আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
183 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (10 points)
আসসালামু আলাইকুম
আমার বেশ কয়েকটি বিষয়ে প্রশ্ন থাকায় সেগুলো পয়েন্ট আকারে লিখছি।

১। আমি একজন মেয়ে এবং বর্তমানে অবিবাহিত। আমাকে পরিবার থেকে চাকুরীর জন্য খুব প্রেশার দেওয়া হয়।এমন অবস্থায় আমি যদি কোন সরকারি চাকরি পাই এবং শরীয়তের বিধান মেনে চাকরি করি তবে কি তা হারাম হবে কিনা। এবং সরকারি চাকরি পাওয়া যেহেতু কঠিন বর্তমান পরিস্থিতিতে, সেক্ষেত্রে যদি চাকরিতে ঢুকে হারাম কিছু দেখি যেমন জাতীয় দিবস গুলোতে ফুল দেওয়া, ফ্রি মিক্সিং ইত্যাদি,   তাহলে কি চাকরি ছেড়ে দিতে হবে?
২। বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, মুসলিম পরিবারে জন্মেও অনেকে ভুল আকিদা নিয়ে চলে কিংবা অনেক সময় নাস্তিক হয়ে যায়। এমন অবস্থায় বিয়ের সময়ে অল্প সময়ের কথাবার্তায় তা জানা না গেলে আার যদি বিয়ে হয়ে যায় সেই বিয়ে কি হালাল হবে। আর যদি বিয়ের পর স্বামী / স্ত্রী কেউ একজন নাস্তিক হয়ে যায় সাথে সাথে কি সেই বিয়ে বাতিল হয়ে যাবে? অনেক ছোট খাটো বিষয়ে যেমন হালাল কে হারাম বললে ইমান থাকেনা। সেক্ষেত্রেও কি বিয়ে বাতিল হয়ে যাবে?

৩। বিয়ের আগে স্বামী অন্য কারো সাথে যেনা করলে আর তা যদি বিয়ের সময় গোপন করে এবং তওবা না করে তাহলে কি এই বিয়ে বাতিল হবে যদি স্ত্রী চরিত্রবান হয়? বিয়ের পর যদি এই ব্যাপারে জানা হয় তখন করনীয় কি?

৪।পরিপূর্ণ পর্দা করা শুরু করলে, আগের ছবি যদি কারও কাছে থেকে থাকে আর তা যদি মুছে ফেলার সুযোগ না থাকে তাহলে করনীয় কি?

৫।বাবা মা কোন হারাম কাজ করলে সেটা সবসময় তাদের নিষেধ করার পরিস্থিতি থাকেনা। আবার নিষেধ করলেও তারা নিজেদের কাজকেই সঠিক মনে করে, এক্ষেত্রে কি চুপ থাকলে বা সবসময় তাদের না বললে গুনাহগার হতে হবে?

৬।মেয়েদের জন্য অন্য জেলায় হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা কি জায়েজ হবে?

৭।বাবার ব্যবসায় হালাল হারাম মিশ্রণ থাকলে আর সেই ব্যবসার মালিকানা যদি সন্তানের নামে করা হয়, কিন্তু ব্যবসায়িক কাজকর্ম সব বাবাই পরিচালনা করে এবং সন্তান কেবল নামে মালিক, তার কোন কর্তৃত্ব নেই। পরবর্তীতে তার উপর দায়িত্ব আসলে সে হারাম অংশ বাদ দিবে ইনশাআল্লাহ এই নিয়ত যদি থাকে,সেক্ষেত্রে কি এই হারামের দায়ভার সন্তানের উপর পরবে?

৮।কিছু সফটওয়্যার আছে যা ব্যক্তিমালিকানায় ব্যাবহার করা এতটাই ব্যয়বহুল যে জনসাধারণের পক্ষে সম্ভব নয়।এক্ষেত্রে কি ক্র্যাকড ভার্সন ব্যাবহার করা যাবে?

জাযাকাল্লাহ

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
ফ্রি মিক্সিং পরিবেশ হলে চাকুরী ছেড়ে দিতে হবে।

(০২)
প্রশ্নে উল্লেখিত সমস্ত ছুরতেই বিবাহ বাতিল হবে।

(০৩)
এক্ষেত্রে যদি স্ত্রী চরিত্রবানও হয়,তবুও
এই বিয়ে বাতিল হবেনা।
বিয়ের পর যদি এই ব্যাপারে জানা হয় তখন স্ত্রীর ইচ্ছা,সে চাইলে এই সংসার করতে পারে।
না চাইলে স্বামীর কাছে তালাকের আবেদন করতে পারে।

(০৪)
এক্ষেত্রে যাদের কাছে আছে,খুজে খুকে সকলকে মুছে ফেলার আদেশ করতে হবে,প্রয়োজনে বাধ্য করাত চেষ্টা করতে হবে।

শত চেষ্টার পরেও তারা ডিলিট না করলে বা তাদের সাথে কোনোভাবেই যোগাযোগ সম্ভব না হলে সেক্ষেত্রে আল্লাহর কাছে খালেস দিলে তওবা করলে আশা করা যায়,আল্লাহ তায়ালা মাফ করে দিবেন।

(০৫)
না,গুনাহগার হতে হবেনা।

(০৬)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
    
وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١] 

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}

মহিলা হোস্টেলে যদি পূর্ণ নিরাপত্তা থাকে, সেক্ষেত্রে কোন বাধা নেই (উছায়মীন, লিক্বাউল বাবিল মাফতূহ ১৮০/২৩)।
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
অন্য জেলার মহিলা হোস্টেলে পর্দা ও শরীয়তের যাবতীয় বিধান মেনে চলা,এলাকা নিরাপদ হওয়া,সফরের দূরত্বে হলে বাসায় আসা যাওয়ার ক্ষেত্রে মাহরাম পুরুষ এর সাথে থাকা, ফিতনার আশংকা না থাকার শর্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আবাসিক হলে থেকে (মাহরাম ছাড়া, বান্ধবীদের সাথে) মহিলাদের জন্য  দ্বীনী/দুনিয়াবি শিক্ষা গ্রহণ করা জায়েজ হবে।

তাদের ইজ্জত আব্রুর হেফাজতের ক্ষেত্রে যেনো কোনো সমস্যা না হয়।
সেদিকে কর্তৃপক্ষ সহ সকলের পূর্ণ খেয়াল রাখতে হবে।   
,
(০৭)
এক্ষেত্রে সন্তান তার বাবাকে যথাসম্ভব হারাম থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করবে।
তারপরেও বাবা না মানলে সেক্ষেত্রে এই হারামের দায়ভার সন্তানের উপর পরবেনা।

(০৮)
এক্ষেত্রে ক্র্যাকড ভার্সন ব্যাবহার করা যাবে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...