মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
یَمۡحُوا اللّٰہُ مَا یَشَآءُ وَ یُثۡبِتُ ۚۖ وَ عِنۡدَہٗۤ اُمُّ الۡکِتٰبِ ﴿۳۹﴾
আল্লাহ যা ইচ্ছে তা মিটিয়ে দেন এবং যা ইচ্ছে তা প্রতিষ্ঠিত রাখেন এবং তারই কাছে আছে উম্মুল কিতাব।
(সুরা রা'দ ৩৯)
এখানে (أُمُّ الْكِتَابِ) এর শাব্দিক অর্থ মূলগ্রন্থ। এর দ্বারা লওহে-মাহফুষ বুঝানো হয়েছে, যাতে কোনরূপ পরিবর্তন-পরিবর্ধন হতে পারে না। চাই সেটা শরীআত সম্পর্কিত হোক অথবা তাকদীর সম্পর্কিত হোক। অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলা তার শরীআতের মধ্য থেকে যা ইচ্ছা তা রহিত করেন। আর যা ইচ্ছে তা নাযিল করেন। কিন্তু মূলটি উম্মুল কিতাব তথা লাওহে মাহফুযে আছে। সেখানে কোন পরিবর্তন পরিবর্ধন নেই। অনরূপভাবে প্রত্যেক ব্যক্তির তাকদীর সম্পর্কে লাওহে মাহফুজে যা লিখা আছে তাতে কোন পরিবর্তন পরিবর্ধন নেই। [ইবন কাসীর]
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযি-থেকে বর্ণিত তিনি বলেন-
ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ اﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻋَﻤْﺮٍﻭ ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ: ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ اﻟﻠَّﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ -( «ﻛَﺘَﺐَ اﻟﻠَّﻪُ ﻣَﻘَﺎﺩِﻳﺮَ اﻟْﺨَﻼَﺋِﻖِ ﻗَﺒْﻞَ ﺃَﻥْ ﻳَﺨْﻠُﻖَ اﻟﺴَّﻤَﺎﻭَاﺕِ ﻭَاﻷَْﺭْﺽَ ﺑِﺨَﻤْﺴِﻴﻦَ ﺃَﻟْﻒَ ﺳَﻨَﺔٍ)ﺭَﻭَاﻩُ ﻣُﺴْﻠِﻢٌ.
আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক মানুষের তাক্বদীর লিপিবদ্ধ করেছেন আসমান-যমীন সৃষ্টির ৫০ হাজার বছর পূর্বে এবং তিনি যার ভাগ্যে যা লিপিবদ্ধ করেছেন তাই ঘটবে।(ছহীহ মুসলিম, মিশকাত হাদীস নং/৭৯)
★ তাকদীর দু’ভাগে বিভক্ত।
১. তাকদীরে মুবরাম ২. তাকদীরে মাআল্লাক।
তাকদীরে মুবরাম হল, যা কখনোই পরিবর্তন হয় না। অনাদী থেকে আল্লাহর কাছে যা লিপিবদ্ধ আছে তাই সংঘটিত হবে।
আর তাকদীরে মুআল্লাক হল, যা ফেরেশেতাদের খাতায় লিখা থাকে। এই প্রকারের তাকদীর দোয়া বা বিভিন্ন কর্মের মাধ্যমে পরিবর্তন হতে পারে। কুরআন হাদিসে তাকদীর পরিবর্তনের ব্যাপারে যা বলা হয়েছে, তা এই প্রকার তাকদীরের ব্যাপারেই।
হযরত সালমান ফারসি রাযি থেকে বর্ণিত,
سَلْمَانَ رضي الله عنه ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَا يَرُدُّ القَضَاءَ إِلَّا الدُّعَاءُ، وَلَا يَزِيدُ فِي العُمْرِ إِلَّا البِرُّ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,তাকদীরকে দু'আ ব্যতীত অন্যকিছু বদলাতে পারে না।আর নেকী ব্যতীত অন্যকিছু হায়াতকে বৃদ্ধি করবে না।(সুনানু তিরমিযি-২১৩৯)
এইক্ষেত্রে স্ত্রী এবং সন্তান-সন্ততি পাওয়া-না পাওয়াটা মানুষের কর্মফলের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়না।
বরং এই বিষয় মহান আল্লাহ তায়ালা আসমান-যমীন সৃষ্টির ৫০ হাজার বছর পূর্বে লিপিবদ্ধ করেছেন।
তবে এভাবে তাকদীর নিয়ে গবেষণা করতে রাসুলুল্লাহ সাঃ নিষেধ করেছেন,বরং মানুষকে এ নিয়ে না ভেবে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার আদেশ করেছেন।