বিসমিহি তা'আলা
উত্তরঃ-
মা-বাবাকে না জানিয়ে তাদের সম্মতি ব্যতীত বিয়ে বা যে কোন জিনিষ করা কখনো বৈধ হবেনা,বৈধ জিনিষে মা-বাবার হুকুম মানা বা তাদের সাথে পরামর্শ করা ওয়াজিব।
তাদের মনে কষ্ট না দেয়া ও তাদের সাথে সর্বদা সদ্ব-ব্যবহার করা সংক্রান্ত আদেশ স্বয়ং আল্লাহ পাক কোরআনে কারীমে দিয়েছেন।
ﻭَﻗَﻀَﻰ ﺭَﺑُّﻚَ ﺃَﻻَّ ﺗَﻌْﺒُﺪُﻭﺍْ ﺇِﻻَّ ﺇِﻳَّﺎﻩُ ﻭَﺑِﺎﻟْﻮَﺍﻟِﺪَﻳْﻦِ ﺇِﺣْﺴَﺎﻧًﺎ ﺇِﻣَّﺎ ﻳَﺒْﻠُﻐَﻦَّ ﻋِﻨﺪَﻙَ ﺍﻟْﻜِﺒَﺮَ ﺃَﺣَﺪُﻫُﻤَﺎ ﺃَﻭْ ﻛِﻼﻫُﻤَﺎ ﻓَﻼَ ﺗَﻘُﻞ ﻟَّﻬُﻤَﺎ ﺃُﻑٍّ ﻭَﻻَ ﺗَﻨْﻬَﺮْﻫُﻤَﺎ ﻭَﻗُﻞ ﻟَّﻬُﻤَﺎ ﻗَﻮْﻻً ﻛَﺮِﻳﻤًﺎ،
ভাবানুবাদঃ-
তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা।
(সুরাঃ৭আয়াত২৩)
হাদীসে বর্ণিত আছে...........
عن ﻋﺒﺪﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﻤﺮﻭ - ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ - ﻋﻦ ﺍﻟﻨﺒﻲ - ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ - ﻗﺎﻝ : « ﺭﺿﺎ ﺍﻟﺮَّﺏِّ ﻓﻲ ﺭﺿﺎ ﺍﻟﻮﺍﻟﺪ , ﻭﺳﺨﻂ ﺍﻟﺮﺏ ﻓﻲ ﺳﺨﻂ ﺍﻟﻮﺍﻟﺪ » ؛ ( ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ )
ভাবানুবাদঃ-
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃআল্লাহর সন্তুষ্টি পিতার সন্তুষ্টির মধ্যে,এবং আল্লাহর অসন্তুষ্টি পিতার অসন্তুষ্টির মধ্যে।
বিবাহে অবিভাবকের কর্তিত্ব সম্পর্কে মোল্লা আলী কারী রাহ.বলেন।
وَالْوِلَايَةُ فِي النِّكَاحِ نَوْعَانِ وِلَايَةُ نَدْبٍ وَاسْتِحْبَابٍ وَهُوَ الْوِلَايَةُ عَلَى الْعَاقِلَةِ الْبَالِغُ بَكْرًا كَانَتْ أَوْ ثَيِّبًا، وَوِلَايَةُ إِجْبَارٍ وَهُوَ الْوِلَايَةُ عَلَى الصَّغِيرَةِ بِكْرًا كَانَتْ أَوْ ثَيِّب
বিবাহে ওলায়ত বা অবিভাবকের প্রভাব দু-প্রকার যথাঃ-
(১)মুস্তাহাব ওলায়ত বা প্রভাবঃযা জ্ঞান সম্পন্ন বালেগ মহিলার উপর পতিত হবে, চায় সে বিবাহিত হোক বা অবিবাহিত হোক।
(২)অত্যান্ত অত্যাবশ্যকীয় ওলায়তঃ যা ছোট বাচ্ছার উপর চলবে,চায় সে বিবাহিত হোক বা অবিবাহিত হোক।
(মিরকাত-হাদিস নং ৩১৩৭ এর ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য )
তাই নাবালিগ ছেলে-মেয়ে ওলীর(শরয়ী অবিভাবক)সম্মতি ব্যতিত কোথাও বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে বা করলেও শুদ্ধ হবে না।
আর বালিগ ছেলে-মেয়েকে তার সম্মতি ব্যতিত বিবাহ কোথাও বিবাহ দেয়া যাবে না।তার সম্মতি একান্তই অত্যবশ্যকিয়।
এবং তাকে জোর করে কোথাও বিবাহ দেয়া যাবে না।দিলেও তার জন্য খেয়ার থাকবে।
وَقَالَ أَبُو حَنِيفَةَ - رَحِمَهُ اللَّهُ -: " لَهُ ذَلِكَ وَلَهَا الْخِيَارُ
অর্থ-
বালেগ ছেলে-মেয়েকে তাদের সম্মতি ব্যতিত বিবাহ দিলে বিবাহ সংগঠিত হলেও তাদের জন্য খেয়ার থাকবে।
(মিরকাত;হাদিস নং৩১২৮)
এবং বালিগ ছেলে-মেয়ে মা-বাবার অনুমতি ব্যতিত কোথাও বিবাহ করলে যদিও বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যাবে তথাপি তা অদ্য মুসলমান যুবক-যুবতির জন্য কখনো কাম্য হতে পারে না।কারন জীবনে সফলতা অর্জনে সর্বাবিষয়ে মা-বাবার সন্তুষ্টি থাকা একান্ত আবশ্যকীয়।
মা-বাবাকে না জানিয়ে বিবাহ করা বৈধ হবে কি না? এ বিষয়টা একটু ব্যখ্যা সাপেক্ষ্য।
★প্রাপ্ত বয়স্ক যুবক যদি মা-বাবার সন্তুষ্টি ব্যতিত কোথাও বিবাহ করে তাহলে বৈধ হবে,চায় পাত্রী তার থেকে উর্ধে হোক বা নিম্নে হোক।
★তবে কোন প্রাপ্ত বয়স্ক যুবতি যদি মা-বাবার সন্তুষ্টি ব্যতিত কোথাও বিবাহ করে তাহলে শুধুমাত্র পাত্র তার থেকে উর্ধে হলে বৈধ হবে, অন্যথায় বৈধ হবে না।
তবে বিশেষ করে সর্বাবস্থায় মহিলাকে তার ওলীই বিবাহ দিবেন,সে নিজে নিজে কোথাও বিবাহ করবেনা।
মোল্লা আলী কারী রাহ.বলেন।
فَإِنَّهُ يُسْتَحَبُّ أَنْ يَكُونَ زَوَاجُ الْمَرْأَةِ عَلَى يَدِ الْوَلِيِّ
অর্থ্যাৎ মুস্তাহাব হল মহিলাকে তার ওলী বিবাহ দিবেন।
(মিরকাত হাদিস নং ৩১৩৭)
এবং ছেলের জন্য ও মা-বাবার পছন্দমতো বিবাহ করাই উচিৎ,কেননা তারা এ বিষয়ে অভিজ্ঞ,এবং তারা কখনো তাদের জন্য মন্দকে পছন্দ করবেন না।
যদি ঘটনাক্রমে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয় সংগঠিত হয়ে যায়,
এবং পরবর্তীতে মা-বাবা রাজি হয়ে যান তাহলে এক্ষেত্র শরয়ী নিষেধ থাকলে ওতা তার জন্য বৈধ হয়ে যাবে।
আল্লাহ-ই ভালো জানেন।
উত্তর লিখনে
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ, IOM.