আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
152 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
edited by
১.হুজুর  আমার স্ত্রী কে একটা কথা বলতে নিষেধ করি, সে ওই কথা টা বার বার বলে , দিয়ে আমার রাগ হয়ে জাই। তখন আমি আমার স্ত্রী কে বকা বকি করি  আর  তখন ই মনে মনে শর্ত তালাক এর কথা মনে হয়। কিন্তু আমি কখনো মুখে উচ্চরণ করিনি। মনে মনে হয়েছে , এর জন্য কি কোনো তালাক হবে?

২. আমার স্ত্রী যদি ঐ কথাটা আবার বলে তাহলে কি তালাক হয়ে যাবে? আমি তো কোনো শর্ত তালাক দেইনি , যা  হয়েছে সব মনে মনে তাহলে কি তালাক হবে যদি স্ত্রী ওই কথা টা বলে? আপনাদের কে বললাম এই কথা টা এর জন্য কি কোনো সমস্যা হবে?

৩. আমার স্ত্রী ভুল করে ওই কথাটা বলে ফেলেছে তাহলে কি তালাক হবে ? খুবই ভয় হচ্ছে হুজুর।
৪. আপনাদের কে বোঝানোর জন্য তালাক শব্দ টি ব্যাবহার করেছি এর জন্য কি বৈবাহিক জীবনে কোনো সমস্যা হবে?

৫. হুজুর আমার বিয়ের সময় আমাকে কালেমা পড়িয়েছে, এবং আমাকে প্রস্তাব দিয়েছে আমি তিন বার কবুল বলেছি, দুই জন সাক্ষীর সামনে ও আমার অভিভাবক ছিল।

বিষয় হচ্ছে আমার স্ত্রী কে প্রস্তাব দিয়ে আমার স্ত্রী তিন বার কবুল বলেছেন দুই জন সাক্ষী ও অভিভাবক দের সামনে কিন্তু আমার স্ত্রী কে কালেমা পড়াইনি, এবং তওবা করাই নি ।

হুজুর আমাদের বিয়ে শুদ্ধ হয়েছে তো?

৫.১ বিয়ের সময় প্রস্তাব টা পাত্র বা পাত্রী যেকেউ দিলে ই হবে , এবং পাত্র বা পাত্রী সেটা কবুল করবে। নাকি পাত্র কেই দিতে হবে? নাকি পাত্রী কেই প্রস্তাব দিতে হবে? কাকে আগে দিতে হবে? নাকি যেকেউ আগে দিলেই হবে??  অবশ্যই বলবেন বুঝিয়ে। প্রথমে কাকে কবুল বলতে হবে ছেলে কে নাকি মেয়েকে?

৬. হুজুর আমার বিয়ের আগে  অন্য একটা মেয়ের সাতে সম্পর্ক ছিল, তাকে মিথ্যা করে বলেছিলাম  যে আমি তাকে স্পর্শ করার আগে ফাতেহা সূরা পড়ে স্পর্শ করেছি যাতে আর কেউ না স্পর্শ করে , আমি কিন্তু তাকে মিথ্যা কথা বলেছিলাম আসলে আমি ফাতেহা সূরা পড়িনি। আর পড়লে ও মনে নেই, । আর হুজুর মেয়েটার সঙ্গে আমার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছিল। কিন্তু মেয়েটা অন্য একটা ছেলে কে ভালবেসে বিয়ে করেছে। আমি ও পরবর্তী তে পড়াশোনা শেষ করে ৩ বছর পর আমিও অন্য মেয়ে কে বিয়ে করেছি।
***হুজুর আমার পরবর্তী তে বিয়ে করেছি ইসলামিক শরিয়ত অনুযায়ী। আমার বিয়ে শুদ্ধ হয়েছে তো? আর ওই মেয়েটার সাতে সম্পর্ক ছিল তার জন্য আমাদের বৈবাহিক জীবনে কোনো সমস্যা হবে না তো?

1 Answer

0 votes
by (560,820 points)
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


শরীয়তের বিধান হলো, মুখে উচ্চারণ না করে শুধু মনে মনে তালাক দিলে বা মনে মনে শর্ত যুক্ত তালাক দিলে তাহা পতিত হবেনা।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفٰى عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ اللهَ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي مَا حَدَّثَتْ بِه„ أَنْفُسَهَا مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَتَكَلَّمْ
قَالَ قَتَادَةُ إِذَا طَلَّقَ فِي نَفْسِه„ فَلَيْسَ بِشَيْءٍ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ আমার উম্মতের হৃদয়ে যে খেয়াল জাগ্রত হয় তা ক্ষমা করে দিয়েছেন, যতক্ষণ না সে তা কার্যে পরিণত করে বা মুখে উচ্চারণ করে।

ক্বাতাদাহ (রহ.) বলেনঃ মনে মনে তালাক দিলে তাতে কিছুইতালাক হবে না। [বুখারী শরীফ ৫২৬৯.২৫২৮] আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭৮)

অন্য এক হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ لِي عَنْ أُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ صُدُورُهَا، مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَكَلَّمْ ".

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (আমার বরকতে) আল্লাহ আমার উম্মতের অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) মাফ করে দিয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তা কাজে পরিণত করে অথবা মুখে বলে। (সহীহ বুখারী ২৫২৮)

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
এর জন্য কোনো তালাক হবেনা।

(০২)
আপনার স্ত্রী যদি ঐ কথাটা আবার বলে,সেক্ষেত্রেও তালাক হয়ে যাবেনা।

সেই কথাটি যে আমাদেরকে বললেন,এর দরুন কোনো সমস্যা হবেনা। 

(০৩)
না,তালাক হবেনা।

(০৪)
এর জন্য বৈবাহিক জীবনে কোনো সমস্যা হবেনা।

(০৫)
আপনাদের বিবাহ শুদ্ধ হয়েছে।

৫.১
যে কেউ আগে দিলেই হবে।

বিবাহের সময় প্রস্তাব পাত্র পাত্রী যে কেউ দিলেই হবে।
পাত্রকেই এই প্রস্তাব দিবে,এমন কোনো বাধ্যবাধকতা ইসলামে নেই।
বরং পাত্রীও প্রস্তাব দিতে পারবে।

এর দৃষ্টান্ত হাদীস শরীফেও আছেঃ-
সাবিত আল বুনানী (রহ.) হতে বর্ণিত।

عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا مَرْحُومُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ مِهْرَانَ قَالَ سَمِعْتُ ثَابِتًا الْبُنَانِيَّ قَالَ كُنْتُ عِنْدَ أَنَسٍ وَعِنْدَه“ ابْنَةٌ لَه“ قَالَ أَنَسٌ جَاءَتْ امْرَأَةٌ إِلٰى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم تَعْرِضُ عَلَيْهِ نَفْسَهَا قَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَلَكَ بِي حَاجَةٌ فَقَالَتْ بِنْتُ أَنَسٍ مَا أَقَلَّ حَيَاءَهَا وَا سَوْأَتَاهْ وَا سَوْأَتَاهْ قَالَ هِيَ خَيْرٌ مِنْكِ رَغِبَتْ فِي النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَعَرَضَتْ عَلَيْهِ نَفْسَهَا.

তিনি বলেন, আমি আনাস (রাঃ)-এর কাছে ছিলাম। তখন তাঁর কাছে তাঁর কন্যাও ছিলেন। আনাস (রাঃ) বললেন, একজন মহিলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে নিজেকে সমর্পণ করতে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার কি আমার প্রয়োজন আছে? এ কথা শুনে আনাস (রাঃ)-এর কন্যা বললেন, সেই মহিলা কতই না নির্লজ্জ, ছিঃ লজ্জার কথা। আনাস (রাঃ) বললেন, সে মহিলা তোমার চেয়ে উত্তম, সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহচর্য পেতে অনুরাগী হয়েছিল। এ কারণেই সে নিজেকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে পেশ করেছে। ( সহীহ বুখারী-৫১২০)

(০৬)
আপনার বিয়ে শুদ্ধ হয়েছে।
আর ওই মেয়েটার সাথে যে আপনার সম্পর্ক ছিল, তার জন্য আপনাদের বৈবাহিক জীবনে কোনো সমস্যা হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...