আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
117 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (106 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ

1.আমি বুঝতে পারছি না যে নামাজের মধ্যে সন্দেহ গুলো হয় মূলত আমার অমনোযোগীতার কারণে নাকি ওয়াসওয়াসার কারণে??? যেমন নামাজের মধ্যে আমি যদি অল্প কিছু সময়ের জন্য অন্যমনস্ক হয়ে যায় তাহলেই আমি ভুলে যাই আমি কোন রাকাতে আছি বা কোন সিজদায় আছি?? এখন পুরো নামাজে তো আর মনোযোগ পরিপূর্ণভাবে ধরে রাখা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে আমি যদি সাহু সেজদা  না দিয়ে যেটির উপর প্রবল  ধারণা সেইটার উপরে আমল করি তাহলে কি হবে?? আমার মেমোরি কিন্তু দুর্বল নয়। অন্য সবকিছু আমি মনে রাখতে পারি কিন্তু ফরজ নামাজে দাঁড়ালে আমার প্রায় এরকম হয়। এক্ষেত্রে আমি এ বিষয়টা কি পাত্তা না দিয়ে সাহু সিজদা এড়িয়ে চলব?? নাকি কি করব??

2.আমার প্রাইভেট স্যার যেই পড়াগুলো  দেয় বাসার জন্য,,, অনেক সময় সেই পড়াগুলো আমি করতে পারিনা। এখন স্যার যদি আমার কাছে জিজ্ঞেস করে যে আমি পড়াটা রেডি করেছি নাকি তাহলে কি আমি বলে দেবো?? নাকি চুপ থেকে বিষয়টা এগিয়ে চলবো??? স্যার যদি জিজ্ঞাসা করে না আমি পড়া করেছি নাকি??? এক্ষেত্রে কি আমি বলে দেবো যে আমি আজকের পড়াটা করিনি?? নাকি চুপ করে থাকবো?? আমার মনে হয় যে আমি যদি চুপ করে থাকি তাহলে প্রতারণা করা হয়ে যাবে?? এইটা কি সঠিক এক্ষেত্রে?? আমি যদি আংশিক পড়া করি আর আংশিক পড়া না করি  তাহলেও কি আমি স্যারকে জানিয়ে দেবো যে আমি এই পর্যন্ত করেছি আর বাকিটুকু করিনি? নাকি চুপ করে থাকবো?? অনেক সময় স্যার আমাকে উদ্দেশ্য করে জিজ্ঞেস করো না,,, বরং সবার উদ্দেশ্যে জিজ্ঞেস করে তোমরা কি পড়েছ?? তখন যদি খুব ভালো করে না পরি অথবা আংশিক পড়ি অথবা নাই পড়ি তাহলে কি স্যারকে জানিয়ে দেবো নাকি চুপ থাকব??

3.সুবহানা রব্বিইয়াল আযীম এখানে আযীম বলার সময় যদি আইনের পরিবর্তে যদি আলিফ/ হামজা  উচ্চারণ করি তাহলে কি নামাজ ভেঙে যাবে?

4.কেউ যদি অনেকের উদ্দেশ্যে একবারে গীবত করে তাহলে কি   গুনাহ হবে?? যেমন:  আমার দাদু আমাকে বলছে,, আমার ছেলে মেয়েরা আমাকে দেখেনা,, খোঁজ করেন না। আমি ওই সময় ছিলাম এবং কথাটা শুনেছি। এতে কি গীবত করা হয়েছে?? যদি গীবত করা হয় তাহলে আমি কার কাছ থেকে ক্ষমা চাইবো এর জন্য?? প্রত্যেকের কাছ থেকে কি ক্ষমা চাইতে হবে??

5.আমার  আম্মু আমাকে নফল ইবাদত  করতে দেয় না। সকাল সন্ধ্যার জিকির করতে দেয় না।এজন্য আমি বইয়ের মধ্যে  লুকায়ে করি। আর আম্মু যদি  জিজ্ঞেস করে আমি কি পড়ছি?? তাহলে তা তাওরিয়া করি। এক্ষেত্রে একদিন তাওরিয়া করার সময় একবার আমার একটু ভুল হয়ে গেছিল। আমার মনে হচ্ছে তাওরিয়া করতে গিয়ে মিথ্যা হয়ে গিয়েছে। এতে কি গুনাহ হবে?? কিভাবে এখন তওবা করব??

1 Answer

0 votes
by (573,960 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
নামাযে রা'কাত বা সেজদা সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হলে,যে ঐ ব্যক্তির কি এটা প্রথম হয়েছে না মাঝেমধ্যে এমন হয়।যদি প্রথমবার বা কদাচিৎ হয়ে তাহলে উনি আবার প্রথম থেকে শুরু করে নতুনভাবে পড়ে নিবেন।
(মুছান্নাফে ইবনে আবি শাইবা ২/২৮)

যে ব্যক্তির প্রায় সময় সন্দেহ হয় এবং সন্দেহ তার অভ্যাসে পরিণত হয়, ওই ব্যক্তি যেদিকে তার মন বেশি যায় (প্রবল ধারণা হয়), সেটার ওপর আমল করবে। যদি সব বিষয়ে ধারণা সমান হয়, তাহলে অপেক্ষাকৃত কম সংখ্যার ওপর আমল করবে এবং প্রত্যেক রাকাতকে নামাজের শেষ মনে করে বসবে, শেষে সিজদায়ে সাহু করবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ أَبِي خَلَفٍ، حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ دَاوُدَ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا شَكَّ أَحَدُكُمْ فِي صَلاَتِهِ فَلَمْ يَدْرِ كَمْ صَلَّى ثَلاَثًا أَمْ أَرْبَعًا فَلْيَطْرَحِ الشَّكَّ وَلْيَبْنِ عَلَى مَا اسْتَيْقَنَ ثُمَّ يَسْجُدُ سَجْدَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ يُسَلِّمَ فَإِنْ كَانَ صَلَّى خَمْسًا شَفَعْنَ لَهُ صَلاَتَهُ وَإِنْ كَانَ صَلَّى إِتْمَامًا لأَرْبَعٍ كَانَتَا تَرْغِيمًا لِلشَّيْطَانِ " .

মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ ইবনু আবূ খালাফ (রহঃ) ..... আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিন রাকাআত আদায় করা হলো না চার রাকাআত আদায় করা হলো- সালাতের মধ্যে তোমাদের কারো এরূপ সন্দেহ হলে সে যে কয় রাক’আত আদায় করেছে বলে নিশ্চিত হবে (তিন রাকাআত) সে কয় রাকাআতকে ভিত্তি ধরে অবশিষ্ট করণীয় করবে। এরপর সালাম ফিরানোর পূর্বে দুটি সিজদা করবে। (এখন) সে যদি পাঁচ রাকাআত আদায় করে থাকে তাহলে এ দু' সিজদা দ্বারা তার সালাতের জোড়া পূর্ণ হয়ে যাবে। আর যদি তার সালাত চার রাকাআত হয়ে থাকে তাহলে (এই) সিজদা দুটি শয়তানের মুখে মাটি নিক্ষেপের শামিল হবে। (মুসলিম ১১৫৯.ইসলামী ফাউন্ডেশন ১১৫২, ইসলামীক সেন্টার ১১৬১)

আপনি প্রবল ধারনার উপর আমল করবেন।
যদি কোনোদিকেই প্রবল ধারনা না হয়,সেক্ষেত্রে কমটাকে ধরে রুকন গুলো আদায় করবেন।
ও শেষে সেজদায়ে সাহু আদায় করবেন। 

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
আপনি যদি সাহু সেজদা না দিয়ে যেটির উপর প্রবল  ধারণা সেইটার উপরে আমল করেন, তাহলে হবে।
এক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই।

(০২)
স্যার যদি জিজ্ঞাসা করেন,সেক্ষেত্রে সত্যটি ভালোভাবে জানিয়ে দেয়া আবশ্যক। 
এক্ষেত্রে চুপ থাকা বা মিথ্যা বলা যাবেনা।।

আর যদি স্যার কিছুই জিজ্ঞাসা না করে,সেক্ষেত্রেও সত্যটি জানানো উচিত, তবে এক্ষেত্রে যদি স্যারকে না জানিয়ে চুপ থাকে,সেক্ষেত্রে আপনার গুনাহ হবেনা।

(০৩)
এটি ভুল।

তবে এক্ষেত্রে বিজ্ঞ উলামায়ের কেরামদের তাহকিক মতে যদিও নামাজ ভেঙ্গে যাবেনা।
তদুপরি শুদ্ধ ভাবে পড়ার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও এভাবে পড়া কোনো ভাবেই কাম্য নয়। 

(০৪)
এক্ষেত্রে তার দাদুর সন্তানদের সংশোধন করার নিয়ত থাকলে ও আপনি যদি তাহা সংশোধন এর চেষ্টা করার সামর্থবান হোন,সেক্ষেত্রে গুনাহ হবেনা।

নতুবা গুনাহ হবে।

(০৫)
মিথ্যা বলা হলে গুনাহ হবে।
আপনি আল্লাহর কাছে মাফ চেয়ে নিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 255 views
...