আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
139 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (17 points)

আসসালামু আলাইকুম উস্তাদ ও মুহতারাম,

আমি একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। আমি যখন বিভিন্ন বাসা বা বাড়ীর নকশা তৈরী করে দিই, তখন বিধর্মী ক্লায়েন্টদের দাবী থাকে তাদের পুজোর জন্য প্রেয়ার রুমের পজিশন তৈরী করে দিতে হবে। মানে নকশায় একটা রুম স্পেশালী দেখিয়ে দিতে হবে যেটাতে তারা পুজো করবে। সেখানে আমরা প্রেয়ার রুম লিখে রাখি। কোন প্রকারের মুর্তি দেখাই না। বা মুর্তির নকশা বা চিত্র দেখানোর প্রয়োজন হয় না। অনেক সময় একটি বাড়ীর যদি একাধিক মালিক থাকেন, তাদের মধ্যে হিন্দু ও মুসলমান উভয় ধর্মেরই মানুষ থাকেন। তারা বিভিন্ন ফ্লাট ভাগ করে নেন। স্বাভাবিক ভাবেই যদি সেখানে কোন প্রেয়ার রুম দেখানো থাকে তাহলে সেখানে মুসলমানেরা নিজের ফ্লাটের প্রেয়ার রুমে নামাজ পড়বেন, হিন্দুরা নিজের ফ্লাটের প্রেয়ার রুমে পুজো করবেন।

সরাসরি বিধর্মীদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নকশা করা তো জায়েজ নেই, সেটা নিয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু একটি বিল্ডিংএ আরো ৫-৬ টি ফ্যাসালিটির মতো পুজোর জায়গা চিহ্নিত করা টা কি আমার জন্য জায়েজ হবে? এতে কি তাদের শিরকে সাহায্য করা হবে?

বাড়ীর নির্দিষ্ট স্থানে মদে বা অনান্য হারাম পন্য রাখা হবে, সেটাও দেখিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। সেটা কি দেখিয়ে দেওয়ার অনুমতি শরিয়ত আমাকে দেয়? এটাতে কি তাদের সাহায্য করা হবে?

আর্কিটেকচারাল এনিমেশন তৈরী করার সময় সেখানে মানুষ হেটে যাচ্ছে, কেও বসে আছে কেও দাড়িয়ে আছে এরকম দৃশ্য দেখানো হয়। সে গুলো রেডিমেড দেওয়া থাকে, আমরা শুধু সেটা জায়গা মতো ক্লিক করে বসিয়ে দিই। সেগুলো ডিজিটাল ইমেজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। ভিডিও যেহেতু প্রিন্ট করা সম্ভব নয়। আমি আমার ক্লায়েন্ট কে সেই মানুষের ৩ডি ইমেজ বিক্রি করছি না, আমি বিক্রি করছি সেই ৩ডি নকশা। কিন্তু ক্লায়েন্ট সেই নকশাটাকে বোঝার জন্য কোন একটা হিউম্যান স্কেলের সাথে তুলনা করতে চায়। এতে আশে পার্শের উপকরন গুলির চোখে অনুমান করা সম্ভব হয়। এই লিংকে একটি আর্কিটেকচারাল এনিমেশনের উদাহরণ দেখতে পারেন। প্রায় সবাইই এগুলোকে ফুটিয়ে তোলার জন্য এবং বোধগম্য হওয়ার জন্য গাছ-পালা, গাড়ী, হিউম্যান মডেল ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকেন। এরকম এনিমেশন তৈরী করা কি আমার জন্য জায়েজ হবে? সেটার দ্বারা প্রাপ্ত অর্থ কি আমার জন্য হালাল হবে?

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢] 

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}

ফাতাওয়ায়ে শা'মী তে বর্ণিত রয়েছে,

ﻭﻟﻮ ﺁﺟﺮ ﻧﻔﺴﻪ ﻟﻴﻌﻤﻞ ﻓﻲ ﺍﻟﻜﻨﻴﺴﺔ ﻭﻳﻌﻤﺮﻫﺎ ﻻ ﺑﺄﺱ ﺑﻪ ﻷﻧﻪ ﻻ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﻓﻲ ﻋﻴﻦ ﺍﻟﻌﻤﻞ(ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺪﺭ ﺍﻟﻤﺨﺘﺎﺭ » ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺤﻈﺮ ﻭﺍﻹﺑﺎﺣﺔ » ﻓﺼﻞ ﻓﻲ ﺍﻟﺒﻴﻊ)

যদি কেউ কোনো গির্জায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করে,অথবা টাকার বিনিময়ে গির্জা নির্মাণ করে দেয়, তাহলে এতে তার কোনো গুনাহ হবে না। কেননা এখানে মূল কাজে কোনো প্রকার গোনাহ নেই।(রদ্দুল মুহতার,৬/৩৯২)

ফিকহে হানাফির প্রসিদ্ধ ও প্রামাণ্যগ্রন্থ হেদায়া কিতাবে আছে-

وَمَنْ أَجَّرَ بَيْتًا لِيُتَّخَذَ فِيهِ بَيْتُ نَارٍ أَوْ كَنِيسَةٌ أَوْ بِيعَةٌ أَوْ يُبَاعُ فِيهِ الْخَمْرُ بِالسَّوَادِ فَلَا بَأْسَ بِهِ.(مرغيناني، الهداية، 4: 94، المکتبة الاسلاميه)

কেউ যদি বাড়ি ভাড়া দেয় এবং ভাড়াটিয়া তাতে অগ্নিশিখা, গির্জা, মন্দির কিংবা মদের থালা তৈরি করে, তাহলে বাড়ি দানকারীর কোনো পাপ নেই।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নের বিবরন মতে একটি বিল্ডিংএ আরো ৫-৬ টি ফ্যাসালিটির মতো পুজোর জায়গা চিহ্নিত করা টা প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতিতে আপনার জন্য জায়েজ হবে,এখানে আপনার মূল কাজে গুনাহ না থাকায় আপনার কোনো গুনাহ হবেনা। এটি তাদের শিরকে সরাসরি সাহায্য করা হিসেবে গন্য করা হবেনা।

আরো জানুনঃ- 

★প্রশ্নে উল্লেখিত এনিমেশন ভিডিওতে যদি বাদ্য-বাজনা না থাকে,চোখ,কান মুখ,না থাকে মহিলার ছবি না থাকে,তাহলে বৈধ ভিডিও হলে তাহা বানানো জায়েজ বলে অনেক উলামায়ে কেরামগন বলেছেন।       

তবে অনেক এনিমেশন সম্পর্কে একদিকে চিন্তা করলে দেখা যায় যে, তাতে পূর্ণ অবয়ব বুঝা যাচ্ছে,আবার অন্যদিকে চিন্তা করলে দেখা যায় যে, তাতে পূর্ণ অবয়ব বুঝা যাচ্ছে না।তাই এগুলো সন্দেহপূর্ণ। আর সন্দেহপূর্ণ জিনিষ থেকে বেঁচে থাকাই তাকওয়ার নিকটবর্তী।

তবে সর্ব ছুরতে সেটার দ্বারা প্রাপ্ত অর্থ আপনার জন্য হালাল হবে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...