আসসালামু আলাইকুম। আমি একটি সরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছি। ব্যক্তি হিসেবে আমি সততার সাথে জীবন ধারণ করার চেষ্টা করি, অর্থাৎ আর দশজন সরকারি চাকরিজীবীদের মতো আমার বেতনের বাইরে অতিরিক্ত কোনো আয় নেই। ফলে, আমার জীবন ধারণ করতেই কষ্ট হয়, সঞ্চয় হয় খুব সামান্যই। কিন্তু আমার হাত দিয়ে কোটি কোটি টাকার কাজ হয়, আমি সাপ্লায়ারদের কাছ থেকে চাইলেই অন্য অফিসারদের মতো একটা নির্দিষ্ট পার্সেন্টেজ এর অংক ঘুষ নিয়ে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারি, যা আমি আল্লাহর ভয়ে করি না। এদিকে আমার বিবাহিত জীবনের ৭ বছর হয়ে গেলেও এখনো নিঃসন্তান। ভারতে চিকিৎসার জন্য যেতে চাচ্ছি, কিন্তু হাতে ঐ পরিমাণ টাকাও নেই। আমার প্রশ্ন হলো, আমার সাপ্লায়াররা যেহেতু অনেক ধনী এবং তারা তাদের লাভের টাকা থেকে অভাবীদের দান খয়রাতও করে। আমি কি একজন অভাবী ব্যক্তি হিসেবে চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় বাকি টাকাটা সাহায্য চাইতে পারি? এই প্রশ্ন করছি এজন্য যে, অনেক মানুষই তো জটিল ও দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে আমভাবে সবার কাছ থেকে চাঁদা তোলার মতো করে সাহায্য চায়, এমন অনেককে আমিও নানা সময় চাঁদা দিয়ে সাহায্য করেছি। কিন্তু আমার রোগটা যেহেতু ওইরকম জীবন-মরণ জাতীয় নয়, ফলে ট্রিটমেন্টের জন্য অতটা মরিয়া হয়ে ভিখারির মতো যার তার কাছে হাত পাততেও পারছি না, চাইলেও যাদের সাথে গভীর সম্পর্ক নেই তারা হয়ত এই উদ্দেশ্যে আমাকে সাহায্যও করতে রাজি হবে না। কিন্তু আমার সন্তানও তো প্রয়োজন, আর এই জন্য সাহায্য চাইতে গেলে যাদের কাছ থেকে চাইতে হবে তাদের মধ্যে দুইটা জিনিস থাকতে হবে, যথাঃ ১।আমার সাথে সুসম্পর্ক, ২। যথেষ্ট টাকাপয়সা। আর এই দুইটা বৈশিষ্ট্য শুধুমাত্র আমার পরিচিত ঘনিষ্ঠ কিছু সাপ্লায়ারের মধ্যেই আছে। যেহেতু আমি ঘুষ খাই না, তারা আমাকে শ্রদ্ধার চোখে দেখে, আমি আর্থিক হেল্প চাইলে তারা সানন্দে হেল্প করবে। আমি তাদের কাছে ধারও চাইতে পারতাম, কিন্তু ইতোমধ্যে একটা মোটা অংকের ধারের বোঝা আমার মাথার উপর চেপে আছে, তাছাড়া আমার যৎসামান্য বেতনের টাকা জমিয়ে ধার শোধ করা সম্ভব নয়। এরফলে তাদের সাথে আমার পরিচয়, সুসম্পর্ক এবং তারা ধনবান এই বিষয়গুলোর উপর ভিত্তি করে আমি যদি তাদের কাছ থেকে ট্রিটমেন্টের জন্য প্রয়োজনীয় টাকা সাহায্য চাই তাহলে কি তা জায়েজ হবে?