আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
199 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (8 points)
দ্বীনের পথে আসার পর থেকে ধর্ম নিয়া ওয়াসওয়াসা,কখনো ওজু,কখনো পানি,কখনো নামাজ।৩-৪ ঘন্টা গোসল,৪০ মিনিট ধরে ওজু,৪-৫ ঘন্ধা ধরে ২ রাকাত নামাজ পড়া...অনেক দিন ভুগে আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ সুস্থ করলো এসব থেকে।

 সুস্থ হলাম আলহামদুলিল্লাহ। ১ বছর পর থেকে নতুন নতুন টপিক নিয়া শুরু হলো নতুন ওয়াসওয়াসা,কখনো যিহার,কখনো হুরমাত কখনো তালাক নিয়ে। কয়দিন থাকে, ইচ্ছেমতো পাগল করে, এরপর যায় আবার আসে।

সেদিন থেকে শুরু হলো যেদিন এটা সম্পর্কে জানলাম যে মেয়েেদরও তালাকের অধিকার আছে।এরপর দেখি আমার কাবিন নামায় এ অধিকার আছে।পাগলের মতো হয়ে গেছিলাম,২৪ ঘন্টা মনের মাঝে ভাসতো "তালাক গ্রহন করলাম" এটাই শুধু ভাসতো।ইচ্ছের বিরুদ্ধে মনে মনে বলতাম।থামলো এটা এখন আবার শুরু হলো।
মাঝে মাঝে মনে হয় মরে গেলেই শান্তি।
হাজবেন্ডকে খুব ভালোবাসি,আর ভালো লাগে না এসব।এগুলা আসে ৩-৪ দিন থাকে এরপর যায় আবার আসে।জীবনটা অতিষ্ঠ করে ফেলছে এ সমস্যা। আমার প্রশ্নের উত্তর দিন প্লিজ।আলাদা আলাদা দিবেন হুজুর প্লিজ।

১/জিহ্বা না নেড়ে মাঝে মাঝে কিন্তু আমরা শব্দ করতে পারি।যেমন মুখ বন্ধ করে সুর করে গান গাই আমরা। উদাহরনঃজিহ্বা না নেড়ে মুখ বন্ধ করে একটানা """ ওমমমমমমমমমমমমমমমমম"" এরকম বলতে পারি না?মুখ বন্ধ করে "" নবীগো তোমায় ভালোবাসি""এরকম বলতে পারি না?পারি তো,শব্দ হয় একটা বুঝি,কানে শুনি বাট উচ্চারন হয় না।এখন সমস্যা হলো জিহ্বা না নেড়ে মুখ বন্ধ করে সুর দিয়ে গজল গাচ্ছিলাম..কোন উচ্চারন নাই,জাস্ট এমনি শব্দ করে।তখন আমার এইটা মনে হতে লাগলো যে ''তালা*** গ্রহন করলাম""এতে কি তালাক হয়ে যাবে??

২/ জিহ্বা না নেড়ে মুখ বন্ধ করে উপরের প্রশ্নের মতো এমন শব্দ করে যদি কেউ তালাক গ্রহন করে তাহলে কি তালাক হবে?এদিকে তো বাহিরের মানুষ শব্দ শুনতেছে,সে নিজেও শুনতেছে কোন একটা শব্দ..বাট উচ্চারন কি বাহিরের মানুষ না জানলেও সে ব্যক্তি তো জানে। সে সরাসরি  উচ্চারন না করে,জিহ্বা থামিয়ে মুখ বন্ধ করে  শব্দ বা সাউন্ড করে যে  বলতেছে এতে কি তালাক হবে?
এদিকে শব্দ হচ্ছে ঐ উদ্দেশ্য বাট উচ্চারন হচ্ছে না(ওয়াসওয়াসার রুগি,মনের বিরুদ্ধে হয় এসব)

৩/ দুই নাম্বারে যে প্রশ্ন করলাম ওয়াসওয়াসার রুগি না হলে ভালো মানুষ হলে কি তালাক হয়ে যাবে যদি এমন জিহ্বা না নাড়িয়ে মুখ বন্ধ করে শব্দ করে বলে?

৪/ ওয়াসওয়াসার রুগি, বিবেকবুদ্ধি সব আছে কিন্তু তালাক দেওয়ার নিয়ত একেবারেই নাই অথচ দিয়ে দিলো তাহলে কি তালাক হবে?

৫/ জামাইকে অনেক ভালোবাসে,কিন্তু ওয়াসওয়াসার রুগি..তাই মনে আসতে থাকে আমাকে তো  তালাক অধিকার দিছে শর্ত হলো বনিবনা না হলে,শারীরিক সমস্যা হলে, ঝগড়া হলে দেওয়া যাবে।ঝগড়ার সময় এসব মনে পরে আর মনে মনে বলে।অথচ তার কোন নিয়ত-ই নাই।এতেও কি হবে?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


শরীয়তের বিধান হলো, মুখে উচ্চারণ না করে শুধু মনে মনে তালাক দিলে বা মনে মনে শর্ত যুক্ত তালাক দিলে তাহা পতিত হবেনা।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفٰى عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ اللهَ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي مَا حَدَّثَتْ بِه„ أَنْفُسَهَا مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَتَكَلَّمْ
قَالَ قَتَادَةُ إِذَا طَلَّقَ فِي نَفْسِه„ فَلَيْسَ بِشَيْءٍ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ আমার উম্মতের হৃদয়ে যে খেয়াল জাগ্রত হয় তা ক্ষমা করে দিয়েছেন, যতক্ষণ না সে তা কার্যে পরিণত করে বা মুখে উচ্চারণ করে।

ক্বাতাদাহ (রহ.) বলেনঃ মনে মনে তালাক দিলে তাতে কিছুইতালাক হবে না। [বুখারী শরীফ ৫২৬৯.২৫২৮] আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭৮)

অন্য এক হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ لِي عَنْ أُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ صُدُورُهَا، مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَكَلَّمْ ".

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (আমার বরকতে) আল্লাহ আমার উম্মতের অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) মাফ করে দিয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তা কাজে পরিণত করে অথবা মুখে বলে। (সহীহ বুখারী ২৫২৮)

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
এতে তালাক হয়ে যাবেনা।

(০২)
এক্ষেত্রেও তালাক হবেনা।

(০৩)
এক্ষেত্রে ওয়াসওয়াসার রুগী না হয়ে সুস্থ মানুষ হলেও প্রশ্নের বিবরন মতে তালাক হবেনা। 

(০৪)
ওয়াসওয়াসার রুগী হওয়া তালাক হবেনা।

(০৫)
এক্ষেত্রে তালাক হবেনা।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনার কাবিন নামায় আপনাকে যে তালাকের অধিকার দেয়ার কথা লেখা আছে,এই অধিকার কি আপনার স্বামী দিয়েছে? 
অর্থাৎ কাবিননামার ১৮ নং ধারা কি আপনার স্বামী নিজে লিখেছে? নাকি কাজি সাহেব লিখেছে?
সেই কাবিননামা আপনাদের ইজাব কবুল হওয়ার আগে লেখা হয়েছে নাকি ইজাব কবুল হওয়ার পরে লেখা হয়েছে?
সেই কাবিন নামায় কি শর্তহীন আপনাকে তালাকের অধিকার দেয়া হয়েছে? নাকি বিশেষ শর্ত স্বাপেক্ষে?

যদি উক্ত কাবিন নামা কাজী সাহেব লিখে থাকে,আর আপনার স্বামী বিষয়টি সম্পর্কে একেবারেই না জেনে না শুনে নিচে সাইন করে থাকে,সেক্ষেত্রে আপনি তালাকের অধিকারই পাননি।
তাই তালাক নিয়ে অহেতুক টেনশনের কিছুই নেই।
আপনি স্পষ্ট বাক্যে উচ্চারণ করে নিজেকে তালাক দিলেও তালাক হবেনা।

আর যদি আপনার স্বামীই সেই ১৮ নং ধারা পুরন করে থাকে,অথবা কাজী সাহেব তাহা পূরন করার পর আপনার স্বামী বিষয়টি সম্পর্কে জেনে শুনেই নিচে সাইন করে থাকে,সেক্ষেত্রে এই কাবিন নামা ও সাইন কখন হয়েছিলো?

যদি কাবিননামা আপনাদের ইজাব কবুল হওয়ার আগে লেখা হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রেও আপনি তালাকের অধিকারই পাননি।
তাই তালাক নিয়ে অহেতুক টেনশনের কিছুই নেই।

আর যদি যদি কাবিননামা আপনাদের ইজাব কবুল হওয়ার পর লেখা হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে সেই কাবিন নামায় আপনাকে কি বিশেষ শর্ত স্বাপেক্ষে (যেমন স্বামী পুরুষত্বহীন হয়ে গেলে/নিরুদ্দেশ হয়ে গেলে, বনিবনা না হলে,শারীরিক সমস্যা হলে, ঝগড়া হলে) তালাকের অধিকার দেয়া হয়েছে? 

সেক্ষেত্রে উক্ত শর্তাবলি পাওয়া না গেলে আপনি তালাকের অধিকারই পাবেননা।
তাই সেক্ষেত্রেও তালাক নিয়ে আপনার অহেতুক টেনশনের কিছুই নেই।

আর যদি সেই কাবিননামায় শর্তহীন আপনাকে তালাকের অধিকার দেয়া হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রেই কেবল আপনি তালাকের অধিকার প্রাপ্ত।
তবে প্রশ্নে উল্লেখিত কোনো ছুরতেই এক্ষেত্রে তালাক হবেনা।
আর ওয়াসওয়াসার রুগী হওয়ায় আপনার কোনো কথার দরুন তালাক হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...