আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
188 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (1 point)
edited by

আসসালমুআলাইকুম হুজুর,
১.আমার আব্বুর সাতে গল্পঃ হচ্ছিলো ইসলামের বিভিন্ন বিষয় এ। দিয়ে আব্বু বলছে বহু বছর পূর্বে মক্কাতে মূর্তি পূজা হতো এবং কাবা শরীফের মধ্যে কিছু মূর্তি থাকতো। সেইগুলো কে সব ভেঙে ফেলেছে হাবিল না কাবিল, ইব্রাহিম খলিল আ: এর সময়। এই কথা বলছিলো আমার ভয় হতে থাকলো আব্বুর ঈমান চলে যাবে বলে আমি খুবই ওয়াসওয়াসা রুগী হুজুর আব্বুর ঈমান ঠিক আছে তো? 
**এই ইতিহাস সুনে আমি প্রথমে একটু কেমন মনে হলেও পরে বিশ্বাস করেছি আমার ও আব্বার ঈমান ঠিক আছে তো?
২. আব্বু বলছে আমরা এখনো মুসলিম রা মূর্তি পূজা করি। আমার ভয় হতে থাকলো ঈমান চলে যাবে বলে, দিয়ে আব্বু বলছে অনেক বাড়িতে বা আরো অন্য কারো বাড়িতে মেলা থেকে বা বাজার থেকে অনেক পশুর মাটির তৈরি জিনিস বাঘ, ঘোরা, সিংহ ইত্যাদি  নিয়ে আসি বা অন্য রকমের মাটির তৈরি জিনিস নিয়ে আসি সেই গুলো কে বাড়িতে সোখেস এরেখে দি বা টাকসাল এ রেখে দি।। এইগুলো নিয়ে আসলে কি নামজ হবে সেই বাড়িতে।  এই হিসেবে আব্বু ওই কথাটা বললো তাছাড়া তো আমরা আল্লাহর ইবাদত করি কোনো মূর্তি পূজা করিনি আর করতে পারিনা ।।আব্বা বললো একটা বক্তব্যে শুনেছে সেই হিসেবে বললো।  এই কথার জন্য কি ঈমান চলে যাবে?? আব্বু যদি ভুল করে বলে না বুঝে না জেনে এর জন্য কি ঈমান চলে যাবে?

৩. আব্বা বলছিলো হিন্দু রা আমাদের হাজরে আসোআত পাথর কে ওদের কৃষ্ণ পাথর বলতো তাই বলছিলো  ওদের পাথর বলে দাবি করেছিল। আর বলছিলো এখন আরব কান্ট্রি তে মন্দির ও হয়ে গিয়েছে। 

আব্বু হয়ত কোনো জায়গাতে এই সব খবর দেখে বলছিলো। এর জন্য কি ঈমান চলে যাবে??

৪. আমাকে ঈমান নিয়ে কিছু একটা বলতে গিয়ে বলছিলো আমার তো মনে হয় মাঝে মাঝে কালী সাধনা করলে ভালো হয়। আমি আব্বা কে সঙ্গে সঙ্গে বললাম আর কিছু বলেন না । আব্বু আর কিছু বলল না । দিয়ে আমি বললাম মনে মনে বললে কিছু হয়না। হুজর আব্বু র তো মনে মনে হয়েছে , আমাকে সেই ঘটনা টা বললো এর জন্য কি ঈমান চলে যাবে?

৫. মনের মধ্যে যতই কুফরী কথা হউক না কেনো তাতে তো কিছু হবে না তাই না?

৬. আমরা ভারতে থাকি , আব্বু গল্পঃ করতে করতে বলছে আমাদের এইখানে মুসলিম মেয়ের থেকে , হিন্দু মেয়েরা অনেক এডভ্যান্স। আমি কথা শুনে বললাম  এডভ্যান্স হবে কারণ হিন্দু মেয়ের লজ্জা কম দিয়ে আব্বা বলছে টা ঠিক বলেছিস । এমনি নরমালি দেশের পরিস্থিতি অনুযায়ী কথা হচ্ছিলো। এর জন্য কি ঈমান চলে যাবে?

খুবই ওয়াসওয়াসা রুগী আমি । আমার খুব চিন্তা হচ্ছে।

৭. আমার মনে হচ্ছে মনে মনে আমি নবী সাঃ কে ডাকছি এই রকম শুধু মনে মনে হচ্ছে। আর মনে মনে এমন হচ্ছে আমি যেনো জয় শ্রী রাম বলছি। আল্লাহ কসম এইসব আমার মনে মনে হচ্ছে মুখে উচ্চরণ করিনি। মাঝে মাঝে এমনি নবী সাঃ এর নাম নিচ্ছি তাই সা: বলছি। কিন্তু আমি শিরিক করছিনা আল্লাহ কসম। আল্লাহ কসম আমার মনে মনে হচ্ছে এর জন্য কি আমার ঈমান চলে যাবে??

**এইখানে লিখলাম জয় শ্রী রাম এর জন্য কি ঈমান চলে যাবে,? আমি বোঝানোর ক্ষেত্রে বললাম।

৮. আমি যখন ক্লাশ নবম  শ্রেনী তে পড়তাম , তখন আমার একটা হিন্দু বন্ধু ছিল, এমনি তাকে বলতাম, আমরা নামাজ  পড়ি,  তোরা পূজো করিস, আমরা রোজা করি তোরা উপস করিস। এমনি নরমালি বলতাম। ছোটো ছিলাম বুদ্ধি ছিল না বেশি। খুব ভয় হচ্ছে এর জন্য কি ঈমান চলে যাবে?

৯. হিন্দুরা মন্দির দেখলে বুকে হাত দিয়ে কপাল এ দেই মানে প্রণাম এর মতো করে, আমিও একদিন মনে হয় মসজিদ দেখে ওই রকম করেছি না জেনে শুনে ভুল করে করেছি এর জন্য কি ঈমান চলে যাবে?

১০. জুম্মার নামাজ পড়তে গিয়ে মনে হচ্ছিল প্রশ্ন করতে হবে , তাই একটু তারা তারি নামাজ আদায় করছিলাম । ভুল হয়েছে এর জন্য কি ঈমান চলে যাবে??

আমি খুবই ওয়াসওয়াসা গ্রস্ত রুগী। ও মানসিক রুগী।

১১. কেউ যদি বলে আসলে আমার ভাগ্য খারাপ। তাহলে কি ঈমান চলে যাবে? আর যদি গোসল করা কে যদি বলা হয় স্নান করেছো তাহলে কি ঈমান চলে যাবে?

১২. কেউ জিজ্ঞাসা করছে কি করছিস । আমি বললাম এই তো নামাজ টামাজ পড়ে শুয়ে আছি। হুজুর আল্লাহ কসম নামাজ কে কোনো কুটুক্তি করিনি। এমনি যেমন বলে খাওয়া দাওয়া সেরে শুইয়ে আছি। ওই রকম কথার পরিপেক্ষিতে বেরিয়ে গিয়েছে। এর জন্য কি ঈমান চলে যাবে?

১৩. হুজুর আমি ইফতার করার জন্য শশুর বাড়ি জাই। এবং সেখানে ইফতার এর তরমুজ না থাকায়  ইফতার এর ১ ঘণ্টা আগে আমি বাড়ি চলে আসি এবং বাড়িতে ইফতার করি। হুজুর এর জন্য কি ঈমান চলে যাবে? কোনো রাগ করে না। আমার খুব ঠাণ্ডা পানি খেতে ইচ্ছা করছিলো তাই বাড়ি এসে ইফতার করি। এর জন্য কি ঈমান চলে যাবে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


কাফের বলার ক্ষেত্রে উসূল
আল্লামা মোল্লা আলী কারী রহঃ শরহে ফিক্বহুল আকবারে বলেন-

ان المسئلة المتعلقة بالكفر اذا كان له تسع وتسعون احتمالا للكفر واحتمال واحد فى نفيه فالاولى للمفتى والقاضى ان يعمل بالاحتمال النافى، لان الخطا فى ابقاء الف كافر اهون من الخطاء فى افناء مسلم واحد، (شرح الفقه الاكبر-199

কুফরী সম্পর্কিত বিষয়ে, যখন কোন বিষয়ে ৯৯ ভাগ সম্ভাবনা থাকে কুফরীর, আর এক ভাগ সম্ভাবনা থাকে, কুফরী না হওয়ার। তাহলে মুফতী ও বিচারকের জন্য উচিত হল কুফরী না হওয়ার উপর আমল করা। কেননা ভুলের কারণে এক হাজার কাফের বেচে থাকার চেয়ে ভুলে একজন মুসলমান ধ্বংস হওয়া জঘন্য। {শরহু ফিক্বহুল আকবার-১৯৯}

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا ضَرَبْتُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَتَبَيَّنُوا وَلَا تَقُولُوا لِمَنْ أَلْقَىٰ إِلَيْكُمُ السَّلَامَ لَسْتَ مُؤْمِنًا تَبْتَغُونَ عَرَضَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فَعِنْدَ اللَّهِ مَغَانِمُ كَثِيرَةٌ ۚ كَذَٰلِكَ كُنْتُمْ مِنْ قَبْلُ فَمَنَّ اللَّهُ عَلَيْكُمْ فَتَبَيَّنُوا ۚ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرًا [٤:٩٤]

হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন আল্লাহর পথে সফর কর,তখন যাচাই করে নিও এবং যে,তোমাদেরকে সালাম করে তাকে বলো না যে, তুমি মুসলমান নও। তোমরা পার্থিব জীবনের সম্পদ অন্বেষণ কর,বস্তুতঃ আল্লাহর কাছে অনেক সম্পদ রয়েছে। তোমরা ও তো এমনি ছিলে ইতিপূর্বে; অতঃপর আল্লাহ তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। অতএব, এখন অনুসন্ধান করে নিও। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের কাজ কর্মের খবর রাখেন। {সূরা নিসা-৯৪}

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عن أبي ذر رضي الله عنه أنه سمع النبي صلى الله عليه و سلم يقول ( لا يرمي رجل رجلا بالفسوق ولا يرميه بالكفر إلا ارتدت عليه إن لم يكن صاحبه كذلك 

হযরত আবু জর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসুল সাঃ বলেছেন যে, তোমাদের কেউ যদি কাউকে ফাসেক বলে, কিংবা কাফের বলে অথচ লোকটি এমন নয়,তাহলে তা যিনি বলেছেন তার দিকে ফিরে আসবে। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৬৯৮} 

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
আপনার ও আপনার বাবার ঈমান চলে যায়নি।
ঠিকই আছে।

(০২)
এর জন্য ঈমান চলে যাবেনা।

(০৩)
এর জন্য ঈমান চলে যাবেনা।

(০৪)
এর জন্য ঈমান চলে যাবেনা।

(০৫)
মনের মধ্যে যতই কুফরী কথা হউক না কেনো, তাতে ঈমান চলে যাবেনা। 

(০৬)
এর জন্য ঈমান চলে যাবেনা।

(০৭)
প্রশ্নের বিবরণ মতে এর জন্য ঈমান চলে যাবেনা।
মাসয়ালা জানার জন্য উক্ত বাক্য লিখে প্রশ্ন করা দরুন আপনার ঈমান চলে যাবেনা।

(০৮)
এর জন্য ঈমান চলে যাবেনা।

(০৯)
এর জন্য ঈমান চলে যাবেনা।

(১০)
এর জন্য ঈমান চলে যাবেনা।

(১১)
"কেউ যদি বলে আসলে আমার ভাগ্য খারাপ" 
তাহলে ঈমান চলে যাবেনা।

যদি গোসল করা কে যদি বলা হয় "স্নান করেছো" তাহলে ঈমান চলে যাবেনা।

(১২)
এর জন্য ঈমান চলে যাবেনা।

(১৩)
এর জন্য ঈমান চলে যাবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...