আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
233 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (9 points)
edited by
বিয়ের পর জানতে পারলেন আপনার স্ত্রী বিয়ের আগে অন্যের সাথে শারিরীক সম্পর্ক করেছে, সে কুমারী নয় তখন কি করবেন?

উত্তরঃ
স্বামী যদি জানতে পারে স্ত্রীর অতীত ছিল বা স্ত্রী অকুমারী তখন স্বামী বিবাহ বাতিল করতে পারবে এবং চাইলে মোহরানা এবং বিবাহের খরচ ফেরত দিতে হবে।

এটা islamqa এর ফতোয়া নাকি আমি এই আলোকে জানতে চাই এক বোনের প্রশ্ন
১. সহবাস হয় নাই। তবে লিপকিস হয়েছে, হাত ধরে ঘুরাঘুরি আর জড়ায় ধরা হয়েছে। এক দিন ঐ ছেলে স্তনে কনুই দিয়ে আঘাত করেছিল এছাড়া আর কিছু হয় নাই।  এখন তওবা করেছে বোন টা এখন ওর স্বামী জানতে পারলে কি বিবাহ বাতিল হয়ে যাবে? ওর স্বামী অতীত নিয়ে মাথা ঘামায় না কিন্তু ও নিজেকে বিয়ের আগে ভার্জিন বলেছে এখনো তাই বলে যে ভার্জিন ছিল। আর ও স্বামী ও বুঝতে পারে নি যে হেতু সহবাস হয় নাই। বোনটা তওবা করেছে বিয়ের আগে আর ঐ ছেলের সাথে অনেক দিন যোগাযোগ বন্ধ এর পর অন্য ছেলের সাথে বিয়ে হইছে।
২. বিবাহ বাতিল মানে কি?

৩. এটা সঠিক ফতোয়া?
৪. এখন কি ঐ বোনের তার স্বামী কে তার অতীত সম্পর্কে বলতে হবে?
৫. বিবাহ তালাক বা অশুদ্ধ হবে কি?

৬. সে অতীত গোপন করে এত দিন সংসার করছে এটা তো বৈধ এবং তাদের ভবিষ্যৎ সন্তান বা ঘর সংসার সব বৈধ হবে?
৭. স্বামী নিজেই বলে তোমার অতীতের কোন প্রেম ছিল না এটা আমি ভাল করে জানি। আসলে আপুটা নিজেকে এত পরিবর্তন করছে তওবা করে এখন স্বামী কে জানাতে হবে কিন্তু সহবাস তো হয় নি ঐ ছেলের সাথে । বাকি যা কিছু হয়ে থাকুক ঐ আপুর অতীতে শুধু ঐ টুকু মনে পড়ছে যা উল্লেখ আছে।  সহবাস হয় নি এটা শিওর। যা মনে পড়ছে তার বাইরেও কিছু হয়ে থাকলেও কি তাদের এখনকার বিবাহ শুদ্ধ?

৮. বাতিল হবে কি বিয়ে অটোমেটিক?

৯. https://ifatwa.info/70914/ এই লিংকে লিআন সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিল আপু এখন এই সকল প্রশ্ন এবং অতীত কর্মকাণ্ডে কি লিআন হবে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


বান্দা গোনাহ করার পর যখন সে তাওবাহ করে নেয়,তখন আল্লাহ তা'আলা তার গোনাহকে ক্ষমা করে দেন,এমনকি তার গোনাহকে পূণ্য দ্বারা পরিবর্তন করে দেন।

আল্লাহ তা'আলা বলেন,

ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻟَﺎ ﻳَﺪْﻋُﻮﻥَ ﻣَﻊَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺇِﻟَﻬًﺎ ﺁﺧَﺮَ ﻭَﻟَﺎ ﻳَﻘْﺘُﻠُﻮﻥَ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲَ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﺣَﺮَّﻡَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺇِﻟَّﺎ ﺑِﺎﻟْﺤَﻖِّ ﻭَﻟَﺎ ﻳَﺰْﻧُﻮﻥَ ﻭَﻣَﻦ ﻳَﻔْﻌَﻞْ ﺫَﻟِﻚَ ﻳَﻠْﻖَ ﺃَﺛَﺎﻣًﺎ

এবং যারা আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যের এবাদত করে না, আল্লাহ যার হত্যা অবৈধ করেছেন, সঙ্গত কারণ ব্যতীত তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। যারা একাজ করে, তারা শাস্তির সম্মুখীন হবে।

ﻳُﻀَﺎﻋَﻒْ ﻟَﻪُ ﺍﻟْﻌَﺬَﺍﺏُ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﻭَﻳَﺨْﻠُﺪْ ﻓِﻴﻪِ ﻣُﻬَﺎﻧًﺎ

কেয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দ্বিগুন হবে এবং তথায় লাঞ্ছিত অবস্থায় চিরকাল বসবাস করবে।

ﺇِﻟَّﺎ ﻣَﻦ ﺗَﺎﺏَ ﻭَﺁﻣَﻦَ ﻭَﻋَﻤِﻞَ ﻋَﻤَﻠًﺎ ﺻَﺎﻟِﺤًﺎ ﻓَﺄُﻭْﻟَﺌِﻚَ ﻳُﺒَﺪِّﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺳَﻴِّﺌَﺎﺗِﻬِﻢْ ﺣَﺴَﻨَﺎﺕٍ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻏَﻔُﻮﺭًﺍ ﺭَّﺣِﻴﻤًﺎ

কিন্তু যারা তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গোনাহকে পুন্য দ্বারা পরিবর্তত করে এবং দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

ﻭَﻣَﻦ ﺗَﺎﺏَ ﻭَﻋَﻤِﻞَ ﺻَﺎﻟِﺤًﺎ ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻳَﺘُﻮﺏُ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻣَﺘَﺎﺑًﺎ

যে তওবা করে ও সৎকর্ম করে, সে ফিরে আসার স্থান আল্লাহর দিকে ফিরে আসে।
(সূরা ফুরক্বান-৬৮-৭০)

গোনাহ করার পর উক্ত গোনাহকে প্রকাশ না করার নির্দেশ রাসূলুল্লাহ সাঃ দিয়েছেন।
যেমন-
আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,

عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ : ( ﻛُﻞُّ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻣُﻌَﺎﻓًﻰ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟْﻤُﺠَﺎﻫِﺮِﻳﻦَ ﻭَﺇِﻥَّ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﻤُﺠَﺎﻫَﺮَﺓِ ﺃَﻥْ ﻳَﻌْﻤَﻞَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﺑِﺎﻟﻠَّﻴْﻞِ ﻋَﻤَﻠًﺎ ﺛُﻢَّ ﻳُﺼْﺒِﺢَ ﻭَﻗَﺪْ ﺳَﺘَﺮَﻩُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻓَﻴَﻘُﻮﻝَ ﻳَﺎ ﻓُﻠَﺎﻥُ ﻋَﻤِﻠْﺖُ ﺍﻟْﺒَﺎﺭِﺣَﺔَ ﻛَﺬَﺍ ﻭَﻛَﺬَﺍ ﻭَﻗَﺪْ ﺑَﺎﺕَ ﻳَﺴْﺘُﺮُﻩُ ﺭَﺑُّﻪُ ﻭَﻳُﺼْﺒِﺢُ ﻳَﻜْﺸِﻒُ ﺳِﺘْﺮَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﻨْﻪُ )

আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, আমার সকল উম্মাতকে মাফ করা হবে, তবে প্রকাশকারী ব্যতীত। আর নিশ্চয় এ বড়ই অন্যায় যে, কোন লোক রাতের বেলা অপরাধ করল যা আল্লাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু সে সকাল হলে বলে বেড়াতে লাগল, হে অমুক! আমি আজ রাতে এই এই কাজ করেছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত কাটাল যে, আল্লাহ তার কর্ম লুকিয়ে রেখেছিলেন, আর সে ভোরে উঠে তার উপর আল্লাহর দেয়া আবরণ খুলে ফেলল।
(সহীহ বুখারী-৬০৬৯
সহীহ মুসলিম-২৯৯০)
,
বিস্তারিত জানুনঃ   
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নের উল্লেখিত বোনের উপরোক্ত গুনাহের কাজ থেকে পরিপূর্ণ ফিরে আসতে হবে।
আল্লাহর কাছে খালেছ দিলে তওবা করতে হবে।
সেক্ষেত্রে নিজের বিবাহ পূর্ব গুনাহের কথা স্বামীকে না জানানো কোনো গুনাহ নয়।
,
তবে ভবিষ্যতে এহেন গুনাহের কাজ করা যাবেনা।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
এখন তার স্বামী জানতে পারলে বিবাহ বাতিল হয়ে যাবেনা।

(০২)
বিবাহ বাতিল মানে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন।
তাদের মাঝে বৈবাহিক সম্পর্ক শেষ। 

(০৩)
উক্ত ফতোয়াতে বলা হয়েছে যে তখন স্বামী বিবাহ বাতিল করতে পারবে।

এটি সহীহ।
কেননা এটি স্বামীর ইচ্ছা,চাইলে সে স্ত্রীকে তালাক দিয়ে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারবে,চাইলে চাইলে তালাক না দিয়ে সেই স্ত্রীকে নিয়ে ঘর সংসারও চালিয়ে যেতে পারবে।
সেটি একান্তই স্বামীর ব্যপার।

তবে অটোমেটিক বিবাহ বাতিল হবে,এটি সহীহ নয়।
এক্ষেত্রেও বিবাহের পর সহবাস বা একান্ত নির্জনবাস হলে স্বামী মোহরানা ফেরত পাবেনা।
বিবাহের খরচ কোনোভাবেই ফেরত পাবেনা।

(০৪)
ঐ বোনের তার স্বামী কে তার অতীত সম্পর্কে বলতে হবেনা।
তবে স্বামী চাপ দিলে ঐ বোন নিম্নোক্ত ফতোয়ার পরামর্শ মোতাবেক জবাব দিবেন।

(০৫)
বিবাহ তালাক বা অশুদ্ধ হবেনা।

(০৬)
এটা বৈধ এবং তাদের ভবিষ্যৎ সন্তান বা ঘর সংসার সব বৈধ হবে।

(০৭)
স্বামী কে কিছুই জানাতে হবেনা।
আল্লাহর কাছে তওবাই যথেষ্ট। 

(যা মনে পড়ছে তার বাইরেও কিছু হয়ে থাকলেও তাদের এখনকার বিবাহ শুদ্ধ।)

(০৮)
না,বিবাহ অটোমেটিক বাতিল হবেনা।

(০৯)
এই সকল প্রশ্ন এবং অতীত কর্মকাণ্ডে লিআন হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...