আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
262 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (91 points)
১. আমার বিবাহের দিনে কাজী সাহেব, এজাব কবুলের সময় আমাকে কাবিনের এমাউন্ট বলেন কিন্তু আমার বউকে তা বা বলেই অমুকর ছেলে অমুবক বাড়ি অমুক এভাবল বিয়ে পড়িয়ে নেন, বউকে যাখন বলেন নি এবং আমাকে কবুল পড়ানের সময় আমি বলি এমাউন্ট তো বলছেন না, তখন তিনি বললেন এটা তো নিজেরা আলোচনা করেন নি? তখন বউ আমার সামনেই ছিলো তার সামনে কবুল পড়ানোর সময় আমাকে এমাউন্ট বলেছে। এবং খুতবা বসে দেম। এটা নিয়ে তখন কিছু সন্দেহ হয় যে বিয়ে পড়ানো ঠিক হলো কি না। পরে বিভিন্ন ঝামেলায় তা মন থেকে চলে যায় এবং বিবাহ সঠিক হয়েছে ভেবেই দিন চলছইলো,পরে রাতে সন্দেহ গাঢ় হওয়ায় সব বিষয় একজন মুফতিকে বলি উনি বলেন এভাবে বিয়ে হবে সমস্যা না।
আমার এই সন্দেহের ফলে কি বিবাহে সমস্যা হবে?
২. এরা ছাড়াও বিভিন্ন সময় আমার বিয়ে নিয়ে সন্দেহ হতো যে কাজি যেভাবে বলেছেন এভাবে পরলে বিয়ে হবে কি না, কুফু ঠিক আছে কি না, এইসব পরে তা আলেমদের জিগ্যাস করার পরে তারা বলতেন সমস্যা না।এভাবে সন্দেহ হলে জেনে জেনে চলছে,এসব সন্দেহের ফলে কি বিবাহে সমস্যা হবে?

৩. একবার একটা মাসআলায় একজন শায়েখ বলেন আমাদের বিবাহ নষ্ট হয়ে গেছে। পরে আমি তো কিছু সময় তা ই বিশ্বাস করেছিলাম, বউ এর থেকে দূরে ছিলাম, পরে অন্য মুফতির কাছে জানকে উনি বলেন সমস্যা হয় নি, পরেও প্রথম মুফতিও নিজের মত থেকে রজু করেন। এই ক্ষনিকের বিশ্বাস করলাম যে বিবাহ নষ্টের এর ফলে কি বিবাহ নষ্ট হবে?

৪. একদিন আমার বউ বললো সে বিবাহের ইজাব কবুলের সময় কাজির জবাবে বিসমিল্লাহ বলেছে।আমি বললাম নাহ আলহামদুলিল্লাহ বলেছো, তখন মনে পরছিলো আলহামদুলিল্লাহই বলেছে। তাও নিশ্চিত এর জন্য এক সাক্ষিকে জিগ্যেস করি সেও বলে নাহ, সে আলহামদুলিল্লাহ ই বলেছে।
বউ এর এমন সন্দেহের ফলে কি বিবাহে সমস্যা হবে?

৫. এছাড়াও মাঝে মাঝে সন্দেহ হতো বিবাহ নষ্ট হলো কি না, বিচেদের ভয় হতো। মাঝে মাঝে সন্দেহ হতো।  এসবের ফলে কি বিবাহ নষ্ট হতে পারে? না কি আমার বিবাহ ঠিক আছে আমার দুই বছরের বিবাহিত জীবনে সমস্যা হয় নি তো?

৬. বৈবাহিক সম্পর্কের কিছু ফতোয়া জেনেছিলাম আপনার থেকে, যেঝানে বিস্তারিত জেনে বলেছিলেন সংসারে সমস্যা হবে না। তাও মাঝে মাঝে এগুলো মনে হয় আর ফতোয়া গুলো খুজে আবার দেখি তারপর শান্তি লাগে, কিন্তু কিছু ফতোয়া হাইড করেছিলাম তো সেগুলো আর খুজে পাচ্ছি আপডেট থেকে সরে গেছে,অন্য নোটিফিকেশনের কারণে,এখন এগুলোর কথা মনে পরে, আর দেখতে মন চায়,  কিন্তু তা তো পাওয়া যাচ্ছে না এখন,  আমার মনে আছে আপনি বলেছিলেন সমস্যা হবে না এক্ষেত্রে কি করনীয়?

৭. একটি মেছে আমার এক হিন্দু বন্ধু খাবার খাচ্ছিলো আমি তার প্লেটের মাছ দেখে বললাম, তাইলে তো আমাদের হোস্টেলের খবার ভালো( হোস্টেলেট ললর হিন্দুদের ডায়নিং এর খাবারের মান উদ্দেশ্য)  পরে ভাবলাম এরা তো বলি দিয়ে খায়, বাট এটা হারাম জানি আর এটা খাওয়া ভালো বলার প্রশ্নই আসে না, তা ও খাবারের মান(মাছের সাইজ, তরবরির মান) এসব বিবেচনায় আবার বলি, এই খানের খাবার থেকে হোস্টেল এর ডায়নিং এর খাবার ই ভালো। এতে কি আমার কুফর হবে?

৮. একটা গজলের গানের লাইনে কি বলে তা জানা ছিলো না, এটা না অস্পষ্ট শুনে এমন মনে হয়েছিলো লাইন টা " বহুদিন পরে পেয়ারা নবী আসলেন দুনিয়ায়" এই লাইন অনেক বার বলেছিলাম,কিন্তু একদিন মনে হলো যে এটা কি কথা, বহুত দিন পরে মানে তো আগে একবার এসেছেন পরে আবর আসলেন এমন বুঝায়। কিন্তু আগে এটা বলার সময় এই চিন্তা মাথায় ছিলো কিনা বলতে পারছি না পরিষ্কার করে, এর ফলে কি কুফর হবে?

৯. " মোয়াবিয়া (রা:) ইখতেলালাফ করেছেন যে এখন জিহাদ করা দরকার,  আর আলী(রা:) ইখতেলাফ করেছেন যে মুয়াবিয়া (রা) কে থামানো দরকার, দুজনেই ইখতেলাফ করেন এখান থেকেই সিফ্ফিনের যু্দ্ধ" এখানে মোয়াবিয়া(রা:) এর ইখতেলাফকে জিহাদ বললে কি কুনো সমস্যা আছে? আমার ক্লিয়ার মনে হচ্ছে না হয়তো আমি এভাবে একবার বলেছিলাম, বা হয়তো আলী(রা:) এর বিরুদ্ধে  যুদ্ধ করা দরকার এভাবে বলেছিলাম, এভাবে ফলে কি আমার কোনো ইমানে সমস্যা হবে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
https://ifatwa.info/11771/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, 
ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। যথা-
বর ও কনেকে কিংবা তাদের প্রতিনিধিকে ইজাব তথা প্রস্তাবনা ও কবুল বলতে হয়।

উক্ত ইজাব ও কবুলটি বলতে হয় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মসলিম পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলার সামনে।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَ اسۡتَشۡہِدُوۡا شَہِیۡدَیۡنِ مِنۡ رِّجَالِکُمۡ ۚ فَاِنۡ لَّمۡ یَکُوۡنَا رَجُلَیۡنِ فَرَجُلٌ وَّ امۡرَاَتٰنِ مِمَّنۡ تَرۡضَوۡنَ مِنَ الشُّہَدَآءِ اَنۡ تَضِلَّ اِحۡدٰىہُمَا فَتُذَکِّرَ اِحۡدٰىہُمَا الۡاُخۡرٰی

আর তোমরা তোমাদের পুরুষদের মধ্য হতে দু’জন সাক্ষী রাখ, অতঃপর যদি দু’জন পুরুষ না হয় তবে একজন পুরুষ ও দু’জন স্ত্রীলোক যাদেরকে তোমরা সাক্ষী হিসেবে পছন্দ কর, যাতে স্ত্রীলোকদের মধ্যে একজন ভুলে গেলে তাদের একজন অপরজনকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
(সুরা বাকারা ২৮২)

হাদিস শরিফে এসেছে, 

لَا يَجُوزُ نِكَاحٌ، وَلَا طَلَاقٌ، وَلَا ارْتِجَاعٌ إِلَّا بِشَاهِدَيْنِ

‘রাসূল (সা.) বলেছেন, দুইজন সাক্ষী ছাড়া বিবাহ, তালাক ও ফিরিয়ে আনা বৈধ হবে না।’ [মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদিস: ১০২৫৪]

قوله صلى الله عليه وسلم : ( لا نكاح إلا بولي وشاهدي عدل ) رواه البيهقي من حديث عمران وعائشة ، وصححه الألباني في صحيح الجامع (7557) 

রাসুলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “অভিভাবক ও দুইজন সাক্ষী ছাড়া কোন বিবাহ নেই।” [তাবারানী কর্তৃক সংকলিত, সহীহ জামে (৭৫৫৮)]।

 নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী- “তোমরা বিয়ের বিষয়টি ঘোষণা কর।”[মুসনাদে আহমাদ এবং সহীহ জামে গ্রন্থে হাদিসটিকে ‘হাসান’ বলা হয়েছে (১০৭২)]
۔
ইজাব ও কবুলটি উভয় সাক্ষ্যি স্বকর্ণে শুনতে হবে।

উক্ত তিনটির কোন একটি শর্ত না পাওয়া গেলে ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হয় না।

উপরোক্ত তিনটি শর্ত  পাওয়া গেলে বিবাহ হবে,অন্যথায় বিবাহ হবেনা।
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,    
বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল দু’জন আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেকবান দুই জন মুসলিম স্বাক্ষের সামনে পাত্র/পাত্রি প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষে পাত্র/পাত্রি তা কবুল করবে। আর সাক্ষিগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে। আর শরয়ী এ শর্তাবলী প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে  পরিপূর্ণভাবে পাওয়া গিয়েছে।
তাই প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার বিবাহ শুদ্ধ হয়েছে।

প্রশ্নে উল্লেখিত সন্দেহের ফলে আপনার বিবাহে কোনো সমস্যা হবেনা।

(০২)
এসব সন্দেহের ফলে বিবাহে সমস্যা হবেনা।

(০৩)
এর ফলে বিবাহ নষ্ট হবেনা।

(০৪)
স্ত্রীর এমন সন্দেহের ফলে বিবাহে সমস্যা হবেনা। 

(০৫)
আপনার বিবাহ ঠিক আছে।
আপনার দুই বছরের বিবাহিত জীবনে কোনো সমস্যা হয়নি।

(০৬)
আপনি এগুলো নিয়ে কোনো টেনশন করবেননা।
সম্পর্ক ঠিক আছে,বিশ্বাস রেখে নিশ্চিন্ত মনে সংসার চালিয়ে যান।

(০৭)
এতে আপনার কুফর হবেনা। 

(০৮)
এর ফলে কুফর হবেনা। 

(০৯)
এর ফলে আপনার ঈমানের সমস্যা হবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 158 views
...