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো হদস কি?
তিনি জবাব দিলেন যেটি পায়খানা বা পেশাবের রাস্তা দিয়ে বের হয়।
,

سئل رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم ما الحدث؟ فقال: ما یخرج من السبیلین۔ (نصب الرایۃ ۱؍۸۳) 
সারমর্মঃ
রাসুলুল্লাহ সাঃ কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো হদস কি?
তিনি জবাব দিলেন যেটি পায়খানা বা পেশাবের রাস্তা দিয়ে বের হয়।

قال في الہدایۃ: المعاني الناقضۃ للوضوء کل ما خرج من السبیلین، لقولہ تعالیٰ: {اَوْ جَآئَ اَحَدٌ مِنْکُمْ مِنَ الْغَآئِطِ} [المائدۃ: ۶]
সারমর্মঃ
অযু ভঙ্গের কারন, পায়খানা বা পেশাবের রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া। 

الفصل الخامس في نواقض الوضوء: منہا ما یخرج من السبیلین من البول والغائط والریح الخارجة من الدبر والودي والمذي․ (الہندیة: ۱/۹)
সারমর্মঃ
  পেশাব-পায়খানার রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া। যেমন বায়ু, পেশাব পায়খানা, অদি,মযি ইত্যাদি।

আরো জানুনঃ- 

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
আপনি এমনটি করতে পারেন।
তবে নামাজের আগে টিস্যু পরিবর্তন করার পর আবারো অযু করবেন,ও নামাজের পর টিস্যু চেক করবেন,তাতে পেশাব পেলে পুনরায় পাক হয়ে ও অযু করে নামাজ আদায় করতে হবে। 

(৩.৪)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، قَالَ أَخْبَرَنَا أَبُو حَمْزَةَ، قَالَ سَمِعْتُ الأَعْمَشَ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَتْ مَيْمُونَةُ وَضَعْتُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم غُسْلاً، فَسَتَرْتُهُ بِثَوْبٍ، وَصَبَّ عَلَى يَدَيْهِ فَغَسَلَهُمَا، ثُمَّ صَبَّ بِيَمِينِهِ عَلَى شِمَالِهِ، فَغَسَلَ فَرْجَهُ، فَضَرَبَ بِيَدِهِ الأَرْضَ فَمَسَحَهَا، ثُمَّ غَسَلَهَا فَمَضْمَضَ، وَاسْتَنْشَقَ، وَغَسَلَ وَجْهَهُ وَذِرَاعَيْهِ، ثُمَّ صَبَّ عَلَى رَأْسِهِ، وَأَفَاضَ عَلَى جَسَدِهِ، ثُمَّ تَنَحَّى فَغَسَلَ قَدَمَيْهِ، فَنَاوَلْتُهُ ثَوْبًا فَلَمْ يَأْخُذْهُ، فَانْطَلَقَ وَهْوَ يَنْفُضُ يَدَيْهِ.

মাইমূনাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর জন্য গোসলের পানি রাখলাম এবং কাপড় দিয়ে পর্দা করে দিলাম। তিনি দু’হাতের উপর পানি ঢেলে উভয় হাত ধুয়ে নিলেন। তারপর ডান হাত দিয়ে বাম হাতে পানি ঢেলে লজ্জাস্থান ধৌত করলেন। পরে হাতে মাটি লাগিয়ে ঘষে নিলেন এবং ধুয়ে ফেললেন। অতঃপর কুলি করলেন, নাকে পানি দিলেন,  চেহারা ও দু’ হাত (কনুই পর্যন্ত) ধৌত করলেন। তারপর মাথায় পানি ঢাললেন ও সমস্ত শরীরে পানি পৌঁছালেন। তারপর একটু সরে গিয়ে দু’পা ধুয়ে নিলেন। অতঃপর আমি তাঁকে একটা কাপড় দিলাম কিন্তু তা নিলেন না। তিনি দু‘হাত ঝাড়তে ঝাড়তে চলে গেলেন। (সহীহ বুখারী ২৭৬,২৪৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৬৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৭৩)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
উপরোক্ত হাদীস থেকে জানা গেলো যে শরীরে বীর্য/মযি/ওদি লাগলে তাহা ঘষে নিতে হবে।
কেননা সেটি তৈলাক্ত,তাই ঘষে নিতে হবে।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে মযি,ওদি ধৌত করার সময়েও পানি ঢালার সাথে আংগুল দিয়ে ঘষাটা জরুরি। 

কেননা টিস্যু দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে শুকিয়ে ফেলার পর কোন আদ্রতা না থাকলেও সেখানে পানি দিলে তৈলাক্ত ভাব থেকেই যায়।
তাই ঘষাটা জরুরি। 

৩.
তিনবার ধৌত করার সময়, একবার ঘষে ধৌত করার পর আবার নতুন করে তিনবার হাত ধৌত করতে হবেনা। 
তিনবার ঘষে ঘষে ধৌত করে শেষে হাত ধৌত করলেই হবে।

উল্লেখ্য, তিনবার ঘষে ধয়া জরুরী নয়।
একবার ঘষে ধোয়ার দ্বারাই যদি তৈলাক্ত ভাব চলে যায়, তাহলে সেটিই যথেষ্ট, পরের বার গুলোতে শুধু পানি ঢেলে দিলেই হবে।

৪.
তিনবার ঘষে ধয়া জরুরী নয়।
একবার ঘষে ধোয়ার দ্বারাই যদি তৈলাক্ত ভাব চলে যায়, তাহলে সেটিই যথেষ্ট, পরের বার গুলোতে শুধু পানি ঢেলে দিলেই হবে।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সাবান দিয়ে একবার ধৌত করলেই যদি তৈলাক্ত ভাব চলে যায়, তাহলে সেটিই যথেষ্ট, পরের বার গুলোতে শুধু পানি ঢেলে দিলেই হবে।

(০৫)
টিস্যু দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে শুকিয়ে ফেলার পর কোন আদ্রতা না থাকলেও সেখানে পানি দিলে তৈলাক্ত ভাব থেকেই যায়।
তাই ঘষাটা জরুরি। 

(০৬)
এক্ষেত্রে যেহেতু সেখানে পানি দিলে তৈলাক্ত ভাব থেকেই যাবে। সেক্ষেত্রে কাপড়ে সেই তৈলাক্ত ভাব লেগে যাবে।
সুতরাং সেটি পুনরায় টিস্যু দিয়ে মুছে না দিলে পবিত্র হওয়া যাবেনা।

হ্যাঁ, এক দিরহাম এর কম হওয়ায় তাহা মাফ বলে গন্য হবে ঠিকই,তবে শরীরের অন্য অংশে বা কাপড়ে লেগে যাওয়ার আশংকা থাকায় পানি দিয়ে তৈলাক্ত ভাব দূর করার পরামর্শ থাকবে। 

নতুবা সেখানে পানি লাগাবেননা।
শুধু টিস্যু দিয়ে মুছে দিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 146 views
...