জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
শরীয়তের বিধান হলো সম্মান প্রদর্শন পূর্বক কাউকে বাবা বা মা বলে সম্বোধন করা জায়েয আছে।তবে কাউকে বাস্তবে বাবা-মার স্থান দিয়ে দেয়া বা নিজ পিতা-মাতা ব্যতীত নিজেকে অন্যকারো সন্তান বলে পরিচয় দেয়া, আইডি কার্ড বা পাসপোর্টে নাম দেয়া কখনো জায়েয হবে না।
এটা সম্পূর্ণই না জায়েয।
সুরা আহযাব ০৫ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেনঃ
اُدۡعُوۡہُمۡ لِاٰبَآئِہِمۡ ہُوَ اَقۡسَطُ عِنۡدَ اللّٰہِ ۚ فَاِنۡ لَّمۡ تَعۡلَمُوۡۤا اٰبَآءَہُمۡ فَاِخۡوَانُکُمۡ فِی الدِّیۡنِ وَ مَوَالِیۡکُمۡ ؕ وَ لَیۡسَ عَلَیۡکُمۡ جُنَاحٌ فِیۡمَاۤ اَخۡطَاۡتُمۡ بِہٖ ۙ وَ لٰکِنۡ مَّا تَعَمَّدَتۡ قُلُوۡبُکُمۡ ؕ وَ کَانَ اللّٰہُ غَفُوۡرًا رَّحِیۡمًا ﴿۵﴾
তোমরা ওদেরকে পিতৃপরিচয়ে ডাক; আল্লাহর দৃষ্টিতে এটিই ন্যায়সঙ্গত, যদি তোমরা ওদের পিতৃপরিচয় না জান, তবে ওদেরকে তোমরা ধর্মীয় ভাই এবং বন্ধুরূপে গণ্য কর। যে বিষয়ে তোমরা ভুল কর, সে বিষয়ে তোমাদের কোন অপরাধ নেই, কিন্তু তোমাদের আন্তরিক ইচ্ছা থাকলে (তাতে অপরাধ আছে)। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
,
হযরত সা'দ রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি-
عَنْ سَعْدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: «مَنِ ادَّعَى إِلَى غَيْرِ أَبِيهِ، وَهُوَ يَعْلَمُ أَنَّهُ غَيْرُ أَبِيهِ، فَالْجَنَّةُ عَلَيْهِ حَرَامٌ»
" যে ব্যক্তি আপন পিতা ছাড়া অন্যকে পিতা বলে মেনে নেয় অথচ সে জানে যে, সে তার পিতা নয়, তার জন্য জান্নাত হারাম। "।
(সহীহ বুখারী, হাদীস নং- ৬৭৬৬)
.
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، وَمُسَدَّدٌ، قَالَا: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، اخْتَصَمَ سَعْدُ بْنُ أَبِي وَقَّاصٍ، وَعَبْدُ بْنُ زَمْعَةَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي ابْنِ أَمَةِ زَمْعَةَ، فَقَالَ سَعْدٌ: أَوْصَانِي أَخِي عُتْبَةُ إِذَا قَدِمْتُ مَكَّةَ أَنْ أَنْظُرَ إِلَى ابْنِ أَمَةِ زَمْعَةَ فَأَقْبِضَهُ فَإِنَّهُ ابْنُهُ، وَقَالَ عَبْدُ بْنُ زَمْعَةَ: أَخِي ابْنُ أَمَةِ أَبِي، وُلِدَ عَلَى فِرَاشِ أَبِي، فَرَأَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَبَهًا بَيِّنًا بِعُتْبَةَ، فَقَالَ: الْوَلَدُ لِلْفِرَاشِ وَلِلْعَاهِرِ الْحَجَرُ،وَاحْتَجِبِي عَنْهُ يَا سَوْدَةُ،
আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। একদা সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাযি.) ও ‘আবদ ইবনু যাম‘আহ (রাযি.) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট যাম‘আহর দাসীর এক সন্তানের বিষয়ে বিবাদ নিয়ে উপস্থিত হলো। সা‘দ (রাযি.) বললেন, আমার ভাই ‘উতবাহ আমার কাছে ওয়াসিয়াত করেছে, আমি মক্কায় এলে যেন যাম‘আহর দাসীর সন্তানকে আমার অধিকারে গ্রহণ করি। কারণ ওটা তার ছেলে। কিন্তু ‘আবদ ইবনু যাম‘আহ বললেন, এটা আমার ভাই, আমার পিতার দাসীর সন্তান, আমার পিতার বিছানায় তার জন্ম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সন্তানটির মধ্যে ‘উতবাহর সুস্পষ্ট সাদৃশ্য দেখতে পেয়ে বললেনঃ সন্তান তার বিছানা যার। আর যিনাকারীর জন্য রয়েছে পাথর। তিনি সাওদা (রাযি.) বললেনঃ তার থেকে পর্দা করো।
(আবু দাউদ ২২৭৪)
,
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الْوَلَدُ لِلْفِرَاشِ وَلِلْعَاهِرِ الْحَجَرُ " .
আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বিছানার মালিক(গৃহস্বামী) ই বাচ্চার মালিক এবং ব্যভিচারীর জন্য রয়েছে পাথর।
(তিরমিজি ১১৫৭)
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার আগের স্বামীই উক্ত সন্তানের পিতা।
জন্মনিবন্ধন বা অনান্য ডকুমেন্টসে তার সেই পিতারই নাম লিখতে হবে।
আপনার নতুন স্বামীর নাম লিখতে পারবেনা।
এটি জায়েজ হবেনা,এতে গুনাহ হবে।
,
হ্যাঁ সম্মানার্থে আপনার নতুন স্বামীকে সে বাবা বলে ডাকতে পারবে,এতে কোনো সমস্যা নেই।
,
★প্রকাশ থাকে যে উক্ত মেয়ে সন্তানের বিবাহ পর্যন্ত তার ভরনপোষণ, যাবতীয় খরচের দায়িত্ব তার নিজ বাবা (আপনার আগের স্বামী) এর উপরই ওয়াজিব।
আপনার নতুন স্বামী যদি ভরনপোষণ দেয়, সেটা একান্তই তার প্রতি ইহসান,অনুগ্রহ হবে।
আর কিছুই নয়।
,
نفقۃ الأولاد الصغار علی الأب لا یشارکہ فیہا أحد۔ (الفتاویٰ الہندیۃ ۱؍۵۶۰، کذا في الہدایۃ مع فتح القدیر ۴؍۴۱۰ دار الفکر بیروت)
ছোট বাচ্চার ভরনপোষণ তার নিজ বাবার উপর ওয়াজিব, এখানে অন্য কেউ শরীক হতে পারবেনা।
وتجب النفقۃ علی الحرّ لطلفہ یعم الأنثی والجمع الفقیر الحرّ … أي إن لم یبلغ حد الکسب۔ (الدر المختار / باب النفقۃ، مطلب: الکلام علی نفقۃ الأقارب ۵؍۳۳۶ زکریا)
সারমর্মঃ তার বাবার উপরেই ভরনপোষণ ওয়াজিব।