আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
140 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (45 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।

১. আমি আগে আহলে হাদীস ছিলাম।সে সময় কখনো কখনো নামাজে বাংলায় দুআ করতাম।সেসময়  আমরা যেখানে থাকতাম সেখানে পাঞ্জেগানা মসজিদ ছিল। সেখানে মাঝেমধ্যে হুজুর না থাকলে আমাকে নামাজ পড়াতে বলতো। তখন নামাজ পড়াতাম। এখন হানাফি হওয়ার পর যখন বুঝলাম বাংলায় দুআ করা যায় না তখন মনে পড়ে আগে তাদের নামাজ পড়ানোর সময়ও কখনো কখনো বাংলায় দুআ করেছি।এখন আগের কাজের জন্য আফসোস করছি।এখন হুজুর কি করবো?

২. আমরা এখন যে বাসায় আছি সেখানকার টয়লেটের স্ল্যাপ অনেক ছোট।পানি ব্যবহারের সময় পানি স্ল্যাপ থেকে ছিটে আবার শরীরে লাগে।কখনো কখনো আর্থিক সমস্যার কারণে টিস্যু কেনা সম্ভব হয় না। তখন শুধু  পানি ব্যবহার করা লাগে।তখন বাথরুমেই অনেক সময় চলে যায়। অন্য মানুষেরও কষ্ট হয়।কি করবো হুজুর।
৩. ফ্লোরে বাচ্চারা প্রসাব করলে পরিস্কার করার সহজ কোনো নিয়ম কি আছে পানি ঢালা ছাড়া।পানি ঢাললে দেখা যায় প্রসাব আর পানি মিশে তো আবার পুরোটাইতো নাপাক হয়ে যায়।আবার ঘরের মেঝে পানি ঢেলে পাক করতে গেলে অন্যান্য আসবাবেও পানি লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে বা পানি কখনো অন্য আসবাবে লেগে গেলে সেটাতে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য এটার অন্য উপায় কি আছে হুজুর।
৪. ইস্তেঞ্জায় টিস্যু ব্যবহারের সময় টিস্যু কি পরিপূর্ণ  পরিষ্কার দেখালেই কি ইস্তেঞ্জা হয়েছে ধরতে হবে নাকি গুপ্তস্থান পরিস্কার হয়েছে প্রবল ধারণা হলেই ইস্তেঞ্জা হয়েছে ধরলে চলবে।

1 Answer

0 votes
by (575,580 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
আপনি যেহেতু সেই সময় আহলে হাদীস অনুসারী ছিলেন,সুতরাং সেই নামাজ গুলি আদায় হয়ে গিয়েছে। এগুলো নিয়ে আর চিন্তিত না হওয়ার পরামর্শ থাকবে। 

(০২)
হাদীস শরীফে এসেছে-

يَا عَمَّارُ إِنَّمَا يُغْسَلُ الثَّوْبُ مِنْ خَمْسٍ: مِنَ الْغَائِطِ وَالْبَوْلِ وَالْقَيْءِ وَالدَّمِ وَالْمَنِيِّ

আম্মার বিন ইয়াসার রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-নিশ্চয় ৫টি কারণে কাপড় ধৌত করতে হয়, যথা-১-পায়খানা, ২-প্রশ্রাব, ৩-বমি, ৪-রক্ত, ৫-বীর্য। {সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৪৫৮}

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি শুরুতে টিস্যু পেপার ব্যবহার করে লজ্জাস্থান পরিস্কার করে নিবেন,তারপর পানি ব্যবহারে আগে টয়লেটের প্যান ও আশেপাশের জায়গা ভালোভাবে ধুয়ে নিবেন।

এরপর পানি দিয়ে লজ্জাস্থান ধৌত করবেন,তাহলেই আর কোনো সমস্যা হবেনা,ইনশাআল্লাহ। 
সময়ও কম লাগবে।

(০৩)
https://ifatwa.info/17831/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ

টাইলস বিহীন ফ্লোরে যদি নাপাকি পড়ার পর তা পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে পরবর্তীতে তাতে ভেজা পা পড়লে সেক্ষেত্রে পা নাপাক হবে না। 

(قَوْلُهُ: إلَّا حَجَرًا خَشِنًا إلَخْ) فِي الْخَانِيَّةِ مَا نَصُّهُ: الْحَجَرُ إذَا أَصَابَتْهُ النَّجَاسَةُ، إنْ كَانَ حَجَرًا يَتَشَرَّبُ النَّجَاسَةَ كَحَجَرِ الرَّحَى يَكُونُ يُبْسُهُ طَهَارَةً، وَإِنْ كَانَ لَا يَتَشَرَّبُ لَا يَطْهُرُ إلَّا بِالْغَسْلِ. اهـ. وَمِثْلُهُ فِي الْبَحْرِ.
وَبَحَثَ فِيهِ فِي شَرْحِ الْمُنْيَةِ فَقَالَ هَذَا بِنَاءً عَلَى أَنَّ النَّصَّ الْوَارِدَ فِي الْأَرْضِ مَعْقُولُ الْمَعْنَى؛ لِأَنَّ الْأَرْضَ تَجْذِبُ النَّجَاسَةَ وَالْهَوَاءَ يُجَفِّفُهَا فَيُقَاسُ عَلَيْهِ مَا يُوجَدُ فِيهِ ذَلِكَ الْمَعْنَى الَّذِي هُوَ الِاجْتِذَابُ، وَلَكِنْ يَلْزَمُ مِنْهُ أَنْ يَطْهُرَ اللَّبِنُ وَالْآجُرُّ بِالْجَفَافِ وَذَهَابِ الْأَثَرِ وَإِنْ كَانَ مُنْفَصِلًا عَنْ الْأَرْضِ لِوُجُودِ التَّشَرُّبِ وَالِاجْتِذَابِ. اهـ. وَعَلَى هَذَا اسْتَظْهَرَ فِي الْحِلْيَةِ حَمْلَ مَا فِي الْخَانِيَّةِ عَلَى الْحَجَرِ الْمَفْرُوشِ دُونَ الْمَوْضُوعِ، وَهَذَا هُوَ الْمُتَبَادِرُ مِنْ عِبَارَةِ الشُّرُنْبُلَالِيَّةِ، لَكِنْ يَرُدُّ عَلَيْهِ أَنَّهُ لَا يَظْهَرُ فَرْقٌ حِينَئِذٍ بَيْنَ الْخَشِنِ وَغَيْرِهِ، فَالْأَوْلَى حَمْلُهُ عَلَى الْمُنْفَصِلِ كَمَا هُوَ الْمَفْهُومُ الْمُتَبَادِرُ مِنْ عِبَارَةِ الْخَانِيَّةِ وَالْبَحْرِ.
وَيُجَابُ عَمَّا بَحَثَهُ فِي شَرْحِ الْمُنْيَةِ بِأَنَّ اللَّبِنَ وَالْآجُرَّ قَدْ خَرَجَا بِالطَّبْخِ وَالصَّنْعَةِ عَنْ مَاهِيَّتِهمَا الْأَصْلِيَّةِ بِخِلَافِ الْحَجَرِ فَإِنَّهُ عَلَى أَصْلِ خِلْقَتِهِ فَأَشْبَهَ الْأَرْضَ بِأَصْلِهِ، وَأَشْبَهَ غَيْرَهَا بِانْفِصَالِهِ عَنْهَا، فَقُلْنَا إذَا كَانَ خَشِنًا فَهُوَ فِي حُكْمِ الْأَرْضِ؛ لِأَنَّهُ لَا يَتَشَرَّبُ النَّجَاسَةَ، وَإِنْ كَانَ أَمْلَسَ فَهُوَ فِي حُكْمِ غَيْرِهَا؛ لِأَنَّهُ لَا يَتَشَرَّبُ النَّجَاسَةَ - وَاَللَّهُ أَعْلَمُ -
«حاشية ابن عابدين = رد المحتار ط الحلبي» (1/ 312)
মর্মার্থ-
ফ্লোর যদি টাইলসবিহীন হয়, তাহলে নাপাকির ওপর পানি ঢেলে দিলে তা পবিত্র হয়ে যাবে। তবে পানি ঢালার পূর্বেই যদি শুকিয়ে যায়, তাহলেও পবিত্র হয়ে যাবে। কেননা তা মাটির হুকুমে। আর যদি ফ্লোর টাইলসবিশিষ্ট হয় এবং টাইলসগুলো আয়নার মতো সমান হয় এবং পানি চোষার ক্ষমতা না রাখে, তাহলে তা আয়নার হুকুমে। অর্থাৎ কোন কাপড় জাতীয় বস্তু দ্বারা মুছে ফেললে পবিত্র হয়ে যাবে। কিন্তু টাইলসে যদি মাটির মতো শোষণ ক্ষমতা থাকে, তাহলে তা মাটির হুকুমে। অর্থাৎ শুকানোর দ্বারা পবিত্র হয়ে যাবে। আর যদি শোষণ ক্ষমতা না থাকে এবং আয়নার মতো সমানও না হয়, তাহলে নাপাকি দূর হওয়া পর্যন্ত পানি দিয়ে তা ভালো ভাবে ধুতে হবে। (আরো জানতে দেখুন- ই’লাউস সুনান: ১/৩৯২, হিদায়া: ১/৫৬, ফতহুল কদীর: ১/১৭৪, মাবসুতে সারখসী: ১/২০৬)
,
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
উক্ত ফ্লোর যদি মাটির হয়, বা তাতে চুষে নেয়ার ক্ষমতা থাকে, তাহলে তা শুকিয়ে গেলে এমনিতেই পাক পবিত্র হয়ে যাবে। তবে চুষে নেয়ার ক্ষমতা না থাকলে, কোনো কিছু দ্বারা প্রথমে প্রস্রাবকে তুলে নিয়ে কাপড় ইত্যাদি দ্বারা ধৌত করতে হবে। অথবা বেশীকরে পানি ঢেলে  সমস্ত ফ্লোরকে ধৌত করে পানি অন্যত্র ফেলে দিতে হবে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

এক্ষেত্রে পানি দ্বারা ধৌত না করে মুছে দিলে সেক্ষেত্রে ফ্লোর ১ বার মুছে পুরোপুরি না শুকিয়ে ৩-৪ মিনিট শুকিয়ে এভাবে ২য় বার করে পুরোপুরি না শুকিয়ে ৩-৪ মিনিট শুকিয়ে সবশেষে ৩য় বার মুছে ভালো করে শুকালে ফ্লোর পবিত্র হবে।প্রতিবার ভালভাবে শুকাতে হবে না।

(০৪)
ইস্তেঞ্জায় টিস্যু ব্যবহারের সময় টিস্যু পরিপূর্ণ পরিষ্কার দেখালেই ইস্তেঞ্জা হয়েছে ধরবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...