ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছেঃ-
আমার যা মনে হচ্ছে,,পানি দিলেই এই সমস্যাটা হয়। যদিও শুকনা থাকতে চেক করে দেখি ১০-১২ মিনিট কিছুই বের হয় না।
সুতরাং এই বিবরণ অনুপাতে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার টাওয়াল, নাভি থেকে নিচে পর্যন্ত নাপাক হয়ে যায়নি।
(০২)
শরীয়তের বিধান হলো, লজ্জাস্থান থেকে কোনো তরল বের হলেই অযু ভেঙ্গে যাবে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
وقیل رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم: وما الحدث؟ قال: ما یخرج من السبیلین۔ (ہدایۃ ۱؍۲۲)
সারমর্মঃ
রাসুলুল্লাহ সাঃ কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো হদস কি?
তিনি জবাব দিলেন যেটি পায়খানা বা পেশাবের রাস্তা দিয়ে বের হয়।
,
سئل رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم ما الحدث؟ فقال: ما یخرج من السبیلین۔ (نصب الرایۃ ۱؍۸۳)
সারমর্মঃ
রাসুলুল্লাহ সাঃ কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো হদস কি?
তিনি জবাব দিলেন যেটি পায়খানা বা পেশাবের রাস্তা দিয়ে বের হয়।
قال في الہدایۃ: المعاني الناقضۃ للوضوء کل ما خرج من السبیلین، لقولہ تعالیٰ: {اَوْ جَآئَ اَحَدٌ مِنْکُمْ مِنَ الْغَآئِطِ} [المائدۃ: ۶]
সারমর্মঃ
অযু ভঙ্গের কারন, পায়খানা বা পেশাবের রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া।
الفصل الخامس في نواقض الوضوء: منہا ما یخرج من السبیلین من البول والغائط والریح الخارجة من الدبر والودي والمذي․ (الہندیة: ۱/۹)
সারমর্মঃ
পেশাব-পায়খানার রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া। যেমন বায়ু, পেশাব পায়খানা, অদি,মযি ইত্যাদি।
আরো জানুনঃ-
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনি এমনটি করতে পারেন।
তবে নামাজের আগে টিস্যু পরিবর্তন করার পর আবারো অযু করবেন,ও নামাজের পর টিস্যু চেক করবেন,তাতে পেশাব পেলে পুনরায় পাক হয়ে ও অযু করে নামাজ আদায় করতে হবে।
(৩.৪)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، قَالَ أَخْبَرَنَا أَبُو حَمْزَةَ، قَالَ سَمِعْتُ الأَعْمَشَ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَتْ مَيْمُونَةُ وَضَعْتُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم غُسْلاً، فَسَتَرْتُهُ بِثَوْبٍ، وَصَبَّ عَلَى يَدَيْهِ فَغَسَلَهُمَا، ثُمَّ صَبَّ بِيَمِينِهِ عَلَى شِمَالِهِ، فَغَسَلَ فَرْجَهُ، فَضَرَبَ بِيَدِهِ الأَرْضَ فَمَسَحَهَا، ثُمَّ غَسَلَهَا فَمَضْمَضَ، وَاسْتَنْشَقَ، وَغَسَلَ وَجْهَهُ وَذِرَاعَيْهِ، ثُمَّ صَبَّ عَلَى رَأْسِهِ، وَأَفَاضَ عَلَى جَسَدِهِ، ثُمَّ تَنَحَّى فَغَسَلَ قَدَمَيْهِ، فَنَاوَلْتُهُ ثَوْبًا فَلَمْ يَأْخُذْهُ، فَانْطَلَقَ وَهْوَ يَنْفُضُ يَدَيْهِ.
মাইমূনাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর জন্য গোসলের পানি রাখলাম এবং কাপড় দিয়ে পর্দা করে দিলাম। তিনি দু’হাতের উপর পানি ঢেলে উভয় হাত ধুয়ে নিলেন। তারপর ডান হাত দিয়ে বাম হাতে পানি ঢেলে লজ্জাস্থান ধৌত করলেন। পরে হাতে মাটি লাগিয়ে ঘষে নিলেন এবং ধুয়ে ফেললেন। অতঃপর কুলি করলেন, নাকে পানি দিলেন, চেহারা ও দু’ হাত (কনুই পর্যন্ত) ধৌত করলেন। তারপর মাথায় পানি ঢাললেন ও সমস্ত শরীরে পানি পৌঁছালেন। তারপর একটু সরে গিয়ে দু’পা ধুয়ে নিলেন। অতঃপর আমি তাঁকে একটা কাপড় দিলাম কিন্তু তা নিলেন না। তিনি দু‘হাত ঝাড়তে ঝাড়তে চলে গেলেন। (সহীহ বুখারী ২৭৬,২৪৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৬৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৭৩)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
উপরোক্ত হাদীস থেকে জানা গেলো যে শরীরে বীর্য/মযি/ওদি লাগলে তাহা ঘষে নিতে হবে।
কেননা সেটি তৈলাক্ত,তাই ঘষে নিতে হবে।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে মযি,ওদি ধৌত করার সময়েও পানি ঢালার সাথে আংগুল দিয়ে ঘষাটা জরুরি।
কেননা টিস্যু দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে শুকিয়ে ফেলার পর কোন আদ্রতা না থাকলেও সেখানে পানি দিলে তৈলাক্ত ভাব থেকেই যায়।
তাই ঘষাটা জরুরি।
৩.
তিনবার ধৌত করার সময়, একবার ঘষে ধৌত করার পর আবার নতুন করে তিনবার হাত ধৌত করতে হবেনা।
তিনবার ঘষে ঘষে ধৌত করে শেষে হাত ধৌত করলেই হবে।
উল্লেখ্য, তিনবার ঘষে ধয়া জরুরী নয়।
একবার ঘষে ধোয়ার দ্বারাই যদি তৈলাক্ত ভাব চলে যায়, তাহলে সেটিই যথেষ্ট, পরের বার গুলোতে শুধু পানি ঢেলে দিলেই হবে।
৪.
তিনবার ঘষে ধয়া জরুরী নয়।
একবার ঘষে ধোয়ার দ্বারাই যদি তৈলাক্ত ভাব চলে যায়, তাহলে সেটিই যথেষ্ট, পরের বার গুলোতে শুধু পানি ঢেলে দিলেই হবে।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সাবান দিয়ে একবার ধৌত করলেই যদি তৈলাক্ত ভাব চলে যায়, তাহলে সেটিই যথেষ্ট, পরের বার গুলোতে শুধু পানি ঢেলে দিলেই হবে।
(০৫)
টিস্যু দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে শুকিয়ে ফেলার পর কোন আদ্রতা না থাকলেও সেখানে পানি দিলে তৈলাক্ত ভাব থেকেই যায়।
তাই ঘষাটা জরুরি।
(০৬)
এক্ষেত্রে যেহেতু সেখানে পানি দিলে তৈলাক্ত ভাব থেকেই যাবে। সেক্ষেত্রে কাপড়ে সেই তৈলাক্ত ভাব লেগে যাবে।
সুতরাং সেটি পুনরায় টিস্যু দিয়ে মুছে না দিলে পবিত্র হওয়া যাবেনা।
হ্যাঁ, এক দিরহাম এর কম হওয়ায় তাহা মাফ বলে গন্য হবে ঠিকই,তবে শরীরের অন্য অংশে বা কাপড়ে লেগে যাওয়ার আশংকা থাকায় পানি দিয়ে তৈলাক্ত ভাব দূর করার পরামর্শ থাকবে।
নতুবা সেখানে পানি লাগাবেননা।
শুধু টিস্যু দিয়ে মুছে দিবেন।