আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
143 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (16 points)
আসসালামু আ'লাইকুম।আমার প্রশ্নটির জন্য আমার পারিবারিক অবস্থার বর্ণনা দিচ্ছি।লেখাটি বড় হতে পারে, সেজন্য আফ‌ওয়ান।

আমি আব্বু আম্মুর একমাত্র মেয়ে।আগে আমার আব্বু আম্মু দুজনেই চাকরি করতেন।গত ১০ বছর আগে আমার আব্বু চাকরি ছেড়ে আসেন,এরপর আর কোনো চেষ্টা করেন নাই। আম্মুর চাকরিতেই আমাদের সংসার চলছে। আম্মুর কাজের পরিবেশ স্বাভাবিকভাবেই ফ্রি মিক্সিং পরিবেশ। আব্বুর কাছ থেকে আমি আর আম্মু কোনো আর্থিক সাপোর্ট পাই নাই,এখনো না। উপরন্তু তার আচরণ খুব‌ই খারাপ। ভালোভাবে কথা বলে না, সবসময় ধমকানো,চিল্লানো,অপমান আছেই।মানসিক সাপোর্ট‌ও পাই না। বাইরের মানুষের থেকে কোনো উস্কানি পেলে যাচাই বাছাই না করে বাসায় চিল্লানো শুরু করে।আমি এখন এডমিশন ক্যান্ডিডেট। সহশিক্ষায় যাবো না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, কিন্তু তবুও জোর করে ভার্সিটিতে পরীক্ষা দেওয়াচ্ছে।এখানেও সে কটু কথা শোনায়।আমি চাকরি করবো না,আমি বসে বসে খাবো এসব নিয়ে সুযোগ পেলেই কথা শোনায়।এমনকি আম্মুকেও আমার বিষয়ে সতর্ক করে যে আমার জন্য এতো টাকা পয়সা খরচ করছে,পরে পস্তাবে।যেহেতু আম্মুর টাকায় সংসার চলে তাই সবসময় আম্মুর সামনে কটু কথা বলতে পারে না।তবে যদি কর্তৃত্ব আব্বুর হাতে থাকত,এটুকু বুঝতে পারি এতদিনে আমার পরিস্থিতি ভয়াবহ হতো।আমার কাজিনরা সব প্রতিষ্ঠিত,অন্যের ছেলেমেয়েরা বড় অবস্থানে গেলে সেসব নিয়েও কথা শোনায়। আব্বু আগে নেশাও করত,এখন টাকা, সুযোগ না থাকায় আর হার্টের প্রবলেম থাকায় বাদ দিয়েছে।আমার আর আম্মুর নিরাপত্তা নিয়েও আব্বুর কোনো মাথাব্যথা নাই, বিভিন্ন ঘটনার মাধ্যমে তা বুঝতে পেরেছি। আব্বু আম্মুর কাছ থেকে চেয়েছে টাকা,এখন আমার কাছ থেকে সামাজিক অবস্থান,এর বেশি কিছু না। আব্বুর ইচ্ছা সবসময়‌ই বিলাসবহুল জীবনযাপন করা আর আর্থিক উন্নতি।আমার ইচ্ছা অনিচ্ছা, ভালো মন্দ এসবের চিন্তা নাই।এখন আমার প্রশ্ন হলো

১.আম্মু যে এই পরিস্থিতিতে চাকরি করছে,এতে আম্মুর কি গুনাহ হচ্ছে?গাইরে মাহরামের সাথে ইন্টারেক্ট করতে হয়।বোরকা পরে,মুখ ঢাকে কিন্তু হাত পা খোলা থাকে।অনেক সময় কলিগ হিসেবে গাইরে মাহরামের সাথে দুয়েকটা বাড়তি কথাও হয়ে থাকতে পারে।

২.আমার আব্বুর প্রতি সত্যি বলতে আর কোনো মায়া নাই।এই রমাদানেও আব্বু আম্মুর জন্য দুআ করেছি, কিন্তু এখন আর আসে না।একদম‌ই না। আব্বুর প্রতি আমার এই যে বিতৃষ্ণা তা যদি না কাটে তবে কি আমার গুনাহ হবে? শুধু আম্মুর জন্য কি দুআ করতে পারবো? আব্বুর জন্য দুআ আসে না

৩.আব্বুর প্রতি এই মায়াহীনতা আর আব্বুর আচরণের জন্য অনেক সময় আব্বুর সাথে খারাপ ব্যবহার হয়ে যায় কিন্তু পরবর্তীতে নিজের খারাপ লাগলেও আব্বুর কাছে মাফ চাইতে ইচ্ছা হয় না। শুধু আল্লাহর কাছে মাফ চাইলে কি হবে?পিতার সন্তুষ্টিতে আল্লাহর সন্তুষ্টি। কিন্তু আমি তো আব্বুর তরফ থেকে দায়িত্বশীল কোনো আচরণ পাইনি কখনো
৪.আব্বু আমাকে সংসারের হাল ধরতে বলে ভবিষ্যতে চাকরি করে। আম্মু যদি না থাকে,তখন তো আমাদের সংসারের ইনকাম সোর্স থাকবে না।তখন কি আমার‌ই চাকরি করে এই সংসার চালানো জরুরি?

৫.আমার দাদুবাড়িতে আমাদের থাকার জন্য ছোট একটা ঘর ছিল।ওই ঘরটাকে আম্মু নিজের টাকা খরচ করে বর্ধিত করেছে, উন্নত করেছে।এখন আব্বু মারা গেলে কি ওই ঘরটার অংশ আমার চাচা,চাচাতো ভাইরা পাবে? আব্বুর তরফ থেকে তো ভরনপোষণ পাইনি,এই ঘরটাও এখন আম্মুর টাকায় তৈরি আর ঘরটা শুধুই থাকার জন্য

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


প্রয়োজন, অপরাগতা কিংবা ঠেকায় পড়ার পরিস্থিতি ছাড়া সাধারণ অবস্থায় নারীদেরকে ঘরে অবস্থান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শরীয়ত তাদের ওপর এমন দায়িত্ব আরোপ করে নি, যার কারণে তাদের ঘরের বাইরে যেতে হয়। 

আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
‘আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে এবং জাহিলিয়াতযুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।’(সূরা আহযাব ৩৩)

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ ، وَإِنَّهَا إِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ ، وَإِنَّهَا لا تَكُونُ أَقْرَبَ إِلَى اللَّهِ مِنْهَا فِي قَعْرِ بَيْتِهَا
‘নারী গোপন জিনিস, যখন সে ঘর থেকে বের হয় শয়তান তাকে তাড়া করে। আর সে আল্লাহ তাআলার সবচে’ নিকটতম তখন হয় যখন সে নিজের ঘরের মাঝে লুকিয়ে থাকে।’ (তাবরানী ২৯৭৪)

নারী মসজিদে যাওয়ার বিষয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,وَبُيُوتُهُنَّ خَيْرٌ لَهُنَّ ‘তাদের জন্য তাদের ঘর উত্তম।’ (আবু দাউদ ৫৬৭)

নারী চাকরির খাতিরে ঘর থেকে বের হতে পারবে। তবে এর জন্য কিছু নিয়ম ও শর্ত রয়েছে। নিয়ম ও শর্তগুলো মেনে চললে নারীর জন্য ঘর থেকে বের হওয়া জায়েয হবে; অন্যথায় নয়। 
যেমন,
★ যদি সত্যিকারে তার চাকরি করার প্রয়োজন দেখা দেয় তাহলে তার জন্য চাকরি করা জায়েয হবে।
★চাকরিটা তার দৈহিক, মানসিক স্বভাব ও রুচির সঙ্গে সামন্জস্যশীল হতে হবে। যেমন, ডাক্তারি, নার্সিং, শিক্ষা, সেলাই কিংবা এ জাতীয় পেশা হতে হবে।
★ কর্মক্ষেত্রে পর্দার পরিপূর্ণ পরিবেশ থাকতে হবে। অন্যথায় জায়েয হবে না।
★ চাকরির কারণে যাতে পরপুরুষের সঙ্গে সফর করতে না হয়।
★কর্মক্ষেত্রে আসা-যাওয়ার পথে যাতে কোন হারাম কাজ করতে না হয়। যেমন, ড্রাইভারের সঙ্গে একাকী যাওয়া, পারফিউম ব্যবহার করা ইত্যাদি।
★নারীর প্রধান কাজ ও দায়িত্ব হচ্ছে স্বামীর খেদমত করা, তার সন্তুষ্টি অন্বেষণ করা ও মাতৃত্বের দায়িত্ব পালন করা। যদি চাকরি করতে গিয়ে এসব দায়িত্ব পালনে ব্যাপক অসুবিধা হয় তাহলে তার জন্য চাকরি করা জায়েয হবে না। (ফাতাওয়াল মারআতিল মুসলিমাহ ২/৯৮১ ফিকহুন নাওয়াযিল ৩/৩৫৯)

বিস্তারিত  জানুনঃ 
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার মা উপরোক্ত সমস্ত শর্ত মেনে আপনার বাবার অনুমতিক্রমে চেহারা ঢেকে হাত মোজা পা মোজা পরিধান করে পূর্ণ পর্দা করে আপনি চাকরি করতে পারেন।  
এক্ষেত্রে কলিগদের সাথে কথা বলার ক্ষেত্রে একাকিত্ব যেনো না হয়,জীবনঘনিষ্ঠ কোনো বিষয় ও হাসাহাসি মূলক কোনো বিষয় আলোচনা করবেনা।
জরুরী কথা হলে পূর্ণ পর্দা মেইনটেইন করে কথা বলবো  অল্প কথায় শেষ করে দিবেন কন্ঠস্বর নরম না করে মোটা করার চেষ্টা করবে।


(০১)
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার আম্মুর গুনাহ হচ্ছে।

(০২)
এতে আপনার গুনাহ হবেনা।
শুধু মায়ের জন্য দোয়া করলে এতে গুনাহ হবেনা।

(০৩)
খারাপ ব্যবহার হয়ে গেলে তওবার পাশাপাশি আপনার বাবার কাছ থেকেই মাফ চেয়ে নিতে হবে। 

(০৪)
না,আপনার জন্য তাহা জরুরি নয়।

(০৫)
ঐ ঘরটাতে যত খরচ করা হয়েছ,এসবের মালিক আপনার মা থাকবে।

কিন্তু ঘরের জায়গাটি আপনার বাবা মারা যাওয়ার পর ওয়ারিশদের মাঝে বন্টন করা হবে।

আপনার যদি কোনো ভাই না থাকে,সেক্ষেত্রে আপনি,আপনি মা আর আপনার চাচা উক্ত ঘরের জায়গায় ইসলামী নীতিমালা অনুযায়ী অংশ পাবেন।

চাচাতো ভাই অংশ পাবেনা।
আর যদি আপনার কোনো নিজের ভাই থাকে,সেক্ষেত্রে আপনার চাচারাও কোনো অংশ পাবেনা।
শুধু আপনারা ভাই বোন ও আপনার আম্মু অংশ পাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...