আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
196 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (4 points)
আমি একজন মেয়ে।
১.আমি মহিলা মাদ্রাসায় পড়ি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে মাদ্রাসার সাথে মহিলা কলেজের ৩ তলা বিশিষ্ট বিল্ডিং রয়েছে।এরমধ্যে ২য় এবং ৩য় তলার কর্ণারের একরুমে পর্দা দেয়া, খুব সম্ভবত সেখানে শিক্ষকগন থাকেন।আজকে দেখলাম সেই রুমের জানালা খোলা।কলেজের ওইরুম থেকে আমাদের মাদ্রাসার রুমের +বাহিরে কেউ গেলে তাকে দেখার সম্ভাবনা আছে৷ বিষয়টি আমাদের উস্তাদাকে জানালে তিনি বলেন যে,কলেজের উনাদের নিষেধ করা আছে যেন না তাকায় এবং সেজন্য ই নাকি কলেজের রুমগুলোতে পর্দা দিয়ে রাখা৷
আমার প্রশ্ন হচ্ছে :বাহিরে বের হওয়ার সময় নাহয় খেয়াল করা যেন যে কোন গাইরে মাহরাম আছে কিনা কিন্তু তাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে এবং রুমে পর্দা দেয়া এরপরও যদি কলেজ রুম থেকে কোন পুরুষ মানুষ আমাকে দেখে বেপর্দা অবস্থায় এতে কী আমার গুনাহ হবে?(যেহেতু তাদের নিষেধ করা হয়েছে।কিন্তু কেউ যদি না জেনে থেকে তাকায় তখন আমাকে দেখে?) এসব চিন্তা কাজ করছে৷ উত্তর জানাবেন হুজুর ইন শা আল্লাহ।

২.আমার আব্বা জীবিত এবং আয় করেন।আব্বা আমার তেমন ভরণপোষণ করেন না বা যা লাগে তা দেন না। ভাই আয় করে। সে দেয়ার চেষ্টা করে।কিন্তু তার আয়ে হারাম যুক্ত আছে মনে হয়।এটি আমি শিউর না আমার সন্দেহ। ভাই হারাম আয় করলে সেখান থেকে আমার দেখাশোনা করলে আমার হারাম খাওয়ার গুনাহ হবে?

৩.একজন অবিবাহিত মেয়ে যার দাওরায়ে হাদিস শেষ করতে বয়স প্রায় ২৩-২৪ হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে সে যদি এমন নিয়ত রাখে যে তার দাওরায়ে হাদিস শেষ হওয়ার পর ই যেন বিয়ে হয় বা এর আগে বিয়ে করতে না চায় তাহলে কী সে নারীবাদী হয়ে যাবে?এক্ষেত্রে শরীয়তবিরোধী কিছু করা হবে কীনা?

1 Answer

0 votes
by (564,660 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
আপনার মাদ্রাসার রুমের +বাহিরে কেউ গেলে তাকে যেহেতু দেখার সম্ভাবনা আছে,সুতরাং রুমের বাহিরে যাওয়ার সময় সেদিকে নজর দিতে হবে যে কেউ দেখছে কিনা?

সতর্ক হয়ে রুমের বাহিরে যেতে হবে।
কেউ দেখতেছে,এমনটি বুঝতে পারলে পর্দা আবৃত অবস্থায় যেতে হবে।

সতর্কতার সহিত চলা ফেরার পরেও হঠাৎ করে কেউ দেখে ফেললে আপনাদের গুনাহ হবেনা।

(০২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا، وَإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ، فَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا، إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ} [المؤمنون: ٥١] وَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ} [البقرة: ١٧٢] ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ، يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ، يَا رَبِّ، يَا رَبِّ، وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ، وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ؟ "
 তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ তা'আলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা'আলা তার প্রেরিত রসূলদের যে হুকুম দিয়েছেন মুমিনদেরকেও সে হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র ও হালাল জিনিস আহার কর এবং ভাল কাজ কর। আমি তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে জ্ঞাত।" (সূরা আল মু'মিনূন ২৩ঃ ৫১)তিনি (আল্লাহ) আরো বলেছেন, “তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনা আমি তোমাদের যে সব পবিত্র জিনিস রিযক হিসেবে দিয়েছি তা খাও”— (সূরা আল বাকারাহ ২ঃ ১৭২)। অতঃপর তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সফর করে। ফলে সে ধুলি ধূসরিত রুক্ষ কেশধারী হয়ে পড়ে। অতঃপর সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, “হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং আহার্যও হারাম। কাজেই এমন ব্যক্তির দু'আ তিনি কী করে কবুল করতে পারেন?”(সহীহ মুসলিম-১০১৫)

বাবার ইনকাম হারাম হলে,
সাবালক ছেলে বাবার ইনকাম থেকে কিছুই গ্রহণ করতে পারবেনা।
তবে যদি সে অপারগ থাকে,তাহলে পরবর্তীতে ঐ টাকা সদকাহ করার নিয়তে হিসেব করে করে বাবার কাছ থেকে আপাতত নিতে পারবে।

মেয়ের বাবার ইনকাম যদি হারাম হয়,এবং ঐ বাবার মেয়ে যদি দ্বীনদ্বার হয়,তাহলে এমন মেয়েকে বিয়ে করতে কোনো অসুবিধে নাই।
কেননা বাবার ইনকাম হারাম হলেও বাবার উপর শরীয়ত কর্তৃক মেয়েকে লালন পালন করা ওয়াজিব।হারাম খাওয়ানোর দরুণ বাবাকে জবাবদিহি করতে হবে।তবে মেয়ে নিরাপরাধ হিসেবেই থাকবে।
নাবালক ছেলে সন্তান এবং সকল বয়সের মেয়ে সন্তানের লালনপালনের দায়িত্ব নিকটাত্মীয় মাহরাম পুরুষের উপর।পিতা,ভাই,চাচা ইত্যাদি মাহরাম পুরুষরা ধারাবাহিক মেয়ে সন্তানদের লালন-পালনের দায়িত্ব গ্রহণ করবে। এটা তাদের উপর ওয়াজিব।তারা এ দায়িত্ব পালন না করলে গোনাহগার হবে।
ونفقة البنت بالغة والابن بالغا زمنا أو أعمى على الأب خاصة به يفتى 
বালেগ মেয়ে এবং বালেগ পঙ্গু বা অন্ধ ছেলের ভরণপোষণের দায়িত্ব পিতার উপর।এটার উপরই ফাতাওয়া।(আল-উকুদুদ-দুররিয়া-১/৮২) 

বিস্তারিত জানুনঃ-https://www.ifatwa.info/2362

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনার ভাইয়ের ইনকাম হারাম কিনা,সে সম্পর্কে আপনাকে আগে নিশ্চিত হতে হবে।

তার ইনকাম যদি নিশ্চিত হারাম হয়,সেক্ষেত্রে তা পুরো ইনকাম হারাম হলে বা অধিকাংশ ইনকাম হারাম হলে তার থেকে খরচ নেয়া যাবেনা। এক্ষেত্রে আপনার গুনাহ হবে।

(০৩)
প্রশ্নের বিবরন মতে সে নারীবাদী হয়ে যাবেনা।এক্ষেত্রে শরীয়তবিরোধী কিছু করা হয়ে যাবেনা।

তবে শর্ত হলো,গুনাহের কাজে লিপ্ত হওয়া যাবেনা।
 
উল্লেখ্য, 
দ্বীনদার কুফুর মিল সম্পন্ন কোনো পাত্র পাওয়ার পর বাবা মা আপনাকে বিবাহের আদেশ করলে সেই আদেশ অমান্য করা জায়েজ হবেনা 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (4 points)
reshown by
ভাইয়ের ইনকাম হারাম কিনা শিওর করে জানি না তাহলে খেলে গুনাহ হবে?যেহেতু আমাকে পালার দায়িত্ব মাহরামদের সেহেতু ভাইয়ের ইনকাম হারাম হলে আমি খেলে আমার গুনাহ হবে এটি বুঝলাম না।

"দ্বীনদার কুফুর মিল সম্পন্ন কোনো পাত্র পাওয়ার পর বাবা মা আপনাকে বিবাহের আদেশ করলে সেই আদেশ অমান্য করা জায়েজ হবেনা "
এখানে কুফু বলতে আমি যেমন পাত্র চাই তেমন বলেছেন?

by (564,660 points)
ভাইয়ের ইনকাম হারাম কিনা,সেই সম্পর্কে যেভাবেই হোক,আপনাকে শিউর হতে হবে।

কুফু কি? 
এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ- 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...