আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
143 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (21 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ,

আমি আসলে কিছু বিষয়ে সম্মানিত উস্তাযের নসীহা চাচ্ছিলাম,

১.গত ৮/৯মাস আগে একদিন আমি একদম ফজরের আগে স্বপ্নে দেখি,আমি আর আমার বড়বোন আমাদের বাসার বারান্দায় দাঁড়ানো(যদিও তখন আমাদের সেই বাসা ভেঙে নতুন বাসা নির্মাণ কাজ চলছিলো) হঠাৎ আমরা দেখি আকাশ একদম কালো হয়ে গেছে ঘন কালো মেঘ তখনই হঠাৎ পাশে পূর্ব দিকে দেখি তিনটা বড় বড় সাপ আর পাশে দুইটা লাল-হলুদ বর্ণের কি যেন ছিলো বেশ ভয়ংকর আমার মনে নেই,আকাশ যে কালো ছিলো আসলে সেটা মেঘ না বরং এই সাপগুলির নিশ্বাসে ছাড়া বিষ ছিলো, আর সাপগুলি তিনজন পুলিশকে(উল্লেখ্য বাসার এই পাশটায় ১২/১৩ বছর আগে পুলিশরা ভাড়া থাকতেন) শোবল দিচ্ছিল তখন পূর্বদিক থেকে কে যেন বললো এরা মারা গেছে দুনিয়ার এরা অনেক ঘুষ নিতো এমন আরও অনেক কিছু গুনাহের কথা বললো আমার সবগুলি স্মরণে নাই।তখন আমার বোন সাপগুলি তাড়ানোর চেষ্টা করলে আমি বলি এগুলি বারযাখের সাপ! তাড়া করাতে মধ্যের বড় সাপটা আমার বোনকে তাড়া করতে শুরু করে হঠাৎ সেটা দিক পরিবর্তন করে আমার দিকে আসে আর পিছন দিকে অনেক গুলি শাখাও হয় সাপটার আমি তখন বলছিলাম আমি তো এগুলির কিছুই করিনা তাহলে আমাকে কেন এরা তাড়া করছে?একসময় সাপটা আমাকে ধরতে পারে আর কপালে ঠিক সিজদার জায়গায় শোবল দিতে থাকে আর আমার মনে হতে থাকে আমার তো সব শেষ তখন আযানে আমার ঘুম ভাঙ্গে আমার তখনো মনে হচ্ছিল আমি মারা গেছি বারযাখি জীবনে আছি বেহুশের মতো উঠে নামাজ পড়ে আমি ঘুমিয়ে পড়ি, ঘুম ভাঙ্গে ১০/১১টায় সকাল,তখন কেমন অসুস্হ লাগছিলো।এই স্বপ্নটার কথা আমি আমার দুজন বান্ধবীকে বলি একজন বলে আমি একবার শুনেছিলাম আমাদের জবানের বিষাক্ততা এমন আকাশ সমান হতে পারে, আমি পরে আমার  মায়ের কাছে মাফ চাই তাকে কথার দ্বারা কষ্ট দিয়ে থাকলে,আর তখন মনে হচ্ছিল কারো সাথে কথাই না বলি আর।(উল্লেখ্য তখন আমাদের পোস্টমর্টেম দেখানো হতো সপ্তাহে একদিন করে আর আমি তখন অনেক মৃত্যুর ভয়ে থাকতাম।তাও এই ঘটনা আমাকে খুব নাড়া দেয়)। আরও একটা বিষয় বলতে চাই গত ৪বছর আগেও সাপ গুলির ওই জায়গায় আমি আমার মা কে কবরস্থ দেখি (যদিও এখনও তিনি জীবিত আছেন আলহামদুলিল্লাহ!) সে কবর থেকে পুরু শরীর পোকামাকড়ে আবৃত হয়ে উঠে আমাদের বলতে থাকে আমি জীবনে সালাত পড়িনি তাই আজকে আমার এ দশা তোমরা স্বলাত পড়। সেদিনও ফজরের সময় ছিলো, আমি সেই স্বপ্নটা আমার মাকেই হয়তো শুধু বলেছিলাম বা বলিনি মনে নেই।তার মাস খানেকর পর আমি সিহরে আক্রান্ত হয়ে ১০/১১ মাস অসুস্থ থাকি। আল্লাহ সেই ঘটনার রেশ ধরেই প্রায় ১১মাস পর আমাকে সুস্থতা ও হিদায়াহ দেন আলহামদুলিল্লাহ!

২.এই রমাদ্বনে (৪/৫)আমি হায়েজ অবস্থায় একদিন দুপুরে ঘুমিয়ে আছি স্বপ্নে দেখি আমি মারা গেছি,আরও কি কি জানি হচ্ছিল আমার মনে নেই(একটু ভীতিকরই ছিলো)। শয়তান আমাকে কোনভাবেই কালিমা পড়তে দিচ্ছিল না পরে যদিও আমি পড়তে পারি আর মনে মনে শান্তি পাই যাক কালিমা পড়া গেল।

আমি প্রতি স্বপ্ন দেখার পরই হার্টবিট হাই থাকে আমি খুব দুর্বলবোধ করি কখনো ঘামতেও থাকে।আর যা যা হয়েছে শরীরে অনুভব হতে থাকে।আল্লাহ আমাকে মাফ করুন।২য় স্বপ্নটি দেখার পর আমার মনেহচ্ছিল হয়তো আমি শীঘ্রই মারা যাবো কারণ এখন না আমি এমন কোন চিন্তা নিজে করেছি আর শয়তানও শিকলে বন্দি।

সম্মানিত উস্তায,আমাকে এই মর্মে কিছু নসীহা করলে ভালো হয়।আমি বিষয়টা শ্রদ্ধেয় জুবায়ের উস্তায বা মামুন উস্তাযকে লিখে জানাতে চেয়েছিলাম কিন্তু সেটা সম্ভব হচ্ছে না তাই আপনার কাছে জানতে চাওয়া।

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন প্রকার। 
,
১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।

২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে।

তবে শয়তান স্বপ্ন দেখানোর দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।
,
 ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়। 

৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়। 
,

হাদীস শরীফে এসেছে  

خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ يَقُوْلُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلميَقُوْلُ الرُّؤْيَا مِنْ اللهِ وَالْحُلْمُ مِنْ الشَّيْطَانِ فَإِذَا رَأٰى أَحَدُكُمْ شَيْئًا يَكْرَهُه“فَلْيَنْفِثْ حِينَ يَسْتَيْقِظُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ وَيَتَعَوَّذْ مِنْ شَرِّهَا فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّه“وَقَالَ أَبُو سَلَمَةَ وَإِنْ كُنْتُ لأَرَى الرُّؤْيَا أَثْقَلَ عَلَيَّ مِنَ الْجَبَلِ فَمَا هُوَ إِلاَّ أَنْ سَمِعْتُ هٰذَا الْحَدِيثَ فَمَا أُبَالِيهَا.

আবূ ক্বাতাদাহ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছিঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, আর মন্দ স্বপ্ন হয় শয়তানের তরফ থেকে। সুতরাং তোমাদের কেউ যদি এমন কিছু স্বপ্ন দেখে যা তার কাছে খারাপ লাগে, তা হলে সে যখন ঘুম থেকে জেগে ওঠে তখন সে যেন তিনবার থুথু ফেলে এবং এর ক্ষতি থেকে আশ্রয় চায়। কেননা, তা হলে এটা তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। 

আবূ সালামাহ বলেনঃ আমি যখন এমন স্বপ্ন দেখি যা আমার কাছে পাহাড়ের চেয়ে ভারি মনে হয়, তখন এ হাদীস শোনার ফলে আমি তার কোন পরোয়াই করি না। [বুখারী ৫৭৪৭ মুসলিম পর্ব ৪২/হাঃ ২২৬১, আহমাদ ২২৭০৭] 

https://ifatwa.info/30990/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ  

ইবনে সিরিন রহঃ বলেন,

فإن رأى حية تمشي خلفه فإنّ عدوه يريد أن يمكر به فإن مشت بين يديه أو دارت حوله فإنّهم أعداء يخالطونه

যদি কেউ স্বপ্নে সাপ দেখে যে,তার পিছু পিছু ছুটছে,তাহলে এর অর্থ হল,ঐ ব্যক্তির শত্রুরা তার সাথে শত্রুতা করা জন্য চেষ্টা করতেছে।আর যদি কেউ দেখে যে তার হাতের সামনে বা তার আশপাশে সাপ ঘুর ঘুর করতেছে,তাহলে এর অর্থ হলো,ঐ ব্যক্তির শুত্রুরা তার পাশেই রয়েছে ঘনিষ্টজনদের মধ্যে। (তাফসিরুল আহলাম-ইবনে সিরান-২/৪)

★সু-প্রিয় পাঠকবর্গ! ও প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!

আপনি সাপ স্বপ্নে নিজের পাশে দেখেছেন,এর অর্থ হলো,আপনার ঘনিষ্টজনদের মধ্য থেকে কেউ আপনার সাথে শুত্রতার চেষ্টা করতেছে।যেহেতু সাপ আপনাকে কামড় দেয়নি,আপনার কোনো ক্ষতি করেনি,সুতরাং কোনো সমস্যা নেই।
আপনার শত্রু হয়তোবা আপনার পাশেই রয়েছে ঘনিষ্টজনদের মধ্যে। 
তবে তারা আপনার কোনো ক্ষতি করতে পারবেনা,ইনশাআল্লাহ।  

সুতরাং আপনার প্রতি নসিহা হল,আপনি ফরয ওয়াজিব বিধানকে গুরুত্বসহকারে পালন করবেন।
স্বপ্নের কথা কাউকে বলবেননা।

আর নিম্নোক্ত দুআ পড়বেন।
আল্লাহুম্মা ইন্না নাজআলুকা ফি নুহুরিহিম,ওয়া নাউযুবিকা মিন শুরুরিহিম।

(০২)
কালেমা পড়তে পারা এটি আপনার শক্তিশালী ঈমানের পরিচয় বহন করে,আলহামদুলিল্লাহ।
,
পরামর্শ থাকবে,আপনি নিজ আমল বাড়িয়ে দিবেন,দ্বীনদার লোকদের সাথে উঠাবসা করবেন,পবিত্র হালতে থাকবেন,অহংকার থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করবেন। 
বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত, যিকির আযকার,ফরজ সহ নফল নামাজ পড়বেন। 
দান ছদকাহ করবেন।
,
স্বপ্নের কথা কাউকে বলা যাবেনা।

আরো জানুন


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...