আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
206 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
edited by
আসসালমুআলাইকুম হুজুর,
১. হুজুর আমি খুবই ওয়াসওয়াসা রুগী মারাক্তক পর্যায় এর ওয়াসওয়াসা রুগী। হুজুর বিষয় হলো , আমি ভাত রুটি পানি কিছু খেতে পারছিনা ভয় এ । কারণ যখনি আমি কিছু খাচ্ছি তখন মুখ নড়ছে, জিহ্ববা নড়ছে , আর সেই সময় তালাক কথা টা মনে পড়ে যাচ্ছে, মনে মনে হচ্ছে। আসলে আমি মুখ , জিহ্ববা নড়িয়ে তালাক শব্দ টা উচ্চরণ করছিনা । পানি বা অন্য কিছু খাবার খেতে গিয়ে মুখ জিহ্ববা নড়ছে, সেই সময় ওই কথা টা মনে হচ্ছে দিয়ে ভয় হচ্ছে উচ্চরণ হয়ে গেলো নাকি তাই বলে কিন্তু আমি আসলে উচ্চরণ করছিনা। হুজুর এমন মনে হচ্ছে এই রকম হলে কি তালাক হবে?

১.১. আবার ভাত খেতে গেলে যখন ভাত চিবচ্ছি তখন  তালাক কথা টা মনে মনে হচ্ছে, আর ভাত ছিবচ্ছি তো দাতে দাঁত লাগছে দিয়ে মনে হচ্ছে তালাক শব্দ টি হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমি স্পষ্ট করে উচ্চরণ করছিনা। মনে মনে হচ্ছে আর যখন খাবার খাচ্ছি  দাতে দাঁত লেগে শব্দ হচ্ছে মনে হচ্ছে যেনো উচ্চরণ হয়ে গেলো। খুবই ওয়াসওয়াসা হুজুর এর জন্য কি কোনো তালাক হবে? আমি তো উচ্চরণ ই করছিনা।

২. আমি আমার স্ত্রী কে সহবাসের জন্য বলছিলাম কিন্তু সে রাজি হচ্ছিল না, দিয়ে আমি দুঃখ করে বলছিলাম এই রকম ভাবে সহবাস না করে তো থাকতে পারছিনা। দিয়ে আমি বলছিলাম এই ভাবে কি দাম্পত্য জীবনে সুখ হয়। স্ত্রী যে বলছিলাম তুমি আমাকে আনন্দ দিতে পারো না। এইসব বলছিলাম একটু রাগ ও দুঃখ করে । দিয়ে আমার ভয় হয়ে যায় এই সব বলার জন্য আবার তালাক হবে না তো । হুজুর আমি নরমালি এই সব কথা বলেছি এর জন্য কি তালাক হবে?

২.২ হুজুর  আমার স্ত্রী কে একটা কথা বলতে নিষেধ করি, সে ওই কথা টা বার বার বলে , দিয়ে আমার রাগ হয়ে জাই। তখন আমি আমার স্ত্রী কে বকা বকি করি  আর  তখন ই মনে মনে শর্ত তালাক এর কথা মনে হয়। কিন্তু আমি কখনো মুখে উচ্চরণ করিনি। মনে মনে হয়েছে , এর জন্য কি কোনো তালাক হবে?

২.৩ আমার স্ত্রী যদি ঐ কথাটা আবার বলে তাহলে কি তালাক হয়ে যাবে? আমি তো কোনো শর্ত তালাক দেইনি তাহলে কি তালাক হবে যদি স্ত্রী ওই কথা টা বলে? আপনাদের কে বললাম এই কথা টা এর জন্য কি কোনো সমস্যা হবে?

২.৪ আমার স্ত্রী ভুল করে ওই কথাটা বলে ফেলেছে তাহলে কি তালাক হবে ? খুবই ভয় হচ্ছে হুজুর।
৩. আপনাদের কে বোঝানোর জন্য তালাক শব্দ টি ব্যাবহার করেছি এর জন্য কি বৈবাহিক জীবনে কোনো সমস্যা হবে?

৪. হুজুর স্ত্রী সহবাসের পর ফরয গোসল না করে ইসলামিক ফাতওয়া এর ওয়েব সাইড খুলে প্রশ্ন করছি, ও কিছু প্রশ্নের জবাব দেকছিলাম। নাপাক অবস্থায় i fatawa খুলেছি এর জন্য কি ঈমান চলে যাবে বা ঈমানের কোনো ক্ষতি হবে?
৫. হুজুর আমার স্ত্রী বিয়ে বাড়িতে যাবে তাই সাজগোজ করছিল , অনেক দেরি হচ্ছিল, তাই আমি বলছি ওরে আল্লাহ, এত দেরি, হায়রে আল্লাহ আর কত সাজবে তাই বলেছি সাজগোজ করা দেখে, দিয়ে মনে হতে লাগলো হায়রে আল্লাহ বললাম , আল্লাহ কে লে দে করা হয়ে গেলো নাকি   বলে খুবই ভয় হতে লাগলো। হুজুর আল্লাহ কসম আমি নরমালি কথা টা বলেছি ।  কথার কথা বলেছি এর জন্য কি ঈমান চলে যাবে?
৬. হুজুর আমি মারাক্তক ওয়াসওয়াসা রুগী, আজ বাথরুম এ গোসল করছিলাম, অনিচ্ছাকৃত  হটাৎ আমার প্রিয় নবী সাঃ এর কথা মনে পড়ে জাই। কাবা শরীফের কথা মনে পড়ে জাই,  আমি ইচ্ছা করে মনে করিনি ওয়াসওয়াসা র জন্য কদিন থেকে এইরকম হচ্ছে অনিচ্ছাকৃত ভাবে মনে হয়ে যাচ্ছে।আমি সঙ্গে সঙ্গে মন কে অন্য মনষ্ক করার যথেষ্ট চেষ্টা করেছি। বাথরুম থেকে গোসল করে যখনই বেড়িয়েছি সঙ্গে সঙ্গে আস্তাগিরুল্লাহ পড়েছি। হুজুর বাথরুম এ মনে পড়েছিল সঙ্গে সঙ্গে অন্য মনস্ক হওয়ার চেষ্টা করেছি । এবং গোসল করে বেরিয়ে  সঙ্গে সঙ্গে

আস্তাগিরুল্লাহ  পড়েছি । হুজুর গোসল করে বেরোতে সামান্য দেরি হয়েছে , তাই আস্তাগিরুল্লাহ পড়তে সামান্য দেরি হয়েছে । তাই আমার ভয় হচ্ছে  হুজুর আমার ঈমান চলে যাবে না তো?
আমি খুবই ওয়াসওয়াসা রুগী হুজুর আমার ঈমান ঠিক আছে তো হুজুর?

৬.১ হুজুর আমি কিছুক্ষন আগে টয়লেট এ গিয়েছিলাম , আমার ইসলামের না না কথা মনে আসছিল, আমি সঙ্গে সঙ্গে মন কে অন্য মনষ্ক করে ফেলেছি। দিয়ে টয়লেট শেষ করে উঠবো দিয়ে প্রস্রাব পেলো , প্রস্রাব করতে গিয়ে মনে হচ্ছে কাবা শরীফ এ করছি। আস্তাগিরুল্লাহ আস্তাগিরুল্লাহ । হুজুর একদম আমার অনিচ্ছাকৃত এমন ভাবনা চলে এসেছে,  শয়তানের ওয়াসওয়াসা তে। আল্লাহ কসম এই কথা আমার বলতে গিয়ে ও খুবই খারাপ লাগছে হুজুর। আমি মন থেকে এইরকম ভাবিনি । অনিচ্ছাকৃত এইরকম হয়েছে, বাথরুম থেকে বেরিয়ে সঙ্গে সঙ্গে তওবা করেছি , আস্তাগিরুল্লাহ পড়েছি। হুজুর শয়তানের ওয়াসওয়াসা তে আমি শেষ হয়ে যাচ্ছি । হুজুর এর জন্য কি আমার ঈমান চলে যাবে?
৬.২ আপনাদের কে আমার মনে এই জঘন্য কথা মনে হয়েছিল সেইটা আপনাদের কে বললাম এর জন্য কি কোনো সমস্যা হবে?

৬.৩. হুজুর আমি বাথরুম করতে পারছিনা যখনই বাথরুম যাচ্ছি তখনি  আবার ওই সব কথা মনে হচ্ছে ৬.১ নম্বর প্রশ্নে যা বলেছি তাই মনে হচ্ছে যা আমার বলা খুব কঠিন হচ্ছে, কিছু কিছু না কিছু খুবই বাজে কথা মনে হয়ে যাচ্ছে আমি  আস্তাগিরুল্লাহ পড়তেই আছি। হুজুর আমার ঈমান চলে যাবে না তো?

৬.৪ আবার বাথরুম গিয়েছিলাম আবার সব উল্টোপাল্টা মনে হচ্ছিল। দিয়ে মনে মনে বাথরুম এ  আস্তাগিরুল্লাহ পড়েছি। বাইরে বেরিয়ে মনে ছিল না। দিয়ে যখনই মনে হলো সঙ্গে সঙ্গে আস্তাগিরুল্লাহ পড়েছি। এর জন্য ঈমান চলে যাবে না তো?

1 Answer

0 votes
by (564,060 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
উকবাহ ইবনু আ’মির রাযি. বলেন,

لاَ يَجُوزُ طَلاَقُ الْمُوَسْوِسِ

‘ওয়াসওয়াসা সম্পন্ন (সন্দেহের বাতিকগ্রস্ত) ব্যক্তির তালাক কার্যকর হয় না।’ 
(সহিহ বুখারী, অধ্যায় ৬৮)

চার মাযহাব সম্ভলিত সর্ববৃহৎ ফেকহি গ্রন্থ "আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যা"গ্রন্থে লিপিবদ্ধ রয়েছে যে,
نَقَل ابْنُ عَابِدِينَ عَنِ اللَّيْثِ: فِي مَسْأَلَةِ طَلاَقِ الْمُوَسْوَسِ  أَنَّهُ لاَ يَجُوزُ طَلاَقُ  الْمُوَسْوَسِ  ، قَال: يَعْنِي الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ
وَنَقَل ابْنُ الْقَيِّمِ: إِنَّ الْمُطْلِّقَ إِنْ كَانَ زَائِل الْعَقْل بِجُنُونٍ أَوْ إِغْمَاءٍ أَوْ وَسْوَسَةٍ لاَ يَقَعُ طَلاَقُهُ،  قَال: وَهَذَا الْمَخْلَصُ مُجْمَعٌ عَلَيْهِ بَيْنَ عُلَمَ ـ اءِ الأُْمَّةِ

- رِدَّةُ الْمُوَسْوَسِ: 
٢١ - إِنْ تَكَلَّمَ الْمُوَسْوَسُ  بِكَلاَمٍ يَقْتَضِي الرِّدَّةَ لَمْ يَكُنْ فِي حَقِّهِ رِدَّةٌ. صَرَّحَ بِذَلِكَ الْحَنَفِيَّةُ، يَعْنُونَ الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ
ইবনে আবেদিন শামী রাহ বর্ণনা করেন,ওয়াসওয়াসা গ্রস্থ ব্যক্তি -যার বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে বসেছে-তার তালাক গ্রহণযোগ্য নয়।
ইবনুল কাইয়িম রাহ বলেন, যদি তালাক প্রদানকারী ব্যক্তি ওয়াসওয়াসা,বেহুশি বা পাগলাটের দরুণ বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে থাকে, তাহলে তার তালাক গ্রহণযোগ্য হবে না। এর উপর সমস্ত উলামাদের ঐক্যমত রয়েছে।
(আল-মাওসু'আতুল ফেকহিয়্যাতুল কোয়েতিয়্যাহ-৪৩/১৫৬)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/835

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!
আপনি যেহেতু ওয়াসওয়াসার রুগী, তাই আপনার কোনো তালাকই গ্রহণযোগ্য নয়।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার তালাক পতিত হয়নি।
এই রোগ থাকা অবস্থায় আপনার কোনো তালাক পতিত হবেনা।আপনি নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন,নিশ্চিন্তে অন্যান্য মানুষদের ন্যায় স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারেন।
কোনো সমস্যা নেই।


(০২)
এক্ষেত্রে তালাক হবেনা।

(২.২ ২.৩ ২.৪)
প্রশ্নের বিবরন মতে কোনো ছুরতেই তালাক হবেনা।

(০৩)
এর জন্য বৈবাহিক জীবনে কোনো সমস্যা হবেনা।

(০৪)
এর জন্য ঈমান চলে যাবেনা, ঈমানের কোনো ক্ষতি হবেনা।

তবে স্কীনে কুরআনের কোনো আয়াত আসলে সেক্ষেত্রে সরাসরি আয়াতের স্থানে স্পর্শ করা জায়েজ হবেনা।
এতে গুনাহ হবে।

(০৫)
এর জন্য ঈমান চলে যাবেনা। 

(০৬)
আপনার ঈমান ঠিক আছে,আলহামদুলিল্লাহ। 

(৬.১ ৬.২ ৬.৩ ৬.৪)
প্রশ্নের বিবরন মতে উপরোক্ত কোনো ছুরতেই আপনার ঈমান চলে যাবেনা। 
আমাদেরকে বলার দরুন কোনো সমস্যা হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...