আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
212 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (16 points)
১) বিয়ের পূর্বে অনেকে অতীত গোপন করে।দেখা যায় মেয়ের পূর্বে হারাম সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে সতীত্ব হারিয়েছে। তা ছেলেপক্ষের কাছে গোপন করে।অনেক নারীবাদীরা এটা সমর্থন করে।

এভাবে ছেলেপক্ষের কাছে অতীত গোপন করা ধোঁকার শামিল নয় কি?এভাবে অতীত গোপন করা কি জায়েজ?

২)মেয়ে দেখার সময় ছেলে কি তার অতীত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে পারবে?

৩)স্ত্রীর চিকিৎসার খরচ করতে স্বামী বাধ্য না এটা কি সঠিক?

৪)নারীবাদীরা এই জিনিসটা অনেক হাইলাইট করে ঘরের কোনো কাজ করতে স্ত্রী বাধ্য না, শাশুড়ির সেবা করতে স্ত্রী বাধ্য না।এক্ষেত্রে আপনাদের মতামত কি?

৫)হালাল কাজে স্বামীর আদেশ মানা তো স্ত্রীর উপর আবশ্যক যতদূর জানি।তাহলে স্বামী যদি স্ত্রীকে আদেশ দেয় যে ঘরের কাজ করতে বা শাশুড়ির খেদমত করতে তাহলে স্বামীর আদেশ হিসেবে ওই কাজটি কি স্ত্রীর উপর বাধ্যতামূলক হবে না?

৬)ঈদের কেনাকাটা কি ভরণপোষনের মধ্যে পড়ে?তাহলে স্বামী কি স্ত্রীকে ঈদে নতুন নতুন পোশাক কিনে দিতে বাধ্য?

1 Answer

0 votes
by (564,660 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
এক্ষেত্রে উক্ত মেয়ে যদি খালেস দিলে তওবা করে ফিরে আসে,আর স্বামীও যদি বিষয়টি জিজ্ঞাসা না করে,সেক্ষেত্রে স্ত্রী তাহা না জানালে ধোঁকার শামিল হবেনা।
তবে স্বামী তাহা জানতে চাইলে অথবা অবস্থা যদি এমন হয় যে স্বামী তাহা জেনে যাবেই,সেক্ষেত্রে জানানো উচিত।

(০২)
মেয়ে দেখার সময় ছেলে তার অতীত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে পারবে।

(০৩)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
হযরত আমর ইবনুল আহওয়াস রা. বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
 
সাবধান, তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীদের উপর রয়েছে কিছু অধিকার, আর তোমাদের স্ত্রীদের জন্যও তোমাদের উপর রয়েছে কিছু অধিকার। তোমাদের অধিকার এই যে, স্ত্রীরা কোনোভাবেই তোমাদের বিছানায় এমন কাউকে পদার্পণের সুযোগ দিবে না, যাকে তোমাদের পছন্দ নয়। এবং তোমাদের ঘরে এমন কাউকে প্রবেশের অনুমতি দিবে না, যাকে তোমাদের অপছন্দ।
সাবধান, তোমাদের উপর তাদের অধিকার এই যে, খোরপোষের বিষয়ে তাদের প্রতি সদাচার করবে।-জামে তিরমিযী, হাদীস : ১১৬৩; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ১৮৫১

মুআবিয়া কুশাইরী রাহ. বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খেদমতে আরজ করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! স্ত্রীদের বিষয়ে আমাদের প্রতি আপনার আদেশ কী? তিনি বললেন-

তোমরা যেমন খাও তাদেরকেও তেমন খাওয়াও, তোমরা যেমন পর, তাদেরকেও তেমন পরাও। তাদেরকে প্রহার করো না ও কটু কথা বলো না।-সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৪১৬৩; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২১৪২

ফাতওয়ার কিতাবে আছেঃ

الفقه الإسلامي وأدلته للزحيلي (10/ 7380):
"نفقات العلاج: قرر فقهاء المذاهب الأربعة  أن الزوج لا يجب عليه أجور التداوي للمرأة المريضة من أجرة طبيب وحاجم وفاصد وثمن دواء، وإنما تكون النفقة في مالها إن كان لها مال، وإن لم يكن لها مال، وجبت النفقة على من تلزمه نفقتها؛ لأن التداوي لحفظ أصل الجسم، فلا يجب على مستحق المنفعة، كعمارة الدار المستأجرة، تجب على المالك لا على المستأجر، وكما لا تجب الفاكهة لغير أدم.
সারমর্মঃ
চার মাযহাবের উলামায়ে কেরামগন বলেছেন যে     স্ত্রীর চিকিৎসা খরচ,ডাক্তার বিল স্বামীর উপর ওয়াজিব নয়।
তার চিকিৎসা তার সম্পদ থেকেই করা হবে,যদি তার সম্পদ না থাকে,এক্ষেত্রে তার নফকাহ যার উপর আবশ্যক তার উপরেই চিকিৎসা খরচ বর্তাবে।  

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
স্ত্রীর চিকিৎসা খরচ স্বামীর উপর ওয়াজিব নয়।
স্ত্রী নিজ মালিকানা টাকা হতে খরচ করবে,তাহা না থাকলে মেয়ের অভিভাবকদের দায়িত্ব থাকবে। 
তবে স্ত্রী যেহেতু স্বামীর এমন অনেক কাজই করে,যাহা তার উপর ওয়াজিব নয়,তাই তার চিকিৎসা খরচও স্বামীই দিবে।
এটি শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে ওয়াজিব না হলেও দিয়ানাতান ও আখলাক এর দিক হতে জরুরী। 

আরো জানুনঃ- 

★স্বামীর উপর স্ত্রীর ভরণপোষণ এবং বাসস্থান ওয়াজিব।চিকিৎসা খরচ ভরণপোষণ বা বাসস্থানের অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বামীর নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। যেভাবে স্বামীর উপর স্ত্রীর চিকিৎসা খরচ ওয়াজিব নয় ঠিক সেভাবে স্ত্রীর উপর স্বামীর রান্নাবান্নারও দায়িত্ব নেই।অন্যদিকে স্ত্রীকে রান্না করা খাবার পাঠিয়ে দেওয়া স্বামীর দায়িত্ব ও কর্তব্য।
সুতরাং যেহেতু আমাদের সমাজের স্ত্রীরা স্বামীকে বা স্বামীর বাড়ীর লোকজনকে রান্না করে খাওয়ান, তাই স্বামীরাও তাদের স্ত্রীদের চিকিৎসা খরচ বহন করবেন।

আরো জানুনঃ- 

(৪.৫)
ঘরের কাজ করতে স্ত্রী বাধ্য নয়, শাশুড়ির সেবা করতে স্ত্রী বাধ্য নয়।
তবে স্বামী আদেশ করলে স্ত্রীর উপর উক্ত কাজ করা আবশ্যক হবে।

★আমাদের সমাজে স্বামীরা যেহেতু তাদের স্ত্রীদের চিকিৎসা খরচ বহন করে থাকেন,যাহা তাদের উপর আবশ্যকীয় নয়,তাই স্ত্রীরাও আবশ্যকীয় না হওয়া সত্ত্বেও ঘরের কাজ করবে, শাশুড়ির সেবা করবে।

আরো জানুনঃ- 

(০৬)
স্ত্রীর যদি পরিধান যোগ্য কাপড় থাকে,তাহলে ঈদের কেনাকাটা আবশ্যকীয় ভরণপোষনের মধ্যে পড়েন
স্বামী তার স্ত্রীকে ঈদে নতুন নতুন পোশাক কিনে দিতে বাধ্য নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
 শায়েখ, গতকাল প্রশ্ন করেছিলাম এই বিষয়ে আরেকটা জানা বাকি, নতুন প্রশ্ন করতে পারছি না প্লিজ
১. কেও যদি এভাবে বলে কসম করলাম এটা করবো না বা শপথ করবো না, তবে আল্লাহর নাম নেয় নি, এতে কি ইলা বা শপথ হবে?

২. আমি কয়েকটা জায়গায় (২/৩ টা বা আরো বেশি হবে) (রেস্টুরেন্ট/হোটেল) এরুপ জায়গায়  আমার বউ এর সাথে অন্তরঙ্গ না হওয়ার জন্য বলি, বলার সময়, আল্লাহ সাক্ষী/ কসম/শপথ বলেছিলাম। মানে এই জায়গা গুলোতো অন্তরঙ্গ হবো না এমন বিষয়। (কসম /শপথ বললে আল্লাহর নাম নেই নি, শুধু কসম বা শপথ বলেছি, আর সাক্ষী বললে আল্লাহ সাক্ষী বলেছি কোনট বলেছি মনে পরছে না) এর ফলে কি ইলা হবে? আর ইলা না হলে কসমের কাফফারা দিতে হবে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...