আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
271 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (9 points)
আসসালামু আলাইকুম,
১) পবিত্র ক্বোরয়ানের আয়াতে বলা হয়েছে,
বিবাহিত পুরুষ এবং বিবাহিত নারীর মাঝে জিনা হলে তার শাস্তি সম্পর্কে। আবারও বলা হয়েছে, অবিবাহিত পুরুষ এবং নারীর যিনার শাস্তি সম্পর্কে। ইদানীং দেখা যায়,

বিবাহিত পুরুষ এবং অবিবাহিত নারীর সাথে যিনা হচ্ছে। ফেসবুক কিংবা চাকুরীর সূত্রে কিংবা ইচ্ছাগত করে গোপন রাখার ফলে, অধিকাংশ নারীই জানে না যে পুরুষটি বিবাহিত।
ক) এই ক্ষেত্রে পবিত্র ক্বোরয়ানের আয়াতের আলোকে কিংবা হাদীসের আলোকে, বিবাহিত পুরুষ এবং অবিবাহিত নারীর মাঝে যিনা সংঘটিত হয়ে গেলে, অবিবাহিত নারী কি একশ বেত্রাঘাত পাবে নাকি পাথর মেরে হত্যা?  এই যিনা থেকে যদি বাচ্চা গর্ভধারণ হয় তাহলে তখন কি শাস্তি হয়?
খ) যদি জিনাকারি মহিলা তালাকপ্রাপ্তা হয় তাহলে কি শাস্তি হবে?

উল্লেখ্য, ইন্দোনেশিয়ায় এখনো বেত্রাঘাত পদ্ধতি দেখাতে তাই এই বিষয়ক বিস্তারিত জানতে চাই। ধর্মীয় বিষয় জানার জ্ঞাতার্থেই, এই প্রশ্ন করা।
২) যারা এই যিনার শাস্তি দুনিয়ায় ভোগ করে তাদেরকে কি হাশরের মাঠে পুনরায় শাস্তির বিধান হবে?


৩) চোখের যিনা ভুলক্রমে হয়ে গেলে তার ক্ষমা চাওয়ার জন্য দুয়া কি হবে? (ভুলক্রমে অনলাইনে ছবি সামনে চলে এসেছে, ইচ্ছাগত করে নয়)
৪) ফরজ/নফল/সুন্নাত নামাজে প্রতি রাকাআতে সূরা ফাতিহা,এরপর  অন্য যে কোনো সূরা, অতঃপর সূরা বাক্বারার ১-৭ আয়াত, তারপর আয়াতুল ক্বুরসী, এবং পুনরায় সূরা বাক্বারার শেষ দুই আয়াত কি পড়া যাবে?  মানে অন্য সূরার পরে সূরা বাক্বারার ১-৭ আয়াত, আয়াতুল কুরসী, বাক্বারার শেষ দুই আয়াত প্রতি রাকাআতে পড়া যাবে কি না তা জানাবেন।

৫) ৬রোজা কি ভেঙে ভেঙে রাখা যাবে? আর মেয়েদের বাদ যাওয়া রোজাগুলো কি একটানা রাখতে হবে নাকি ভেঙে ভেঙে রাখা যাবে?
জাযাকুমুল্লাহ খাইরান

1 Answer

0 votes
by (559,530 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


ইসলামে ব্যভিচারের শাস্তি ব্যক্তিভেদে একটু ভিন্ন। ব্যভিচারী যদি বিবাহিত হয়, তাহলে তাকে প্রকাশ্যে পাথর মেরে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে। আর যদি অবিবাহিত হয়, তাহলে তাকে প্রকাশ্যে একশ’ ছড়ি মারা হবে। নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য একই শাস্তি।

কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘
আল্লাহ তায়ালা বলেন, 
الزانية والزاني فاجلدوا كل واحد منهما مائة جلدة
ব্যভিচারিণী নারী ব্যভিচারী পুরুষ, তাদের প্রত্যেককে একশ’ করে বেত্রাঘাত কর। আল্লাহর বিধান কার্যকর কারণে তাদের প্রতি যেন তোমাদের মনে দয়ার উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাকো। মুসলমানদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে। ’ –সূরা নূর: ২

হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘অবিবাহিত পুরুষ-নারীর ক্ষেত্রে শাস্তি একশ’ বেত্রাঘাত এবং এক বছরের জন্য দেশান্তর। আর বিবাহিত পুরুষ-নারীর ক্ষেত্রে একশ’ বেত্রাঘাত ও রজম (পাথর মেরে মৃত্যুদণ্ড)। ’ –সহিহ মুসলিম

إِسْمَاعِيلُ قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُودٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَزَيْدِ بْنِ خَالِدٍ أَنَّهُمَا أَخْبَرَاهُ أَنَّ رَجُلَيْنِ اخْتَصَمَا إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَحَدُهُمَا اقْضِ بَيْنَنَا بِكِتَابِ اللهِ وَقَالَ الْآخَرُ وَهُوَ أَفْقَهُهُمَا أَجَلْ يَا رَسُولَ اللهِ فَاقْضِ بَيْنَنَا بِكِتَابِ اللهِ وَأْذَنْ لِي أَنْ أَتَكَلَّمَ قَالَ تَكَلَّمْ قَالَ إِنَّ ابْنِي كَانَ عَسِيفًا عَلَى هَذَا قَالَ مَالِكٌ وَالْعَسِيفُ الأَجِيرُ زَنَى بِامْرَأَتِهِ فَأَخْبَرُونِي أَنَّ عَلَى ابْنِي الرَّجْمَ فَافْتَدَيْتُ مِنْهُ بِمِائَةِ شَاةٍ وَجَارِيَةٍ لِي ثُمَّ إِنِّي سَأَلْتُ أَهْلَ الْعِلْمِ فَأَخْبَرُونِي أَنَّ مَا عَلَى ابْنِي جَلْدُ مِائَةٍ وَتَغْرِيبُ عَامٍ وَإِنَّمَا الرَّجْمُ عَلَى امْرَأَتِهِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَمَا وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لأقْضِيَنَّ بَيْنَكُمَا بِكِتَابِ اللهِ أَمَّا غَنَمُكَ وَجَارِيَتُكَ فَرَدٌّ عَلَيْكَ وَجَلَدَ ابْنَهُ مِائَةً وَغَرَّبَهُ عَامًا وَأُمِرَ أُنَيْسٌ الأَسْلَمِيُّ أَنْ يَأْتِيَ امْرَأَةَ الْآخَرِ فَإِنْ اعْتَرَفَتْ رَجَمَهَا فَاعْتَرَفَتْ فَرَجَمَهَا

আবূ হুরাইরাহ ও যায়দ ইবনু খালিদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তাঁরা বলেছেন, একবার দু’ লোক ঝগড়া করতে করতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এলো। তাদের একজন বলল, আল্লাহর কিতাব মুতাবিক আমাদের মাঝে ফায়সালা করে দিন। দু’জনের মধ্যে (বেশি) বুদ্ধিমান অন্য লোকটি বলল, হ্যাঁ। হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মধ্যে আল্লাহর কিতাব মুতাবিক ফয়সালা করে দিন। আর আমাকে কিছু বলার অনুমতি দিন। তিনি বললেনঃ বল। লোকটি বলল, আমার পুত্র ও লোকটির কাছে চাকর হিসাবে ছিল। (মালিক বলেন, الْعَسِيفُ শব্দের অর্থ চাকর) আমার পুত্র এর স্ত্রীর সঙ্গে যেনা করেছে। লোকেরা বলেছে যে, আমার পুত্রের (শাস্তি) রজম হবে। তাই আমি একশ’ বক্রী ও একটি বাঁদী নিয়ে তার ফিদইয়া দিয়েছি। এরপর আমি আলিমদের নিকট এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছি। তাঁরা আমাকে জানালেন যে, আমার পুত্রের একশ’ বেত্রাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন হবে। আর রজম হবে এর স্ত্রীর। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কসম ঐ সত্তার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! আমি তোমাদের উভয়ের মধ্যে অবশ্যই আল্লাহর কিতাব মুতাবিক ফয়সালা করে দেব। তোমার বক্রী ও বাঁদী তোমাকেই ফিরিয়ে দেয়া হবে। তিনি তাঁর পুত্রকে একশ’ বেত্রাঘাত ও এক বছরের জন্য নির্বাসিত করলেন। আর উনায়ক আসলামীকে আদেশ দেয়া হল অন্য লোকটির স্ত্রীর কাছে যাওয়ার জন্য। সে যদি (ব্যভিচার) স্বীকার করে তবে তাকে রজম করতে। সে তা স্বীকার করল, সুতরাং তাকে পাথর নিক্ষেপে হত্যা করা হল। [বুখারী ৬৬৩৩,২৩১৪, ২৩১৫] ইসলামী  ফাউন্ডেশন- ৬১৭৯)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
ক,
এক্ষেত্রে অবিবাহিত নারী একশ বেত্রাঘাত পাবে।

এই যিনা থেকে যদি বাচ্চা গর্ভধারণ হয় তাহলে তখনও একই শাস্তি হবে।

খ,
এক্ষেত্রে শাস্তি হলো পাথর মেরে হত্যা।

(০২)
শাস্তির পাশাপাশি এক্ষেত্রে তারা যদি খালেস দিলে তওবাও করে,আর আল্লাহ তায়ালা যদি তাদের তওবা কবুল করেন,সেক্ষেত্রে আখেরাতে এর দরুন শাস্তি হবেনা।

(০৩)
বাংলাতেই দোয়া করবেন যে "হে আল্লাহ,আমার চোখ দ্বারা সংগঠিত যাবতীয় কুদৃষ্টি ইত্যাদির গুনাহ মাফ করে দিন"

(০৪)
ফরজ নামাজে ইচ্ছাকৃতভাবে এরকম করা মাকরুহ।

সুন্নাত ও নফল নামাজে এমনটি করলে সমস্যা নেই।

(০৫)
শাওয়াল মাসের ৬ রোজা  ভেঙে ভেঙে রাখা যাবে।

মেয়েদের বাদ যাওয়া রোজাগুলো একটানা রাখতে হবেনা।
ভেঙে ভেঙেও রাখা যাবে,এতে কোনো সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...