নামাজে কাতার মিলিয়ে দাড়ানো,মাঝে ফাকা না রাখা সুন্নাত।
ফাকা হয়ে দাড়ানো মাকরুহ।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَن جَابِرٍ بنِ سَمُرَة رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ : خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم فَقَالَ أَلاَ تَصُفُّونَ كَمَا تَصُفُّ المَلائِكَةُ عَندَ رَبِّهَا ؟ فَقُلنَا : يَا رَسُولَ اللهِ وَكَيفَ تَصُفُّ المَلائِكَةُ عَندَ رَبِّهَا ؟ قَالَ يُتِمُّونَ الصُّفُوفَ الأُوَلَ وَيَتَرَاصُّونَ فِي الصَّفِّ رواه مُسلِم
জাবের ইবনে সামুরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিকট এসে বললেন, “ফিরিশুামণ্ডলী যেরূপ তাদের প্রভুর নিকট সারিবদ্ধ হন, তোমরা কি সেরূপ সারিবদ্ধ হবে না।” আমরা নিবেদন করলাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! ফিরিশুামণ্ডলী তাদের প্রভুর নিকট কিরূপ সারিবদ্ধ হন?' তিনি বললেন, “প্রথম সারিগুলো পূর্ণ করেন এবং সারিতে ঘন হয়ে দাঁড়ান।” (মুসলিম ৯৯৬, আবূ দাউদ ৬৬১, মিশকাত ১০৯১নং)
,
وَعَنْهُ قَالَ : أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَأقْبَلَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم بِوَجْهِهِ فَقَالَ أَقِيمُوا صُفُوفَكُمْ وَتَرَاصُّوا فَإنِّي أَرَاكُمْ مِنْ وَرَاءِ ظَهْرِيْ رواه البُخَارِيُّ بلفظه ومسلم بمعَناه
وفي رواية للبخاري: وَكَانَ أَحَدُنَا يُلْزِقُ مَنْكِبَهُ بِمَنْكِبِ صَاحِبِهِ وَقَدَمَهُ بِقَدَمِهِ
হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা নামাযের তাকবীর (ইকামত) দেওয়া হল, তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের দিকে মুখ ক’রে বললেন, “তোমরা কাতারসমূহ সোজা কর এবং মিলিতভাবে দাঁড়াও। কারণ, তোমাদেরকে আমার পিছন থেকেও দেখতে পাই।” (এই শব্দে বুখারী ৭১৯ এবং একই অর্থে মুসলিম বর্ণনা করেছেন ১০০৪নং)
বুখারীর অন্য বর্ণনায় আছে, ‘আমাদের প্রত্যেক ব্যক্তি তার পার্শ্বস্থ সঙ্গীর বাহুমূলে বাহুমূল ও পায়ে পা মিলিয়ে দিত। (বুখারী ৭২৫নং)
,
وَ عَنْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا : أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ أَقِيمُوا الصُّفُوفَ وَحَاذُوا بَيْنَ المَنَاكِبِ وَسُدُّوا الخَلَلَ وَلِينُوا بِأَيْدِي إِخْوانِكُمْ ولاَ تَذَرُوا فُرُجَاتٍ لِلشَّيْطَانِ وَمَنْ وَصَلَ صَفّاً وَصَلَهُ اللهُ وَمَنْ قَطَعَ صَفّاً قَطَعَهُ اللهُ رواه أبُو دَاوُدَ بإسناد صحيح
আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “তোমরা কাতারগুলি সোজা ক’রে নাও। পরস্পর বাহুমূলে বাহুমূল মিলিয়ে নাও। (কাতারের) ফাঁক বন্ধ ক’রে নাও। তোমাদের ভাইদের জন্য হাতের বাজু নরম ক’রে দাও। আর শয়তানের জন্য ফাঁক ছেড়ো না। (মনে রাখবে,) যে ব্যক্তি কাতার মিলাবে, আল্লাহ তার সাথে মিল রাখবেন, আর যে ব্যক্তি কাতার ছিন্ন করবে (মানে কাতারে ফাঁক রাখবে), আল্লাহও তার সাথে (সম্পর্ক) ছিন্ন করবেন।” (আবূ দাঊদ ৬৬৬নং, বিশুদ্ধ সূত্রে)
عَن عَائِشَةَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم إِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى الَّذِينَ يَصِلُونَ الصُّفُوفَ
আয়েশা (রায্বিয়াল্লাহু আনহা) প্রমুখাৎ থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “অবশ্যই মহান আল্লাহ তাদের প্রতি রহম করেন এবং ফিরিশতাবর্গ তাদের জন্য দু‘আ করে থাকেন, যারা কাতার মিলিয়ে দাঁড়ায়।” (আহমাদ ২৪৩৮১, ইবনে মাজাহ ৯৯৫, ইবনে খুযাইমাহ ১৫৫০, ইবনে হিব্বান ২১৬৩, হাকেম)
ইবনে মাজাহ এই উক্তি অধিক বর্ণনা করেছেন, “আর যে ব্যক্তি (কাতারের মাঝে) কোন ফাঁক বন্ধ করে, আল্লাহ তার বিনিময়ে সেই ব্যক্তিকে একটি মর্যাদায় উন্নীত করেন।” (সহীহ তারগীব ৫০১ নং হাদীস।)
মসজিদের কাতার পূর্ণ হয়ে গেলে মসজিদ সংলগ্ন সিঁড়ির সমতল জায়গায় এবং এর পরবর্তী রাস্তা ইত্যাদিতে নামাজে দাঁড়ানো যাবে। তবে মসজিদের কাতার অপূর্ণ রেখে এসব স্থানে দাঁড়ানো যাবে না। আর মসজিদের কাতার পূর্ণ হয়ে গেলেও বাইরে রাস্তা ইত্যাদিতে দাঁড়ানোর জন্য শর্ত হলো, মসজিদের বাইরের কাতার ও মসজিদের মাঝে যানবাহন চলাচল করতে পারে- এ পরিমাণ ফাঁকা না থাকা। কেননা মসজিদের বাইরে এমন ফাঁকা রেখে দাঁড়ালে কাতারের সংযোগ না থাকার কারণে তাদের নামাজ সহিহ হবে না।
(রদ্দুল মুহতার : ১/৫৮৫,খুলাসাতুল ফাতাওয়া : ১/১৫১; মুখতারাতুন নাওয়াজিল : ১/২৯৬)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
মসজিদের বাহিরে দাঁড়ানোর জন্য শর্ত হলো, মসজিদের বাইরের কাতার ও মসজিদের মাঝে যানবাহন চলাচল করতে পারে- এ পরিমাণ ফাঁকা না থাকা। কেননা মসজিদের বাইরে এমন ফাঁকা রেখে দাঁড়ালে কাতারের সংযোগ না থাকার কারণে তাদের নামাজ সহিহ হবে না।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি মসজিদের বাহিরে যেখানে নামাজ পড়েছিলেন,সেই কাতার আর মসজিদের মাঝে যানবাহন চলাচল করতে পারে- এ পরিমাণ ফাঁকা না থাকলে আপনার নামাজ শুদ্ধ হয়েছে।
মসজিদের কাতার পূর্ণ হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে মসজিদের সিঁড়ি তে নামাজ পড়লে নামাজ হয়ে যাবে।
খাদেমের রুম আর মসজিদের কাতারের মাঝে যানবাহন চলাচল করতে পারে- এ পরিমাণ ফাঁকা না থাকলে নামাজ শুদ্ধ হবে।