বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
তারাবিহ নামাযের রাকাত সংখ্যা নিয়ে উলামাদের মতপার্থক্য বিদ্যমান রয়েছে। হানাফি ফিকহ মতে
তারাবীহ এর সালাত বিশ রাকাত। এবং তা প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক মুসলমানের উপর সুন্নাতে মুআক্কাদা। এবং জামাতের সাথে আদায় করা সুন্নাতে মুআক্কাদা আ'লাল কিফায়া।
ফেকহে হানাফির নির্ভর্যোগ্য প্রসিদ্ধ গ্রন্থ "ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে" বর্ণিত আছে,
وَنَفْسُ التَّرَاوِيحِ سُنَّةٌ عَلَى الْأَعْيَانِ عِنْدَنَا كَمَا رَوَى الْحَسَنُ عَنْ أَبِي حَنِيفَةَ - رَحِمَهُ اللَّهُ تَعَالَى - وَقِيلَ: تُسْتَحَبُّ وَالْأَوَّلُ أَصَحُّ. وَالْجَمَاعَةُ فِيهَا سُنَّةٌ عَلَى الْكِفَايَةِ، كَذَا فِي التَّبْيِينِ وَهُوَ الصَّحِيحُ، كَذَا فِي مُحِيطِ السَّرَخْسِيِّ.
তারাবীহ সুন্নাতে মুআক্কাদা আলাল আইন।যেমন ইমাম আবু-হানিফা থেকে হাসানের রেওয়াতে বর্ণিত আছে।কেউ কেউ অবশ্য মুস্তাহাব ও বলেছেন।তবে প্রথম অভিমতটাই অধিক গ্রহণযোগ্য।এবং জামাতের সাথে তারাবীহের সালাত আদায় করা সুন্নাতে মুআক্কাদা আলাল কিফায়া। এভাবেই "তাবয়ীনুল হাক্বাইক্ব" নামক কিতাবে বর্ণিত আছে। এবং "মুহিতে সারাখসীতে" বর্ণিত আছে।(ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া,১/১১৬)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/4047
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ!!
(১)তারাবির সালাত সুন্নতে মু'আক্কাদা আলাল কেফায়া। অর্থাৎ বিনা জরুরতে পরিত্যাগ করলে অবশ্যই গোনাহ হবে।
(২)কেউ যদি মসজিদে এশা পড়ে বাসায় এসে প্রতিদিন তারাবির সালাত একাকি পড়ে, তবে সে গুনাহগার না হলেও কাজটি অনুত্তম হিসেবে বিবেচিত হবে।
(৩)আজান দেয়ার আগ পর্যন্ত সাহরি করা যাবে না।বরং ক্যালেন্ডারে যখন সেহরির সময় শেষ লিখা হবে, তখনই সেহরিকে শেষ করতে হবে।
(৪)দাড়ি ক্লিন সেভ করে বা অল্প চাপ দাড়ি রাখে (ট্রিম করে) এমন ব্যক্তি তো ফাসেক। ফাসিকদেরকে সালাম না দেয়াই উচিৎ। কেউ কেউ মাকরুহ বলেছেন।
(৫)
সহীহ হাদিস দ্বারা প্রমানিত আছে যে একমুষ্টি পরিমান দাড়ি রাখা চার মাযহাব মতে ওয়াজিব।
অনেকে সুন্নাত ও বলে থাকেন।তবে এটা সাধারণ সুন্নতের মতো সুন্নত নয়। অতএব তা করলে ভালো, না করলেও গুনাহ নেই! এমন ধারণা একদম ভুল। দাড়ি এমন কোনো সুন্নত নয়, যা রাখা-না রাখা উভয়টার স্বাধীনতা রয়েছে।বরং এটা ‘সুন্নতে ওয়াজিবা’। অর্থাৎ এর গুরুত্ব সুন্নতে মুয়াক্কাদার চেয়েও বেশি।
দাড়ি মুন্ডানো হারাম।এবং একমুষ্টি থেকে কম দাড়ি রেখে অবশিষ্ট দাড়ি ছাঁটাই করাও হারাম।(জাওয়াহিরুল ফিকহ-৭/১৬০)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1039
(৬) যিনি তারাবিহ পড়াবেন,তিনি সওয়াবের নিয়তে পড়াবেন। যারা হাদিয়া দিতে চান,তারা স্বেচ্ছায় ইমাম সাহেবকে হাদিয়া দিবেন। এ নিয়ে তেমন বাড়াবাড়ি না করাই উচিৎ ও কাম্য। হ্যা, ঢালডোল পিঠিয়ে টাকা সংগ্রহ করার কোনো নিয়ম শরীয়তে নাই।
(৭) এ বিষয়ে তেমন কথা না বলাই উচিৎ। এদ্বারা দ্বীন নিয়ে বেহুদা ও অনর্থক আলোচনা শুরু হয়ে যায়। বাতিলরা সুযোগ পেয়ে যায়।
(৮) কেউ বললো যে খতম তারাবি পড়াও, একটা ভালো হাদিয়া দেবো। এভাবে তারাবিহ পড়ানো জায়েয হবে না।
(৯)ইমাম যদি সালাতের সময় অনেক নড়াচড়া করে, তার পিছনে সালাত আদায় করা নাজায়েয হবে না।তবে আ'মলে কাছির করলে নামায ফাসিদ।ইমাম সাহেবকে অন্তর দিয়ে সম্মান করবেন।
(১০)যাদের কোস্টকাঠিন্যর সমস্যা তারা পায়ুপথে বেশি পানি দেয়। এই পানি দেয়ার কারণে যদি পায়ুপথের ভিতরে পানি পৌছে যায়, তাহলে রোযা ফাসিদ হয়ে যাবে।
(১১) অতিরিক্ত খেয়ে মোটা হওয়া জায়েয হবে না।