মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-
الَّذِينَ قَالَ لَهُمُ النَّاسُ إِنَّ النَّاسَ قَدْ جَمَعُواْ لَكُمْ فَاخْشَوْهُمْ فَزَادَهُمْ إِيمَاناً وَقَالُواْ حَسْبُنَا اللهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ-
‘যাদেরকে লোকেরা বলেছিল, নিশ্চয়ই তোমাদের বিরুদ্ধে লোকজন সমবেত হয়েছে, অতএব তোমরা তাদেরকে ভয় কর। এতে তাদের বিশ্বাস আরো বৃদ্ধি হয়েছিল এবং তারা বলেছিল, আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনি কত উত্তম কর্ম বিধায়ক’ (আলে ইমরান ৩/১৭৩)।
মহান আল্লাহ অন্যত্র বলেন,
وَإِذَا مَا أُنزِلَتْ سُورَةٌ فَمِنْهُم مَّن يَقُولُ أَيُّكُمْ زَادَتْهُ هَـذِهِ إِيمَاناً فَأَمَّا الَّذِينَ آمَنُواْ فَزَادَتْهُمْ إِيمَاناً وَهُمْ يَسْتَبْشِرُونَ-
‘আর যখন কোন সূরা অবতীর্ণ হয় তখন তাদের মধ্যে কিছু লোক বলে, তোমাদের মধ্যে এই সূরা কার ঈমান বৃদ্ধি করল? অনন্তর যেসব লোক ঈমান এনেছে, এই সূরা তাদের ঈমানকে বর্ধিত করেছে এবং তারাই আনন্দ লাভ করেছে’ (তাওবা ৯/১২৪)।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ رضى الله عنه قَالَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم لاَ يَزْنِى الزَّانِى حِيْنَ يَزْنِى وَهُوَ مُؤْمِنٌ، وَلاَ يَشْرَبُ الْخَمْرَ حِيْنَ يَشْرَبُ وَهُوَ مُؤْمِنٌ، وَلاَ يَسْرِقُ حِيْنَ يَسْرِقُ وَهُوَ مُؤْمِنٌ، وَلاَ يَنْتَهِبُ نُهْبَةً يَرْفَعُ النَّاسُ إِلَيْهِ فِيْهَا أَبْصَارَهُمْ حِيْنَ يَنْتَهِبُهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ.
আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘কোন ব্যভিচারী মুমিন অবস্থায় ব্যভিচার করে না এবং কোন মদ্যপায়ী মুমিন অবস্থায় মদ পান করে না। কোন চোর মুমিন অবস্থায় চুরি করে না। কোন লুটেরা লুটতরাজ করে না মুমিন অবস্থায়, যখন সে লুটতরাজ করে তখন তার প্রতি লোকজন চোখ তুলে তাকিয়ে থাকে’।
(বুখারী হা/২৪৭৫, ‘মাযালিম’ অধ্যায়; মুসলিম হা/২০২ ‘ঈমান’ অধ্যায়।)
عَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ يَخْرُجُ مِنَ النَّارِ مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ، وَفِى قَلْبِهِ وَزْنُ شَعِيْرَةٍ مِنْ خَيْرٍ، وَيَخْرُجُ مِنَ النَّارِ، مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ، وَفِى قَلْبِهِ وَزْنُ بُرَّةٍ مِنْ خَيْرٍ، وَيَخْرُجُ مِنَ النَّارِ مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ، وَفِى قَلْبِهِ وَزْنُ ذَرَّةٍ مِنْ خَيْرٍ.
আনাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, নবী করীম (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে এবং তার অন্তরে একটি যব পরিমাণ পুণ্য বিদ্যমান থাকবে, তাকে জাহান্নাম হ’তে বের করা হবে। যে ব্যক্তি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে এবং তার অন্তরে একটি গম পরিমাণও পুণ্য বিদ্যমান থাকবে, তাকে জাহান্নাম হ’তে বের করা হবে। যে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে এবং তার অন্তরে একটি অণু পরিমাণও নেকী থাকবে, তাকেও জাহান্নাম হ’তে বের করা হবে’।(
(বুখারী হা/৪৪, ‘ঈমান’ অধ্যায়; মুসলিম হা/৪৭৮ ‘ঈমান’ অধ্যায়।)
عَنْ أَبِى سَعِيدٍ الْخُدْرِىِّ قَالَ خَرَجَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِى أَضْحًى أَوْ فِطْرٍ إِلَى الْمُصَلَّى، فَمَرَّ عَلَى النِّسَاءِ فَقَالَ يَا مَعْشَرَ النِّسَاءِ تَصَدَّقْنَ، فَإِنِّى أُرِيتُكُنَّ أَكْثَرَ أَهْلِ النَّارِ. فَقُلْنَ وَبِمَ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ تُكْثِرْنَ اللَّعْنَ، وَتَكْفُرْنَ الْعَشِيْرَ، مَا رَأَيْتُ مِنْ نَاقِصَاتِ عَقْلٍ وَدِيْنٍ أَذْهَبَ لِلُبِّ الرَّجُلِ الْحَازِمِ مِنْ إِحْدَاكُنَّ. قُلْنَ وَمَا نُقْصَانُ دِيْنِنَا وَعَقْلِنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ؟ قَالَ أَلَيْسَ شَهَادَةُ الْمَرْأَةِ مِثْلَ نِصْفِ شَهَادَةِ الرَّجُلِ. قُلْنَ بَلَى.
قَالَ فَذَلِكَ مِنْ نُقْصَانِ عَقْلِهَا، أَلَيْسَ إِذَا حَاضَتْ لَمْ تُصَلِّ
وَلَمْ تَصُمْ. قُلْنَ بَلَى. قَالَ فَذَلِكَ مِنْ نُقْصَانِ دِيْنِهَا-
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার ঈদুল আযহা অথবা ঈদুল ফিতরের ছালাত আদায়ের জন্য আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) ঈদগাহের দিকে যাচ্ছিলেন। তিনি মহিলাদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বললেন, হে মহিলা সমাজ! তোমরা ছাদাক্বাহ করো। কারণ আমি দেখেছি জাহান্নামের অধিবাসীদের মধ্যে তোমরাই সর্বাধিক। তাঁরা জিজ্ঞেস করলেন, কি কারণে হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)? তিনি বললেন, তোমরা অধিক পরিমাণে অভিশাপ দিয়ে থাক এবং স্বামীর অকৃতজ্ঞ হও। বুদ্ধি ও দ্বীনের ব্যাপারে ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও একজন সদা সতর্ক ব্যক্তির বুদ্ধি হরণে তোমাদের চেয়ে পারদর্শী আমি আর কাউকে দেখিনি। তাঁরা বললেন, আমাদের দ্বীন ও বুদ্ধির ত্রুটি কোথায় হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)? তিনি বললেন, একজন মহিলার সাক্ষ্য কি একজন পুরুষের সাক্ষ্যের অর্ধেক নয়? তাঁরা উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। তখন তিনি বললেন, এটা হচ্ছে তাদের বুদ্ধির ত্রুটি। আর হায়েয অবস্থায় তারা কি ছালাত ও ছিয়াম হ’তে বিরত থাকে না? তাঁরা বললেন, হ্যাঁ। তিনি বললেন, এ হচ্ছে তাদের দ্বীনের ত্রুটি’।
(বুখারী হা/৩০৪, ‘হায়েয’ অধ্যায়; মুসলিম হা/২৪১ ‘ঈমান’ অধ্যায়।)
আমল কম করলে ঈমান কমে যায়। হাদীছটি ঈমানের হ্রাস-বৃদ্ধি প্রমাণ করে।
(আন-নববী, শারহে ছহীহ মুসলিম ২/৬৫-৬৬।)
ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) তাঁর সাথীদের বলতেন, هلموا نزداد إيمانا، ‘এসো আমরা আমাদের ঈমান বৃদ্ধি করি’।
(মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ ১১/২৬; লালকাঈ, শারহু উছুলে ইতেক্বাদে আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আহ ৫/১০১২, হা/১৭০০।)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত বিষয় সম্পর্কে দারুল উলুম দেওবন্দ এর ফতোয়া হলোঃ-
ঈমান কাইফিয়াত তথা অবস্থা হালাত ভেদে কম বেশি হয়।
ইয়াকিন তথা বিশ্বাস,ও আমলে সালেহাহ এর উপর অটল অবিচল থাকার দরুন এই ব্যাক্তির ঈমান অন্য ব্যাক্তিদের তুলনায় অবস্থা ভেদে বেশি হয়।
তবে যেই বিষয় গুলির উপর ঈমান আনতে হয়,সেটি কমেওনা বাড়েওনা।