জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
(১.২.৩)
ভিডিও দেখা নিয়ে উলামায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে।
কিছু উলামায়ে কেরামগন বলেনঃ
তাসবীর বা ফটো নাজায়েজ ,তাই ভিডিও দেখাও নাজায়েজ।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর(রা.)থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
عَنْ نَافِعٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا أَخْبَرَهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: " إِنَّ الَّذِينَ يَصْنَعُونَ هَذِهِ الصُّوَرَ يُعَذَّبُونَ يَوْمَ القِيَامَةِ، يُقَالُ لَهُمْ: أَحْيُوا مَا خَلَقْتُمْ "
রাসূলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেছেন,যারা ফটো বানায়, কিয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দেয়া হবে এবং তাদের উদ্দেশ্যে বলা হবে,যা তোমরা বানিয়েছ তাতে জীবন দাও।[সহীহ বুখারী-৫৯৫১]
বিস্তারিত জানুন-২২৫৩
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
শরয়ী বিশেষ জরুরত ব্যতীত ছবি ভিডিও সম্পূর্ণই হারাম ও নাজায়েয।
মু'মিন একটি মুহুর্তও অযথা কাটাবে না।বরং সর্বদাই আল্লাহর ইবাদতে লিপ্ত থাকবে।নামায পড়বে,কুরআন তিলাওয়াত করবে,নয়তো যিকির করবে।যদি ইবাদত করতে করতে মন ক্লান্ত হয়ে যায়,তখন মনকে উৎফুল্ল করতে বৈধ বিনোধনের ব্যবস্থা শরীয়তে রয়েছে।.
,
.
★তবে অন্যান্য উলামায়ে কেরামগন বলেছেন যেঃ
যে সকল দৃশ্য বাস্তবে দেখা নাজায়েয, সেগুলো ভিডিওতে দেখা নাজায়েয। আর যে সকল দৃশ্য বাস্তবে দেখা জায়েয, সেগুলো ভিডিওতে দেখা জায়েয।
হাদীস শরিফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
.ثلاثة لا ترى أعينهم النار : عين حرست في سبيل الله ، وعين بكت من خشية الله ، وعين غضت عن محارم الله
তিন শ্রেণীর লোক যাদের চোখ জাহান্নাম দেখবে না। যে চোখ আল্লাহর রাস্তায় পাহারা দিয়েছে। যে চোখ আল্লাহর ভয়ে কেঁদেছে। যে চোখ আল্লাহর নিষিদ্ধ স্থান থেকে বিরত থেকেছে। (তাবরানি: ১০০৩)
অপর হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
اَلْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظْرُ وَالْاُذُنَانِ زِنَاهُمَا الْاِسْتِمَاعُ وَاللِّسَانُ زِنَاهُمَا الْكَلَامُ وَالْيَدُ زِنَاهُمَا الْبَطْشُ وَالرِّجْلُ زِنَاهُمَا الخُطَا وَالْقَلْبُ يَهْوِىْ وَيَتَمَنَّى وَيُصَدِّقُ ذَالِكَ الْفَرْجُ اَوْ يُكَذِّبُه
দুই চোখের ব্যভিচার হল হারাম দৃষ্টি দেয়া, দুই কানের ব্যভিচার হল পরনারীর কণ্ঠস্বর শোনা, জিহবার ব্যভিচার হল, [পরনারীর সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের ব্যভিচার হল পরনারী স্পর্শ করা, পায়ের ব্যভিচার হল গুনাহর কাজের দিকে পা বাড়ান, অন্তরের ব্যভিচার হল কামনা-বাসনা আর গুপ্তাঙ্গঁ তা সত্য অথবা মিথ্যায় পরিণত করে। (সহীহ মুসলিম ২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ ৮৯৩২)
(০৩)
পুরুষরা কোনকভাবেই মহিলাদের ভিডিও দেখতে পারবেনা।
মহিলারা পুরুষ বক্তা,বা পুরুষের অন্য কোনো জায়েজ ভিডিও দেখতে পারবে কিনা,সেই বিষয় স্পষ্ট করছি।
পুরুষের পর্দা হল, পরনারীর প্রতি -আকর্ষণ থাক বা না থাক- একান্ত প্রয়োজন (যেমন,চিকিৎসা ইত্যাদির প্রয়োজন) ছাড়া দৃষ্টিপাত না করা। পক্ষান্তরে নারীদের পর্দার বেলায় ফিকাহবিদগণ বলেন, পরপুরুষের প্রতি কামাসক্তি বা আকর্ষণানুভূতিসহ দৃষ্টিপাত করা সর্বসম্মতভাবে হারাম। তবে আকৃষ্ট হবার আশঙ্কা না থাকলে পরপুরুষের প্রতি দৃষ্টিপাত করা হারাম নয়; বরং দৃষ্টিপাত না করা তাকওয়ার পরিচায়ক। (কিতাবুল ফাতওয়া: ৬/১০১ নিহায়াতুল মুহতাজ: ৬/১৯৪)।
,
আয়েশা রাযি. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
وَاللّٰهِ لَقَدْ رَأَيْتُ النَّبِىَّ ﷺ يَقُومُ عَلٰى بَابِ حُجْرَتِىْ وَالْحَبَشَةُ يَلْعَبُونَ بِالْحِرَابِ فِى الْمَسْجِدَ وَرَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ يَسْتُرُنِىْ بِرِدَائِه لِأَنْظُرَ إِلٰى لَعِبِهِمْ بَيْنَ أُذُنِه وَعَاتِقِه ثُمَّ يَقُوْمُ مِنْ أَجْلِىْ حَتّٰى أَكُوْنَ أَنَا الَّتِىْ أَنْصَرِفُ
আল্লাহর কসম! আমি নবী ﷺ-কে আমার ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছি, (ঈদের দিনে) হাবাশী যুবকরা যখন মসজিদের আঙিনায় বর্শা নিয়ে খেলা করছিল, তখন আমি তাঁর ঘাড় ও কানের ফাঁক দিয়ে তাদের খেলা দেখতে পারি সেজন্য রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর চাদর দিয়ে আমাকে ঢেকে রেখেছিলেন এবং (আমার মুহাববাতে) ততক্ষণ পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতেন যতক্ষণ না আমি স্বেচ্ছায় ফিরে আসতাম। (বুখারী: ৫২৩৬, মুসলিম: ৮৯২)
সুতরাং বোঝা গেল, যেহেতু সরাসরি দেখা ও ফটো-ভিডিওতে দেখার হুকুম অভিন্ন, সেহেতু আকৃষ্ট হবার আশঙ্কা না থাকলে নারীরা হক্কানী ওলামায়ে কেরামের ভিডিও দেখতে পারে। পক্ষান্তরে আকৃষ্ট হবার আশঙ্কা থাকলে দেখাটা তাদের জন্য জায়েয হবে না। তবে অবশ্যই না দেখা উত্তম ও তাকওয়ার পরিচায়ক। বরং তাঁদের নসিহত শোনার ইচ্ছা হলে অডিও থেকে শুনবে। এটাই নিরাপদ ও উত্তম পদ্ধতি।
,
আরো জানুনঃ
,
(০৪)
মহিলাদের গাইর মাহরাম ছেলেদের দেখা ফেতনার আশংকা না থাকলে তো কোনো গুনাহ নেই,তবে অনুত্তম।
আর ফেতনার আশংকা থাকলে জায়েজ নেই।
তবে চেষ্টা করার পরেও অনিচ্ছায় চোখ গেলে কোনো কোনো গুনাহ্ নেই।
বিস্তারিত জানুনঃ