বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
শরীয়তের বিধান হলো, মুখে উচ্চারণ না করে শুধু মনে মনে তালাক দিলে বা মনে মনে শর্ত যুক্ত তালাক দিলে তাহা পতিত হবেনা।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفٰى عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ اللهَ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي مَا حَدَّثَتْ بِه„ أَنْفُسَهَا مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَتَكَلَّمْ
قَالَ قَتَادَةُ إِذَا طَلَّقَ فِي نَفْسِه„ فَلَيْسَ بِشَيْءٍ.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ আমার উম্মতের হৃদয়ে যে খেয়াল জাগ্রত হয় তা ক্ষমা করে দিয়েছেন, যতক্ষণ না সে তা কার্যে পরিণত করে বা মুখে উচ্চারণ করে।
ক্বাতাদাহ (রহ.) বলেনঃ মনে মনে তালাক দিলে তাতে কিছুইতালাক হবে না। [বুখারী শরীফ ৫২৬৯.২৫২৮] আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭৮)
অন্য এক হাদীস শরীফে এসেছে-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ لِي عَنْ أُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ صُدُورُهَا، مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَكَلَّمْ ".
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (আমার বরকতে) আল্লাহ আমার উম্মতের অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) মাফ করে দিয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তা কাজে পরিণত করে অথবা মুখে বলে। (সহীহ বুখারী ২৫২৮)
আরো জানুনঃ-
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
এতে তালাক হয়ে যাবেনা।
(০২)
এক্ষেত্রেও তালাক হবেনা।
(০৩)
এক্ষেত্রে ওয়াসওয়াসার রুগী না হয়ে সুস্থ মানুষ হলেও প্রশ্নের বিবরন মতে তালাক হবেনা।
(০৪)
ওয়াসওয়াসার রুগী হওয়া তালাক হবেনা।
(০৫)
এক্ষেত্রে তালাক হবেনা।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনার কাবিন নামায় আপনাকে যে তালাকের অধিকার দেয়ার কথা লেখা আছে,এই অধিকার কি আপনার স্বামী দিয়েছে?
অর্থাৎ কাবিননামার ১৮ নং ধারা কি আপনার স্বামী নিজে লিখেছে? নাকি কাজি সাহেব লিখেছে?
সেই কাবিননামা আপনাদের ইজাব কবুল হওয়ার আগে লেখা হয়েছে নাকি ইজাব কবুল হওয়ার পরে লেখা হয়েছে?
সেই কাবিন নামায় কি শর্তহীন আপনাকে তালাকের অধিকার দেয়া হয়েছে? নাকি বিশেষ শর্ত স্বাপেক্ষে?
যদি উক্ত কাবিন নামা কাজী সাহেব লিখে থাকে,আর আপনার স্বামী বিষয়টি সম্পর্কে একেবারেই না জেনে না শুনে নিচে সাইন করে থাকে,সেক্ষেত্রে আপনি তালাকের অধিকারই পাননি।
তাই তালাক নিয়ে অহেতুক টেনশনের কিছুই নেই।
আপনি স্পষ্ট বাক্যে উচ্চারণ করে নিজেকে তালাক দিলেও তালাক হবেনা।
আর যদি আপনার স্বামীই সেই ১৮ নং ধারা পুরন করে থাকে,অথবা কাজী সাহেব তাহা পূরন করার পর আপনার স্বামী বিষয়টি সম্পর্কে জেনে শুনেই নিচে সাইন করে থাকে,সেক্ষেত্রে এই কাবিন নামা ও সাইন কখন হয়েছিলো?
যদি কাবিননামা আপনাদের ইজাব কবুল হওয়ার আগে লেখা হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রেও আপনি তালাকের অধিকারই পাননি।
তাই তালাক নিয়ে অহেতুক টেনশনের কিছুই নেই।
আর যদি যদি কাবিননামা আপনাদের ইজাব কবুল হওয়ার পর লেখা হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে সেই কাবিন নামায় আপনাকে কি বিশেষ শর্ত স্বাপেক্ষে (যেমন স্বামী পুরুষত্বহীন হয়ে গেলে/নিরুদ্দেশ হয়ে গেলে, বনিবনা না হলে,শারীরিক সমস্যা হলে, ঝগড়া হলে) তালাকের অধিকার দেয়া হয়েছে?
সেক্ষেত্রে উক্ত শর্তাবলি পাওয়া না গেলে আপনি তালাকের অধিকারই পাবেননা।
তাই সেক্ষেত্রেও তালাক নিয়ে আপনার অহেতুক টেনশনের কিছুই নেই।
আর যদি সেই কাবিননামায় শর্তহীন আপনাকে তালাকের অধিকার দেয়া হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রেই কেবল আপনি তালাকের অধিকার প্রাপ্ত।
তবে প্রশ্নে উল্লেখিত কোনো ছুরতেই এক্ষেত্রে তালাক হবেনা।
আর ওয়াসওয়াসার রুগী হওয়ায় আপনার কোনো কথার দরুন তালাক হবেনা।