জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই আল্লাহর কাছে জান্নাত চাইতেন এবং জাহান্নাম থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। তাঁর সাহাবীবর্গকে জান্নাত চাওয়া ও জাহান্নাম থেকে আশ্রয় প্রার্থনা শিক্ষা দিতেন। এভাবে আলেমসমাজ ও ইবাদতগুজার ব্যক্তিরা ওয়ারিশসূত্রে এটি পেয়েছেন। এর মধ্যে তারা আল্লাহর মহব্বতের কোন কমতি দেখেননি কিংবা তাদের ইবাদতের মর্যাদাতেও কোন ঘাটতি দেখেননি।
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সবচেয়ে বেশি দুআ করতেন “হে আল্লাহ! আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দিন, আখেরাতেও কল্যাণ দিন এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচান।”[সহিহ বুখারী (৬০২৬)]
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি্ ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তিকে বলেন: আপনি নামাযে কি বলেন? তিনি বলেন: আমি তাশাহুদ পড়ি, এরপর আল্লাহর কাছে জান্নাত প্রার্থনা করি এবং জাহান্নাম থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করি। তবে আমি আপনার চুপিচুপি পাঠ কিংবা মুয়ায (অর্থাৎ ইবনে জাবাল) এর চুপিচুপি পাঠের কিছুই বুঝি না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি্ ওয়া সাল্লাম বলেন: “আমরাও একই রকম কিছু চুপিসারে পাঠ করি।”[সুনানে আবু দাউদ (৭৯২), সুনানে ইবনে মাজাহ (৩৮৪৭) এবং আলবানি সহিহ ইবনে মাজাহ গ্রন্থ হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]
বারা ইবনে আযেব (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যখন তুমি বিছানায় আসবে তখন নামাযের মত করে অজু কর। এরপর ডান কাতে শয়ন কর। এরপর বল: হে আল্লাহ! আমি আমার প্রাণ আপনার কাছে সমর্পন করছি। আমার সকল সিদ্ধান্ত আপনার কাছে অর্পন করছি। আগ্রহ ও ভয় নিয়ে আমার পিঠ আপনার কাছে পেশ করছি (আপনার উপর নির্ভর করছি)। আপনি ছাড়া আপনার কাছে আশ্রয় কিংবা আপনার কাছ থেকে মুক্তি দেয়ার কেউ নেই। আমি আপনার নাযিলকৃত কিতাব ও প্রেরিত নবীর উপর ঈমান এনেছি। তুমি যদি এ অবস্থায় মারা যাও তাহলে তুমি ফিতরতের উপর (তথা ইসলামের উপর) মারা গেলে। তাই তোমার সর্বশেষ কথা যেন এ বাক্যগুলো হয়।”[সহিহ বুখারী (৫৯৫২) ও সহিহ মুসলিম (২৭১০)]
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন
ভালবাসা, ভয় ও আশা এগুলোর মধ্যে তো কোন সংঘর্ষ নেই। কারণ যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে ও আশা করে আল্লাহর ভালবাসা তার মধ্যে অনুপস্থিত থাকতে হবে; বিষয়টি এমন নয়। বরং হতে পারে সে ব্যক্তি আল্লাহর ভালবাসার দাবীদার অনেকের চেয়ে আল্লাহকে বেশি ভালবাসে।
সুতরাং জান্নাত লাভ,জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের আশায় ইবাদত করা যাবে।
তবে আল্লাহর সন্তুষ্টিকে মূল উদ্দেশ্য মেনে নেয়া সবচেয়ে বুযুর্গীর আলামত।
★রিযিক বাড়াতে/ কোনো অসুখ থেকে মুক্তি পেতে করে আমল করলে ছওয়াব হবেনা।তাহা কবুল হবেনা।
তবে আমলটি তার আদায় হয়ে যাবে,পুনরায় আদায় করতে হবেনা।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ «إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ وَإِنَّمَا لِامْرِئٍ مَا نَوٰى فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهٗ إِلَى اللهِ وَرَسُوْلِه فَهِجْرَتُهٗ إِلَى اللهِ وَرَسُولِه وَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهٗ اِلٰى دُنْيَا يُصِيبُهَا أَوِ امْرَأَةٍ يَتَزَوَّجُهَا فَهِجْرَتُهٗ إِلٰى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ». مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিয়্যাতের উপরই কাজের ফলাফল নির্ভরশীল। মানুষ তার নিয়্যাত অনুযায়ী ফল পাবে। অতএব যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সন্তুষ্টির জন্য হিজরত করবে, তার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সন্তুষ্টির জন্যই গণ্য হবে। আর যে ব্যক্তি দুনিয়ার স্বার্থপ্রাপ্তির জন্য অথবা কোন মহিলাকে বিবাহের জন্য হিজরত করবে সে হিজরত তার নিয়্যাত অনুসারেই হবে যে নিয়্যাতে সে হিজরত করেছে।
বুখারী ১, মুসলিম ১৯০৭, তিরমিযী ১৬৩৭, নাসায়ী ৭৫, আবূ দাঊদ ২২০১, ইবনু মাজাহ্ ৪২২৭, আহমাদ ১৬৯, ৩০২।
(০২)
সুন্নত নামাজের সিজদায় তাসবিহ এর সাথে বিভিন্ন দোয়া করা/ পড়া যাবে।
তবে এক্ষেত্রে সেজদায় শুধুমাত্র কুরআন-হাদীসে বর্ণিত দু'আ গুলোই করা যাবে।
সেজদায় গিয়ে سبحان ربي الأعلى
ছাড়াও অন্যান্য দোয়া পড়া যাবে। সমস্যা নেই। কিন্তু দুনিয়াবি দোয়া বা আরবী ছাড়া অন্য কোন ভাষায় দুআ করা যাবে না।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেজদায় অনেক দোয়া পাঠ করতেনঃ
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِىَّ -صلى الله عليه وسلم- كَانَ يَقُولُ فِى سُجُودِهِ « اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِى ذَنْبِى كُلَّهُ دِقَّهُ وَجِلَّهُ وَأَوَّلَهُ وَآخِرَهُ
হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ সেজদায় পড়তেন আল্লাহুম্মাগফিরলি জামবি’ কুল্লাহু দিক্কাহু ওয়া জিল্লাহু ওয়া আওয়ালাহু ওয়া আখিরাহু”। {তাহাবী শরীফ, হাদিস নং-১৩০৭, সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-৮৭৮, সহীহ মুসলিম, হাদিস নং-১১১২, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদিস নং-৬৭২, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদিস নং-১৯৩১}
আরো জানুনঃ