আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
158 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (91 points)
১. সমাজে একটা কথা প্রচলিত আছে,  " আল্লাহর লীলা খেলা কেও বুঝে না" বা "সবই আল্লাহর লীলা খেলা" অনেকেই এভাবে বলে থাকেন। এভাবে বলার ফলে কি কুফর হবে?  একটি গজল ও আছে প্রচলিত "আল্লাহ তোমার লীলা খেলা কেও বুঝে কেও বুঝে না"

(একটি শব্দর্থের ওয়েবসাইট অনুযায়ী লীলা শব্দের অর্থঃ  ১ কেলি, প্রমোদ, প্রমোদপূর্ণ ক্রীড়া; ২ হাবভাব (লীলায়িত, সলীল); ৩. অন্তরের আনন্দ বাইরে প্রত্যক্ষগোচর করার মনোবৃত্তি; ৪. দেবতার খেলা (রাসলীলা); ৫. দেবতা বা মানুষের নির্দিষ্টকালব্যাপী কার্যকলাপ (জীবলীলা, ভবলীলা, কৃষ্ণের নরলীলা); ৬. গূঢ় ধর্মপূর্ণ কেলা বা কাজ (‘কে বোঝে তোমার লীলা লীলাময়ী তারা’)। এর কোনোটিই মহান আল্লাহ সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।তাও প্রচলিত শব্দ।হিসাবে মানুষ ব্যবহার করে)

২.একটি মাসআলা নিয়ে দুইজন আলেমের কিছুদিন মতানক্য ছিলো তারা তখন পাল্টাপাল্টি দালিলি আলোচনা দিয়ে ভিডিও করতেছিলেন। এই ঘটনার বর্ননা আরেকজন কে দিতে গিয়ে কেও বললো " এই মাসআলা নিয়ে তো ওই দুই হুজুরের অনেক বারগেনিং (Barganing) করেছিলেন" তখন হেসেছিলো কি না মনে নাই সঠিক করে।

(বারগেনিং মানে দরকষাকষি,  এভাবে বলার ফলে কি কুফর হবে)

৩. কেও জহিরারে বাক্য মনে মনে বলার সময়, মুখ দিয়ে কোনো কারনে উহ,বা হুম এরকম শব্দ বের হয়ে যায়, এতে কি তা সংঘটিত হয়ে যাবে?

৪.কোনো মেয়ে যদি তার স্বামীকে বলে, "পর্দা করার কথা বললে রাগ উঠে" এতে কি সে কাফের হয়ে যাবে?
(সে বিশ্বাস করে তা করা ফরজ)

৫. কেও যদি কোনো আরবী ভুল পড়ার পরে যদি জানতে পারে তা ভুল অর্থ দিতো, সঠিক ভাবে পড়লে অন্য অর্থ আসে। সঠিক টা জানার পরে, আবার যদি কোনো কারণে ভুলটা পরে, তবে কি কাফের হয়ে যাবে? (যেমন কেও আস্তাকফিরুল্লাহ এর অর্থ জেনেও যদু্ি পরবর্তী তে ইস্তেগফার এর জায়গায় আস্তাকফিরুল্লাহ বলে)

৬. "ক্বুল (বলুন) হু আল্লাহু আহাদ" এর স্থলে কেও "কুল (খাও" হু আল্লাহু আহাদ পরলে কি অর্থটি কুফরী হবে? নামাজ ফাসিদ হবে?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


কাফের বলার ক্ষেত্রে উসূল,
আল্লামা মোল্লা আলী কারী রহঃ শরহে ফিক্বহুল আকবারে বলেন-

ان المسئلة المتعلقة بالكفر اذا كان له تسع وتسعون احتمالا للكفر واحتمال واحد فى نفيه فالاولى للمفتى والقاضى ان يعمل بالاحتمال النافى، لان الخطا فى ابقاء الف كافر اهون من الخطاء فى افناء مسلم واحد، (شرح الفقه الاكبر-199

কুফরী সম্পর্কিত বিষয়ে, যখন কোন বিষয়ে ৯৯ ভাগ সম্ভাবনা থাকে কুফরীর, আর এক ভাগ সম্ভাবনা থাকে, কুফরী না হওয়ার। তাহলে মুফতী ও বিচারকের জন্য উচিত হল কুফরী না হওয়ার উপর আমল করা। কেননা ভুলের কারণে এক হাজার কাফের বেচে থাকার চেয়ে ভুলে একজন মুসলমান ধ্বংস হওয়া জঘন্য। {শরহু ফিক্বহুল আকবার-১৯৯}

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا ضَرَبْتُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَتَبَيَّنُوا وَلَا تَقُولُوا لِمَنْ أَلْقَىٰ إِلَيْكُمُ السَّلَامَ لَسْتَ مُؤْمِنًا تَبْتَغُونَ عَرَضَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فَعِنْدَ اللَّهِ مَغَانِمُ كَثِيرَةٌ ۚ كَذَٰلِكَ كُنْتُمْ مِنْ قَبْلُ فَمَنَّ اللَّهُ عَلَيْكُمْ فَتَبَيَّنُوا ۚ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرًا [٤:٩٤]

হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন আল্লাহর পথে সফর কর,তখন যাচাই করে নিও এবং যে,তোমাদেরকে সালাম করে তাকে বলো না যে, তুমি মুসলমান নও। তোমরা পার্থিব জীবনের সম্পদ অন্বেষণ কর,বস্তুতঃ আল্লাহর কাছে অনেক সম্পদ রয়েছে। তোমরা ও তো এমনি ছিলে ইতিপূর্বে; অতঃপর আল্লাহ তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। অতএব, এখন অনুসন্ধান করে নিও। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের কাজ কর্মের খবর রাখেন। {সূরা নিসা-৯৪}

হাদীস শরীফে এসেছেঃ-

عن أبي ذر رضي الله عنه أنه سمع النبي صلى الله عليه و سلم يقول ( لا يرمي رجل رجلا بالفسوق ولا يرميه بالكفر إلا ارتدت عليه إن لم يكن صاحبه كذلك 

হযরত আবু জর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসুল সাঃ বলেছেন যে, তোমাদের কেউ যদি কাউকে ফাসেক বলে, কিংবা কাফের বলে অথচ লোকটি এমন নয়,তাহলে তা যিনি বলেছেন তার দিকে ফিরে আসবে। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৬৯৮} 

বিস্তারিত জানুনঃ-

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(১.২)
প্রশ্নের বিবরন মতে ঈমান চলে যাবেনা।

(০৩)
এতে তালাক সংগঠিত হয়ে যায়না।

(০৪)
এক্ষেত্রে সে যেহেতু পর্দাকে অস্বীকার করেনি,ঠাট্রা বিদ্রুপও করেনি,তাই প্রশ্নের বিবরন মতে সে সরাসরি কাফের হবেনা বটে,তবে উক্ত কথা বলায় সে মারাত্মক অন্যায় করেছে।

তাকে তওবা করে ফিরে আসতে হবে।

(০৫)
না,এতে সে কাফের হয়ে যাবেনা।

(০৬)
অর্থটি কুফরি। 
এর দরুন নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে।
তবে এক্ষেত্রে তার ঈমান চলে যাবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...