আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
141 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (23 points)

আসসালামু আলাইকুম। খুব টেনশনে আছি। লিখা বড় হওয়ার জন্য দুঃখিত।
প্রায় ১৬-১৮ বছর আগে বাবা ব্যবসাতে প্রায় ৯ লক্ষ টাকা ঋণ করেন।এই টাকাগুলো তিনি কিভাবে শেষ করলেন আমাদেরকে এখনো জানান নি। এরপর এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান।আম্মু ও আমি নানা বাড়িতে ছিলাম। ৫ বছর আগে আব্বু প্রবাসে যান সম্পূর্ণ দুই মামার টাকা দিয়ে।
জমি যা একটু ছিল সেই টুকুও আব্বু আগেই বিক্রি করে সেই টাকা শেষ করে দিয়েছে।এখন আড়াই শতক বাড়ির জায়গা আছে তাও বড় চাচাদের দখলে। গ্রামের স্কুলে ১ম রোলের ছাত্রী ছিলাম বলে সবাই স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলো আমাকে ডাক্তারী পড়াবে যেন আমি ঋণগুলো শোধ করতে পারি।বাড়ি করতে পারি। আমিও সেইভাবেই পড়েছি মনোযোগ দিয়ে কিন্তু সাইন্সের সাবজেক্টে মোটেও ভালো ছিলাম না।শুধুই স্বপ্ন দেখেছি। আগে বুঝি নি।
ভালো পড়াশুনার জন্য এস এস সি শেষ করে শহরের কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম।আম্মু, আমি ও ছোটবোন শহরে একসাথে বাসা ভাড়া করে ছিলাম।এটা হয়তো ঠিক হয়নি। বাসা ভাড়া, আমার প্রাইভেটের বেতন দেওয়া সব মিলিয়ে আব্বুর পাঠানো টাকা প্রায় সবই চলে যেতো। এইচএসসিতে (২০২১) ফ্যামিলি চেয়েছিল গোল্ডেন এ প্লাস পাবো কিন্তু আমি শুধু এ প্লাস পেয়েছি। মেডিক্যালেও চান্স হয়নি।আল্লাহ উত্তম দানকারী। ভার্সিটিতেও এডমিশন দেই নি কারন আমার জেলায় নেই। সাইন্সের সাবজেক্টে দূর্বল হলেও অনেক চেষ্টায় দূরে কোথাও চান্স হলেও সেখানে ফ্যামিলি নিয়ে থাকাসহ অনেক বিষয়ে সমস্যার। এক বছর পড়াশুনা পিছিয়ে গিয়েছি। এজন্য  ফ্যামিলির কত কথা যে শুনেছি!
এ বছর ২০২৩ তে কৌশলে মহিলা কলেজে অনার্সে এপ্লাই করলাম। এতে পর্দা রক্ষা হবে।

অনার্স বা মাস্টার্স শেষ করে তারা জব করতে বলছে। আব্বুর ৮/৯ লাখ টাকা এখনো ঋণ আছে। বাড়িও নেই। তবে বর্তমানে ২ লাখ টাকা জমা হয়েছে বাড়ির জমি কিনার জন্য। আরো সময় লাগবে জমাতে।আমাদের গ্রামে ১ শতক জমি ১ লাখ টাকা। আমি অবিবাহিত।শুনেছি পরিবারে অভাব থাকলে শর্তসাপেক্ষে মেয়েদের জব করা জায়েজ।
১. আমার ক্ষেত্রে কি চাকরি করা জায়েজ হবে?

আম্মুসহ অনেকেই বলছে অনার্সের পাশাপাশি এখন কিছুতে জব করতে। এমন কোনো জবই পাই নি যে পুরোপুরি শরীয়তসম্মত।
এগুলোতে পর্দা করতে পারবো না এটা বলি না কারন এতে অনেক বকাবকি শোনা লাগবে। শুধু বলি অনার্সের পাশাপাশি টিউশনি ছাড়া আর কিছু করবো না। তারা সবাই এখন বলছে বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে পাস করে সরকারি কলেজের  প্রফেসর হতে। আমি অনেকের কাছ থেকে জানতে পেরেছি এখানেও পরিপূর্ণ পর্দা করা যায় না, দ্বীন মানা যায় না। আমাকে পরিবার থেকে বলছে যে আমি যেন মনোযোগ দিয়ে পড়ে বিসিএস ক্যাডার হই। আমি বলি,"আচ্ছা তাই করবো।"কিন্তু মুখে এমন বললেও অন্তরে আছে আমি বিসিএস ক্যাডার হবো না। আশেপাশে ভালো মহিলা মাদ্রাসা পেলে সেখানে জয়েন হবো এটা অন্তরে রেখেছি।
২.এতে কি আমি মুনাফিক হবো?
আমাকে কি সরাসরি মুখে বলে দিতে হবে যে আমি বিসিএস ক্যাডার হবো না?

ছোট বোনের বয়স সাড়ে নয় বছর। গ্রামে ভালো কোনো মাদ্রাসা নেই। যে কয়টা আছে পড়াশুনা হয় না।ক্লাস হয় না। কিচ্ছু ঠিক নেই।তাই ওর জন্য আবার শহরে বাসা ভাড়া করে থাকবো আমি, ছোট বোন ও আম্মুসহ। চেষ্টা করবো টিউশনি করার। যদি ব্যতিক্রমে স্টুডেন্ট না পাই তাহলে তো বাসা ভাড়ার টাকাটা বেশি যাবে। এখন গ্রামের বন্দরে বাসা ভাড়ায় থাকি।

৩. এ অবস্থায় শহরে যাওয়া ঠিক হবে?<!--/data/user/0/com.samsung.android.app.notes/files/clipdata/clipdata_bodytext_230504_103446_238.sdocx-->

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
প্রয়োজন, অপরাগতা কিংবা ঠেকায় পড়ার পরিস্থিতি ছাড়া সাধারণ অবস্থায় নারীদেরকে ঘরে অবস্থান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শরীয়ত তাদের ওপর এমন দায়িত্ব আরোপ করে নি, যার কারণে তাদের ঘরের বাইরে যেতে হয়। 

আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
‘আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে এবং জাহিলিয়াতযুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।’(সূরা আহযাব ৩৩)

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ ، وَإِنَّهَا إِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ ، وَإِنَّهَا لا تَكُونُ أَقْرَبَ إِلَى اللَّهِ مِنْهَا فِي قَعْرِ بَيْتِهَا
‘নারী গোপন জিনিস, যখন সে ঘর থেকে বের হয় শয়তান তাকে তাড়া করে। আর সে আল্লাহ তাআলার সবচে’ নিকটতম তখন হয় যখন সে নিজের ঘরের মাঝে লুকিয়ে থাকে।’ (তাবরানী ২৯৭৪)

নারী মসজিদে যাওয়ার বিষয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,وَبُيُوتُهُنَّ خَيْرٌ لَهُنَّ ‘তাদের জন্য তাদের ঘর উত্তম।’ (আবু দাউদ ৫৬৭)

নারী চাকরির খাতিরে ঘর থেকে বের হতে পারবে। তবে এর জন্য কিছু নিয়ম ও শর্ত রয়েছে। নিয়ম ও শর্তগুলো মেনে চললে নারীর জন্য ঘর থেকে বের হওয়া জায়েয হবে; অন্যথায় নয়। 
যেমন,
★ যদি সত্যিকারে তার চাকরি করার প্রয়োজন দেখা দেয় তাহলে তার জন্য চাকরি করা জায়েয হবে।
★চাকরিটা তার দৈহিক, মানসিক স্বভাব ও রুচির সঙ্গে সামন্জস্যশীল হতে হবে। যেমন, ডাক্তারি, নার্সিং, শিক্ষা, সেলাই কিংবা এ জাতীয় পেশা হতে হবে।
★ কর্মক্ষেত্রে পর্দার পরিপূর্ণ পরিবেশ থাকতে হবে। অন্যথায় জায়েয হবে না।
★ চাকরির কারণে যাতে পরপুরুষের সঙ্গে সফর করতে না হয়।
★কর্মক্ষেত্রে আসা-যাওয়ার পথে যাতে কোন হারাম কাজ করতে না হয়। যেমন, ড্রাইভারের সঙ্গে একাকী যাওয়া, পারফিউম ব্যবহার করা ইত্যাদি।
★নারীর প্রধান কাজ ও দায়িত্ব হচ্ছে স্বামীর খেদমত করা, তার সন্তুষ্টি অন্বেষণ করা ও মাতৃত্বের দায়িত্ব পালন করা। যদি চাকরি করতে গিয়ে এসব দায়িত্ব পালনে ব্যাপক অসুবিধা হয় তাহলে তার জন্য চাকরি করা জায়েয হবে না। (ফাতাওয়াল মারআতিল মুসলিমাহ ২/৯৮১ ফিকহুন নাওয়াযিল ৩/৩৫৯)

বিস্তারিত  জানুনঃ 
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উপরোক্ত শর্তাবলী মেনে আপনার জন্য চাকুরী করা জায়েজ হবে। 

(০২)
আপনি মুনাফিক হবেননা।

আপনি বলবেন যে আমি ভালোভাবে লেখাপড়া করার চেষ্টা করছি,আপনারা দোয়া করবেন।

(০৩)
বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে সক্ষম হলে আপনারা শহরে গিয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে পারেন। 
সেটি একান্তই আপনাদের ব্যাক্তিগত ব্যাপার। 
শরীয়তের দিক হতে সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...