আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
244 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (8 points)

আসসালামু আলাইকুম,

আমার কিছু প্রশ্ন ছিল, পুরো ঘটনা বিস্তারিত জেনে আশা করি উত্তর জানাবেন।

আমাদের বিয়ে হয়েছে ৩মাস হবে, বিয়ের পূর্বে আমার স্ত্রীর একাধিক ছেলের সাথে সম্পর্ক ছিল যা উনি আমার থেকে গোপন রাখে। সর্বশেষ যে ছেলের সাথে সম্পর্ক ছিল সে বিয়ের একমাস পরে আমাকে জানায় যে, ২ বছর আগে তারা কক্সবাজার হোটেলে একই রুমে রাত্রি যাপন করে কিন্তু তাদের মাঝে শারীরিক কিছু হয়নি। আমি এর সত্যতা যাচাই করার জন্যে আমার স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলে উনিও বলে যে সব সত্য তবে তাদের মাঝে কিছুই হয়নি। আমি বিশ্বাস করে তাদের কথা মেনে নিয়ে বিষয়টা বাদ দেই। কিন্তু কিছুদিন আগে ঐ ছেলে আবার আমার সাথে যোগাযোগ করে বলে যে, তাদের মাঝে শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে। আমি আবার স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলে উনি আল্লাহর কসম খেয়ে অস্বীকার করে। আমি আবার ঐ ছেলেকে বলি তার এরকম দাবির পক্ষে প্রমাণ হাজির করতে নয়ত অপবাদ দেওয়ার জন্যে আল্লাহর শাস্তি পেতে হবে এটা বলি। এর পরেও সে বলে আমার স্ত্রী মিথ্যা কসম খেয়েছে। আমার আবার মনে হয় উনি অতীত এর জটিলতা এড়াতে আল্লাহর কসম খেয়েও তাওরিয়াহ করতে পারে। তাই আবার তাকে জিজ্ঞাস করি যদি সত্য হয় স্বীকার করতে।

এবার উনি রেগে গিয়ে বলে উনি যদি অসতী হয়ে থাকে তাহলে আল্লাহ তার বিচার করবে, আর সতী হয়ে থাকলে অপবাদের জন্যে আল্লাহ যাতে আমাকে আর ঐ ছেলেকে শাস্তি দেয়। আমি যদি কা'বা শরীফের গিলাফ ধরেও ওনার কাছে মাফ চাই আমাকে মাফ করবে না, আল্লাহর কাছে বিচার দিবে। আমি কেন উনার অতীত নিয়ে টানাটানি করতেছি, বিয়ের আগে যেহুতু এসব হইছে তাই উনি আমার কাছে এসবের জন্যে মাফ চাইবে না। এমনকি উনার ভাই বোনের কাছে বিচার দিলে তারা উলটো আমাকে বলে বিয়ের আগে এসব হতেই পারে স্বাভাবিক,  আমি কেন এসব নিয়ে ভাবতেছি।

আমিও রাগে বলি যে মেয়ে গায়রে মাহরাম ছেলের সাথে হোটেলে একরুমে থাকতে পারে (কিছু হোক বা না হোক) তাকে আর কি বিশ্বাস করব। একরুমে রাত কাটাইছে এটা যখনই মনে পড়ে অনেক কষ্ট লাগতো, মেনে নিতে পারতাম না।

 

আমার প্রশ্ন এখানে আমি কিভাবে অপবাদ দেওয়ার দোষী হলাম, আল্লাহ কি আমাকে অপবাদের শাস্তি দিবেন? তাছাড়া উনারা যে আমার থেকে এতকিছু গোপন করল এটা কি ঠিক হল? আমার সাথে প্রতারণা,  ঠকানো হয়ে গেল না? এখন আমার কি করনীয়?

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
হযরত উমর রাযি এর নিকট একজন ব্যক্তি এসে বলল,
أَتَى عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ رَجُلٌ , فَقَالَ : إِنَّ لِي بِنْتًا كُنْتُ وَأَدْتُهَا فِي الْجَاهِلِيَّةِ فَاسْتَخْرَجْنَاهَا قَبْلَ أَنْ تَمُوتَ , فَأَدْرَكَتْ مَعَنَا الْإِسْلَامَ , فَأَسْلَمَتْ فَلَمَّا أَسْلَمَتْ أَصَابَهَا حَدٌّ مِنْ حُدُودِ اللَّهِ , فَأَخَذَتِ الشَّفْرَةَ لِتَذْبَحَ نَفْسَهَا , فَأَدْرَكْنَاهَا وَقَدْ قَطَعَتْ بَعْضَ أَوْدَاجِهَا , فَدَاوَيْتُهَا حَتَّى بَرِئَتْ ، ثُمَّ أَقْبَلَتْ بَعْدَ تَوْبَةٍ حَسَنَةٍ وَهِيَ تُخْطَبُ إِلَى قَوْمٍ , فَأُخْبِرُهُمْ مِنْ شَأْنِهَا بِالَّذِي كَانَ ؟ فَقَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ : " أَتَعْمَدُ إِلَى مَا سَتَرَهُ اللَّهُ فَتُبْدِيهِ , وَاللَّهِ لَئِنْ أَخْبَرْتَ بِشَأْنِهَا أَحَدًا مِنَ النَّاسِ لَأَجْعَلَنَّكَ نَكَالًا لِأَهْلِ الْأَمْصَارِ أَنْكِحْهَا نِكَاحَ الْعَفِيفَةِ الْمُسْلِمَةِ "
(الزهد لهناد بن السري- باب الستر- حديث رقم 1402)

আমার একটি মেয়ে আছে,  যাকে আমি জাহিলিয়াতের যুগে জীবন্ত পুতেছিলাম।অতঃপর মৃত্যুর পূর্বেই বের করে নিয়ে এসেছিলাম।অতঃপর আমাদের নিকট ইসলামের দাওয়াত পৌছল, আমাদের সাথে সেও ইসলাম গ্রহণ করলো। ইসলাম গ্রহণের পর তার উপর আল্লাহর হদ কায়েম হল অর্থাৎ তার উপর যিনার শাস্তি বাস্তবায়ন করা হল। সে একটি দাড়ালো চুরি হাতে নিল,নিজেকে শেষ করার জন্য। আমরা তাকে প্রতিহত করলাম তবে সে তার গলার সামান্য রগ কেটে ফেলল।আমরা তাকে চিকিৎসা করালাম,অতঃপর সে সুস্থ হল।সে সুস্থ হওয়ার পর তার বিয়ের পয়গাম আসলো।ম অর্থাৎ এক জায়গা থেকে তার রিশতা আসলো। হে আমিরুল মু'মিনিন উমর রাযি!
আমি কি তার অতীত সম্পর্কে তাদেরকে অবগত করে দেবো দেবো। হযরত উমর প্রতিউত্তরে তখন বললেন, তুমি এমন জিনিষ প্রকাশ করতে যাচ্ছো, যার উপর আল্লাহ পর্দা ঢেলে দিয়েছেন।
"আল্লাহর কসম করে বলতেছি, যদি তুমি তোমার মেয়ে সম্পর্কে কাউকে কিছু বলো, তাহলে তোমাকে শহরবাসীর জন্য ইবরতের নিশানা বানাবো। তুমি তাকে পূতঃপবিত্র মুসলিম রমনির মত বিয়ে দাও।

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/906


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনার উচিৎ ছিল, বিয়ের পূর্বে সমস্ত খোঁজখবর নিয়ে তারপর বিয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা।যাইহোক, এখন যেহেতু বিয়ে হয়েই গেছে। এখন সে আপনার স্ত্রী, তার অতীত নিয়ে খুঁজতে যাওয়া আপনার জন্য জায়েয হবে না।এবং তার জন্য বলাটাও জায়েয হবে না। হ্যা, ভবিষ্যতে কোনো অঘটন ঘটলে সেটা আপনি হেন্ডেল করবেন,ব্যবস্থা নিবেন। অতিত নিয়ে চিন্তাভাবনা না করে,আপনি বরং তাকে সম্মানের চোখে দেখুন।তাকে পুতপবিত্র স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করুন। মনে রাখবেন, সেই আপনার তাকদীরে ছিলো।এটা আল্লাহর ফয়সালা।সুতরাং তাকে নিয়ে অসন্তুষ্ট না হয়ে বরং সন্তুষ্ট থাকার চেষ্টা করুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,140 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...