জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
পিতামাতার দিকে নেক নজরে তাকালে হজ্বের সওয়াব পাওয়া সংক্রান্ত হাদীস আছে।
হাদীস শরীফে এসেছে
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” مَا مِنْ وَلَدٍ بَارٍّ يَنْظُرُ نَظْرَةَ رَحْمَةٍ إِلَّا كَتَبَ اللهُ بِكُلِّ نَظْرَةٍ حَجَّةً مَبْرُورَةً “، قَالُوا: وَإِنْ نَظَرَ كُلَّ يَوْمٍ مِائَةَ مَرَّةٍ؟ قَالَ: ” نَعَمْ، اللهُ أَكْبَرُ وَأَطْيَبُ “
হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যখন কোন পিতা মাতার ভক্ত সন্তান নিজের পিতা মাতার প্রতি অনুগ্রহের দৃষ্টিতে দেখে, আল্লাহ তাআলা তার প্রতিটি দৃষ্টির বদৌলতে তার জন্য [আমলনামায়] একটি হজ্জ্বে মাবরূর [কবুল হজ্ব] এর সওয়াব দান করেন। সাহাবারা আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! যদি দৈনিক একশবার দৃষ্টি করে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তারও। আল্লাহ মহান ও পবিত্র। {শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৭৪৭২, কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-৪৫৫৩৫, মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদীস নং-৪৯৪৪}
জালালুদ্দীন সুয়ুতী রহঃ বলেন, হাদীসটি জঈফ। {আলজামেউস সাগীর-৮০৪৩}।
শায়েখ আলবানী রহঃ বলেন, এটি জঈফ। {জঈফুল জামে-৫১৮০}
হাদীসটি সনদের দিক থেকে নিশ্চিতভাবেই জঈফ। আর জঈফ হাদীস ফযীলতের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য। এ ব্যপারে গ্রহণযোগ্য সমস্ত ফক্বীহ এবং মুহাদ্দিসীনগণ একমত।
,
(০২)
★মায়ের পায়ের নিচে জান্নাত সংক্রান্ত হাদীস আছে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ بْنُ عَبْدِ الْحَكَمِ الْوَرَّاقُ قَالَ حَدَّثَنَا حَجَّاجٌ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ قَالَ أَخْبَرَنِي مُحَمَّدُ بْنُ طَلْحَةَ وَهُوَ ابْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِيهِ طَلْحَةَ عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ جَاهِمَةَ السَّلَمِيِّ أَنَّ جَاهِمَةَ جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَدْتُ أَنْ أَغْزُوَ وَقَدْ جِئْتُ أَسْتَشِيرُكَ فَقَالَ هَلْ لَكَ مِنْ أُمٍّ قَالَ نَعَمْ قَالَ فَالْزَمْهَا فَإِنَّ الْجَنَّةَ تَحْتَ رِجْلَيْهَا
আব্দুল ওয়াহহাব ইবন আব্দুল হাকাম ওয়ারাক (রহঃ) ... মুআবিয়া ইবন জাহিমা সালামী (রহঃ) বলেন, আমার পিতা জাহিমা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে এসে জিজ্ঞাসা করলো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি যুদ্ধে গমন করতে ইচ্ছা করেছি। এখন আপনার নিকট মতামত জিজ্ঞাসা করতে এসেছি। তিনি বললেনঃ তোমার মাতা আছে কি? সে বললোঃ হ্যাঁ। তিনি বললেন, তার খেদমতে লেগে থাক। কেননা, জান্নাত তার পদদ্বয়ের নিচে।
(তাহক্বীকঃ হাসান। নাসায়ী ৩১০৮. ইবন মাজাহ ২৭৮১।)
,
★★""স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর জান্নাত""
অনেকে কথাটাকে হাদীস হিসেবে পেশ করে থাকে। যার আরবী হল,
الجنة تحت أقدام الأزواج ।
অথচ হুবহ এ শব্দ-বাক্যে কোনো হাদীস পাওয়া যায় না। সুতরাং এটিকে হাদীস হিসেবে বলা যাবে না। তবে
কিছু ইসলামী স্কলারগন বলেছেন যে যেহেতু কিছু হাদীসে এর মর্মার্থ পাওয়া যায় বিধায় কথাটাকে সম্পূর্ণ মিথ্যাও বলা যাবেনা।
যেমন এক হাদীসে এসেছে-
একবার এক নারী সাহাবী রাসূলের কাছে এলেন নিজের কোনো প্রয়োজনে। যাওয়ার সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কি স্বামী আছে? তিনি বললেন, জী, আছে। নবীজী বললেন, তার সাথে তোমার আচরণ কেমন? সে বলল, আমি যথাসাধ্য তার সাথে ভালো আচরণ করার চেষ্টা করি। তখন নবীজী বললেন, فانظري أين أنت منه، فإنما هو جنتك ونارك
হাঁ, তার সাথে তোমার আচরণের বিষয়ে সজাগ থাকো, কারণ সে তোমার জান্নাত বা তোমার জাহান্নাম।
(মুআত্তা মালেক, হাদীস ৯৫২; মুসনাদে আহমাদ, ৪/৩৪১ হাদীস ১৯০০৩; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ২৭৬৯; সুনানে কুবরা, বায়হাকী, হাদীস ১৪৭০৬)
অপর হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
إذا صلت المرأة خمسها ، وصامت شهرها ، وحصنت فرجها ، وأطاعت زوجها قيل لها : ادخلي الجنة من أي أبواب الجنة شئت
নারী যখন পাঁচ ওয়াক্ত নামায ঠিকমত আদায় করবে, রমযানের রোযা রাখবে, আপন লজ্জাস্থানের হেফাযত করবে, স্বামীর আনুগত্য করবে তখন সে জান্নাতের যেই দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারবে। (সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৪১৬৩)
.