আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
113 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
reshown by

আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন?

আমি ১০ বছর বয়স থেকে ২০ বছর পর্যন্ত বাজে অভ্যাসে অভ্যাস্ত ছিলাম।তাই বর্তমানে ২৩ বছরের যুবক হওয়ার পরেও রোগা পাতলা।আমি চাচ্ছি শারীরিক ভাবে সবল হতে ও  দাম্পত্য জীবনে সুখী হতে।তাই আমাকে প্রয়োজনে অতিরিক্ত ও ঘনঘন খাবার খেতে হচ্ছে।যেহেতু আমি একসময় নিজের শরীরের উপর জুলুম করছি।আমার প্রশ্ন:

১.হাদিসে তো কম খাওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ দেওয়া হয়ছে।তাহলে আমি কি শরীর গঠণ ও স্ত্রীর শারীরিক হক পূরণের জন্য বেশি খেতে পারবো না?

২. আমার মনে মাঝেমধ্যে কিছু ওয়াসওয়াসা আসে যে যদি আমি কম খায় তাহলে আমি কাজ ও অন্যান্য চাহিদা গুলো মিঠাবো কিভাবে?তখন আমি মনকে বলি,রাসূল(স:) নির্দেশ আমাকে মানতে হবে।আর এতে কল্যাণ আছে,তা আমি জানিনা।এখন মুহতারাম আমার করণীয় কি?আমি কি স্বাস্থ্য বাড়ানো ও স্ত্রীর শারীরিক হক মিটানোর জন্য বেশি খেতে পারবো?

৩.বিবাহ পূর্ব দাম্পত্য জীবনের সুখের জন্য বিবিধ  বই থেকে বিভিন্ন জ্ঞান ও কৌশল জানা কি জায়েজ হবে?

৪.ইসলাম সনক্রামক রোগ সম্পর্কে কি বলে?যেমন ধরেন ডেঙ্গু আক্রান্ত হবার ভয়ে রোগীর কাছে না যাওয়া,মশা থেকে বাঁচার চেষ্টা করা?

৫. বর্তমানে বিভিন্ন প্রচলিত মতবাদ ও অবস্থা সম্পর্কে অবগত থাকার পরেও পরীক্ষায় পাশ করার জন্য সেগুলোর সপক্ষে লিখা ও বলা কি আমার জন্য জায়েজ হবে?

৬.বিড়ালের মুখ দেওয়া খাবার কি খাওয়া যাবে?আমার যদি তাতে রোগে আক্রান্ত হওয়ার ভয় থাকে তাহলে কি আমার ইমানের সমস্যা হবে?

৭.আমার মাঝেমধ্যে মনে হয় ঐ ব্যাক্তি গায়েব জানে?কিন্তু আমি জানি আল্লাহ ছাড়া তো কেউ গায়েব জানেনা।এই বিষয়ে কেমন বিশ্বাস থাকা দরকার?

1 Answer

0 votes
by (561,180 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী পেট ভরে ভাত/খাবার খাওয়া জায়েয আছে। 
,
তবে পেট ভরে যাওয়ার পর আরো বেশি খাওয়া মূলত মাকরুহে তাহরিমি তথা নাজায়েজ ।

হ্যাঁ যদি পেট ভরা থেকে বেশি খাওয়ার উদ্দেশ্য যদি এটা হয় যে  পরিপূর্ণ শক্তি অর্জন করে আগামীকাল রোযা রাখবে,বা মেহমান হয়ে কাহারো কাছে দাওয়াত খাওয়ার সময় অবস্থা যদি এমন হয় যে কম খেলে মেজবান রাগ করবে,তাহলে পেট ভরা থেকে আরো বেশি খাওয়া জায়েয আছে।

অন্যথায় এটা মাকরুহে তাহরিমি।      
ওলামায়ে কেরাম এটাকে মাকরুহে তাহরিমি এই জন্য   বলেছেন যে, যেহেতু আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন যে, আমরা খাই, একেবারে পরিপূর্ণ তৃপ্তি পর্যন্ত আমরা খাই না এবং নবী (সা.) মূলত তাঁর খাবারের পদ্ধতি যখন বলেছেন, মুমিন ব্যক্তি এক ভুঁড়িতেই খায়, একদম সাত ভুঁড়ি পরিপূর্ণ করে খায় না।

রাসূল (সা.) বলেছেন, মুমিন ব্যক্তি যখন খাবে, তখন তিন ভাগের এক ভাগ রাখবে তাঁর খাবারের জন্য, এক ভাগ রাখবে পানীয়র জন্য, এক ভাগ সে খালি রেখে দেবে, যাতে করে পেটের মধ্যে অন্তত জায়গা থাকে। আর এটা অনেক দিক থেকে স্বাস্থ্যকর। 

চিকিৎসাবিজ্ঞান কিন্তু অধিক আহার সমর্থন করে না। তাই নবী (সা.) মূলত এভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন এবং বলেছেন, ইমানদার ব্যক্তির জন্য এটাই যথেষ্ট। এর মাধ্যমে নিজের মেরুদণ্ড সোজা রাখতে পারবে। এটাই তাঁর জন্য যথেষ্ট। তাই এর চেয়ে বেশি পরিতৃপ্ত হয়ে একেবারে গলা পর্যন্ত খাওয়া মূলত ইসলামী পদ্ধতি নয়।
,
নবী (সা.) বলেছেন, আল্লাহকে যে অস্বীকার করেছে, আল্লাহর বিধানকে যে অস্বীকার করেছে, সেই কাফের ব্যক্তিই মূলত একেবারে আকণ্ঠ ভর্তি করে খায়। এটা মূলত ইমানদার ব্যক্তিদের কাজ নয়, ইমানদার ব্যক্তিরা খাবারের ক্ষেত্রে কম খাবে এবং আল্লাহর বিধানটুকু অনুসরণ করবে। আল্লাহর সেই বিধানটা হচ্ছে, ‘তোমরা খাও, পান করো। অপচয় করো না।’

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الْكَافِرُ يَأْكُلُ فِي سَبْعَةِ أَمْعَاءٍ وَالْمُؤْمِنُ يَأْكُلُ فِي مِعًى وَاحِدٍ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي سَعِيدٍ وَأَبِي بَصْرَةَ الْغِفَارِيِّ وَأَبِي مُوسَى وَجَهْجَاهٍ الْغِفَارِيِّ وَمَيْمُونَةَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو .

ইবনু উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাত পাকস্থলী ভর্তি করে কাফির খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করে, আর একটিমাত্র পাকস্থলী ভর্তি করে মুমিন খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করে।
(তিরমিজি ১৮১৮,ইবনু মা-জাহ (৩২৫৭), নাসা-ঈ)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনি শরীর গঠণ ও স্ত্রীর শারীরিক হক পূরণের জন্য বেশি খেতে পারবেন।  নাজায়েজ বা গুনাহ হবেনা।

(০২)
বেশি খেতে পারবেন।  এতে নাজায়েজ বা গুনাহ হবেনা। তবে বেশি খাওয়াতে তেমন ফায়েদা আছে বলে মনে হয়না।
আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক পুষ্টিকর খাবার ও ভিটামিন খাবেন,ইনশাআল্লাহ সেক্ষেত্রে বেশি খাবার খেতে হবেনা।

(০৩)
এক্ষেত্রে বই পড়া যাবে।
অশ্লীল ও যৌন সুড়সুড়ি দেয় এমন কিছু পড়া জায়েজ হবেনা। 

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৪)
এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 

(০৫)
নিজ আকীদা বিশুদ্ধ রেখে এভাবে পরিক্ষার খাতায় লেখা যাবে।

(০৬)
বিড়ালের মুখ দেওয়া খাবার খাওয়া যাবে।

বিড়াল নাপাক নয়। এরা সর্বদা ঘুরাফেরাকারী প্রাণী।
সুতরাং সে কোনো খাবারে বা পানিতে মুখ দিলে সেটি খাওয়া জায়েজ হবে।

তবে বিড়াল যদি ইদুর বা নাপাকি খেয়ে আসে,সেক্ষেত্রে তার মুখ দেয়া স্থান নাপাক হবে। সেক্ষেত্রে সেই পানি খাওয়া যাবেনা,খাবার হলে সেই সাইটের খাবার খাওয়া যাবেনা।
অন্য সাইটের খাবার খাওয়া যাবে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★বিড়ালের মুখ দেয়া খাবারের ক্ষেত্রে আপনার যদি রোগে আক্রান্ত হওয়ার ভয় থাকে, তাহলে আপনার ঈমানের কোনো সমস্যা হবেনা।

(০৭)
আল্লাহ ছাড়া কেউ গায়েব জানেনা।এমনকি নবিও গায়েব জানেননা,এমন বিশ্বাস রাখতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...