আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
247 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (20 points)
আসসালামু আলাইকুম।
১) কোনো মেয়ের বাবা যদি রাগ উঠে গেলেই মেয়েকে বলে 'বেশি কথা বলবিনা। নইলে মান ইজ্জত যা আছে সব নষ্ট করে ফেলবো। একে ছিড়ে খেয়ে ফেলবো তোকে। মানুষের সামনে তোর ইজ্জত নষ্ট করবো।' রাগ ছাড়া কখনো এ ধরনের কথা বলেনা বা আচরণ করেনা। বরং মেয়ের মতোই আচরণ করে, পিতাসুলভ দায়িত্ব পালন করে। অনেক আদর করে মেয়েকে। নিজেকে না খেয়ে বলে মেয়ের জন্য রেখে দাও।
কিন্তু রাগ উঠে গেলেই অসম্ভব পর্যায়ের জঘন্য কথা বলে। যেগুলো শোনার পর মেয়ের ইচ্ছে করে আত্মহত্যা করতে বা ওই বাবার চেহারাও না দেখতে, বাবার সাথে পর্দা করতে। মেয়ে জানে তার বাবা বাইরের মহিলাদের দিকে খারাপভাবে তাকায়, পর্ণ দেখে। সবসময় সুন্দর সুন্দর করে।

আমার প্রশ্ন হচ্ছে এই ধরনের আচরণে কি বাবা মায়ের মধ্যে তালাক পতিত হবে বা তাদের সম্পর্কে ক্ষতি হবে? এমন বাবার সাথে কি জেদ করে ওই কথার জের ধরে পর্দা করা উচিত বা এমন করলে গুনাহ হবে? মেয়ে তখন বাবাকে অনেক হক্ব কথা শোনায়। যার প্রতিটা সত্য। অনেকসময় অনেক বেশি বেয়াদবিমূলক আচরণ করে ফেলে। ভাবে পিতা হয়ে যদি তিনি এমন করতে পারে, আমি জুলুমের স্বীকার হয়ে চুপ থাকবো কেন? মোটকথা সে প্রতিবাদ করে ও জুলুমের বিরুদ্ধে জবাব দেয়। এতে কি তার গুনাহ হবে?
সে যদি তার পিতাকে ঘৃণা করে তাহলে কি গুনাহ হবে? অনেক সময় ইসলামের বিধান মানতে গেলে পিতা এমন আচরণ করে। একবার তো পর্দা করে বিধায় মারামারির একপর্যায়ে মেয়ের বুক থেকে ওরনাও টানতেও শুরু করে রাগের মাথায় আর বলে আজ পুরো এলাকার সামনে তোকে উলঙ্গ করে তোর ইজ্জত নষ্ট করবো। পরিস্থিতি ঠিক হলেও মেয়ে এসব ভুলতে পারেনা।
একটু জানাবেন। মা-মেয়ে-মায়ের সম্পর্কে এক্ষেত্রে কি হবে?

২) ১ দিনের নফল ইতিকাফে বসলে কি সূর্যাস্তের আগেই বসতে হবে? নাকি পরে বসলেও হবে? আর যদি বসেই যায় তাহলে একদিন পূর্ণ হওয়ার আগেই যদি পিরিয়ড শুরু হয় তাহলে কি এর কাযা করতে হবে নাকি যতক্ষণ বসছে ততক্ষনের সএয়াব পাবে কিন্তু একদিনের ইতিকাফের যে ফলিজত তা পাবেনা। এমন কি?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
https://ifatwa.info/12178/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ  
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
    
وَقَضَى رَبُّكَ أَلاَّ تَعْبُدُواْ إِلاَّ إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلاَهُمَا فَلاَ تَقُل لَّهُمَآ أُفٍّ وَلاَ تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلاً كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা।(সূরা বনি ঈসরাইল-২৩)

وَاخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ وَقُل رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا

তাদের সামনে ভালবাসার সাথে, নম্রভাবে মাথা নত করে দাও এবং বলঃ হে পালনকর্তা, তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর, যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন।(সূরা বনি ঈসরাইল-২৪)

আল্লাহ তা'আলা, রাগের মূুহুর্তে কারো দু'আকে কবুল করেন না, এমনকি মাতাপিতার দু'আককেও কবুল করেন না।
وَلَوْ يُعَجِّلُ اللّهُ لِلنَّاسِ الشَّرَّ اسْتِعْجَالَهُم بِالْخَيْرِ لَقُضِيَ إِلَيْهِمْ أَجَلُهُمْ فَنَذَرُ الَّذِينَ لاَ يَرْجُونَ لِقَاءنَا فِي طُغْيَانِهِمْ يَعْمَهُونَ
আর যদি আল্লাহ তা’আলা মানুষকে যথাশীঘ্র অকল্যাণ পৌঁছে দেন যতশীঘ্র তার কামনা করে, তাহলে তাদের আশাই শেষ করে দিতে হত। সুতরাং যাদের মনে আমার সাক্ষাতের আশা নেই, আমি তাদেরকে তাদের দুষ্টুমিতে ব্যতিব্যস্ত ছেড়ে দিয়ে রাখি।(সূরা ইউনুস-১১)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
সন্তানের দায়িত্ব হচ্ছে,মাতাপিতার সাথে সর্বদা উত্তম বাক্য ব্যবহার করা।তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করার পরও যদি তারা সন্তানের সাথে উচ্ছবাক্য করে,তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে,তারপরও সন্তানের দায়িত্ব হচ্ছে,ধৈর্য্যর সাথে অপেক্ষা করা ও সদ্ব্যবহার চালিয়ে যাওয়া। কিন্তু প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কখনো যদি ধৈর্য্যর বাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে সন্তান উচ্ছবাক্য করে নেয়,তাহলে এক্ষেত্রে সন্তানের কোনো গোনাহ হবে না।

সন্তানের করণিয় হল,মায়ের আচরণ পরিবর্তনের জন্য দুয়া করা।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে মেয়েটির জন্য তার বাবার সামনে পর্দার আবশ্যকীয়তা নেই।
যদি সে বুঝতে পারে যে তার বাবা তার দিকে আসলেই কুদৃষ্টি দেয়,সেক্ষেত্রে তার বাবার সামনে কম আসবে।
প্রয়োজন চেহারার উপর কিছুটা ওড়না ঝুলিয়ে আসবে।

প্রশ্নের বিবরণ মতে তার বাবা মায়ের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক আগের মতোই বহাল রয়েছে। 
সমস্যা হয়নি।

তার বাবার রাগের সময় তার সামনে থেকে উঠে যাওয়ার পরামর্শ থাকবে। 

প্রচন্ড জুলুমের প্রেক্ষিতে সে যদি প্রতিবাদ করে ও শালীন ভাষায় জুলুমের বিরুদ্ধে জবাব দেয়,সেক্ষেত্রে গুনাহ হবেনা।

(০২)
 ১ দিনের নফল ইতিকাফে বসলে সূর্যাস্তের আগেই বসতে হবে,এমন বাধ্যবাধকতা নেই।
পরে বসলেও হবে।

নফল ইতিকাফে পিরিয়ড শুরু হলে সেটির কাজা আদায় করতে হবেনা।

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ-
”فلو خرجت منہ ولو الی بیتھا بطل الاعتکاف  لو واجبا،وانتھی لو نفلا “
(ردالمحتار ،ج03،  ص435،مطبوعہ ملتان  )

সারমর্মঃ-
যদি মহিলা ইতিকাফের স্থান হতে বের হয়ে নিজ ঘরের দিকে চলে যায়,সেক্ষেত্রে তার ইতিকাফ যদি ওয়াজিব হয়,তাহলে ভেঙ্গে যাবে।
আর যদি তার ইতিকাফ সুন্নাত হয়,সেক্ষেত্রে ইতিকাফ পূর্ণ হয়ে যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...