স্ত্রীর সাথে বনিবনা হচ্ছেইনা। স্ত্রীর সমস্যা:
১। আমার জব না থাকা (চেস্টা করছি, হচ্ছেনা)
২। মাথা গরম থাকা (সবসময় এয়াগিনা, কেবল ভুল বুঝলে আর মিথ্যা বললেই রাগি, এছাড়া আমি নম্র বলেই আমার ধারণা)
৩৷ নামাজ মিস দেয়া (একসময় প্রচুর নামাজ পড়তাম, বর্তমানে শয়তানের পাল্লায় পড়েছি। তবে নিয়মিত হবার ইচ্ছা আছে আর চেস্টা করছি)। উল্লেখ্য, আমি মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তাম তারপরেও সে তার বাবাকে বলত আমি নামাজ পড়িনা। আর এর জন্য কথা শুনতে হয়। তাই মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েছিলাম। আমি চিন্তা করেছিলাম, আমাকে যেহেতু কথা শুনতেই হয় তবে নামাজ না পড়েই কথা শুনি। মিথ্যা অপবাদ নিতে পারছিলাম না। তবে আমি দ্বীনের পথে ফিরে আসতে প্রবল আগ্রহী। দ্বীনের প্রতি মন টানে। আল্লাহকে পেতে চাই)
৪। কিছু ব্যক্তিগত বদ অভ্যাস (সিগারেট,মাস্টারবেশন) আছে।
৫। আমি তাকে অভ্যাসগুলো ত্যাগ করার জন্য আল্লাহর কসম দিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েও রাখতে পারিনি। (সে আমাকে বাধ্য করেছিল। নতুবা সংসার সম্ভব হতনা)। উল্লেখ্য, আমি বলেছিলাম আমি অভ্যাস গুলো আগে পরিত্যাগ করব তারপর কসম করব। আর একবারে পারব না৷ ধীরে ধীরে পারব। বর্তমানে মাস্টারবেশন করতে পারিনা খুব। আর সিগারেট খাওয়া কমিয়েও দিয়েছিলাম। এরপরেও সে অনেক চাপাচাপি করে কসম করায়। সংসার টেকাতে কসম করতে হয়েছিল।
৬। আমি নিয়মিত সহবাস করিনা। ( মাসে ১/২ বারের বেশি পারিনা। মূলত নারী আসক্তি কম ও ডিপ্রেশনের ওষুধের সাইড ইফেক্ট)
আমার দিক থেকে অভিযোগ:
১৷ স্ত্রী ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে ঘন ঘন বাবার বাড়ি চলে যায় আমার অনুমতি ছাড়া আর মাসের পর মাস থাকে। (গত ১০ মাসের মধ্যে ৪ মাস ও একসাথে থাকতে পারিনি)
২। স্ত্রী আমার ব্যক্তিগত কথা সমূহ বাসায় বলে দেয় যেকারণে তার বাসা থেকে আমাকে অপমান করা হয়। সে বলে, আমার লাইফ স্টাইলের কারণে তার মানসিক সমস্যা করছে। সে আর তার ফ্যামিলি আমার ভাল চায়। কিন্তু তাদের এপ্রোচে আমি অপমানিত বোধ করি। তারা সমালোচনা করে বলেই মনে হয়। আর তাদের ভাষ্যমতে, তারা আমাকে অপমান করছেনা বরং বোঝাচ্ছে। কেউ আমার শত্রু না। কিন্তু আমি তো অপমানিত বোধ করছি। আমার মনে হয় তারা সমালোচনার ভঙ্গিতে বোঝাচ্ছে।
৩। প্রায় প্রত্যেকবার ই স্ত্রীর আর তার পরিবারের হাতে পায়ে ধরে নিয়ে আসতে হয়৷ আমার জব হচ্ছেনা দেখে তারা আসতে দিতে চায়না।
৪। আমি যখন ইসলামের সাহায্যে তাকে বোঝানোর চেস্টা করি, সে মানতে চায়না। উলটো নিজেকে জাস্টিফাই করে।
৫। আমাকে শ্বশুর মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে। আমার স্ত্রী এক সপ্তার কথা বলে বাপের বাড়িতে গেছে এখন তাকে আনতে যাওয়ার কথা বললে শ্বশুর আমাকে জব না থাকার ব্যাপারে অনেক কথা শোনায়। জব হবার আগে তিনি তার মেয়েকে আমার কাছে দিতে চান না। আমাকে আর মাকে বলে আমি নাকি জবের চেস্টা করিনা। সাথে আরো কটু কথা বলেন। আমি তাকে জানালাম, আমার কাছে প্রমাণ যে জবের চেস্টা করার প্রমাণ আছে। আপনি তো দেখছেন না যে আমি চেস্টা করছি নাকি করছিনা। উনি বলছেন - আমরা সবই বুঝি। তখন আমি তাকে মিথ্যাবাদী বলি। উনি কিছুতেই আমার কথা মানতে চায়না দেখে উচু গলায় কথা বলি আর তার কাছে ব্যাখ্যা আর দলিল চাই। আমার মার সাথে জব নিয়ে কটু কথা বলে। যার প্রেক্ষিতে উচু গলায় প্রতিবাদ করি তবে কোন গালি দিইনি।
উনি কিছুই বুঝতে চান না। উনাকে জানানো হয়েছে যে ইসলাম মতে আমার স্ত্রীর পক্ষে বাবার বাড়িতে থাকার অনুমতি নেই যদি আমি অনুমতি না দিয়ে থাকি। তবুও উনি জবের প্রসংগ আর আর্থিক অবস্থার কথা টেনে এনে মেয়েকে দিতে চায়না। উনি বলেন যে উনার মেয়েকে আনতে হলে আমার মা কে নিয়ে যেতে হবে। অথচ আমার মার পক্ষে জার্নি করা কস্টদায়ক।
এখন আমার চাওয়া হচ্ছে আমি স্ত্রী কে ঘরে আনতে চাই। এজন্য তাদের ইসলামিক ভাবে বোঝাতে চাই। কিন্তু স্ত্রী আর তার ফ্যামিলি জবের আগে সংসারে আগ্রহী নয়।
৭। অতঃপর আমি মেয়ের ভাইকে ভয়েস মেসেজ দিছি সেখানে খুব সুন্দর করে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করি ইসলামের বিধান কি, সেটাও জানার চেষ্টা করি এবং একটা পর্যায়ে কিছুটা বাধ্য হয়ে তাদের সামাজিক অবস্থানের কথা তুলে ধরি। আমি এভাবে বলি যে আমি আপনাদেরকে অনুরোধ করবো যেন পরিপূর্ণভাবে ইসলামের মধ্যে প্রবেশ করে আর কথা বলার সময় ভদ্রতা বজায় রাখবেন। এটি আশা করি আপনাদের সামাজিক অবস্থান বিবেচনায় রাখবেন। আমি একজন ভদ্র শিক্ষিত পরিবারের ছেলে। জব নাই থাকতে পারে। তবে আমি প্রফেসরের নাতি, চাচা সচিব। আমরা যথেষ্ট ভদ্র আর শিক্ষিত। আপনার বাবা একজন ফল বিক্রেতা। তার পক্ষে প্রফেসরের নাতি কে কথা শোনানো উচিত নয়। যথেষ্ট যুক্তি প্রমাণ দিয়ে কথা বললাম। এরপরেও আপনাদের ধারণা পরিবর্তন না হয় তবে আমি চুপ থাকব এবং আল্লাহর কাঠগড়ায় আপনাদের ছেড়ে দিব।
উল্লেখ্য, বিয়ের পূর্বে মেয়েকে বিস্তারিত বোঝানো হয়েছিল। আমার অবস্থা বুঝিয়ে তাকে সরে যেতে বলেছিল। কিন্তু সে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
তার পরিবার কে জানানো হয়েছিল - আপনারা জেনে শুনে কেন আগুনে হাত দিচ্ছেন। আমাদের ছেলে প্রস্তুত না। ওর জব নাই। অর্থাৎ, একটা নেগেটিভ সাইন দেখানো হয়েছিল। যদিও পরে কনভিন্স করেই বিয়েটা করেছি।
এখন তারা বলছে - আমরা কি জানতাম ছেলে এমন? আমরা বললাম - মেয়েকে বিস্তারিত জানানো ও হয়েছে আর বোঝানোও হয়েছে। তারা বলছে - তদের কে তো জানানো হয়নি।
তার পরিবার বিয়ের আগে বলেছিল - শিক্ষিত মানুষ জব হয়ে যাবে।
আর এখন জবের চেস্টা করেও জব হচ্ছেনা দেখে কথা শোনাচ্ছে। আমি বোঝাতে গেলেও মানতে চাইছেনা।
৬। আমার স্ত্রী নিজেকে বাচাতে অনেক মিথ্যা বলে। আমার নামেও বলে। (হয়ত আবেগের বসে নির্বুদ্ধিতার কারণে বলে) তবে প্রমাণ করতে বললে পারেনা আর যুক্তিতেও পারেনা।
উল্লেখ্য, নিজের বাড়ি আছে, খাওয়া, পোশাক, চিকিৎসার সমস্যা নাই।
একটাই সমস্যা হল আমার ইনকাম না থাকা।
আমার প্রশ্ন:
১। আমি তাদের ইসলামের আলোকে কিভাবে বোঝাতে আর সতর্ক করতে পারি? (ইসলামের বিধান ও শাস্তি দুটাই জানাবেন)
২। আমি কি শ্বশুরের সাথে অন্যায় আচরণ করেছি? আমি মূলত মায়ের অপমানের আর অপবাদের কারণে রেগে প্রতিবাদ করেছিলাম। আমার মা প্রথমে সুন্দরভাবে বোঝাচ্ছিল কিন্তু মানতে চাইছিল না।
৩৷ ইসলাম দিয়ে বোঝানোর পরেও যদি তারা বুঝতে না চায়, মানতে না চায় তবে কি এ সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসা উচিত হবে? কারণ যারা ইসলাম মানে না, বুঝতে চায়না তারা তো মুমিন ই নয়।
৪। আমার শ্বশুরবাড়ি, নামাজ, পর্দা, আমলের ব্যাপারে অনেক কথা বলে। অপরদিকে ইসলামের কথা বললেও মেয়েকে আসতে দিতে চায়না। ইসলামের বিধান জানে। এখন আমার কাছে মনে হয় তারা ভন্ড আর সুবিধামত ইসলাম কে ব্যবহার করছে। তারা নিফাকিতে লিপ্ত আছে। এ ধারণা কি অযৌক্তিক ও এর জন্য আমি গুনাহগার হব?
৫। আমার দিক থেকে উপরের পরিস্থিতি যদি সত্যি হয় তবে কি আমার সাথে অনায্য আচরণ করা হচ্ছে? আমি মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েছি খুব।
৬। আমার শ্বশুর কি ইচ্ছাকৃতভাবে ইসলামের বিধান জানার পরেও আমাকে আমার হক থেকে বঞ্চিত করছেন না? আমার শ্বশুর কি অন্যায় করছেন না?
৭। আমি কি ভুল করেছি? আমি তো প্রথমে বিনয়ের সাথে ঠান্ডা মাথায় কথা বলে সমঝোতা করার চেষ্টা করছিলাম। আমি মূলত হেকমার সাথে তাদেরকে বোঝাতে চেয়েছিলাম। প্রথমে, ওদেরকে ঠান্ডা মাথায় কথা বলি তারপর সতর্ক করি তারপর তাদের অবস্থানটা তুলে ধরি এবং এটা বোঝাতে চাই যে মানুষের দুর্বল জায়গায় আঘাত করলে কি রকম লাগে।
৮। আমি কি অন্যায় করেছি? বিয়ের আগে তো সব ক্লিয়ার ই করেছি। নাকি আরো বিস্তারিত বলা উচিত ছিল?