আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
140 views
in পবিত্রতা (Purity) by (16 points)
আসসলামুয়ালাইকুম,

১/ ফ্লোরের পবিত্র করার সময় সবকিছু তিনবার মুছার পর আমার একটা সন্দেহ কাজ করছে সেটা হলো যে কাপড়টা দিয়ে ফ্লোর মুছা হয় সেটা সোফা বা টেবিলের স্টিলের সাথে লাগে তিনবার মুছার সময় তিনবার লাগে এখন কি সবকিছু পাক হয়েছে নাকি অপবিত্র রয়ে গেছে যেহেতু বারবার ওগুলোর সাথে লেগেছে?

২/ দরজা বা স্টিলের এমন কিছু যেগুলো ধৌত করা যাবে না আর পানিও শোষণ করে না এগুলো কি তিনটা Wet wipes দিয়ে তিনবার মুচলে পাক হবে?
উল্লেখ্য, একই ভাবে ফ্লোরে কিছু নাপাকি পড়লে (অদৃশ্য) ওই জায়গাটা তিনবার মুছে দিলে হবে? কারন আমার ওয়াসওয়াসার সমস্যা। কাপড় দিয়ে মুছে আবার ধৌত করতে গেলে বেশি পানি খরচ হয়।

৩/ যদি কাপড় দিয়ে মুছতে হয়, তাহলে আমি যদি কাপড় একদম ধোয়ে নিংড়িয়ে হালকা ভেজা থাকে এমনভাবে তিনবার মুছে দি(নতুন পানি দিয়ে ধৌত করে) তাহলে কি এটা পাক হবে?

৩.১/ প্লাস্টিকের কভার বা এমন কিছু যেগুলো পানি শোষণ করে না কিন্তু ধৌত করা যাবে, এরকম কিছু ধৌত না করে তিনবার কাপড় বা Wet tissue দিয়ে মুছলে কি পবিত্র হবে?
৪/আগে ফ্লোরে নাপাকি সম্পর্কে অসতর্ক হওয়ায় অনেকে ভিজা স্যান্ডেল বা পায়ে অনেক হেটেছে এখন এগুলো খুজে বের করাও মুশকিল কোথায় নাপাকি লেগেছে আর লাগেনি। এখন আপনাদের পরামর্শ কি?

৫/ এমন  নাপাক হাত যেটা সামান্য ভিজা, শুকনা পাক কাপড়ে লাগলে হালকা ভিজবে কিন্তু চিপালে কিছু বের হবে না। এভাবে কি পাক কাপড়টি নাপাক হবে?

৬/ আপনাদের সাথে লাইভ কথা বলার লিংক আর নিয়মগুলো জানালে খুশী হতাম।

৭/মগ, বালতি অথবা বদনা(প্লাস্টিকের কিছু) এগুলোতে নাপাক পানির ছিটা ইত্যাদি পড়লে শুধু প্রবাহিত পানিতে ভালো তিনবার পানি ঢেলে ধৌত করলে হবে? নাকি হাত দিয়ে ঘষাঘষি করে ধৌত করতে হবে? কারন আমি এতদিন শুধু পানি দিয়েই ধৌত করে চলে আসছি। হাত দিয়ে ধৌত করি নি।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


হাদীস শরীফে   এসেছে-

يَا عَمَّارُ إِنَّمَا يُغْسَلُ الثَّوْبُ مِنْ خَمْسٍ: مِنَ الْغَائِطِ وَالْبَوْلِ وَالْقَيْءِ وَالدَّمِ وَالْمَنِيِّ

আম্মার বিন ইয়াসার রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-নিশ্চয় ৫টি কারণে কাপড় ধৌত করতে হয়, যথা-১-পায়খানা, ২-প্রশ্রাব, ৩-বমি, ৪-রক্ত, ৫-বীর্য। {সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৪৫৮}

https://ifatwa.info/17831/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ

টাইলস বিহীন ফ্লোরে যদি নাপাকি পড়ার পর তা পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে পরবর্তীতে তাতে ভেজা পা পড়লে সেক্ষেত্রে পা নাপাক হবে না। 

(قَوْلُهُ: إلَّا حَجَرًا خَشِنًا إلَخْ) فِي الْخَانِيَّةِ مَا نَصُّهُ: الْحَجَرُ إذَا أَصَابَتْهُ النَّجَاسَةُ، إنْ كَانَ حَجَرًا يَتَشَرَّبُ النَّجَاسَةَ كَحَجَرِ الرَّحَى يَكُونُ يُبْسُهُ طَهَارَةً، وَإِنْ كَانَ لَا يَتَشَرَّبُ لَا يَطْهُرُ إلَّا بِالْغَسْلِ. اهـ. وَمِثْلُهُ فِي الْبَحْرِ.
وَبَحَثَ فِيهِ فِي شَرْحِ الْمُنْيَةِ فَقَالَ هَذَا بِنَاءً عَلَى أَنَّ النَّصَّ الْوَارِدَ فِي الْأَرْضِ مَعْقُولُ الْمَعْنَى؛ لِأَنَّ الْأَرْضَ تَجْذِبُ النَّجَاسَةَ وَالْهَوَاءَ يُجَفِّفُهَا فَيُقَاسُ عَلَيْهِ مَا يُوجَدُ فِيهِ ذَلِكَ الْمَعْنَى الَّذِي هُوَ الِاجْتِذَابُ، وَلَكِنْ يَلْزَمُ مِنْهُ أَنْ يَطْهُرَ اللَّبِنُ وَالْآجُرُّ بِالْجَفَافِ وَذَهَابِ الْأَثَرِ وَإِنْ كَانَ مُنْفَصِلًا عَنْ الْأَرْضِ لِوُجُودِ التَّشَرُّبِ وَالِاجْتِذَابِ. اهـ. وَعَلَى هَذَا اسْتَظْهَرَ فِي الْحِلْيَةِ حَمْلَ مَا فِي الْخَانِيَّةِ عَلَى الْحَجَرِ الْمَفْرُوشِ دُونَ الْمَوْضُوعِ، وَهَذَا هُوَ الْمُتَبَادِرُ مِنْ عِبَارَةِ الشُّرُنْبُلَالِيَّةِ، لَكِنْ يَرُدُّ عَلَيْهِ أَنَّهُ لَا يَظْهَرُ فَرْقٌ حِينَئِذٍ بَيْنَ الْخَشِنِ وَغَيْرِهِ، فَالْأَوْلَى حَمْلُهُ عَلَى الْمُنْفَصِلِ كَمَا هُوَ الْمَفْهُومُ الْمُتَبَادِرُ مِنْ عِبَارَةِ الْخَانِيَّةِ وَالْبَحْرِ.
وَيُجَابُ عَمَّا بَحَثَهُ فِي شَرْحِ الْمُنْيَةِ بِأَنَّ اللَّبِنَ وَالْآجُرَّ قَدْ خَرَجَا بِالطَّبْخِ وَالصَّنْعَةِ عَنْ مَاهِيَّتِهمَا الْأَصْلِيَّةِ بِخِلَافِ الْحَجَرِ فَإِنَّهُ عَلَى أَصْلِ خِلْقَتِهِ فَأَشْبَهَ الْأَرْضَ بِأَصْلِهِ، وَأَشْبَهَ غَيْرَهَا بِانْفِصَالِهِ عَنْهَا، فَقُلْنَا إذَا كَانَ خَشِنًا فَهُوَ فِي حُكْمِ الْأَرْضِ؛ لِأَنَّهُ لَا يَتَشَرَّبُ النَّجَاسَةَ، وَإِنْ كَانَ أَمْلَسَ فَهُوَ فِي حُكْمِ غَيْرِهَا؛ لِأَنَّهُ لَا يَتَشَرَّبُ النَّجَاسَةَ - وَاَللَّهُ أَعْلَمُ -
«حاشية ابن عابدين = رد المحتار ط الحلبي» (1/ 312)
মর্মার্থ-
ফ্লোর যদি টাইলসবিহীন হয়, তাহলে নাপাকির ওপর পানি ঢেলে দিলে তা পবিত্র হয়ে যাবে। তবে পানি ঢালার পূর্বেই যদি শুকিয়ে যায়, তাহলেও পবিত্র হয়ে যাবে। কেননা তা মাটির হুকুমে। আর যদি ফ্লোর টাইলসবিশিষ্ট হয় এবং টাইলসগুলো আয়নার মতো সমান হয় এবং পানি চোষার ক্ষমতা না রাখে, তাহলে তা আয়নার হুকুমে। অর্থাৎ কোন কাপড় জাতীয় বস্তু দ্বারা মুছে ফেললে পবিত্র হয়ে যাবে। কিন্তু টাইলসে যদি মাটির মতো শোষণ ক্ষমতা থাকে, তাহলে তা মাটির হুকুমে। অর্থাৎ শুকানোর দ্বারা পবিত্র হয়ে যাবে। আর যদি শোষণ ক্ষমতা না থাকে এবং আয়নার মতো সমানও না হয়, তাহলে নাপাকি দূর হওয়া পর্যন্ত পানি দিয়ে তা ভালো ভাবে ধুতে হবে। (আরো জানতে দেখুন- ই’লাউস সুনান: ১/৩৯২, হিদায়া: ১/৫৬, ফতহুল কদীর: ১/১৭৪, মাবসুতে সারখসী: ১/২০৬)
,
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
উক্ত ফ্লোর যদি মাটির হয়, বা তাতে চুষে নেয়ার ক্ষমতা থাকে, তাহলে তা শুকিয়ে গেলে এমনিতেই পাক পবিত্র হয়ে যাবে। তবে চুষে নেয়ার ক্ষমতা না থাকলে, কোনো কিছু দ্বারা প্রথমে প্রস্রাবকে তুলে নিয়ে কাপড় ইত্যাদি দ্বারা ধৌত করতে হবে। অথবা বেশীকরে পানি ঢেলে  সমস্ত ফ্লোরকে ধৌত করে পানি অন্যত্র ফেলে দিতে হবে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

এক্ষেত্রে পানি দ্বারা ধৌত না করে মুছে দিলে সেক্ষেত্রে ফ্লোর ১ বার মুছে পুরোপুরি না শুকিয়ে ৩-৪ মিনিট শুকিয়ে এভাবে ২য় বার করে পুরোপুরি না শুকিয়ে ৩-৪ মিনিট শুকিয়ে সবশেষে ৩য় বার মুছে ভালো করে শুকালে ফ্লোর পবিত্র হবে।প্রতিবার ভালভাবে শুকাতে হবে না।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
এক্ষেত্রে সোফা বা টেবিলের স্টিলের একই স্থানে তিনবার লাগলে সেই স্থানও পাক হয়ে যাবে।

তবে সোফার ফোমের উপর লাগলে তাহা পাক হবেনা।

(০২)
এগুলো তিনটি Wet wipes দিয়ে তিনবার মুছলে পাক হবে 

(০৩)
হ্যাঁ পবিত্র হবে।
তবে তার মধ্যে নকশা বা উঁচু নিচু কাজ থাকা যাবেনা।

সেক্ষেত্রে ধোয়া লাগবে।

(০৪)
পরামর্শ হলো বিশেষ প্রয়োজনের ভিত্তিতে পূর্বের বিষয় নিয়ে টেনশন না করে বর্তমান ও ভবিষ্যতে যেনো আর এমন না হয়,সেদিকে সতর্ক থাকা।

(০৫)
এভাবে পাক কাপড়টি নাপাক হবে।

(০৬)
এ সংক্রান্ত জানার জন্য IOM কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ রইলো।

(০৭)
এক্ষেত্রে প্রশ্নের বিবরন মতে ভালোভাবে একবার ধৌত করলেই হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...