আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
166 views
in সাওম (Fasting) by (18 points)
আসসালামু আলাইকুম।
রাতে আমি নিয়ত করেছিলাম পরদিন শাওয়ালের ৬ রোজার একটি নফল রোজা রাখবো। সেজন্য সাহরীও রেডি করে রেখেছিলাম। কিন্তু সাহরী খেতে উঠতে পারিনি। ঘুম ভেঙেছে ফজর ওয়াক্ত শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগে। তাই আগে দ্রুত নামাজটা পড়ে নিলাম৷ নামাজ শেষ হতেই নিষিদ্ধ টাইম শুরু হয়ে গেছে। তো এরপর আমি সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলাম মনে মনে, রোজাটা রাখবো কি রাখবো না, কারণ সাহরী খেতে পারিনি তাই। কিছুক্ষণ ভাবলাম রাখবো না। আবার শেষ পর্যন্ত আবার দৃড় মনোবল করে রেখেই দিলাম রোজাটা।
১. এখন আমার নফল রোজাটা কি বিশুদ্ধ হবে? যেহেতু কয়েকবার রাখা না রাখা নিয়ে দ্বিধাবোধ কাজ করছিলো ফজরের পর?

 ২. সূর্য উঠার টাইম ৫.১৭ তে ছিল। আমি সালাম ফিরিয়ে দেখলাম ৫.১৭ বাজে। আমার কি আবার ফজরের ফরজ দুই রাকাত কাযা করতে হবে? সম্ভবত ৫.১৭ এর পর ২০/৩০ সেকেন্ড হয়ে গেছে।

1 Answer

0 votes
by (572,970 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَن حَفْصَةَ رَضِيَ اللّٰهُ عَنْهَا قَالَتْ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: مَنْ لَمْ يُجْمِعِ الصِّيَامَ قَبْلَ الْفَجْرِ فَلَا صِيَامَ لَه. رَوَاهُ التِّرْمِذِىُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِىُّ وَالدَّارِمِىُّ

হাফসা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ফজরের আগে সওমের নিয়্যাত করবে না তার সওম হবে না।
(আবূ দাঊদ ২৪৫৪, তিরমিযী ৭৩০, নাসায়ী ২৩৩৩, আহমাদ ২৬৪৫৭, ইবনু খুযায়মাহ্ ১৯৩৩, মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ৩৩৭, সহীহ আল জামি‘ ৬৫৩৫,মিশকাত ১৯৮৭।)

এ হাদীস থেকে জানা যায় যে, সিয়াম বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য ফজরের পূর্বে অর্থাৎ- রাত থাকতেই সিয়াম পালনের উদ্দেশে নিয়্যাত করা, অর্থাৎ- রাত থাকতেই সিয়াম পালনের উদ্দেশে দৃঢ় প্রত্যয় করা আবশ্যক। তা না হলে তার সিয়াম বিশুদ্ধ হবে না।

★ইমাম শাফি‘ঈ ও ইমাম আহমাদ বলেনঃ নফল সিয়ামের ক্ষেত্রে ফজরের পরে নিয়্যাত করলেও চলবে কিন্তু ফরযের ক্ষেত্রে তা চলবে না।

★ইমাম আবূ হানীফাহ্ বলেনঃ নির্দিষ্ট সময়ের সাথে সম্পৃক্ত সিয়ামের ক্ষেত্রে ফজরের পরে নিয়্যাত করলেও চলবে। যেমন, রমাযানের সিয়াম, নির্দিষ্ট দিনের জন্য মানৎ করা সিয়াম, অনুরূপভাবে নফল সিয়াম। কিন্ত যে সমস্ত ওয়াজিব সিয়ামের জন্য সময় নির্দিষ্ট নেই যেমন কাযা ও কাফফারা তার জন্য ফজরের পূর্বেই নিয়্যাত করতে হবে।

ইমাম আবূ হানীফার পার্থক্য করার কারণ এই যে, নির্দিষ্ট সময়ের সাথে সম্পৃক্ত সিয়ামসমূহের জন্য নির্দিষ্ট সময়ই নিয়্যাতের স্থলাভিষিক্ত তা নির্দিষ্ট করার ক্ষেত্রে।

পক্ষান্তরে যার জন্য নির্দিষ্ট সময় নেই তা নির্দিষ্ট করার জন্য নিয়্যাত প্রয়োজন তথা নিয়্যাত দ্বারা তা নির্দিষ্ট হয় তাই সিয়ামের সময় শুরু হওয়ার পূর্বেই নিয়্যাত দ্বারা নির্দিষ্ট করতে হবে।

★ইমাম মালিক-এর মতে সকল প্রকার সিয়ামের জন্যই ফজরের পূর্বেই নিয়্যাত করতে হবে। তিনি তার মতের স্বপক্ষে হাফসা (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটি দলীল হিসেবে গ্রহণ করেছেন।

https://www.ifatwa.info/22627/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-

রমজানের কাজা রোজাসাধারণ মানতকাফফারা ও যিহারের কাফফারা রোজার নিয়ত রাতে না করলে রোজা বিশুদ্ধ হবে না।

 

হাদীস শরীফে এসেছে। উম্মুল মুমিনীন হাফসা রা. বলেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

 من لم يجمع الصيام قبل الفجر فلا صيام له.

যে ব্যক্তি ফজরের আগে রোযা রাখার নিয়ত করবে না তার রোযা (পূর্ণাঙ্গ) হবে না।

(সুনানে আবু দাউদ ১/৩৩৩)

 

২. আর রমজান মাসের রোজানির্দিষ্ট মানতের রোজা ও নফল রোজার নিয়ত রাত থেকে শুরু করে দ্বিপ্রহরের পূর্ব পর্যন্ত করা যাবে। 


হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ سَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ رَجُلاً يُنَادِي فِي النَّاسِ، يَوْمَ عَاشُورَاءَ " أَنْ مَنْ أَكَلَ فَلْيُتِمَّ أَوْ فَلْيَصُمْ، وَمَنْ لَمْ يَأْكُلْ فَلاَ يَأْكُلْ ".


সালমা ইবনু আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, ‘আশূরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তিকে এ বলে লোকদের মধ্যে ঘোষণা দেওয়ার জন্য পাঠালেনযে ব্যাক্তি খেয়ে ফেলেছে সে যেন পূর্ণ করে নেয় অথবা বলেছেনসে যেন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) আদায় করে নেয় আর যে এখনো খায়নি সে যেন আর না খায়। সহীহ বুখারী১৮০২)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

(০১)

প্রশ্নের বিবরন মতে আপনি যেহেতু দ্বিপ্রহরের পূর্বেই রোযা রেখে দেয়ার পাক্কা নিয়ত করেছিলেন,সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার নফল রোজাটা বিশুদ্ধ হবে।



(০২)

হ্যাঁ, পুনরায় ফজরের ফরজ নামাজের কাজা আদায় করতে হবে।


বিস্তারিত জানুনঃ- 

https://www.ifatwa.info/66045/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 540 views
0 votes
1 answer 373 views
...