আসসালামু আলাইকুম। ক্ষমা করবেন। অনেক কিছু লিখতে হচ্ছে। একটু সময় নিয়ে পড়তে হবে উস্তাজ। সম্মানিত ওস্তাজ আমি আগেও এই বিষয়টা নিয়ে বিস্তারিত লিখেছিলাম আমার মায়ের সাথে আমার খারাপ সম্পর্ক নিয়ে। আজ আমার একটা পরামর্শ প্রয়োজন। তাই আপনার কাছে জিজ্ঞাসা। আমি সংংক্ষেপে আগের কথাগুলো বলে নিই,এতে আপনার জন্য সুবিধা হবে আশা করি। আমার আম্মুর ব্যবহার কিছুটা উগ্র হওয়ায় আমি তা সহজে গ্রহন করতে পারি না ছোট থেকেই। কয়েকবার তার সাথে মতের অমিল বাকবিতন্ডা এবং পারিবারিক ভাবে বসার পরেও কিছুদিন ভালো থাকলেও এ অবস্থার অবনতি দেখা যাচ্ছে। এইটার সমাধান আমাকে আগে বলা হয়েছিলো যেনো আমি আম্মার সাথে কথা সহজে না বলি। এবং সামনে আসলে সালাম দিয়ে চলে যাই। এরপর আমাদের সম্পর্কে কিছুটা ভালো সময় এসেছিলো। কিন্তু ইদানীং কেনো আবার খারাপ আমি বুঝে উঠতে পারছি না। আমার ভাবীর সাথেও মতের অমিল হওয়ায় আমি সেই সম্পর্ক এড়িয়ে চলি যেহেতু সে আমার বয়সে ছোট হওয়ায় আমার সাথে ব্যবহার ও সম্পর্কে ব্যালেন্স করতে পারছে না আমিও পারছি না। অন্যদিকে, আমার বোন ভাবী মা সকলের মধ্যেই ভাবী কে নিয়ে সমস্যা ছিলো তখন আমার সাথে ভালো সম্পর্ক। হঠাৎ করেই এই ৩ জন ই খুব ভালো সম্পর্কে আবদ্ধ হলো যা খুব ই প্রশংসনীয় কিন্তু মাঝ থেকে কেনো যেনো আমার সাথে সবার কথা বন্ধ। আরেকটা বিষয় বলে রাখি আমাদের ঘরে আমরা মা ভাই বোন ৪ জন ই খুব ই রাগী এর মধ্যে আমার আত্মসম্মান বোধ টাও অনেক বেশি। আর এজন্য ই আমি সহজে যে কোনো কথা হজম করতে পারি না রাগ দেখিয়ে ফেলি। আমাকে প্রায় সবাই ই অপছন্দ করে এজন্য। আর এ কাজ যেনো কম হয় তাই আমি কথা ও কম বলার চেষ্টা করি। কিছুদিন আগেই আমার খালাতো বোন ও তার স্বামী কে নিয়ে আমাদের বাসায় ঘন ঘন আসার ফলে আমার পর্দা সমস্যা হয় এবং আমার সেপারেট রুম না থাকায় এক রুমে তাদের সাথে থাকাটাও কষ্টকর। তাদের লাইফস্টাইল আমার লাইফস্টাইল থেকে সম্পূর্ন বিপরীত। আমি বাসায় এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় আম্মা অনেক রাগারাগি বাজে কথা বলে কেননা তার ভাগ্নী তার খুব ই প্রিয়। আমার ভাই বুঝাতে চেয়েও পারে নি। সেদিন আমিও কষ্ট পেয়ে অনেক চিল্লাচিল্লি করি। পরে আমার খারাপ লাগে। তাই যেদিন তারা আসবে বলেছিলো আমি বাসা থেকে বের হয়ে আমার স্টুডেন্ট এর বাসায় আশ্রয় নেই। তারা ৫ দিন পর চলে যায় আমি তারপর বাসায় আসি। ৫ দিনে কেও আমার খোজ করে নি আমি কোথায় আছি। কিভাবে আছি। আমি আমার বোন কে বারবার ফোন করে বলেছি আমার ভার্সিটি তে পরিক্ষা আছে আমার বাসায় যাওয়া টা প্রয়োজন। এভাবে আমি ৫ দিন পর বাসায় ফিরি। এর মাধ্যমেই আমি একা হয়ে যাই সবার মধ্যে। এতে আমার কষ্ট লাগতে থাকে। ঘরে যেনো কম থাকা লাগে তাই রাত ৯-১০ টা পর্যন্ত স্টুডেন্ট পড়িয়ে বাসায় আসি। এভাবেই চলছিলো। কিন্তু ইদানিং আমার ভাবী দেখলো যে আমার মা বোন আমার সাথে কথা বন্ধ করে দিয়েছে এবং তার সাথে তাদের মধুর সম্পর্ক গড়ে উঠেছে সে আমার থেকে ছোট হবার পরেও নানান বেয়াদবি তার বেড়ে গেছে। এর ফলে আমি খুব অপমানিত বোধ করছি। আমাকে নিয়ে বাসায় ঠাট্টা তামাশা ও হয় খুব। আমার সাথে কেও কথা বলে না। এই ঈদ এর ছূটিতে আমি মানসিক ভাবে খুব ভেঙে পরেছি যেহেতু আমার বাবা নেই। সারাদিন বাসায় আমি একা একা সবার মধ্যে কিভাবে সময় কাটাচ্ছি। ভাই কে এসব বললে হয়তো তাদের ৪ জনের মধ্যে যে মিল সেইটা তে ঝামেলা হবে। অন্যদিকে আমি বিয়ে করে রেখেছিলাম যাকে সে আমাকে আরো ১ বছর পর ঘরে তুলতে পারবে কেননা তার ও পড়াশোনা আমার মতন রানিং। এ নিয়েও বাসায় খোচা দিয়ে থাকে। হয়তো, বিয়ের বয়স হয়ে গেছে অনেক আগেই তাও আমি এখন ও ভাই এর উপর, এ ব্যাপারটা কেও নিতে পারছে না বলে আমার ধারণা তাদের ব্যবহার দেখে।
ওস্তাজ আমি চাইছি বাসা ছেড়ে চলে যাবো। অন্য কোথাও ভাড়া নিয়ে নিজেই নিজের খরচ চালিয়ে থাকবো। যেনো আমি এসব অশান্তি থেকে বের হতে পারি। আমার খুব মন ভার হয়ে থাকে। সেদিন এক বান্ধুবির সাথে কথা বলতে বলতে আবেগ ধরে রাখতে না পেরে আমি এসব বলে ফেলছি। এত কথা চেপে রেখে আমি ঘুমাতে পারি না। কাওকে বলতেও পারি না।নামাজেই কান্নাকাটি করি। এখন আমার খারাপ লাগছে যে এইটা তো গীবত হয়ে গেলো আমার মায়ের নামে। কারণ এ সব কিছুর মূল কারণ ই আমার মা। সে আমাকে অপছন্দ করে।
এক্ষেত্রে আমি খারাপ ব্যবহার, রাগ, গীবত, অশান্তি এসব থেকে মুক্তি চাইছি। স্বামী ও ১ বছর এর আগে আমাকে নিয়ে যেতে অক্ষম। যদিও আল্লাহ চাইলে হয়তো আরো আগেই পারবে।
কিন্তু তার আগে কি আমি একা একা থাকতে পারি পরিবার থেকে দূরে.?? আমি মানসিক ভাবে খুব ই সমস্যায় আছি। আমার সর্বক্ষণ মেজাজ খিটমিট করে। ভালো লাগে না কিছু। কেমন একটা দুশ্চিন্তা মাথায় থাকেই।
আমি কি করবো ওস্তাজ.?? এ পরিবারে আমার থাকার মত পরিবেশ আর নেই। যেহেতু মেয়ের বয়স বেড়ে গেছে এখন ও বাপের বাড়ি পরে আছে। এক সময় আমাকে প্রায়োরিটি দেওয়া হতো। এখন বয়স বাড়ার জন্য পরিবার থেকে এবং বয়সের থেকে ছোট একটা মেয়ের থেকে সম্পর্কের জোরে অপমানিত হতে হচ্ছে আমি কোনোভাবেই এসব মানিয়ে নিতে পারছি না।
আমার কোন ফ্রেন্ড সার্কেল নেই, দ্বীনী সহবত এক সময় থাকলেও তাদের ও বিয়ে হয়ে গেছে। স্বামী ও অন্য জেলায় থাকে। আমি সম্পূর্ণ একাকি হয়ে যাচ্ছি।তার মধ্যে পরিবার থেকে এই অপমানের জীবন।
ওস্তাজ সময় নিয়ে ধীরে ধীরে পড়ে আমাকে জানাবেন ইন শা আল্লাহ। এত কিছু লেখার জন্য ক্ষমা চাচ্ছি। কষ্ট হয়ে যাবে হয়তো আপনার জন্য। জাযাকাল্লাহু খয়রন।