তালাক সংক্রান্ত প্রশ্ন

Question

আসসালামু আলাইকুম হুজুর।

১।আমার হাসবেন্ড ফেসবুকে একটা ভিডিও  পোস্ট করছে সেখানে কেপশন লেখা যে ব্রেক আপ হলে বন্ধুরা এমন করে।সেখানে এক বন্ধু কমেন্ট করছে কাকা তাই তুমার সাথে এমন হইল।হাসবেন্ড বলসে হ রে কাকা অনেক কস্ট।আমি পরে জিজ্ঞেস করছি তুমি এমন সিকার কেন করলা।তখন বলসে দেখ না হাসির ইমুজি দিসি।মজা কইরা বলসি আমারে জাতে না খেপায়।আমার অবস্থা ত সত্যি সত্যি তা না।তুমি মিথ্যা কেন বললা।তখন আমার উপর রাগ কইরা বলসে তুমার মাথায় সমস্যা তুমি ব্রেক আপ রে তালাক বানাইতেছ।আমি কি বিয়ের সম্পর্ক ভাংগা বুজাইছি নাকি।প্রেম ভাংলে পুলাপান অইরকম করে তাই বুজাইছি।আমাকে বলাতে সিকার করছি।আর এইটা ত মিথ্যা।
হুজুর উপরের কথা অনুযায়ী কি কিছু হবে।এটা কি.....মিথ্যা সিকারোক্তি বুজাবে। ব্রেক আপ দিয়া ত তালাক বুজাই  নাই।
২।আমি বলছি মিথ্যা বললে তালাক হই তখন সে বলছে এক মাসালার সাথে আরেক মাসালা মিলাও কেন।ব্রেক আপ মানে ত প্রেম ব্রেক আপ।তুমি যে আমারে এভাবে পেরা দেও সব কথা নিয়া এতে যে তুমার গুনাহ হই তাকি তুমি বুজ।

অর বন্ধু  গুলাই হল সমস্যা। তারা উলটা পালটা কথা বলে।আর অরে বললে বলে অরা এসব মজা করে বলে।হাসবেন্ড আমাকে বলসে অর বন্ধু নাকি বলে আমার চাকরি হলে আমি অরে ছাইড়া দিব।আবার অর অনেক টাকা হইলে নাকি ও আমাকে ছাইড়া দিবে।ও বলে নাই অর বন্ধুরা বলসে সেটা আমাকে আমার হাসবেন্ড বলসে।এতে কি হুজুর কোন  সমস্যা হবে।মানে শর্তযুক্ত তালাক এমন কিছু বুজাবে।

৩।আমার উপর অনেক  বিরক্ত।হাসবেন্ড বলসে আবার যদি এগুলা শুনি তাইলে ডাইরেক্ট ইনডাইরেক্ট দিমু।এটা বলাতে কি কোন সমস্যা হবে?আমি যদি আবার এগুলা বলি তাইলে কি তালাক হবে?

৪।টাইপিং ভুল করে তালাক লেখলে কি কিছু হবে।এখন ত একটা কিছু লেখতে গেলে কি বোর্ড  এ আরেক বানান উইঠা থাকে।তখন একটা লেখতে জাইয়া তালাক লেখায় চাপ লাগছে।কিন্তু সাথে সাথে সেটা কেটে দেওয়া হইছে।এতে করে কি কোন সমস্যা হবে।মাসালা জানতে চাওয়ায় লেখার সময় এমন টা হইছে।যেমন লেখব যে আমার  উপর বিরক্ত সেখানে টাইপিং ভুল হইয়া হইছে আমার উপর তা....)এতে কি হুজুর কোন সমস্যা হবে।সাথে সাথে কেটে দিসি।অধিকার আছে  কিনা জানি না।

৫।হাসবেন্ড  এর কথা মত সংসার করে গেলে কি আমি গুনাহগার হব।যদি কোন সমস্যা হয়ে থাকে।হাসবেন্ড অনেক রাগ করে এসব নিয়া পইরা থাকলে।তার নাকি এসব অনেক মানুষিক পেরা লাগে

Answer 1

জবাবঃ-

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 

بسم الله الرحمن الرحيم 

তালাক খুবই মারাত্মক এক বিষয় । নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,

(০১)

উপরের কথা অনুযায়ী কোনো সমস্যা হবেনা।

(০২)

প্রশ্নের বিবরন মতে তালাক হবেনা। 

কোনো সমস্যা হবেনা। 

(০৩)

এটা বলাতে কোন সমস্যা হবেনা।

আপনি যদি আবার এগুলো বলেন,সেক্ষেত্রে তালাক সংক্রান্ত কোনো সমস্যা হবেনা। 

(০৪)

তালাকের উদ্দেশ্য ছাড়া শুধু তালাক শব্দ উচ্চারণ করলে বা লিখলেও তালাক হয় না। কেননা, ফকিহগণ বলেছেন,

يشترط بالاتفاق القصد فى الطلاق، وهو إرادة التلفظ به ولو لم ينو فلا يقع طلاق فقيه يكره ولا طلاق حاك عن نفسه أو غيره لأنه لام يقصد معناه، بل قصد التعليم والحكاية، (الفقه الاسلام وادلته، كتاب الطلاق، باب شروط الطلاق-7/368)

সারমর্মঃ  

সকলের মতে তালাকের ইচ্ছা থাকতে হবে। আর তাহল, (তালাকের উদ্দেশ্যে) ইচ্ছাকৃতভাবে তালাক শব্দ উচ্চারণ করা। (আল ফিকহুল ইসলামী ওয়া আদিল্লাতুহু ৭/৩৬৮)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

https://www.ifatwa.info/44865

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,

প্রশ্নের বিবরন মতে কোনো তালাক হবেনা। 

কোনো সমস্যা হবেনা। 

(০৫)

হাসবেন্ড এর কথা মত সংসার করে গেলে আপনি গুনাহগার হবেননা।

তবে হাসবেন্ড যদি কোনো নাজায়েজ,হারাম কাজের আদেশ করে,সেক্ষেত্রে সেই আদেশ মানা যাবেনা।