আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
136 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (17 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমি একটি সরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছি। ব্যক্তি হিসেবে আমি সততার সাথে জীবন ধারণ করার চেষ্টা করি, অর্থাৎ আর দশজন সরকারি চাকরিজীবীদের মতো আমার বেতনের বাইরে অতিরিক্ত কোনো আয় নেই। ফলে, আমার জীবন ধারণ করতেই কষ্ট হয়, সঞ্চয় হয় খুব সামান্যই। কিন্তু আমার হাত দিয়ে কোটি কোটি টাকার কাজ হয়, আমি সাপ্লায়ারদের কাছ থেকে চাইলেই অন্য অফিসারদের মতো একটা নির্দিষ্ট পার্সেন্টেজ এর অংক ঘুষ নিয়ে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারি, যা আমি আল্লাহর ভয়ে করি না। এদিকে আমার বিবাহিত জীবনের ৭ বছর হয়ে গেলেও এখনো নিঃসন্তান। ভারতে চিকিৎসার জন্য যেতে চাচ্ছি, কিন্তু হাতে ঐ পরিমাণ টাকাও নেই। আমার প্রশ্ন হলো, আমার সাপ্লায়াররা যেহেতু অনেক ধনী এবং তারা তাদের লাভের টাকা থেকে অভাবীদের দান খয়রাতও করে। আমি কি একজন অভাবী ব্যক্তি হিসেবে চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় বাকি টাকাটা সাহায্য চাইতে পারি? এই প্রশ্ন করছি এজন্য যে, অনেক মানুষই তো জটিল ও দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে আমভাবে সবার কাছ থেকে চাঁদা তোলার মতো করে সাহায্য চায়, এমন অনেককে আমিও নানা সময় চাঁদা দিয়ে সাহায্য করেছি। কিন্তু আমার রোগটা যেহেতু ওইরকম জীবন-মরণ জাতীয় নয়, ফলে ট্রিটমেন্টের জন্য অতটা মরিয়া হয়ে ভিখারির মতো যার তার কাছে হাত পাততেও পারছি না, চাইলেও যাদের সাথে গভীর সম্পর্ক নেই তারা হয়ত এই উদ্দেশ্যে আমাকে সাহায্যও করতে রাজি হবে না। কিন্তু আমার সন্তানও তো প্রয়োজন, আর এই জন্য সাহায্য চাইতে গেলে যাদের কাছ থেকে চাইতে হবে তাদের মধ্যে দুইটা জিনিস থাকতে হবে, যথাঃ ১।আমার সাথে সুসম্পর্ক, ২। যথেষ্ট টাকাপয়সা। আর এই দুইটা বৈশিষ্ট্য শুধুমাত্র আমার পরিচিত ঘনিষ্ঠ কিছু সাপ্লায়ারের মধ্যেই আছে। যেহেতু আমি ঘুষ খাই না, তারা আমাকে শ্রদ্ধার চোখে দেখে, আমি আর্থিক হেল্প চাইলে তারা সানন্দে হেল্প করবে। আমি তাদের কাছে ধারও চাইতে পারতাম, কিন্তু ইতোমধ্যে একটা মোটা অংকের ধারের বোঝা আমার মাথার উপর চেপে আছে, তাছাড়া আমার যৎসামান্য বেতনের টাকা জমিয়ে ধার শোধ করা সম্ভব নয়। এরফলে তাদের সাথে আমার পরিচয়, সুসম্পর্ক এবং তারা ধনবান এই বিষয়গুলোর উপর ভিত্তি করে আমি যদি তাদের কাছ থেকে ট্রিটমেন্টের জন্য প্রয়োজনীয় টাকা সাহায্য চাই তাহলে কি তা জায়েজ হবে?

1 Answer

0 votes
by (589,230 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
হযরত ক্বাবিসাহ ইবনে মুখারিক্ব রাঃ থেকে বর্ণিত,তিনি বলেনঃ
আমি একবার অন্যর ঋণের বোঝা/রক্তপণ নিজ দায়িত্বে নিয়ে আসি।অতঃপর অনুন্যপায় হয়ে নবীজী সাঃ এর কাছে যাই যাতে করে উনার কাছে এ সম্পর্কে সুওয়াল করি।
নবীজী সাঃ বলেনঃ তুমি দাড়াও যতক্ষণ না আমাদের কাছে সদকার (যাকাতের)কোনো মাল আসে,আসলে তোমার জন্য নির্দেশ দিয়ে দিবো।অতঃপর নবীজী সাঃ বললেনঃ হে ক্বাবিসাহ! সুওয়াল করা তিন প্রকার মানুষ ব্যতীত অন্য কারো জন্য বৈধ নয়।
১/
ঐ ব্যক্তির জন্য বৈধ যে, অন্যর ঋণের বোঝা/রক্তপণ নিজ দায়িত্বে নিয়ে এসেছে।যতক্ষণ না উক্ত প্রয়োজন শেষ হয়(ততক্ষণ বৈধ রয়েছে)।
২/
ঐ ব্যক্তির জন্য বৈধ যে,যাকে প্রাকৃতিক দুর্যোগে রাস্তায় বসিয়ে দিয়েছে, অর্থাৎ তার সমস্ত সম্পত্তি ধংস হয়ে গেছে।যতক্ষণ না তার আবশ্যকীয় প্রয়োজনাদি পূর্ণ হয়।(ততক্ষণ বৈধ রয়েছে)
৩/
ঐ ব্যক্তির জন্য বৈধ যে, নিতান্ত-ই গরীব হয়ে গিয়েছে,এমনকি তার প্রতিবেশীদের মধ্যে তিনজন জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি দাড়িয়ে এ স্বাক্ষ্য প্রদান করতে সক্ষম যে অমুক গরীব হয়ে গিয়েছে।যতক্ষণ না সে তার আবশ্যকীয় প্রয়োজনাদি পূর্ণ করবে।(ততক্ষণ বৈধ রয়েছে)(সহীহ মুসলিম-১৮৩৭)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/3719


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি সাপ্লায়ারদের কাছ থেকে সাহায্য গ্রহণ করতে পারবেন। তবে তাদের প্রতি নমনীয় হয়ে কোনো প্রকার ছাড় কখনো না দেয়ার দৃঢ়সংকল্প করবেন।বিষয়টা তাদেরকে অবগত করে দিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,230 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...