আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
140 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (17 points)
আসসালামু আলাইকুম

আমি সপ্তাহ খানেক আগে একটা প্রশ্ন করেছিলাম, যেটা নিচে তুলে ধরছি।

----------------------------

"আমি বাসায় আমার বিয়ের জন্য খুব পিরাপিরি করি, বাসার ওরা তেমন কোনো গুরুত্ব দেয়না এবিষয়ে। তাদের চাহিদা বেশী হওয়ার জন্য কোনো ছেলের বায়োডাটা দেখালেও তাদের পছন্দ হয়না। রিসেন্টলি একটা ছেলের বায়োডাটা ভালো লাগায় বাসায় জানাই। আম্মু দেখে বাট বাসার কিছু ঝামেলার জন্য আব্বু দেখার এখনো সুযোগ পায়নি। আজকে আম্মুকে ফোন করলে শুনি বাসায় অনেক বড় একটা ঝামেলা চলতিসে তাই এই অবস্থায় আব্বুর সাথে এটা নিয়ে আলোচনা করা কিছুতেই সম্ভব না। এই কথা শুনে আমার অনেক মন খারাপ হয়ে যায়, খুব কান্নাও পায় যে আল্লাহ কেন আমার সবরের পরীক্ষা নিচ্ছেন কেন বিয়েটাকে আমার জন্য এতো কঠিন করে দিচ্ছেন। এদিকে ছেলেকেও হ্যা/না কোনো মতামত জানাতে পারছিনা যেহেতু আব্বুর সাথে এখনো কথা হয়নি এটা নিয়ে আবার বাসায় যে ঝামেলা চলতিসে এটাও বাইরের একটা মানুষকে বলতে পারছিনা। আজকে যোহরের সময় আল্লাহর কাছে দোয়া করি খুব যে আল্লাহ যেন খুব দ্রুত উত্তম কোনো ব্যবস্থা করে দেন। তবে এই সম্বন্ধের জন্য আমি এখনো কোনো ইস্তেখারার নামাজ পরিনি।

আজকে যোহরের পর ঘুমালে আমি খুবই বাজে একটা স্বপ্ন দেখি। দেখি যে আমি কোনো একটা ছেলের সাথে কোথাও যাচ্ছি। মাঝরাস্তায় বুঝতে পারি ছেলেটা আমার সাথে খারাপ কিছু করবে। তাই মাঝরাস্তা থেকেই আমি পালিয়ে এক জায়গায় আসি। ওখানকার লোকদের সবকিছু বলি। ওই ছেলেও আমার পিছুপিছু ওখানে আসে। তো ওনাদেরকে সবকিছু বলার পর ওনারা যখন ছেলেটার সাথে কথা বলতে যায় তখন ছেলেটা ওনাদেরকে খুবই বাজেভাবে মারে, বাড়িঘর ভাঙচুর করে, হাত পা ভেঙে ফেলে কারো কারো। তারপর ওখান থেকে আমাকে জোর করে নিয়ে এসে আমাকে বিয়ে করে। কিন্তু এই বিয়েতে আমি একটুও খুশি ছিলামনা, কান্না করছিলাম অনেক আর অনেক ভয়েও ছিলাম।

এই স্বপ্নটার ব্যাখ্যা কি হতে পারে? এটাকি আমি বাসায় যার কথা এখন বলেছি তার সাথে সম্পর্কিত কিছু হতে পারে? কিন্তু আমিতো ইস্তেখারার নামাজ এখনো পরিনি, শুধু নরমাল দোয়া করেছিলাম। তাহলে স্বপ্ন কেন দেখলাম? ওই ছেলের সাথে কি আমার বিয়ের বিষয়ে যোগাযোগ করা উচিত হবে যার কথা বাসায় বলেছি?"

এটা ছিলো তখনকার প্রশ্ন। এই প্রশ্নের জবাবে আমাকে বলা হয়েছিলো এই প্রস্তাব নেগেটিভ হতে পারে তাই ছেলে সম্পর্কে আরো খোজ খবর নিতে এবং সপ্তাহখানেকের মতো ইস্তেখারা করতে। আমি জবাব পাওয়ার পরদিনই ইস্তেখারা করা শুরু করি এবং তিনদিনের মাথায় আবার স্বপ্ন দেখি যে ওই ছেলে আমাকে ইমেইলের মাধ্যমে জানিয়েছে যে তার অভিভাবক আমার অভিভাবকের সাথে যোগাযোগ করতে চায়। ছেলের বাড়ি আমার বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে তাই সেভাবে খোজ খবর নেওয়া হয়নি এখনো। আমার পরের স্বপ্ন অনুযায়ী কি এই প্রস্তাব পজিটিভ নাকি নেগেটিভ? আমার কি এখানে আগানো উচিত হবে? কি করবো আমি এখন?

লিখা অনেক বড় হওয়ার জন্য দুঃক্ষিত উস্তাদ

1 Answer

0 votes
by (564,060 points)
edited by
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


https://ifatwa.info/13381/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ  
ইস্তেখারা অর্থ হল, ভালোকে তালাশ করা। অর্থাৎ যখন কারো সামনে দু’টি রাস্তা থাকে, সে জানেনা কোন রাস্তাটি তার জন্য মঙ্গলজনক, তাহলে এমতাবস্থায় সে ইস্তেখারা করে একটি রাস্তাকে নির্দিষ্ট করবে। সুতরাং কারো অসুখ মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে কি না? সেটা জানার জন্য ইস্তেখারা করার কোনো নিয়ম নাই। হ্যা এ বিষয়ে আল্লাহর মদদ ও সাহায্য কামনার স্বার্থে ইস্তেখারা করা যেতে পারে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
হযরত জাবির রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে

عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُعَلِّمُنَا الِاسْتِخَارَةَ فِي الأُمُورِ كُلِّهَا، كَمَا يُعَلِّمُنَا السُّورَةَ مِنَ القُرْآنِ، يَقُولُ: " إِذَا هَمَّ أَحَدُكُمْ بِالأَمْرِ، فَلْيَرْكَعْ رَكْعَتَيْنِ مِنْ غَيْرِ الفَرِيضَةِ، ثُمَّ لِيَقُلْ: 

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সব কাজে ইস্তিখারাহ্* শিক্ষা দিতেন। যেমন পবিত্র কুরআনের সূরাহ্ আমাদের শিখাতেন। তিনি বলেছেনঃ তোমাদের কেউ কোন কাজের ইচ্ছা করলে সে যেন ফরজ নয় এমন দু’রাক‘আত সালাত আদায় করার পর এ দু’আ পড়েঃ 

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَخِيرُكَ بِعِلْمِكَ وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ، وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ العَظِيمِ، فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلاَ أَقْدِرُ، وَتَعْلَمُ وَلاَ أَعْلَمُ، وَأَنْتَ عَلَّامُ الغُيُوبِ، اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ خَيْرٌ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي - أَوْ قَالَ عَاجِلِ أَمْرِي وَآجِلِهِ - فَاقْدُرْهُ لِي وَيَسِّرْهُ لِي، ثُمَّ بَارِكْ لِي فِيهِ، وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ شَرٌّ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي - أَوْ قَالَ فِي عَاجِلِ أَمْرِي وَآجِلِهِ - فَاصْرِفْهُ عَنِّي وَاصْرِفْنِي عَنْهُ، وَاقْدُرْ لِي الخَيْرَ حَيْثُ كَانَ، ثُمَّ أَرْضِنِي " قَالَ: «وَيُسَمِّي حَاجَتَهُ»

ভাবার্থঃ‘‘প্রভু হে! আমি তোমার জ্ঞানের ওয়াসিলাহ্তে তোমার অনুমতি কামনা করছি; তোমার কুদরতের ওয়াসিলায় শক্তি চাচ্ছি আর তোমার অপার করুণা ভিক্ষা করছি। কারণ তুমিই সর্বশক্তিমান আর আমি দুর্বল। তুমিই জ্ঞানী আর আমি অজ্ঞ এবং তুমিই সর্বজ্ঞ। প্রভু হে! তুমি যদি মনে কর যে, এই জিনিসটি আমার দ্বীন ও দুনিয়ায়, ইহকালে ও পরকালে সত্বর কিংবা বিলম্বে আমার পক্ষে মঙ্গলজনক হবে তা হলে আমার জন্য তা নির্ধারিত করে দাও এবং তার প্রাপ্তি আমার জন্য সহজতর করে দাও। অতঃপর তুমি তাতে বারাকাত দাও। আর যদি তুমি মনে কর এই জিনিসটি আমার দ্বীন ও দুনিয়ায় ইহকালে ও পরকালে আমার জন্য ক্ষতিকর হবে শীঘ্র কিংবা বিলম্বে তাহলে তুমি তাকে আমা হতে দূর করে দাও এবং আমাকে তা হতে দূরে রাখো; অতঃপর তুমি আমার জন্য যা মঙ্গলজনক তা ব্যবস্থা কর- সেটা যেখান থেকেই হোক না কেন এবং আমাকে তার প্রতি সন্তুষ্টচিত্ত করে তোল।’’তিনি ইরশাদ করেন هَذَا الْأَمْرَ  তার প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করবে।(সহীহ বুখারী- (শামেলা);২/৫৭,হাদীস নং১১৬২,কিতাবুন-নাওয়াযিল-৪/৬২৯) 

বিস্তারিত জানুন-https://www.ifatwa.info/1472

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে পরের স্বপ্ন অনুযায়ী এই প্রস্তাব পজিটিভই মনে হচ্ছে। 
আর ১ম স্বপ্নে আপনি তো এই ছেলেকেই দেখেননি,তাই  ১ম স্বপ্নকে এই ছেলের ব্যপারে নেগেটিভ বলা যাচ্ছেনা।

সর্বোপরি এই ছেলের দীনদারী ও কুফুর অন্যান্য বিষয় আপনার মতো হলে আপনার জন্য
এখানে আগানো উচিত হবে বলে মনে করছি।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...