আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
211 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (63 points)
১. আমার ইদানিং মালিকি মাজহাবের দিকে কিছু ঝুক বাড়ছে,মন হচ্ছে ইমাম মালিকের ফতোয়াগুলে অনুসরণ করা ভালো হবে, আমার ভবিষ্যৎ এ ইউরোপ যাওয়ার ইচ্ছে,  তাই মাঝে মাঝে নিয়ত হয় সেখানে গেলে মালিকি মাজহাব ফলো করবো(যেহেতু সেখানে মালিকি ফলোয়ার বেশি) কিন্তু আমি এখনো হানাফি, সব মাসআলা হানাফি, অনুসরণ করি, সেই ভাবে আমার বউ এর ওলি ছাড়া নিজেরা বিবাহ ও করি, আমার এইরকম মালিকি মাজহাবপর প্রতি টানের কারনে কি বিবাহে সমস্যা হবে?বা পরবর্তী তে সত্যিই মালিকি মাজহাব অনুসরণ করলে তখন কি বিবাহে সমস্যা হবে?ফিকহি মুলনীতি কি বলে?

২.একদিন আমি আর আমার স্ত্রী হাটতে বের হই তখন বসে একটু আলাপ করার জয়গা পাচ্ছিলাম না,দুইটা একটা জায়গা পেলেও সামনে মসজিদ ছিলো "তখন সে বলে সব জায়গায় মানুষ না হয় মসজিদ বসাইয়া রাখছে" (আসলে মসজিদের সামনে বসে তো আর আর দুজনে আড্ডা দিতে পারিনা,খারাপ দেখায়)
এর ফলে কি তার ইমানে সমস্যা হবে?
(পরে আমাকে মাসজিদে নামাজ ও পরতে বলে, তখন বললাম দেখো মসজিদা থাকায় তো লাভ হলো,এমন টা বললে যে, তখন বলেছিলো বসার জাঘা না পাওয়ায় বলেছিলাম)

৩. বউকে কেও যদি তালাকের নিয়তে বন্ধু বলে ডাকে, এতে কি সমস্যা হবে?.আমি আমার বউকে ম্যাসেজে বন্ধু বলে ডাকার সময়,  কেমন যেনো মাথায় একটা তালাকের চিন্তা চলে আসে, কিন্তু তাকে তো আমার সাথে রাখতে চাই এরকম নিয়তে তো আসার কথা না, তাও এমন চিন্তা আসায়কি বিবাহে সমাজ হবে?

৪. আমার ছাত্ররা মাঝে মাঝে যেখানে সুবহানাল্লাহ,  আল্লাহু আকবার বলার জায়গা না সেখানে মজা করে, তা বলে উটে সিচুয়েশন টা দেখে হাসি উঠে, এর ফলে কি ইমানে সমস্যা হবে?

৫. আমার বউ এর পর্দা করতে অনিহা বাকি বিধান ঠিক মতো পালন করে,  সেদিন বলে উঠে, "ছোট বেলা থেকে আমার পর্দা করতে ভালো লাগে না/বিরক্ত লাগে/ অসহ্য লাগে, আগে মাথায় কাপড় দিতে বলতো ঘরে তাও রাগ উঠতো" (উল্লেখ্য এখন এতো রাফ না হলেও মোটামুটি সালিন কাপড়, ও হিজাব পরে, রাস্তায় মুখে মাস্ক ও পরে)  কিন্তু তার এই কথায়কি তার ইমানে সমস্যা হবে?

৬. দুই সিজদার মাঝখানে সোজা হয়ে বসা, আর রুকু থেকে সোজা হয়ে দাড়ানো ওয়াজিব, ইদানিং এই বিষয়টা নিয়ে নামাজে খুব চিন্তা হয়, একেবারে পিঠ সোজা হলো।কি না সন্দেহ হয় যার ফলে অনেক নামাজেই সন্দেহের ফলে সাহু সিজদা দেওয়া লাগছে, কি করনীয়?

৭. আমার বউ পরিপূর্ণ পর্দা করে না, আদেশ করলে রাগারাগি করলে পরিষ্কার বলে দেয়, তার সাথে এসব করলে এর ঠিক উল্টা করবে, যা করছে তা ও ত্যাগ করতে পারে এমন অবস্থা।  এখন আপনি যেভাবে বলেছিলেন,  বুঝানো ছাড়া বাকি পদ্ধতি এপ্লাই করতে গেলে সে এর উল্টা করবে, (যেমন বিছানা আলাদা,,বাবার বাড়ি রেখে আসা) এখন আমি তাকে তার মতো চলতে দিয়ে, মাঝে মাঝে বুঝাতে চাচ্ছি, তাতে মাঝে মাঝে মনে হয় কাজ হবে এই একটিই পথে, তাও জানিনা হবে কি না, এভাবে তাকে বুঝালে আর দুজনপর জন্য হেদায়তের দোয়া করলে কি আমি দাইয়ুস এর কাতার থেকে বাদ যাবো?
৮. নায়ক নায়িকাদের সংসার টিকে না এটা বুঝানোর জন্য  আমি আমার এক বন্ধুর সাথে ম্যাসেজে কথা বলি,তখন বলি  "এদের বিয়ে টিকে না" বলে আলাদা ম্যাসেজে বলি "দুই দিন পরপর তালা* " এই আলাদা ভাবে এর্টা বলার ফলে কি আমাদের বিবাহে সমস্যা হবে?

৯. রবীন্দ্র সংগীতের একটা গান/কবিতা আছে," তোর দোয়ার আজি খুলে গেজে সোনার মন্দিরে"এটা বই এ ও আছে, এই লাইন কেও বললে কি কুফর হবে?

১০. একটা হিন্দি না আরবী জানি না গানের লাইন ভালো করে হয়তো বুঝি নাই, না বুঝে একটা লাইন নিজে নিজেই গেয়ে ফেলি " উমাইয়া এমাইয়া বাইতে তেলাক /তালাক" এই রকম একটা বলে ফেলি, জানিনা কি অর্থ বাট নিজে নিজে এই লাইন বলার ফলে কি বিবাহে সমস্যা হবে?

১১. বউ যদি বলে, "দাড়ি গুলা বিশ্রি কইরা লাইছো, আচড়াইয়া রাখোনা কেনে" এতে কি কুফর হবে?

১২. বউ যদি বলে "আমাদের এভাবে চলা সম্ভব না, ভবিষ্যতে আলাদা হওয়া লাগলে দুজনের জীবনে দাগ থাকবে, এখন ই ভাবা দরকার, " তখন স্বামী কি জবাবে আচ্ছ বলেছিলো কি না মনে করতে পারছে না, এবং বউ আরো বলে" তুমি আরেকটা বিয়ে করে নেও মন মতো" এরুপ বললে কি বিবাহে সমস্যা হবে?

1 Answer

0 votes
by (573,960 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
কোনো মাসয়ালাতে শুধু একই রকমের হাদীস থাকলে সেটি নিয়ে ইমামদের মাঝে মতবিরোধ নেই।
কোনো মাসয়ালায় একাধিক রকমের হাদীস পাওয়া গেলে সেক্ষেত্রে ইমামদের মাঝে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে।
এক্ষেত্রে ইজতিহাদের ভিত্তিতে ইমামগন যেই মত অবলম্বন করেছেন,সবই ছহীহ।   

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حديث ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَنَا، لَمَّا رَجَعَ مِنَ الأَحْزَابِ: لاَ يُصَلِّيَنَّ أَحَدٌ الْعَصْرَ إِلاَّ فِي بَنِي قُرَيْظَةَ فَأَدْرَكَ بَعْضُهُمُ الْعَصْرَ فِي الطَّرِيقِ فَقَالَ بَعْضُهُمْ: لاَ نُصَلِّي حَتَّى نَأْتِيَهَا وقَالَ بَعْضُهُمْ: بَلْ نُصَلِّي، لَمْ يُرَدْ مِنَّا ذلِكَ فَذُكِرَ لِلنَبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَمْ يُعَنِّفْ وَاحِدًا مِنْهُمْ

ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আহযাব যুদ্ধ হতে ফিরার পথে আমাদেরকে বললেন, বনু কুরাইযা এলাকায় পৌছার পূর্বে কেউ যেন ‘আসর সলাত আদায় না করে। কিন্তু অনেকের রাস্তাতেই আসরের সময় হয়ে গেল, তখন তাদের কেউ কেউ বললেন, আমরা সেখানে না পৌছে সলাত আদায় করব না। আবার কেউ কেউ বললেন, আমরা সলাত আদায় করে নেব, আমাদের নিষেধ করার এ উদ্দেশ্য ছিল না (বরং উদ্দেশ্য ছিল তাড়াতাড়ি যাওয়া) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এ কথা উল্লেখ করা হলে, তিনি তাদের কারোর সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেননি।
(অর্থাৎ উভয়ই ছহীহ ছিলো)
সহীহুল বুখারী, পৰ্ব ১২ খাওফ, অধ্যায় ৫, হাঃ ৯৪৬; মুসলিম, পর্ব ৩২: জিহাদ, অধ্যায় ২৩, হাঃ ১৭৭০


ﻋَﻦْ ﻋَﻤْﺮِﻭ ﺑْﻦِ ﺍﻟْﻌَﺎﺹِ ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ – ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ- « ﺇِﺫَﺍ ﺣَﻜَﻢَ ﺍﻟْﺤَﺎﻛِﻢُ ﻓَﺎﺟْﺘَﻬَﺪَ ﻓَﺄَﺻَﺎﺏَ ﻓَﻠَﻪُ ﺃَﺟْﺮَﺍﻥِ ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺣَﻜَﻢَ ﻓَﺎﺟْﺘَﻬَﺪَ ﻓَﺄَﺧْﻄَﺄَ ﻓَﻠَﻪُ ﺃَﺟْﺮٌ

হযরত আমর বিন আস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যখন কোন বিশেষজ্ঞ হুকুম বলতে গিয়ে ইজতিহাদ করে,

আর তার ইজতিহাদ সঠিক হয়, তাহলে তার জন্য রয়েছে দু’টি সওয়াব। আর যদি ইজতিহাদে ভুল হয়, তাহলে তার জন্য রয়েছে একটি সওয়াব।
{সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৬৯১৯, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪৫৮৪, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৭৬}

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,বোন!
যেকোনো এক মাযহাবই মানতে হবে,একই সাথে সকল মাযহাব মানা যাবেনা।

ইসলামী স্কলার গন বলেছেনঃ 
যাকে ইচ্ছে তাকে মানা শরীয়তের অনুসরন নয় মন পূজা যখন যে ইমামকে ইচ্ছে তাকে মানার প্রবণতা দ্বীনে শরীয়তের পাবন্দী হবে না, হবে কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ। মন যখন চাইবে ইমাম আবু হানীফার অনুসরণ করা, আবার মন যখন চাইবে ইমাম শাফেয়ী রহঃ এর মতকে অনুসরন করা, কিংবা অন্য কোন ইমামের অনুসরণ করা এটা দ্বীনে শরীয়তের আনুগত্ব হবে? না মন আর খাহেশাতের আনুগত্ব হবে?
যখন মন চাইল ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর মাযহাব অনুসরণ করে বলে দিলেন যে, মহিলাদের স্পর্শ করলে অজু ভাঙ্গবে না। আর ইমাম শাফেয়ী রহঃ এর বক্তব্য যে, মহিলা স্পর্শ করলে অজু ভেঙ্গে যায়, মতটিকে ছেড়ে দিলেন সুযোগের সদ্ব্যবহার করার জন্য।
আবার কিছুক্ষণ পর হাত কেটে গেল, এবার যখন দেখা গেল যে, ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর মাযহাব অনুপাতে অজু ভেঙ্গে গেছে, আর ইমাম শাফেয়ী রহঃ এর মতে অজু ভাঙ্গেনি। তখন সাথে সাথেই মাযহাব পাল্টে বলতে শুরু করে দিলেন যে, না, না আমি হানাফী না, আমি শাফেয়ী। তাই আমার অজু ভাঙ্গেনি। এভাবে প্রতিটি মাসআলায় স্বীয় খাহেশাত অনুযায়ী মত পাল্টাতেই থাকলে এর নাম দ্বীন মানা? না মনপূজা?
,
এ কারণেই শায়েখ ইবনে তাইমিয়া রহঃ বলেনঃ “লাগামহীনভাবে যে মাযহাব যখন মনে চায়, সেটাকে মানা সুষ্পষ্ট হারাম ও অবৈধ।
{ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া-২/২৪১}

আরো জানুনঃ 
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই!   
আপনি যদি এমন কোনো দেশে যান,যেখানে মালেকী মাযহাবের অনেক বিজ্ঞ স্কলারগন আছে,যেখানে চাইলেই শরীয়তের সমস্ত মাসয়ালা মালেকী মাযহাব অনুপাতে চলা যায়।
সেখানে গিয়ে আপনি চাইলে মালেকী মাযহাব মানতে পারবেন।
তবে সর্বক্ষেত্রেই শুধু সেই মাযহাবেরই আনুগত্য করতে হবে।
ভিন্ন মতের দিকে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

এক্ষেত্রে মালেকী মাযহাব অবলম্বনের পর মেয়ের অভিভাবকের অনুমতি নিয়ে সতর্কতামূলক বিবাহ নবায়ন করে নিবেন।

আরো জানুনঃ- 

(০২)
এর ফলে তার ঈমানে সমস্যা হবেনা।

(০৩)
এতে বিবাহে কোনো সমস্যা হবেনা। 

(০৪)
এর ফলে ঈমানের সমস্যা হবেনা। 

(০৫)
প্রশ্নের বিবরন মতে তার ঈমান চলে না গেলেও তাকে তওবা করতে হবে,এহেন মারাত্মক কথা আর বলা যাবেনা।

(০৬)
প্রশ্নের বিবরন মতে সাহু সেজদাহ দিতে হবেনা।

(০৭)
শুধু এতটুকু করলে আপনি দাইয়ুসের কাতার হতে বাদ যাবেননা।

(০৮)
এটা বলার ফলে আপনাদের বিবাহে সমস্যা হবেনা।

(০৯)
এতে কুফর হবেনা। 

(১০)
নিজে নিজে এই লাইন বলার ফলে বিবাহে সমস্যা হবেনা।

(১১)
এতে কুফর হবেনা।

(১২)
এরুপ বললে বিবাহে সমস্যা হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...