আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
137 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
আসসালামু আলাইমুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ

আমি একজন ছাত্রী।স্নাতক ২য় বর্ষে পড়ি। আমি একটা হারাম সম্পর্কে ছিলাম।আল্লাহ মাফ করুন।এই সম্পর্কের আগে কোনো ছেলের সাথে এত কথা বলিনি।সম্পর্কে জড়ানো পর থেকেই অনুতপ্ত বোধ করতাম।নামাজ পরতাম, রোজা রাখতাম সম্পর্কে৷ জড়ানোর আগে।ছেলে কেও বলতাম যে আমরা যে কথা বলছি এটা ঠিক হচ্ছে না।ছেলেটা ও বুঝতে পারত।আমি দোয়া করে যাচ্ছিলাম যাতে এটা থেকে বেচে   থাকতে পারি।আমাদের বেশ কিছু দিন কথাও হয়।

আমি তাকে অনেক কিছু বুঝালাম।আখিরাতের কথা বললাম।এর মাঝখানে ছেলে ছেলের মাকে আর আপুকে ও আমার ব্যাপারে বলেছে।ছেলের আপু আমার সম্পর্কে জানে।মাও কিছুটা জানে।আমি ও আমার ফ্যামেলিকে বলেছি আমার আপু ভাইকে জানিয়েছিলাম।আল্লাহ রহম করে আমাকে এই সম্পর্ক থেকে দূরে রেখেছেন।ছেলেটা আমার সব কথা মেনে নিয়েছে।আমি সব জায়গা থেকে ব্লক করে দিয়েছি।ছেলেটাও৷ ব্লক করে দিয়েছে।কিন্তুু আমরা দুজন দুজন কে কথা দিয়েছিলাম বিয়ের বেপারে।আমি তখন ছেলেটার  প্রতি র্দূবলছিলাম।তাই না করতে পারি নি।ছেলেটা এখন অনেক বদলে ফেলেছে নিজেকে আল্লাহর অনুগ্রহে।নামাজ পরে মাহারাম,নন মাহারাম মেনে চলে,আলাহামদুলিল্লাহ।

এখন ছেলেটা তো তার ফ্যামিলিকে আমার কথা মোটামুটি জানিয়ে রেখেছে।আমার জন্য ছেলেটা অপেক্ষা করছে।পড়াশুনার পাশাপাশি কিছু করার চেষ্টা করছে।ছেলেটা বোনের বিয়ে ঠিক।বোনের বিয়েটা হয়ে গেলে আমার কথা বলবে।আমরা ব্যাচমেট।

উনার বোন আমাকে কল দিয়ে খোজ খবর নেয়।এক বছরের উপরে হয়ে গেছে,যখন তাকে বলেছিলাম আমরা আল্লাহর জন্য আর কথা বলব না।আমি তো তাকে ওয়াদা দিয়েছি।আমি সব সময় এ আল্লাহ কাছে দোয়া করি যাতে কল্যানকর কিছু হয়।ছেলেটা আমার জন্য কল্যানকর হলে যেন আল্লাহ তাকে আফিয়াতের সাথে যেন আমার জ ীবনে পাঠায়। অকল্যানকর কিছু থেকে থাকলে আল্লাহ যেন আমাদের কাউকেই যেন কারো জীবনে না পাঠায়।আল্লাহর সিদ্ধানতের উপর যেন আমাদের অটল থাকার তাউফিক দান করেন।

যদি বিয়ে হয় আমাদের আল্লাহ যদি চায় তাহলে এতে কি কোনো৷ সমস্যা হবে? সমবয়সি হয়ার কারনে।একজন বলল সমবয়সি বিয়ে  বেশির ভাগ টেকে না।একটা সময় পরে দাম্পত্য জীবনে অনেক সমস্যা হয়।নিজের চরিত্র হেফাজত,অর্ধেক দিন পুরন করা,আর আল্লাহ সন্তুষ্টি ছাড়া বিয়ের আর কোনো উদ্দেশ্য নেই আমার। এখন যে আমাকে এসব কথা বলেছে সে আমার কাছেরই একজন, বিবাহিত।সে বলল যাতে আমি ছেলেকে না করে দেই।সে আমার ফ্যামেলির কেও না। কিন্তু সে আমার ভালো চায় সব সময়।

ছেলেটার সাথে কথা বলি না আমি এখন।কিন্তু ছেলেটা তার বোনের মাধ্যমে খোজ নেয় আমার।আমি তো ওয়াদা দিয়েছি তাকে। এটা আমি কখনওই ভুলতে পারব না।  আমি এই এক বছর পরে এসে ওয়াদা ফিরিয়ে নিতে আমার ইচ্ছে করছে না,খুবই খারাপ লাগছে।ছেলেটা কিছু করে যদি আমার দায়িত্ব নিয়ে বিয়ে করতে চায় তাহলে হয়তো আমি আমার বাসায় রাজি করাতে পারব,আল্লাহ যদি সহজ করে দেন।আমি আগের সব কিছুর জন্য আল্লাহর কছে ক্ষমা চাই।অনেক কান্নাকাটি করি এখনও।

আমাকে একটু বলবেন আমার এবস্থায় কি করা উচিত।।আমি এখন নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি।আল্লাহ আমাকে যে সিদ্ধান্ত দিবেন আমি মেনে নিব।ছেলে  যদি কোনো কারনে নিজে থেকে বলে কোনো সময় আমাকে বিয়ে করবে না,আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সব কিছু মেনে নিব।আমি দোয়া করি আল্লাহর কাছে যে এখানে অকল্যান থাকলে আল্লাহ যেন ছেলেটাকে সরিয়ে নেয়।

১.সমবয়সি হয়ার কারনে কি সমস্যা হবে?আল্লাহর অনুগ্রহ থাকলে তো সব সম্পর্কই ভালো থাকবে।

২.আর আমি নিজেকে এই সম্পর্ক থেকে দূরে রাখাতে পারছি আলহামদুলিল্লাহ।ছেলেটার সাথে  কথা বলি না এতে আমার এখন কোনো খারাপ লাগে না।যা বলার মনের কথা গুলো আল্লাহ কে বলি।আমার কি এই ওয়াদার জন্য গুনাহ হবে?ছেলেটা তার ওয়াদা যদি পুরন করতে আসে মানে বিয়ে করতে আসে আমার গ্রহন করতে কোনো আপত্তি নেই।আর সে যদি না পুরন করে আমি ক্ষমা করে দিব।

দয়া করে উত্তর দিবেন।খুবই মানসিক পেরেশানিতে আছি এই সিদ্ধান্ত গুলো নিয়ে।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহাম।
জবাবঃ-
ওয়াদাকে পূর্ণ করার বিধান কি? ওয়াজিব না মুস্তাহাব? এবং ওয়াদাকে ভঙ্গ করা  হারাম না মাকরুহ?
সে সম্পর্কে ইমাম নববী রাহ বলেন,
" ﺃﺟﻤﻊَ ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀُ ﻋﻠﻰ ﺃﻥ ﻣَﻦ ﻭﻋﺪ ﺇﻧﺴﺎﻧﺎً ﺷﻴﺌﺎً ﻟﻴﺲ ﺑﻤﻨﻬﻲّ ﻋﻨﻪ ﻓﻴﻨﺒﻐﻲ ﺃﻥ ﻳﻔﻲ ﺑﻮﻋﺪﻩ ، ﻭﻫﻞ ﺫﻟﻚ ﻭﺍﺟﺐٌ ، ﺃﻭ ﻣﺴﺘﺤﺐّ ؟ ﻓﻴﻪ ﺧﻼﻑ ﺑﻴﻨﻬﻢ ، ﺫﻫﺐ ﺍﻟﺸﺎﻓﻌﻲُّ ﻭﺃﺑﻮ ﺣﻨﻴﻔﺔ ﻭﺍﻟﺠﻤﻬﻮﺭُ ﺇﻟﻰ ﺃﻧﻪ ﻣﺴﺘﺤﺐّ ، ﻓﻠﻮ ﺗﺮﻛﻪ ﻓﺎﺗﻪ ﺍﻟﻔﻀﻞ ، ﻭﺍﺭﺗﻜﺐ ﺍﻟﻤﻜﺮﻭﻩ ﻛﺮﺍﻫﺔ ﺗﻨﺰﻳﻪ ﺷﺪﻳﺪﺓ، ﻭﻟﻜﻦ ﻻ ﻳﺄﺛﻢ .
ﻭﺫﻫﺐَ ﺟﻤﺎﻋﺔٌ ﺇﻟﻰ ﺃﻧﻪ ﻭﺍﺟﺐ ، ﻗﺎﻝ ﺍﻹِﻣﺎﻡُ ﺃﺑﻮ ﺑﻜﺮ ﺑﻦ ﺍﻟﻌﺮﺑﻲ ﺍﻟﻤﺎﻟﻜﻲ : ﺃﺟﻞُّ ﻣَﻦ ﺫﻫﺐَ ﺇﻟﻰ ﻫﺬﺍ ﺍﻟﻤﺬﻫﺐ ﻋﻤﺮُ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻌﺰﻳﺰ ، ﻗﺎﻝ : ﻭﺫﻫﺒﺖِ ﺍﻟﻤﺎﻟﻜﻴﺔ ﻣﺬﻫﺒﺎً ﺛﺎﻟﺜﺎً : ﺃﻧﻪ ﺇﻥ ﺍﺭﺗﺒﻂ ﺍﻟﻮﻋﺪُ ﺑﺴﺒﺐ ﻛﻘﻮﻟﻪ : ﺗﺰﻭّﺝ ﻭﻟﻚ ﻛﺬﺍ، ﺃﻭ ﺍﺣﻠﻒ ﺃﻧﻚ ﻻ ﺗﺸﺘﻤﻨﻲ ﻭﻟﻚ ﻛﺬﺍ، ﺃﻭ ﻧﺤﻮ ﺫﻟﻚ ، ﻭﺟﺐ ﺍﻟﻮﻓﺎﺀ ، ﻭﺇﻥ ﻛﺎﻥ ﻭﻋﺪﺍً ﻣُﻄﻠﻘﺎً، ﻟﻢ ﻳﺠﺐ .
ﻭﺍﺳﺘﺪﻝّ ﻣَﻦ ﻟﻢ ﻳﻮﺟﺒﻪ ﺑﺄﻧﻪ ﻓﻲ ﻣﻌﻨﻰ ﺍﻟﻬﺒﺔ ، ﻭﺍﻟﻬﺒﺔ ﻻ ﺗﻠﺰﻡ ﺇﻻ ﺑﺎﻟﻘﺒﺾ ﻋﻨﺪ ﺍﻟﺠﻤﻬﻮﺭ، ﻭﻋﻨﺪ ﺍﻟﻤﺎﻟﻜﻴﺔ : ﺗﻠﺰﻡ ﻗﺒﻞ ﺍﻟﻘﺒﺾ " 
উলামায়ে কেরাম এ কথার উপর একমত যে,যদি কোনো মানুষ কারো সাথে এমন কোনো বিষয়ের ওয়াদা করে যা নিষিদ্ধ নয়,তাহলে তার জন্য উচিৎ হল সেই ওয়াদাকে পূর্ণ করা। ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব না মুস্তাহাব? এ সম্পর্কে অবশ্যই মতপার্থক্য রয়েছে।ইমাম শা'ফেয়ী ও ইমাম আবু হানিফা এবং জুমহুর উলামায়ে কেরামের মতে ওয়াদাকে পূর্ণ করা মুস্তাহাব।যদি সে ওয়াদাকে ভঙ্গ করে ফেলে তাহলে যেন সে উত্তমতাকে পরিত্যাগ করল,এবং শক্ত মাকরুহে তানযিহি সম্ভলিত কাজে লিপ্ত হল।কিন্তু সে আবার গোনাহগার হবে না। অন্যদিকে এক দল উলামায়ে কেরামের মতে ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব। ইমাম আবু বকর ইবনুল আরাবি মালিকি রাহ বলেন,যারা উক্ত মাযহাবের প্রবক্তা তাদের মধ্যে এটা উমর ইবনে আব্দুল আযিয রাহ শীর্ষে রয়েছেন।তিনি আরো বলেন,মালিকি মাযহাবের উলামাগণ তৃতীয় আরেকটি মাযহাবকে বর্ণনা করেছেন। সেটা হল যে,যদি কেউ কাউকে বলে, তুমি বিয়ে করবে বলে ওয়াদা করো তোমাকে এই পরিমাণ মাল দেয়া হবে।অথবা তুমি ওয়াদা করো আমাকে গালি দেবে না তোমাকে এই পরিমাণ মাল দেয়া হবে ইত্যাদি বাক্য। তাহলে এমতাবস্থায় ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব হবে।আর যদি স্বাভাবিক ওয়াদা হয়ে থাকে তাহলে ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব না।যারা ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব বলেন না তারা বলেন, যে ওয়াদা হলো হেবার সমার্থক। আর জুমহুর উলামায়ে কেরামের মতে হেবা কবজা ব্যতীত পরিপূর্ণ হয় না।তবে ইমাম মালিক রাহ এর মতে ওয়াদা কবজার পূর্বেও ওয়াজিব হয়ে যায়।(আল-আযকার-৩১৭)এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/663

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি অবৈধ যোগাযোগ ও সম্পর্ক থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করছেন, এটা সত্যিই প্রশংসাযোগ্য কাজ। অতীতের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবেন। এবং ভবিষ্যতে কখনো এরকম অনর্থক ও হারামের কাজের নিকটবর্তী হবেন না।বিয়ের ওয়াদা বা অন্য যেকোনো ওয়াদাকে বিশেষ জরুরতে পূর্ণ করতে না পারলে, তখন সেটা রুখসতযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...