আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
433 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (12 points)
কেউ যদি ঘুষ প্রদানের মাধ্যমে চাকুরী পায় বা চাকুরী পরীক্ষায় অবৈধ পন্থা অবলম্বনের মাধ্যমে চাকুরী পায় তবে তার সারাজীবনের উপার্জন হারাম হবে কি না? এই ধরনের পন্থা অবলম্বন কোনো অবস্থাতেই হালাল বা জায়েজ হবে কি? অবৈধ পন্থায় চাকুরী গ্রহণ কি ধরনের গুনাহ?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
ঘুষ কবিরা গুনাহ সমূহের একটি।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋﻦ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻋَﻤْﺮٍﻭ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﻟَﻌَﻦَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﻟﺮَّﺍﺷِﻲ ﻭَﺍﻟْﻤُﺮْﺗَﺸِﻲ .
ঘুষ প্রদাণকারী ও গ্রহণকারী উভয়ের উপর রাসূলুল্লাহ সাঃ লা'নত দিয়েছেন।(মুসনাদে আহমদ-৬৭৯১সুনানে আবু-দাউদ-৩৫৮০)

ঘুষ দেওয়া ব্যতীত যদি নিজ প্রাপ্য হক আদায় করা সম্ভব না হয়, তাহলে এমতাবস্থায় ঘুষ দেয়া জায়েয।অন্যথায় ঘুষ দেয়া হারাম।তবে ঘুষ গ্রহণ করা সর্বাবস্থায়-ই নাজায়েয ও হারাম।

প্রয়োজনে ঘুষ দেয়া জায়েয।এ বিষয়ের উপর উলামায়ে কেরাম নিম্নোক্ত হাদীস দ্বারা প্রমাণ পেশ করে থাকেন।
হযরত উমর ইবনে খাত্তাব রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋﻦ ﻋﻤﺮ ﺑﻦ ﺍﻟﺨﻄﺎﺏ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : ( ﺇِﻥَّ ﺃَﺣَﺪَﻫُﻢْ ﻟَﻴَﺴْﺄَﻟُﻨِﻲ ﺍﻟْﻤَﺴْﺄَﻟَﺔَ ﻓَﺄُﻋْﻄِﻴﻬَﺎ ﺇِﻳَّﺎﻩُ ﻓَﻴَﺨْﺮُﺝُ ﺑِﻬَﺎ ﻣُﺘَﺄَﺑِّﻄُﻬَﺎ ، ﻭَﻣَﺎ ﻫِﻲَ ﻟَﻬُﻢْ ﺇِﻻ ﻧَﺎﺭٌ ، ﻗَﺎﻝَ ﻋُﻤَﺮُ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ، ﻓَﻠِﻢَ ﺗُﻌْﻄِﻴﻬِﻢْ ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﺇِﻧَّﻬُﻢْ ﻳَﺄْﺑَﻮْﻥَ ﺇِﻻ ﺃَﻥْ ﻳَﺴْﺄَﻟُﻮﻧِﻲ ، ﻭَﻳَﺄْﺑَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻟِﻲ ﺍﻟْﺒُﺨْﻞَ )
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ আমার কাছে যাকাতের মাল থেকে কিছু দেওয়ার জন্য সুওয়াল করে।অতঃপর আমি তাকে কিছু দিয়ে দেই।তথা তার সুওয়াল আমার কাছ থেকে কিছু নিয়ে নেয়।তবে এই গ্রহণকৃত জিনিষ তাদের জন্য আগুনের মত।
তখন উমর রাযি বললেন, হে রাসূলুল্লাহ! তাহলে আপনি কেন দেন?তারা আমারকে লেপ্টে ধরেছে।অথচ আল্লাহ আমাকে কৃপণতা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছন।(মুসনাদে আহমদ-১০৭৩৯)

রাসূলুল্লাহ সাঃ উক্ত মাল তাদের উপর হারাম হওয়া সত্তেও তাদের বারংবার সুওয়াল করার ধরুণ তাদেরকে দিয়ে নিজের উপর কৃপণতার অপবাদকে দূর করেছেন।

শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহ বলেন,
" ﻓﺄﻣﺎ ﺇﺫﺍ ﺃﻫﺪﻯ ﻟﻪ ﻫﺪﻳﺔ ﻟﻴﻜﻒ ﻇﻠﻤﻪ ﻋﻨﻪ ﺃﻭ ﻟﻴﻌﻄﻴﻪ ﺣﻘﻪ ﺍﻟﻮﺍﺟﺐ ﻛﺎﻧﺖ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﻬﺪﻳﺔ ﺣﺮﺍﻣﺎ ﻋﻠﻰ ﺍﻵﺧﺬ , ﻭﺟﺎﺯ ﻟﻠﺪﺍﻓﻊ ﺃﻥ ﻳﺪﻓﻌﻬﺎ ﺇﻟﻴﻪ , ﻛﻤﺎ ﻛﺎﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻘﻮﻝ : ( ﺇﻧﻲ ﻷﻋﻄﻲ ﺃﺣﺪﻫﻢ ﺍﻟﻌﻄﻴﺔ ... ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ "
যদি কাউকে তার জুলুম থেকে বাঁছতে অথবা তার নিকট হতে প্রাপ্য হক্ব আদায় করতে ঘুষ দেয়া হয় তবে এই টাকা গ্রহণকারীর জন্য হারাম।
এবং ঘুষ প্রদাণকারীর জন্য প্রদান করা জায়েয।
যেভাবে রাসূলুল্লাহ উপরোক্ত হাদীসে দিয়েছেন।
আল-ফাতাওয়াল কুবরা-৪/১৭৪

তিনি আরো বলেন,
" ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟْﻌُﻠَﻤَﺎﺀُ : ﻳَﺠُﻮﺯُ ﺭِﺷْﻮَﺓُ ﺍﻟْﻌَﺎﻣِﻞِ ﻟِﺪَﻓْﻊِ ﺍﻟﻈُّﻠْﻢِ ﻻ ﻟِﻤَﻨْﻊِ ﺍﻟْﺤَﻖِّ ، ﻭَﺇِﺭْﺷَﺎﺅُﻩُ ﺣَﺮَﺍﻡٌ ﻓِﻴﻬِﻤَﺎ (ﻳﻌﻨﻲ: ﺃﺧﺬﻩ ﻟﻠﺮﺷﻮﺓ ﺣﺮﺍﻡ )
কারো হক্বকে বাধা দিতে নয় বরং তার জুলুম থেকে বাঁচতে ঘুষ প্রদান জায়েয।তবে সর্বাবস্থায় গ্রহণকারীর জন্য ঘুষ হারাম।আরো জানুন- 604

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
নিজ অধিকার আদায়ের নিমিত্তে ঘুষ প্রদান জায়েয।তবে অন্যায়ভাবে কোনো জিনিষ হাসিল করার নিমিত্তে ঘুষ প্রদান সুস্পষ্ট হারাম ও নাজায়েয।

যদি কেউ অন্যায়ভাবে ঘুষ দিয়ে কোনো চাকুরী নেয়,এবং পরবর্তিতে ঠিকঠিকভাবে চাকুরী করে থাকে,তাহলে ঘুষ দেওয়া যদিও হারাম হয়েছে কিন্তু কাজের বিনিময়ে উক্ত চাকুরীর বেতন গ্রহণ হারাম হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (12 points)
ধন্যবাদ উস্তাদ, এত কম সময়ে এত সুন্দরভাবে উত্তর প্রদানের জন্য। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...