আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
357 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (63 points)
১.স্ত্রী পরিপূর্ণ পর্দা করেনা (মাঝে মাঝে বেপর্দা বেগানা মানুষের সামনে চলে যায়) পর্দা করা নিয়ে শক্ত ভাবে বললে,বা জোরাজোরি করলে দাম্পত্য ঝগড়া দেখা দেয়, এক্ষেত্রে স্বামীর কি করনীয়? যাতে ঝগড়া না হয় স্বাভাবিক সম্পর্ক ও চলমান থাকে আর স্বামীর দায়িত্ব ও আদায় হয়,যাতে স্বামীর গুবাহ না হয়?

২. কেও যদি ভাবে যে খতনা করা সুন্নত তাই করলে।সওয়াব না করলে গুনাহ না(সুন্নতে মোয়াক্কাদা ভাগ করে নাই) সুন্নত শুনে মনে করেছে যে না করলে গুনাহ নাই। তার কি এ জন্য কুফর হবে?

৩. আজকে ২ শাওয়াল বলার পরেও কেও যদি বলে, আজকে ইদ রইছে, এতে কি কুফর হবে?

৪. কেও যদি বলে,  বর্তমান সময়ে দাওয়াতি কাজ করাই জিহাদ/জিহাদের জন্য যথেষ্ট। এভাবে বললে কি তার গুনাহ হবে? বা কুফর হবে?

৫. বউ যদি বলে তার পর্দা করতে ভালো লাগে না, তবে কি সে কাফের হয়ে যাবে?(পর্দা ফরজ মানতেছে)

৬. বউকে সবার সামনে ছবি তুলতে মানা করলে যদি বলে সবাই থাকলে কি সমস্যা, এতে কি কুফর হবে?

৭. কারো মা/বাবা/ভাই/বউ এরা যদি কেও তার সামনে কোনো কুফরি কথা বলে বা কাজ করে আর তখন যদি ঝামেলা এড়ানোর জন্য সে তাদের কিছু না বলে। এটা ভেবে এরা এগুলো বললে  তারা তাদের হিসাব দিবে তার কি করার!  এতে কি তারও কুফর সংগঠিত হয়ে যাবে?

1 Answer

0 votes
by (573,960 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
মহান আল্লাহ্ তায়ালা ইরশাদ করেন, 

ٱلرِّجَالُ قَوَّٰمُونَ عَلَى ٱلنِّسَآءِ بِمَا فَضَّلَ ٱللَّهُ بَعۡضَهُمۡ عَلَىٰ بَعۡضٖ وَبِمَآ أَنفَقُواْ مِنۡ أَمۡوَٰلِهِمۡۚ فَٱلصَّٰلِحَٰتُ قَٰنِتَٰتٌ حَٰفِظَٰتٞ لِّلۡغَيۡبِ بِمَا حَفِظَ ٱللَّهُۚ وَٱلَّٰتِي تَخَافُونَ نُشُوزَهُنَّ فَعِظُوهُنَّ وَٱهۡجُرُوهُنَّ فِي ٱلۡمَضَاجِعِ وَٱضۡرِبُوهُنَّۖ فَإِنۡ أَطَعۡنَكُمۡ فَلَا تَبۡغُواْ عَلَيۡهِنَّ سَبِيلًاۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلِيّٗا كَبِيرٗا ٣٤ [النساء: ٣٤] 

পুরুষরা নারীদের তত্ত্বাবধায়ক, এ কারণে যে, আল্লাহ তাদের একের উপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং যেহেতু তারা নিজদের সম্পদ থেকে ব্যয় করে। সুতরাং পুণ্যবতী নারীরা অনুগত, তারা লোকচক্ষুর অন্তরালে হিফাজতকারিনী ঐ বিষয়ের যা আল্লাহ হিফাজত করেছেন। আর তোমরা যাদের অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদেরকে সদুপদেশ দাও, বিছানায় তাদেরকে ত্যাগ কর এবং তাদেরকে (মৃদু) প্রহার কর। এরপর যদি তারা তোমাদের আনুগত্য করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কোনো পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমুন্নত মহান। [সূরা আন-নিসা: ৩৪] 

 عَنْ حَكِيمِ بْنِ مُعَاوِيَةَ الْقُشَيْرِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَا حَقُّ زَوْجَةِ أَحَدِنَا عَلَيْهِ؟، قَالَ: «أَنْ تُطْعِمَهَا إِذَا طَعِمْتَ، وَتَكْسُوَهَا إِذَا اكْتَسَيْتَ، أَوِ اكْتَسَبْتَ، وَلَا تَضْرِبِ الْوَجْهَ، وَلَا تُقَبِّحْ، وَلَا تَهْجُرْ إِلَّا فِي الْبَيْتِ» 

হাকীম ইবন মুআবিয়া রহ. তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করি, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! স্বামীদের উপর স্ত্রীদের কী হক? তিনি বলেন, “যা সে খাবে তাকেও (স্ত্রী) খাওয়াবে, আর সে যা পরিধান করবে তাকেও তা পরিধান করাবে। আর তার (স্ত্রীর) চেহারার উপর মারবে না এবং তাকে গালাগাল করবে না। আর তাকে ঘর হতে বের করে দিবে না। [আবু দাউদ: হাদীস নং ২১৪২।]

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
স্ত্রীকে অনুগত করা অবাধ্য হলে বাধ্য করার জন্য করনীয়ঃ-

প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে উপদেশ দেওয়া ।
খুব ভালো ভাবে নিজে বুঝানো,তাতে কাজ না হলে মুরব্বিদের মাধ্যমে বুঝানো।
স্ত্রী বাবার বাসার মুরব্বিদের মাধ্যমে বুঝানো।
তাতে কাজ না হলে দ্বিতীয় পদক্ষেপ বিছানা পরিত্যাগ করা ।
তাকে আলাদা বিছানায় থাকতে দেয়া।
প্রয়োজনে আলাদা রুমেও থাকতে পারেন।

এতে কাজ না হলে কিছুদিনের জন্য বাবার বাসায় রেখে আসতে পারেন।

তাতেও কাজ না হলে তৃতীয় পদক্ষেপ মৃদু প্রহার করা। 
,
আল্লাহ্ তায়ালা বলেন, وَاضْرِبُوهُنَّ এবং তাদেরকে প্রহার করবে। 

এর তাফসীরে হাফেয ইবন কাসীর [রহ.] বলেন, যদি উপদেশ প্রদান ও আলাদা রাখার পরও কোনো কাজ না হয়, স্ত্রীগণ সংশোধনের পথে ফিরে না আসে, তবে হালকা করে তাদেরকে প্রহার করবে। 

জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

 «فَاتَّقُوا اللهَ فِي النِّسَاءِ، فَإِنَّكُمْ أَخَذْتُمُوهُنَّ بِأَمَانِ اللهِ، وَاسْتَحْلَلْتُمْ فُرُوجَهُنَّ بِكَلِمَةِ اللهِ، وَلَكُمْ عَلَيْهِنَّ أَنْ لَا يُوطِئْنَ فُرُشَكُمْ أَحَدًا تَكْرَهُونَهُ، فَإِنْ فَعَلْنَ ذَلِكَ فَاضْرِبُوهُنَّ ضَرْبًا غَيْرَ مُبَرِّحٍ، وَلَهُنَّ عَلَيْكُمْ رِزْقُهُنَّ وَكِسْوَتُهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ» 

তোমরা স্ত্রীদের ব্যাপারে আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর। কেননা আল্লাহর আমানতে তোমরা তাদেরকে গ্রহণ করেছ। আল্লাহর বাণী সাক্ষী রেখে তোমরা তাদের সাথে সহবাস করা বৈধ করেছো। তাদের উপর তোমাদের অধিকার হচ্ছে, তারা তোমাদের গৃহে এমন লোককে প্রবেশ করতে দিবে না যাকে তোমরা পছন্দ কর না। কিন্তু তারা যদি নির্দেশ লঙ্ঘন করে এরূপ করে ফেলে তবে, তাদেরকে প্রহার কর। কিন্তু প্রহার যেন কঠিন ও কষ্টদায়ক না হয়। তোমাদের উপর তাদের অধিকার হচ্ছে, তোমরা সঠিকভাবে নিয়ম মাফিক তাদের খানা-পিনা ও কাপড়ের ব্যবস্থা করবে। [মুসলিম, হাদীস নং ১২১৮।]

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত স্ত্রীকে বাধ্য করার জন্য ও পূর্ণ শরীয়তের উপর চালানোর জন্য উপরোক্ত পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করতে হবে।

এরপরে কাজ না হলে তাকে এক তালাক দেয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে স্বামীর কোনো গুনাহ হবেনা।

(০২)
এর জন্য কুফরি হবেনা।

(০৩)
না,এতে কুফর হবেনা। 

(০৪)
বিষয়টি মতবিরোধ পূর্ণ একটি বিষয়। 
উলামায়ে কেরামদের মাঝে উক্ত বিষয় নিয়ে তুমুল মতানৈক্য রয়েছে। 

সর্বপরি প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তির এটি বলার দরুন গুনাহ বা কুফরি হবেনা।

(০৫)
সে যেহেতু পর্দার বিধানকে অস্বীকার করেনি,ঠাট্রা বিদ্রুপও করেনি,তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সে কাফের হয়ে যাবেনা।

তবে তাকে এহেন কথা থেকে তওবা করে ফিরে আসতে হবে।

(০৬)
এতে কুফর হবেনা।

(০৭)
এতে তারও কুফর সংগঠিত হয়ে যাবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (63 points)
শায়েখ, আসলে তাকে চাপাচাপি করলেই সংসারে অশান্তি করে,ঝগড়া তৈরী হয়, বলে যা করছে তা ও করবে না। তাছাড়া আমি তাকে অনেক ভালোবাসি তার সাথে সংসার করতে চাই। এখন, তাকে মাঝে মাঝে যদি বুঝাই এবং তার জন্য দোয়া করতে থাকি, এবং সংসার জারি রাখি।  তবে কি আমার জন্য যথেষ্ট হবে????

কোনো স্টেপ নিতে গিয়ে তাকে জোর করে কিছু করা যাবে বলে কখনোই মনে হয় না, বুঝ মেনে নিয়ে যদি নিজ থেকে করে আরকি....
by (573,960 points)
উপরোক্ত সমস্ত স্টেপ নিবেন,সব স্টেপ গ্রহনের পর সর্বশেষ তালাকের স্টেপ গ্রহন না করলে আপনার গুনাহ হবেনা।
by
আসলে শায়েখ এগুলে করতে গেলে উল্টা পথে হাটে, বলে জোর করলে কিছুউ করবো না মন চাইলে করবো, এইসব জোর করে হবে না। এইসব বলে।
এরজন্য এই সব স্টেপ নিতে গেলে উল্টো হওয়ার ভয়ে আমি এইসব স্টেপে যেতে চাচ্ছি না।  তাই শুধু দোয়া আর নসিহত ও বুঝানোর দিকেই থাকতে চাই। কারণ মন বলছে এই পথেই তাকে সঠিক করা যেতে পারে,  জোর বা অন্য ভাবে তার ক্ষেত্রে করা সম্ভব হবে বলে মনে হয়না কারণ সে একরুখা অনেক

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...